❝কাজলদীঘি❞
BY- জ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়
৪৬ নং কিস্তি
—————————
তুমি একা একা।
খবর আসার প্রতীক্ষায়।
কেন, দেখছো তো।
বাসি খবর।
টাটকা পেতে পেতে রাত হবে। এত সহজে কেউ জমি ছেড়ে দেয়।
সে তো বুঝলাম। ওরা ভীষণ ঘোড়েল, মানবে কি?
না মনলে আমার পথ আমি দেখবো। ওদের পথ ওরা দেখবে। তারপর ক্ষমতার লড়াই।
তুই পারবি। অন্য কেউ হলে মাঝপথে রণে ভঙ্গ দিত।
আমি রান্না ঘরের দিকে পা বারালাম।
ওদিকে আবার কোথায় যাচ্ছিস?
একটু চায়ের সন্ধানে।
থাকলে আমাকে একটু দিস।
রান্না ঘরে ঢুকে ফ্লাক্সটা নারিয়ে দেখলাম। একটু আছে, আমার আর ডাক্তারদাদার হয়ে যাবে। দুটো কাপ বার করলাম। ধুয়ে নিলাম।
কিরে তুই এখানে কি করছিস! কি চুরি করতে এসেছিস?
পেছন ফিরে দেখলাম মিত্রা।
একটু চা খাবো।
একবার বাইরের দিকটা উঁকি মেরেই আমাকে জাপ্টে ধরে গালে চকাত করে একটা চুমু খেলো।
এই দেখো দেখো।
কি হলোরে অনি। ডাক্তারদাদা চেঁচিয়ে উঠলো।
মিত্রা বুকে হাত দিয়ে বড়ো বড়ো চোখ করে আমার দিকে তাকিয়ে। চোখের ভাষা, এক থাপ্পর।
এই যে আপনার মামনি ঠেলা মারল, আর একটু হলে কাপটা পড়ে যাচ্ছিল।
মিত্রা আমার কোমরে রাম চিমটি মারলো। ভীষণ জ্বালা জ্বালা করছে।
আস্তে করে বললো, শয়তান।
তোকে ওপরে ডাকছে। জোরে শব্দ করে বললো।
ঝামেলা করিসনা চা ঢালছি।
ও আবার কি ঝামেলা করছেরে। ডাক্তারদাদা চেঁচালো।
নাগো মিথ্যে কথা বলছে।
তোর ইন্টারভিউ হলো।
আমার আর ইন্টারভিউ কিরে, বৌদি যা মিষ্টি মিষ্টি দিচ্ছে না।
প্রবীর না কে তার মুখ শুকিয়ে একেবারে আমসত্ব।
থাপ্পর-টাপ্পর কিছু মারলি।
মারতে বলেছিল। ছুঁতে ঘেন্না করলো।
ডাক্তারদাদাকে কাপটা দিয়ে আয়।
মিত্রা বেরিয়ে গেল কাপ হাতে। আমি রান্না ঘরে দাঁড়িয়েই চায়ের কাপে চুমুক মারলাম।
কিগো মাসি, তোমার চোখটা ছলছলে কেন! মিত্রার গলা।
অনির কীর্তিকলাপে কার চোখ খটখটে শুকনো আছে বলতো। ডাক্তারদাদা বললো।
নিশ্চই বুবুন তোমায় কিছু বলেছে। দাঁড়াও ওর ঘাড় মটকাচ্ছি গিয়ে।
শেষর কথা গুলো চিবিয়ে চিবিয়ে বললো।
ওরে না না ও কিছু বলেনি। মাসির গলা পেলাম।
তাহলে!
এমনি। কোথায় ও?
রান্নাঘরে দাঁড়িয়ে চা গিলছে।
বুঝলাম মাসি রান্নাঘরের দিকে এগিয়ে আসছে। আমি চা খেয়ে বেসিনে কাপটা ধুলাম।
কিরে তুই ধুচ্ছিস। আমি ধুয়ে রাখতাম। মাসির গলাটা ধরা ধরা।
সকাল থেকে অনেক কাজ কোরছো। এটুকু করে দিলে তোমাদের উপকার হবে না।
আমি কাপটা রাখলাম। টাওয়েলে হাতটা মুছলাম। মিত্রা রান্নাঘরের মুখে দাঁড়িয়ে।
কথা হলো।
মাসি মুখ তুললো।
চুপ করে থাকলে হবে। হ্যাঁ না কিছু বলো।
মাসি মাথা নিচু করে ধরা গলায় বললো, হ্যাঁ।
দেখলাম মিত্রার চোখের রং বদলে যাচ্ছে। ওর চোখে জিজ্ঞাসা।
দাও মোবাইলটা দাও। ওপরে ডাকছে। শেষটুকু সেরে আসি।
মাসির হাত থেকে মোবাইলটা নিয়ে গট গট করে বেরিয়ে এলাম। সিঁড়ির মুখে বাসুরা দাঁড়িয়ে। ইসলামভাই আমার দিকে তাকিয়ে একবার মুচকি হাসলো।
ওপরে এসে দেখলাম ঘরের দরজা খোলা। সবাই ঘরের বাইরে। সন্দেহ হলো। মিটিং শেষ! ভেতরে ঢুকলাম। দরজাটা ভেজিয়ে দিলাম। চা পর্ব চলছে। দেখলাম রাজনাথবাবু এবং ডাক্তারের হাতেও চায়ের কাপ। রাজনাথবাবু আমার দিকে কট কট করে তাকাল। মাথাটা আবার পূর্ব অবস্থায় ফিরে এলো।
প্রবীরদা সব দেখলেন?
প্রবীরদা আমার দিকে তাকালেন।
অর্ক ডিটেলস দিয়েছিস?
হ্যাঁ।
দ্বীপায়ন ম্যাসেজের প্রিন্ট আউট দিয়েছ।
হ্যাঁ।
বলুন প্রবীরদা আমার কাছ থেকে আপনি আর কি জানতে চান?
তুই তাড়াহুড়ো করছিস কেন? একটু বোস। অনিমেষদা বললো।
আমি একটা চেয়ার নিয়ে এসে বসলাম।
বলো।
তোমরা এবার একটু বাইরে যাও। তুমিও যাও।
বৌদি আর অর্কদের দিকে তাকিয়ে অনিমেষদা বললো।
ওরা সকলে বাইরে বেরিয়ে গেল। দরজা বন্ধ করলাম। নিজের জায়গায় এসে বসলাম।
অনি তুই আমাকে একটা সত্যি কথা বলবি। প্রবীরদা বললেন।
বলুন।
তুই রাজনাথকে ফাঁসাতে চাইছিস কেন?
রাজনাথবাবুকে ফাঁসাতে চাইনি। উনি নিজে থেকে ফেঁসেছেন।
কেন বলছিস!
উনি ডাক্তারকে সাহায্য করতে চাইছেন।
তাহলে ডাক্তারের কাছ থেকে উনি সরে এলে তুই হাত সরিয়ে নিবি?
বাকি দোষগুলো সোধরাতে পারবেন?
বল শুনি।
ওনাকে জিজ্ঞাসা করুণ।
কি রাজনাথবাবু অনি কি বলছে? প্রবীরদা তাকালেন রাজনাথবাবুর দিকে।
সব মিথ্যে।
তাহলে এতক্ষণ ওরা যা দেখিয়েছে সব মিথ্যে।
মিথ্যে।
কাল বরাত জোরে বেঁচে গেছেন। সেলটা ফাটেনি। ফলস হয়ে গেছে। কচি মেয়েদের নিয়ে ফুর্তি। আর সাতটা টেররিস্ট লাগিয়ে দিলেন। এইগুলোকে শেষ করে দে। স্পন্সর ডাক্তার।
আমি কট কট করে রাজনাথবাবুর মুখের দিকে তাকিয়ে।
একবারে ফালতু কথা বলবে না।
এরা কেউ আপনাকে বাঁচাতে পারবে না। আপনার একটা টমিকে কালকে তুলে নিয়ে গিয়ে সাঁটিয়ে দিয়েছি। নিশ্চই আজকের কাগজে ছবি দেখেছেন। আর চারটে ভেতরে আছে। আলিপুর জেলে খবর পাঠিয়ে দিয়েছি।
দাঁড় দাঁড়া দাঁড়া….। প্রবীরদা বলে উঠলো।
আমি থামলাম না। কন্টিনিউ বলে যাচ্ছি।
সেলের অন্য ছেলেরা পিটিয়ে মেরে দেবে। কেউ জানার আগে আমার কাছে সঠিক খবরটা চলে আসবে। আমি বেশ গুছিয়ে একটা আর্টিকেল লিখবো। সংশোধনাগারের ভেতরে বন্দীদের নিজেদের মধ্যে মারা মারিতে এই চারজন মরে গেছে। কারারক্ষীরা নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে। কি বুঝলেন?
আপনি কিন্তু বড্ড বেশি বাড়াবাড়ি করছেন। রাজনাথ চেঁচিয়ে উঠলো।
আপনার সঙ্গে কারাদপ্তরের মন্ত্রীর সাপে নেউলে সম্পর্ক, তায় আবার অন্য পার্টির নেতা। ফোন করলে আপনাকে পাত্তা দেবে না। পারবেন আটকাতে? আপনি তো সাংসদ। আপনার অনেক ক্ষমতা।
রাজনাথবাবুর মুখ চোখ লাল হয়ে গেছে। কথা বলতে পারছেন না।
আপনাকে আর একটা কথা এদের সামনে বলে রাখি। ভাল করে শুনে নিন।
সবাই আমার মুখের দিকে তাকিয়ে।
আপনি যে এত তাড়াতাড়ি এই গেমটা ছেড়ে দেবন না সেটা আমি জানি। জানি বলেই আমার ঘুঁটি অনেক দূর পর্যন্ত সাজানো আছে। আপনার নেক্সট টার্গেট অনিমেষদা।
অনি….! বিধানদার মুখ থেকে অস্ফুট স্বর বেরিয়ে এলো। আমি বলে চলেছি।
অনিমেষদার শরীরের একটা লোমে যদি হাত পরে, আপনার মুজফ্ফরপুরের লিখিত-অলিখিত পাঁচ বউ সমেত আপনার পুরো খানদান লোপাট করে দেব। কাকপক্ষী টের পাবে না। ওখানে কার সঙ্গে আপনার কি হিঁচ আছে না আছে সব আমার নখোদর্পনে। আমি দাদার দাদা। আমার কোনও পিছু টান নেই।
কি ভুলভাল বকছিস তুই! অনিমেষদা বললেন।
বিধানদা প্রমাণ চান?
দিতে পারবি।
সঙ্গে সঙ্গে ফোনে অরিত্রকে ধরলাম।
হ্যাঁ দাদা। মেয়ের গলা।
সবাই শুনছে।
তোকে মেয়ের গলায় আর কথা বলতে হবে না তুই ছেলের গলায় কথা বল।
ঠিক আছে।
কালকে যে রকর্ডিংটা করেছিস শোনা।
ফোনে শোনালে শুনতে পাবে।
আমি ভয়েজ অন করে রেখেছি। শোন।
বলো।
শুধু অনিমেষদার জায়গাটুকু শোনাবি। পাঁচমিনিট আগে থেকে পাঁচমিনিট পর পর্যন্ত।
একমিনিট।
আচ্ছা।
অরিত্র রেকর্ডিং শোনাতে শুরু করলো। সবাই শুনছে। চোখ মুখ সবার লাল হয়ে যাচ্ছে। একমাত্র প্রবীরদা ভাবলেশহীন মুখে বসে আছে। চার পাঁচটা মেয়ের গলা। লক্ষ্মীর গলা রাজনাথ আর ডাক্তারের গলা স্পষ্ট শোনা যাচ্ছে।
শেষ হলো।
এবার রেখে দিয়ে ঘুমিয়ে পর।
আচ্ছা।
আমার পরিবর্তন আমি নিজে বুঝতে পারছি। ওদেরও চোখে মুখের পরিবর্তন হয়েছে। আমি ফোনটা পকেটে রেখে রাজনাথের দিকে তাকালাম।
আপনার সামনে যিনি বসে আছেন, গত সপ্তাহে ওর পকেট থেকে বাই চেকে আশি কোটি টাকা বার করে নিয়েছি। এবার ইনকামট্যাক্সকে ওর পেছনে লাগিয়ে দিয়েছি।
ওকে মারব না, এমনিই স্যুইসাইড করবে।
ওর আর চারটে বউ-এর কাছে নোটিস সার্ভ করে দিয়েছি।
ডাক্তার একবার উঠে দাঁড়িয়ে বসে পরলো।
কি ডাক্তার শরীর খারাপ লাগছে। শরীরে গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রগুলো এত তাড়াতাড়ি বিকল হলে লড়বেন কি করে। আমার ইঙ্গিত পূর্ণ কথা সবাই ধরতে পেরেছে।
ঘরের সবাই আমার কথায় থ।
কি প্রবীরদা আপনি আর কিছু শুনতে চান?
রাজনাথবাবু, অনিমেষদাকে মারতে চায়!
সামনে বসে আছে প্রতিবাদ করতে বলুন। আমি সব মিথ্যে বলছি। শুনলেন তো নিজের কানে কেমন ষঢ়যন্ত্র করছি।
কি রাজনাথবাবু আপনি অনির কথার প্রতিবাদ করুণ। প্রবীরদার গলায় রাজনীতির ছোঁয়া।
আমি এরকম করতে পারিনা।
তাহলে গলাটা মিথ্যে? ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে পাঠাই। আমি বললাম।
রাজনাথবাবু চুপ।
সঙ্গে সঙ্গে ফোনটা বার করলাম। লক্ষ্মীর ছবিটা বারকরলাম।
প্রবীরদার কেছে গিয়ে বললাম, দেখুন এই মেয়েটাকে আপনারা এতক্ষণ ভিডিওতে দেখেছেন।
ওরা দেখাইনি।
তাহলে এতক্ষণ কি করলেন?
রাজনাথবাবুর কাছে এগিয়ে গেলাম।
দেখুন একে চেনেন।
না চিনি না।
বাঃ এর নথ (বেশ্যা বা বাইজী বাড়িতে একবারে অনকরা মেয়েদের সঙ্গে প্রথম সেক্স) ভাঙলেন আর একে চেনেন না।
না চিনি না।
দামিনীকে চেনেন।
আমার সঙ্গে নোংরা মেয়েদের সম্পর্ক নেই।
দাদা তুমি বাইরে যাও। অমিতাভদার দিকে তাকালাম।
না দাদা থাকুক তুই বল। অনিমেষদা বললো।
আমি টেবিলের ওপর থেকে খামটা নিলাম। গালা খুলে কাগজগুলো বার করলাম। হ্যাঁ সিডিটা আছে। ল্যাপটপটা অন করে আড়াল করে সিডিটা ঢোকালাম। সত্যি মুখার্জী তোমায় হ্যাটস অফ। দারুণ কাজ। হেসে ফেললাম।
কি রাজনাথবাবু দেখবেন নাকি আপনার আর ডাক্তারের ফস্টি নস্টি। আপনি তো নোংরা মেয়েদের সঙ্গে আবার সম্পর্ক রাখেন না।
তোমাকে আমি খুন করে দেব।
সে সময় আপনাকে দেব না। প্রবীরদার দিকে তাকালাম।
প্রবীরদা কিছু বুঝছেন?
প্রবীরদার চোখ মুখ লাল হয়ে গেছে।
আসুন একবার, অনি মিথ্যে কথা বলে কিনা দেখে যান। আর এই কাগজগুলো আপনাকে কালকে জেরক্স দেব। এখানে সরকারী কি কি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে রাজনাথবাবুর এগেনস্টে তা আছে।
অনিমেষদা, বিধানদা আমার মুখের দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে।
অলরেডি একটা কপি পার্লামেন্ট এথিক্স কমিটিতে চলে গেছে। কপি টু স্পিকার এবং প্রাইমিনিস্টার। আর যাকে যাকে পাঠাবার প্রয়োজন, পাঠানো হয়ে গেছে।
রাজনাথবাবুর মুখের দিকে তাকালাম।
কি রাজনাথবাবু এবার আপনার বক্তব্য বলুন?
সবাই আমার মুখের দিকে তাকিয়ে বসে আছে।
কি হলো! সব চুপ চাপ কেন।
তুই সত্যি এগুলো করে দিয়েছিস! অনিমেষদা বললো।
আমি তোমার ওপর বিশ্বাস রাখতে পারিনি। কারণ তুমি একা ডিসিশন মেকার নয়।
একটু থামলাম।
তাহলে একটা বিষয়কে নিয়ে এতক্ষণ মিটিং করতে না।
বিধানবাবু এখুনি সাসপেন্ড করুন না হলে মুখ রক্ষা করা যাবে না। ব্যাকডেটে কাজটা করতে হবে। অনিমেষদা চেঁচিয়ে উঠলেন।
তুই একা করেছিস! প্রবীরদা বললেন।
আমার টিম করেছে। আপনারা যা দেখলেন তাছাড়াও আরও অনেক কিছু আমার কাছে আছে, সেগুলো যথাযথ জায়গায় প্রডিউস করা হয়ে গেছে।
ডাক্তারের দিকে তাকালাম।
শুধু শুধু আপনি রাজনাথবাবুকে ফাঁসালেন। আপনি আমার পারফরমেন্সের ব্যাপারটা আগে থেকে জানতেন।
ডাক্তার আমার দিকে শূন্য দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে।
তবু কেন ওনাকে বলতে গেলেন।
রাজনাথবাবু আপনাকে বাঁচাতে পারলেন না। নিজেও ডুবলেন। এবার আপনি টোডির আশ্রয়ে যাবেন এই তো? ওটা আরও বড় চেইন মিডিল ইস্ট পর্যন্ত। তবে টোডির পাত্তা আপনি আর পাবেন না।
প্রবীরদার দিকে তাকালাম।
প্রবীরদা আপনি আর কিছু জানতে চান।
তুই তো সব এন্ড করে দিয়েছিস।
বাধ্য হয়েছি। আপনি যেন তেন প্রকারে রাজনাথবাবুকে বাঁচাতে চেয়েছিলেন। বলতে পারেন প্রেসার ক্রিয়েট করে।
এটা বাজে কথা বললি। একটু চেঁচিয়ে।
অনিমেষদা, প্রবীরদার দিকে তাকালেন।
গোপাল হালদারের সঙ্গ ত্যাগ করুণ। ও আপনার এ্যারাইভ্যাল পার্টির লিঙ্কম্যান।
আমি জানি।
আপনি আপনার পার্টির গোপন খবর ওর মাধ্যমে বিরোধীদের হাতে তুলে দিচ্ছেন।
কি বলতে চাস তুই!
আপনি এতো উত্তেজিত হচ্ছেন কেন?
তুই দু-জন সিনিয়ার লিডারের সামনে বাজে কথা বলছিস। কান ভাঙাচ্ছিস।
আমি হাসছি।
তুই কি আমাকে রাজনাথবাবু পেয়েছিস?
ওটা আজ থেকে বিধানদা বুঝবেন। আমি পার্টি করিনা। আপনার পার্টির সদস্যপদও আমার নেই।
ফোনটা বেজে উঠলো। দেখলাম লক্ষ্মী। ভয়েজ অন করলাম।
কিগো অনিদা তোমার কাজ হলো। আমার ঘুম পাচ্ছে।
তুই কালকে কার সঙ্গে রাত কাটিয়েছিস?
কেনগো। দুটো এখনও তোমার কাছে আছে।
আরও অনেকে আছেন।
বাবা তাহলে তো ভদ্দরলোক হতে হবে গো।
হ্যাঁ। তোরা দিনের বেলা ভদ্দরলোক নোস। শুধু রাতটুকু ভদ্দরলোক।
লক্ষ্মী খিল খিল করে হেসে উঠলো।
রাজনাথবাবু, প্রবীরদা কট কট করে আমার দিকে তাকিয়ে।
কি রাজনাথবাবু গলাটা চিনতে পারেন। আপনি একে মারার সময় পাবেন না।
ও মারবে কিগো, ওর দুটো কব্জি কেটে বাদ দিয়ে দিয়েছি। তোমার কাছ থেকে শেখা বিদ্যে ভুল হয় কখনো।
ঘুমিয়ে পর।
আচ্ছা গো রাখি।
ফোনটা কেটে দিলাম।
কি প্রবীরদা কিছু শুনলেন।
প্রবীরদার মাথা নিচু।
দেহাতী একটা মেয়ে। বাবার হাত ধরে সুদূর ইউপি থেকে রাজনাথবাবুর কাছে সাহায্য চাইতে এসেছিল। এখন সে রাজনাথবাবুর রাখেল। তাও আবার বিনে পয়সায়।
আগে বাংলা বলতে পারতো না, এখন খুব ভালো বাংলা বলতে পারে। আমরা এদের দয়া করার জন্য উথলে উঠি। সত্যি কি করি! প্রবীরদা?
প্রবীরদার মুখটা ফ্যাকাশে।
ফোনটা বেজে উঠল দেখলাম মিঃ মুখার্জীর।
ধরলাম এবার আর ভয়েজ অন করলাম না।
বলুন।
ওয়ারেন্ট এসে গেছে। আপনার বাড়িতে আছে নাকি?
হ্যাঁ। কিন্তু আমার বাড়ি থেকে এ্যারেস্ট করা যাবে না। আমি বাড়ির বাইরে বার করে দিচ্ছি। আপনি এ্যারেস্ট করতে পারেন।
ঠিক আছে।
ফোনটা কান থেকে নামাতে না নামাতেই….।
কিরে কাকে এ্যারেস্ট করবে? অনিমেষদা হকচকিয়ে গিয়ে আমাকে প্রশ্ন করলো।
রাজনাথবাবু, ডাক্তারকে।
তার মানে! তুই এসব কি করছিস? অনিমেষদা বললো।
আমি বাড়ি থেকে বাইরে বার করে দিচ্ছি। তুমি বুঝে নাও। মিঃ মুখার্জী তার কাজ করেছেন, তোমরা পলিটিক্যালি ওকে রক্ষা করার চেষ্টা করো।
এই মুহূর্তে সেটা সম্ভব নয়!
তুই কি ভাবলি তুই ছাড়া পেয়ে যাবি। প্রবীরদা চেঁচিয়ে উঠলো।
আপনার হাওলাও সাতদিনের মধ্যে রাজনাথবাবুর মতো করে ছেড়ে দেব, দেখতে চান। চেঁচিয়ে উঠলাম।
তুই কি আমাকে ধমকাচ্ছিস?
হাউজিং নিয়ে যে কেলোটা করে রেখেছেন, তার সমস্ত ডকুমেন্টস আমার কাছে। রাজনাথ আপনাকে ফাঁসাতে পারে, তাই আপনি ভয় পাচ্ছেন। লড়বেন আমার সঙ্গে। ঠাণ্ডা গাড়ি চড়া দু-দিনে বন্ধ করে দেব।
কি করছিস কি অনি! ও একজন মন্ত্রী। অনিমেষদা চেঁচিয়ে উঠলো।
পাঁচ বছরের জন্য। তারপর উনি মরে যাবেন? তখন পাবলিকের মার দুনিয়ার বার, এটা মনে রাখবে। আমার হাতে কলমটা রয়েছে। তোমার দেওয়া কলম। ভুলে যাবে না।
তুই থাম। একটু শান্ত হ। বিধানদা বললেন।
আমি বিধানদার কথায় থামলাম না।
কালকে একটা আপনার নামে ঝেড়ে আর্টিক্যাল লিখবো। শুধু কোথায় কোথায় কত টাকার স্ক্যাম করে বসে আছেন। আপনার গদীটা পাওয়ার জন্য যে রেগুলার বিধানদাকে খোঁচাচ্ছে। রেগুলার বিধানদার কান ভাড়ি করার চেষ্টা করছে, আপনার ঘর শত্রু।
তাকে প্রশস্তি করে আর একটা ঝেড়ে লিখবো। আগামী শুক্রবার পার্টি মিটিংয়ে আপনার থোঁতা মুখটা ভোঁতা হয়ে যাবে।
তোর এতোবড়ো ক্ষমতা।
এখনও পুরো দেখেননি, এবার দেখবেন। কতোটাকা মন্ত্রীত্ব করে পান। তিনকোটি টাকা দিয়ে বাড়ি বানিয়েছেন।
অনিমেষদা উঠে এসে আমার মুখটা চেপে ধরলো। তুই থাম।
থামো তুমি। তুমি এখনও একটা স্থায়ী ঠিকানা করতে পারলে না। এখনো ২১ টাকার ভাড়াবাড়িতে থাকো। বিধানদা এখনও দিনের পর দিন পার্টি অফিসে শুয়ে রাত কাটিয়ে দেয়। এরা তিনকোটি টাকা দিয়ে বাড়ি বানায়। টাকা পায় কোথায়?
অনিমেষ ওকে বলতে দাও। এতদিন তুমি আমার কাছে সব চেপে গেছ।
বিধানদা খুব গম্ভীর গলায় বললেন।
না বিধানবাবু এটা পার্টির ভেতরের কথা।
বৌদি দরজা খুলে ঘরে ঢুকলো। চোখ দুটো গণগনে আগুনের কয়লার টুকরো।
ছিঃ ছিঃ ছিঃ একটা দুধের শিশুর কাছে তোমরা নাস্তানাবুদ হয়ে যাচ্ছ।
সুতপা তুমি যাও, আমি দেখছি। অনিমেষদা এগিয়ে গেল।
থামো তুমি, কালকেই তুমি রিজাইন দেবে। বিধানদা পার্টির সিনিয়ার লিডার কে? আপনি না প্রবীর? প্রবীর কতদিন পার্টির মেম্বার হয়েছে।
আমার একটা ছোট্টভুলে….। অনিমেষদা স্বগতোক্তির সুরে বললো।
দু-জনে রক্তজল করে পার্টির সংগঠন তৈরি করলেন। এরা কি মধু খাওয়ার জন্য পার্টি করতে এসেছে। কিরে অনুপ? তুই, রূপায়ণ ভেড়ুয়ার মতো বসে আছিস কেন?
দেখছি প্রবীর কতটা গাছে উঠতে পারে। মই কেড়ে নিতে কতক্ষণ।
আপনারা কি আমায় এই জন্য এখানে নিয়ে এসেছিলেন? প্রবীরদা বলে উঠলো।
অচিন্ত। বিধানদার গলাটা এতো চেঁচামিচির মধ্যেও গম গম করে উঠলো।
হ্যাঁ স্যার।
গাড়ি থেকে আমার কনফিডেন্সিয়াল এ্যাসিসটেন্টকে একবার ডাকো।
ভদ্রলোক ছুটো বেরিয়ে গেলেন। তখন যে দুজন ভদ্রলোক এসেছিলেন তার মধ্যে ইনি একজন। এর নাম তাহলে অচিন্ত?
অনি।
আমি মাথা নিচু করে ফেললাম। আমায় ক্ষমা করুণ দাদা।
তুমি অন্যায় করেছো। তোমাকে শাস্তি পেতে হবে। এই শাস্তি অনিমেষ দেবে না।
ঘরের সবাই চুপ। মিত্রা গেটের মুখে দাঁড়িয়ে, মুখটা ফ্যাকাশে।
ভদ্রলোক ছুটতে ছুটতে এলেন।
স্যার।
একবার চিফ সেক্রেটারিকে ফোনে ধরুন।
হ্যাঁ স্যার।
প্রবীর তুমি এখুনি নিজের হাতে রিজাইন লেটার লেখ। তোমার প্যাডে। কালকে শোকজ লেটারটা তোমার বাড়িতে পাঠিয়ে দেব। পনের দিনের মধ্যে উত্তর দেবে।
স্যার চিফ সেক্রেটারি।
বিধানদা ফোনটা হাতে নিলেন।
হ্যাঁ। আমি বিধানবাবু বলছি।….কালকে থেকে প্রবীরের দপ্তর সিএম দেখবেন, সেই মতো ব্যবস্থা করবেন। আমি সিএমকে বলে দিচ্ছি।
ফোনটা কেটে ভদ্রলোকের হাতে দিলেন।
সিপিকে একটা ফোন করুণ।
আচ্ছা স্যার।
অনিমেষদা হাঁ করে বিধানদার দিকে তাকিয়ে।
গেটের বাইরে বারান্দায় সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখছে।
দাদা, মল্লিকদার মুখ কেমন ফ্যাকাশে।
ভদ্রলোক আবার ফোন করলেন। ঘরে পিন পরলে শব্দ হবে।
রূপায়ণ। বিধানদার গলাটা আবার গম গম করে উঠলো।
বলুন দাদা।
সব নোট ডাউন করেছো?
হ্যাঁ দাদা।
দাও আমি প্রথমে সই করি। তারপর সবাইকে দিয়ে সই করাও। রাজনাথকে দিয়েও সই করিয়ে নাও।
স্যার সিপি ধরেছেন।
বিধানদা ফোনটা হাতে নিলেন।
শুনুন।….আপনি অনি ব্যানার্জীকে চেনেন….চেনেন, বাঃ বেশ বেশ। কালকে থেকে ও কোথায় যাচ্ছে কি করছে অর্থাৎ ওর ওপর একটু নজরদারি করতে হবে। প্রতিদিনকার রিপোর্ট আমার চাই।….কি বললেন….বিধানদা হো হো হো করে হেসে উঠলেন।
আমার দিকে তাকালেন। ফোনের স্পিকারটা চেপে রেখে বললেন।
কিরে, তুই নাকি বাস, অটো, ট্যাক্সিতে ঘুরিস। কোটি টাকার মালিক, একটা গাড়ি কিনতে পারিস না?
ঘরের সবাই এই সিরিয়াস অবস্থাতেও মুখ টিপে হাসছে। গেটের বাইরে দাঁড়ান মিত্রা ফিক করে হেসে ফেললো।
বিধানদা হাসতে হাসতে আবার ফোনটা কানে দিল।
তাহলে কি হবে।….কি বলছেন? চেষ্টা করলেও হবে না। আমার রিপোর্ট চাই।….কি বললেন? আপনার সোর্সরা ওর কাছের লোক। সবাইকে ও হাত করে নিয়েছে। তাহলে….খোল ননচে বদলে ফেলতে হয়।….সে তো বুঝলাম….কি বলছেন! ও কোন অন্যায় কাজ করছে না!….আপনার কথা শুনে মনে হচ্ছে আপনিও ওর প্রতি দুর্বল….ঠিক আছে কাল একবার দেখা করুন।
আমার দিকে তাকিয়ে হেসে ফেললেন। কিরে তোর একটা গাড়ি কেনার পয়সা নেই?
ডাক্তার আর ওর সাঙ্গপাঙ্গদের জন্য ব্যাঙ্কের কাছে কাগজের দেড়শো কোটি টাকা ঋণ। মিত্রার অনেক প্রপার্টি ওরা বেহাত করে নিয়েছে। মিত্রা আমাকে সেই অবস্থায় মালিক বানিয়েছে। গাড়ি কেনার পয়সাটা আমার একজন স্টাফের ছয় মাসের মাইনে।
শুনেছো প্রবীর অনির কথা। তুমি জনসাধারণের পয়সায় এসি গাড়ি চাপছো। সিপি পর্যন্ত স্বীকার করে ফেললো ওর পেছনে লোক লাগিয়ে লাভ হবে না। যাকে লাগাবে তাকেই ও চেনে। তোমায় যদি পার্টির তরফ থেকে দায়িত্ব দিই, তুমি পারবে? হ্যাঁ আর একটা কথা সিপি বলে ফেললেন ও কিন্তু আমাদের প্রশাসনেরও অনেক উপকার করে থাকে। এবার তোমার মতামত।
প্রবীরদা মাথা নিচু করে বসে রইলো।
তাহলে তুমি কি মন্ত্রীত্ব চালাচ্ছ। দশটা লোক নিয়ে কাজ কোরছো। ও একা তোমার ঘেঁটি ধরে নারিয়ে দিয়েছে। সত্যি যদি ও এতক্ষণ মুখে যা বললো সেই সব কীর্তি করে, সামলাতে পারবে।
ঘরের সবাই চুপ, কারুর মুখে কোনও কথা নেই।
বোবা হয়ে বসে থাকলে চলবে না। আমি এতক্ষণ ওর কথা মন দিয়ে শুনেছি। কোনও প্রতিবাদ করিনি। কোনও উত্তর দিই নি। কেন জান? ওপর তলায় থাকি, নিচের তলার সুবিধা অসুবিধার দায়িত্ব তোমাদের ওপর। সেটাও দেখছি ঠিক মত করতে পার না।
মিঃ মুখার্জী ঘরের দোরগোড়ায় এসে দাঁড়ালেন।
একবার ঘরের চারদিকটা মেপে নিলেন। স্যার একটু আসতে পারি। কাকে উদ্দেশ্য করে বললেন, বুঝতে পারলাম না।
অনিমেষদা বললেন, আসুন।
সবাই মিঃ মুখার্জীর দিকে তাকিয়ে আছে।
মিঃ মুখার্জী হাসতে হাসতে ঘরে ঢুকলেন। পেছনে কার্বাইন হাতে তিনজন। চিনতে পারলাম কালকে যারা গেছিল তাদের মধ্যে তিনজন।
আপনি! বিধানদা তাকাল ভদ্রলোকের দিকে।
আমি মিঃ মুখার্জী….। পা জড়ো করে স্যালুট করলেন।
থাক থাক পরিচয় দিতে হবে না। ওয়ারেন্ট এনেছেন?
হ্যাঁ স্যার।
রূপায়ণ।
হ্যাঁ দাদা, সই করিয়ে নিচ্ছি।
রাজনাথবাবুর দিকে একটা খাতা এগিয়ে দিলেন। সই করিয়ে নিলেন।
একবার ওয়ারেন্টটা দেখাতে পারেন।
অবশ্যই স্যার।
মিঃ মুখার্জী একটা কাগজ এগিয়ে দিলেন বিধানদার দিকে।
বিধানদা মন দিয়ে ওয়ারেন্টটা পড়লেন। ভালোই লিখেছেন। দুজনকেই সঙ্গে নেবেন?
হ্যাঁ স্যার।
যান নিয়ে যান।
রাজনাথবাবুর দিকে একবার তাকালেন।
মুখার্জী বাবু।
হ্যাঁ স্যার।
আপনার কাজে বাধা দেব না। একটু ভদ্রভাবে নিয়ে যাবেন।
অবশ্যই স্যার।
মিঃ মুখার্জী আমার দিকে তাকালেন। ইশারায় বাইরে আসতে বললেন।
আমি ওনার পেছন পেছন বেরিয়ে এলাম।
অনিদা বিট হবে। একজন বলে উঠলো।
আমি দাঁতে দাঁত চেপে বললাম।
একটা স্পটও পরবে না, পনের দিন বিছানা ছেড়ে উঠতে পারবে না।
অনিদা আপনার জিনিষ। আর একজন বলে উঠলো।
খামটা হাত থেকে নিয়ে নিলাম। শিল করা।
মিঃ মুখার্জী হাতটা এগিয়ে দিলেন। আমি হাতে হাত রাখলাম।
আমাদের পাশ দিয়ে আর তিনজন দুজনকে নিয়ে চলে গেল। ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে সকলে অবাক হয়ে দেখছে।
পরে দেখা হবে। নিজে আগে বাঁচি।
হাসলাম। ঠিক আছে।
আমি আবার খামটা নিয়ে ঢুকলাম। ছোটোমা, বড়োমা, মিত্রা ঘরের মধ্যে বিধানদার সঙ্গে কথা বলছে। আমি সোজা গিয়ে আলমাড়িটা খুললাম। খামটা তুলে রাখলাম।
কিরে, ওটা আবার কি? বিধানদা বললেন।
এটা আর একটা সম্পদ।
কার রে! অনিমেষদা এগিয়ে এলো।
আমি অনিমেষদার মুখের দিকে তাকালাম।
একটা সত্যি কথা বলবি?
বলো।
মিঃ মুখার্জী একজন সরকারী অফিসার। তুই তাকে যা বলছিস, সে বাধ্য ছেলের মতো তাই করছে। কি অবলিগেশনে তাকে বেঁধে রেখেছিস?
খুব প্রয়োজন আছে জানার।
অনুপদা, রূপায়ণদা হেসে ফেললো। প্রবীরদা গুম হয়ে বসে আছে।
তুই আমাকে আর যন্ত্রণা দিস না।
আবার বলি, আমি নিজে থেকে দেব না। কেউ যদি আমার ক্ষমতার যাচাই করে, তখন তাকে দেখাই। আমি অন্যায় করে থাকলে আমাকে শাস্তি দাও।
মিত্রা। আবার গম গম করে উঠলো বিধানদার গলাটা।
মিত্রা বিধানদার পাশে দাঁড়িয়েও হকচকিয়ে গেলো।
আঁ।
অনি একটা অন্যায় করেছে। ওর শাস্তি কি হতে পারে।
বুবুন কোনও অন্যায় করেনি।
বিধানদা ওর মাথায় হাত রেখে হেসে ফেললো।
তোর এতোটা বিশ্বাস ওর প্রতি।
অবশ্যই। বুবুন যা করে সবার কাছে তা স্বীকার করে।
ঠিক আছে তোমরা এখন যাও। বিধানদা বড়োমাদের দিকে তাকাল।
রূপায়ন, অনুপ, প্রবীর তোমরাও ঘরের বাইরে যাও। আমি অনিমেষ ওর সঙ্গে একটু কথা বলবো।
বিধানদার কথা বলার ঢঙে কেউ আর ঘরে থাকলো না। ঘর থেকে সবাই বেরিয়ে এলো। বিধানদা নিজে গিয়ে ঘরের দরজা বন্ধ করলেন।
চলবে —————————
from বিদ্যুৎ রায় চটি গল্প কালেকশন লিমিটেড https://ift.tt/eZasruX
via BanglaChoti
Comments
Post a Comment