গল্প=০৭৫ আমার প্রেম বিবাহ

গল্প=০৭৫

আমার প্রেম বিবাহ
By- Nadupagla
—————————

মায়ের প্রেম বিবাহ গল্পটি পড়ার পর থেকেই আমার মনে হয়েছে অতো দুর্দান্ত গল্প ওই ভাবে শেষ না হলেই হতো। যেখানে গল্পটি শেষ হয়েছিল সেখান থেকেই শুরু করছি। আশাকরি গল্পটার উপর সুবিচার করতে পারবো।
—————————

এক

মেজোকাকী পরীক্ষার আগে মাঝে মাঝেই ফোন করতো, পিসি একটু কথা বলেই আমাকে ফোন দিয়ে দিত আর মুচকি মুচকি হাসতো। আমি বুঝতে পেরে ফোন নিয়ে ছাদে গিয়ে কথা বলতাম। একদিন মেজকাকী ফোন করলো দুপুরবেলায়, পিসি ঘুমাচ্ছিল আর পিসির ছেলে বাপ্পা স্কুল গেছিলো। ফোনটা দুবার বাজার পর আমি গিয়ে ধরলাম। আমি কিছু বলার আগেই মেজকাকী বলে উঠলো “দিদি এত দেরী হলো কেন ফোন ধরতে? কখন থেকে রিং বেজে যাচ্ছে।” গলায় বেশ ঝাঁঝ ছিল মেজোকাকীর।
আমি একটু গলা ঝেড়ে বললাম “পিসি ঘুমোচ্ছে, ডেকে দেবো?”
“না থাক, তুই কি করছিলি?”
“আমি পড়ছিলাম, আর কদিন পরেই তো পরীক্ষা।”
“আচ্ছা, তোর কি পড়ার খুব চাপ?”
“না চাপ নেই, সিলেবাস শেষ হয়ে গেছে, এখন রিভাইজ করছি রোজ। আর ঘড়ি ধরে টেস্ট পেপার সলভ করছি।”
“শোন, তোর সাথে আমার অনেক কথা আছে, কাল রোববার একটু দেখা করতে পারবি?” কাকীর গলাটা কেমন যেন অন্যরকম শোনালো।
আমি জানতাম কাকী বাড়ীর বাইরে কেন দেখা করতে চায়। আসলে কাকী আমার মাকে আমার সঙ্গে বিয়ের সম্মতি দেবার পর থেকেই আমার সঙ্গে কথাবার্তায় সহজ হতে পারছিল না হয়তো একটু নিরিবিলিতে দেখা করে নিজস্ব জড়তা কাটাতে চায়। তবু আমি না বোঝার ভান করে বললাম, “তুমি কি তোমার ওখান থেকে পিসির বাড়ী আসবে? আমার কিন্তু যাওয়া চাপ তোমার বাপের বাড়ী।”
“ধুর আমি তোর সঙ্গে আলাদা দেখা করতে চাই।” আশাহত গলায় কাকী বলে উঠলো।
“কোথায় দেখা করবে?”
“তুই এক কাজকর কাল দুপুরে ট্রেনে করে কলকাতা চলে আয়, আমিও এখন থেকে চলে যাবো। একা একা পারবি তো? আর কেউ যেন না জানতে পারে।” কাকীর গলায় খুব উৎসাহ।
“কাল দুপুরে!” একটু থেমে ফের বললাম “বেশ কাল টেস্ট পেপার আনতে যাবার নাম করে বেরোবো। এমনিই কলকাতা যেতে হতো, রায় মার্টিনের টেস্ট পেপার এখানে আসেনি এখনো। তা কোথায় দেখা করবে?”
“তুই হাওড়া স্টেশনে নেমে বড় ঘড়ির নীচে দাঁড়াবি। আমি ঠিক পৌঁছে যাবো। আর শোন আমার নাম্বারটা টুকে রাখ, দরকারে কোথাও থেকে ফোন করে নিস।”
“ঠিক আছে, আমি পড়তে যাবো, রাখছি।” বলে আমি রাখতে যাওয়ার আগেই কাকী বলে উঠলো “তোর সাথে অনেক কথা আছে টুকুন, আমাদের সম্পর্কটা বদলে যাবে তার আগে আমাদের তৈরী হতে হবে।”
আমার কেমন যেন ঠেকলো এদিকে আমার বাঁড়া মহারাজ আস্তে আস্তে ফণা তুলতে শুরু করলো, আমি শুধু বললাম “হুঁ।”
“কি হুঁ? বুঝতে পারছিস আমি কি বলছি? আমার তোর উপর অনেক আশা বাবু। ভালো করে পড়াশোনা কর, আমাদের সংসার…..” বলেই চুপ করে গেল মেজোকাকী।
আমারও খুব কথা বলতে ইচ্ছা করছিল কিন্তু কার যেনো পায়ের আওয়াজ পেলাম পাশের ঘরে, বোধহয় পিসি উঠে পড়েছে, তাই তড়িঘড়ি “রাখছি” বলেই ফোন কেটে দিলাম। ফোন কেটে রিসিভ কলে গিয়ে কাকীর নাম্বার ডিলিট করে ফোন রেখে আমি যে ঘরে থাকি সেখানে চলে গেলাম।

বিকেলে আমি পাশের মাঠে গিয়ে দাঁড়াই রোজ, বাপ্পারা ফুটবল, ক্রিকেট খেলে, আমি দেখি। কোনো কোনোদিন অন্য পাড়ার সঙ্গে ম্যাচ হলে বাপ্পা খেলতে ডাকে। আমার মন খারাপ হয়ে যায়। আমাদের বাড়ীর কথা মনে পড়ে, মায়ের কথা, বঙ্কুর কথা, ইস্কুল মাঠে বীরপাড়ার সঙ্গে ম্যাচে এখানে আসার তিন দিন আগেও ২ গোল মেরেছিলাম। আজকে আর মন খারাপ করছিল না। একটা অদ্ভুত মিষ্টি ভালোলাগা আর অনুরাগের অনুভূতি হচ্ছিল। কাকী ফোন করার পর থেকেই এরকম হচ্ছিল। আজ বোধহয় সারারাত ঘুম আসবে না। একবার বঙ্কুকে ফোন করলে হতো আহা এই সময় নিজের ফোন থাকলে মেজোকাকী আর বঙ্কুর সঙ্গে কথা বলা যেত।কাল প্রথম লুকিয়ে ডেটিংএ যাবো আর সেটাই বঙ্কুকে জানাতে পারবো না! ভেবে খারাপ লাগছিলো। এখান বাড়ী ও যাওয়া যাবে না, ১১ দিন পর মাধ্যমিক। ভাবতে ভাবতে মাঠের ধারের ছাতিম গাছটার নীচে গিয়ে দাঁড়ালাম। আচ্ছা মা আর ছোটকা কি করছে এখন, নিশ্চই মাকে চটকাচ্ছে, মায়ের এখন সাত মাস, নিশ্চয়ই লাগাতে না পেরে পাগল হয়ে যাচ্ছে ছোটকা! যাক গে, মা এখন ছোটকার বিয়ে করা বউ। মা আমাকেও ভুলে যায়নি নতুন সংসার পেয়ে, আমার প্রতি দায়িত্ব বুঝে আমার ভবিষ্যৎ চিন্তা করে মেজো কাকীকে রাজি করিয়েছে। মায়ের প্রতি খারাপ লাগাটা অনেক কমে গেছে। নিজেকে অনেক পরিণত মনে হচ্ছে।

হাওড়া স্টেশনে নেমে প্রথমে চমকে গেলাম আমি, লোক আর লোক, লোকে লোকারণ্য, একটার পর একটা ট্রেন আসছে আর যাচ্ছে। এর আগে আমি একবারই কলকাতা এসেছি, মেজকাকার বিয়ের বাজার করতে, আমি মা আর ঠাকুমা। ইশ বঙ্কুটা যদি সঙ্গে থাকতো কত ভালো হতো। আমি বড় ঘড়ি কোথায় জানি না, একটা কুলি কে জিজ্ঞাসা করতেই দেখিয়ে দিলো। আমি পিসিকে বলে এসেছি বই কিনতে যাচ্ছি, ফেরার অঙ্ক স্যার এর বাড়ী হয়ে আসবো, ৪-৫ ঘন্টা লাগবে। কলকাতা বললে আসতেই দিতো না।
বড় ঘড়ির নীচে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলাম, সামনে একটা টিভিতে শুধু এড চলছিল আমি তন্ময় হয়ে দেখছিলাম। কাল সারারাত ঘুম হয়নি। একটা চাপা উত্তেজনা ছিল। মনে হচ্ছিল কখন কাকীর সঙ্গে দেখা হবে, কি বলবো, কোথায় কোথায় যাবো এই সব ভাবছিলাম খালি।
“টুকুন এই টুকুন” একটা মেয়েলি আওয়াজে আমার হুশ ফিরলো। ঘুরে দেখি কাকী দাঁড়িয়ে। একটা সবুজ শাড়ি আর ম্যাচিং ব্লাউজ পড়েছে। বুকদুটো যেন ফেটে বেড়িয়ে আসতে চাইছে, পাছাটাও বেশ মোটা। খুব সুন্দর লাগছিলো কাকী কে। কতই বা বয়স, ২৭-২৮, এর মধ্যেই বিধবা বেচারী। এক দৃষ্টে তাকিয়ে ছিলাম মুখের দিকে। কাকী বুঝতে পেরে যেন লজ্জা পেলো, একটু হেসে মুখ নামিয়ে নিলো। আমিই হেসে জিজ্ঞাসা করলাম, “কেমন আছো?”
“ভালো আছি, তুই কেমন আছিস?”
“আমিও ভালো আছি।”
“এখানে এত ভিড়ে কথা বলা যাবে না। চল ভিক্টরিয়া যাবো, কতদিন যাইনি, সেই ইস্কুলে পড়ার সময় মামার বাড়ী আসতাম তখন গেছি।”

দুই
মনে পড়ে গেল কাকীর মামার বাড়ী। আমি কিছুই জানি না কলকাতার তাই “হুঁ” বলে কাকীর পিছনে পিছনে চলতে লাগলাম। কাকী বেড়িয়ে এসে একটা ট্যাক্সি ধরলো হলুদ ট্যাক্সি। ঢুকেই বললো “ভিক্টরিয়া, মিটারে যাবো।” আমি তো শুনে থ, কাকী এ সব জানে কিভাবে? মেজোকাকা বেঁচে থাকার সময় ঠাকুমার সঙ্গে রোজ ঝগড়া করতো কাকী। তবে মাকে খুব ভালোবাসতো, মাও ঝুমা বলতে পাগল ছিল। ঠিক দুই বোনের মতো। আমার হাসি পেলো, কদিন পড়েই কাকী মার বৌমা হবে।
“কিরে হাসছিস কেন?” কাকী জিজ্ঞাসা করলো।
আমরা পাশাপাশি বসেছিলাম, আমি একটু জানলার দিকে সরে বসে বললাম “এমনি।” ট্যাক্সি হাওড়া ব্রিজ পেরোচ্ছিলো। দুজনের মধ্যেই জড়তা ছিল, টুকটাক কথা হচ্ছিল। গাড়ীটা কিছুক্ষনের মধ্যেই ভিক্টরিয়ার সামনে নামিয়ে দিল। কাকী পয়সা মিটিয়ে দিলো। একে রোববার তার উপর শেষ শীতের নরম রোদ, ভিক্টরিয়ার নীচে যেন মিলনমেলা লেগেছে। জোড়ায় জোড়ায় বসে আছে প্রচুর লোক। আমরা হাঁটতে হাঁটতে গিয়ে নিরিবিলি দেখে এক যায়গায় বসলাম।
আমি বললাম “কাকী তুমি কলকাতার এত সব কি করে জানলে?”
কাকী ঝাঁজিয়ে উঠে বললো “আ মরণ, কাল বাদ পরশু যার সঙ্গে বিয়ে হবে তাকে কাকী কাকী করছে দেখো।”
আমি থতমত খেয়ে বললাম “এতদিন তো তাই ডাকতুম, তুমিই বলো কি বলে ডাকবো।”
“জানিস টুকুন মানুষের কত ইচ্ছা থাকে, আমারও ছিল কিন্তু পোড়ার কপাল ২০ না পেরোতেই বাবা বিয়ে দিলো একটা গ্রামের চাষীর সঙ্গে। যাও বা সংসার হলো সেটাও গেল ২৫ না পেরোতেই। সব কপাল।” ধরা গলায় বললো কাকী।
আমিও আবেগে বলে উঠলাম “আমি তোমার সব শখ পূরণ করবো কাকী।”
“প্লিজ কাকী বলিস না, অন্য যা খুশী বল”
“তাহলে তোমায় আমি নাম ধরে ডাকবো, মায়ের সামনে লজ্জা লাগবে, বাড়ীতে ডাকবো না।”
“তোর মা-ই তো চায় আমাদের বিয়ে, দিদি তো জোয়ান নাগর পেয়ে খুব আমোদে, ৯ মাস বিয়ের মধ্যেই ৭ মাসের পোয়াতি।” বলে ফিক করে হাসলো কাকী। তারপর আবার বললো “তুই আমাকে একটু সুখ দিস টুকুন, আমি তোর সঙ্গে গাছতলাতেও থাকতে রাজী যদি তুই একটু সুখ দিস।”
“আমি তোমাকে রানী বানিয়ে রাখবো ঝুমা।” আবেগ মথিত গলায় বললাম।
“খুব পাকা হয়েছিস না!” কাকীর গলায় যেন রাজ্যের লজ্জা।
আমি সাহস করে কাকীর হাতে হাত রাখলাম, কাকী হাতটা সরিয়ে নিতে গিয়েও নিলো না, লজ্জায় ফর্সা মুখটা যেন রাঙা হয়ে গেল। দূরে একটা জোড়া বসে চুমু খাচ্ছিল, সেই দিকে তাকাতেই কাকী বললো “ওদিকে দেখিস না আমার লজ্জা লাগে।”
আমি সুযোগ পেয়েই বললাম “কদিন পরে আমি তোমার স্বামী হবো আর তুমি কি আমায় তুই করে বলবে?”
“ধ্যাৎ এখন লজ্জা লাগে, তুমি করেই বলবো।” বলে মুখ ঘুরিয়ে নিলো।
“ঝুমা তুমি না খুব সুন্দর লাগছো।” আমি হাতে চাপ দিলাম।
“ধ্যাৎ, আমি বুড়ি হয়ে গেছি, তুমিও অনেক হ্যান্ডসাম লাগছো।” আমার বুকের বাঁ দিকটা চিনচিন করে উঠলো। এই প্রথম আমায় কাকী তুমি করে বললো, আমাকে এই কাকীই সাবান মাখিয়ে স্নান করিয়ে দিতো, ইস্কুলের ড্রেস পড়িয়ে দিতো একদিন। বললাম “আমরা আবার কবে দেখা করবো?”
“তোর পরীক্ষা হয়ে যাক, তারপর তুই ও বাড়ীতে চলে যাস, আমিও ওখানেই ফিরবো। তখন দেখা হবে। তার আগে ভালো করে পরীক্ষা দে। তোর পরীক্ষা তো শুধু তোর নয় আমারও যে।” কাকী আবার তুইতে ফিরে গেল।
“আমি পড়তে চাই। বিয়ের পরেও, আমি চাকরী করবো, চাষবাস আমার দ্বারা হবে না।”
“আমিও তাই চাই, তোমার আমার সংসার হবে, বড়দি আর তোর ছোটকাও থাকবে।”
“মা তোমার শাশুড়ি হবে আর ছোটকা শ্বশুর।”
“ধ্যাৎ” বলে কাকী আবার অন্য দিকে মুখ ফেরালো।
আমি এই সুযোগে আরো ঘনিষ্ঠ হয়ে বসে, কাকীর হাতটা আরো কোলে টেনে নিলাম। কাকী যেন শিউরে উঠলো। একটু নীরবতার পরে বললো “ছাড়ো না। চলো উঠতে হবে আমার কাছে যা আছে তাই দিয়ে কিছু খেয়ে নিয়ে ফিরতে হবে, আমি কিন্তু মিথ্যা বলে এসেছি।”
“আর একটু বসি, এখন আড়াইটে বাজছে, ৩.৪৫ এর ট্রেনটা ধরলে আরামসে পৌঁছে যাবো সাড়ে পাঁচটার আগে। তোমার সঙ্গে থাকতে আমার ভালো লাগছে ঝুমা।”
“আমারও” বলে ফিক করে হেসে ফেললো কাকী।
আমরা একটু বসে, ঝালমুড়ি খেলাম। নিজেকে অনেক বড় মনে হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল কোনো ঝড় ঝাপটা জীবনে কাকীকে সহ্য করতে দেবো না। সব আমি সামলে নিয়ে আমার ঝুমাকে একটা সুখের জীবন উপহার দেবো। এই সব ভাবতে ভাবতে লঞ্চ ঘাট অবধি পৌঁছে গেলাম দুজনে। লঞ্চে আমি আগেও চেপেছি আমাদের গ্রামের নদীতে। লঞ্চে কাকী বেশ ঘনিষ্ঠ হয়ে বসেছিল। হটাৎ “এই যা, ভুলেই গেছি।” বলে জিভ কেটে একটা মোবাইল বের করলো, মেজোকাকার পুরোনো মোবাইলটা, আর কানের কাছে ফিসফিস করে বললো, “যখন তোমার আমার কথা খুব মনে পড়বে তখন ফোন করবে, আমিও করবো, কিন্তু লুকিয়ে রেখো, তোমার পিসি দেখতে পেলে লজ্জার শেষ থাকবে না। আর এই নাও, ৫০০ টাকা, দরকার পড়লে বোলো আরো দেবো। শুধু ভালো করে পড়াশোনা কোরো। তোমাকে ভালো রেজাল্ট করতেই হবে।” আমি মোবাইলটা নিলেও টাকাটা ফিরিয়ে দিচ্ছিলাম। নিজের হবু বউএর থেকে টাকা নিতে সম্মানে লাগছিলো।
কাকী বললো “সময় আসলে সুদে আসলে ফেরৎ দিয়ো। তোমাকে দিতে হবে না আমিই নিয়ে নেবো।”
মনে হলো বিশ্বের সবচেয়ে সেরা মেয়েটা আমার বৌ। নিজেকে রাজা রাজা মনে হচ্ছিল।

কাকী স্টেশনে নেমে আমায় ট্রেনে তুলে দিয়ে তারপর নিজের ট্রেন ধরতে চলে গেল। চলে যাওয়ার সময় চোখ চিকচিক করছিল কি? বুঝতে পারলাম না।

ট্রেনে বসে আমার বারবার মনে হচ্ছিল, আমি কি মেজো কাকীর প্রেমে পড়লাম। মোবাইলটা বের করে বুক পকেটে রাখলাম। আমার ঝুমা দিয়েছে, আমার একান্ত আপন ঝুমা।

সারা রাস্তা আমার মেজো কাকীর কথা মনে হচ্ছিল। ওই রকম একটু চাপা কিন্তু উজ্জ্বল গায়ের রং, কমলালেবুর কোয়ার মতো ঠোঁট, মসৃণ ত্বক ইত্যাদি সবকিছু। বিকেলে পিসির বাড়ি ফিরতেই বাপ্পা হইহই করে ছুটে এলো , “টুকুনদা তুই থাকলেই আজ জিতে যেতাম, নবদের ল্যাটা বোলারটা পাঁচ উইকেট নিয়ে নিলো একাই।” আমি হ্যাঁ হু করে পাশ কাটালাম। রাত্রে খাওয়ার সময় মনে পড়লো রায় মার্টিনের টেস্ট পেপারটাই আনা হয়নি। পিসেমশাই জিজ্ঞাসা করলে কি উত্তর দেবো, ভাবতে ভাবতে ভয় লেগে গেল। আরো একটা অসুবিধা হয়েছে মেজোকাকী মোবাইল দিয়েছে কিন্তু চার্জার দেয়নি, কালকেই মোড়ের দোকান থেকে কিনতে হবে, কিন্তু নিজে কিনলে পিসেমশাইকে মোবাইলের দোকানের কাকুটা বলে দিতে পারে। অনেক ভেবে একটা ফন্দী বের করলাম, বঙ্কুর সাথে কথা বলে ওকে দিয়ে কিনিয়ে ইস্কুলে নিয়ে আসতে বলতে হবে।

তিন
আমি অনেক রাত অবধি পড়ি, এখন ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ বেশ ভালোই ঠান্ডা আছে। রাত্রে খাওয়ার পর খালি মনে হচ্ছিল কখন আমার মেজোকাকীর সঙ্গে কথা বলবো। বাপ্পাটা বসে বসে হেজাচ্ছিলো আর আমার রাগ ধরছিলো। খাওয়া দাওয়ার পর পিসিরা শুতে গেল, বাপ্পাও গেল। আমি ঘরটা বন্ধ করে মোবাইলটা অন করলাম, অন করে দেখলাম ফুল চার্জ আর মোবাইলে একটাই নম্বর সেভ করা, লেখা ঝুমা। ১৫-২০ মিনিট পরে আমি ফোন করলাম মেজোকাকীকে। কাকী ও বোধহয় ঘুমোতে পারছিল না, এক রিঙেই তুললো।
হ্যালো’ আমি মৃদুস্বরে বললাম।
ওদিক থেকে কাকী বললো “হ্যালো।”
“তুমি কি কথা বলতে পারবে? ”
“হ্যাঁ অসুবিধা নেই, তোমার খাওয়া হয়েছে?”
আমাকে প্রথম থেকেই আজ তুমি বলতে শুরু করলো কাকী।
“হ্যাঁ অনেক্ষন, তুমি খেয়েছো?”
“হুঁ খেয়েছি।”
কিছুক্ষন চুপ থাকার পর আবার বললো, “তোমাকে চার্জার দিতে ভুলে গেছি, তিনবার ফোন করেছি কিন্তু সুইচ অফ ছিল।”
“হ্যাঁ, আমি সুইচ অফ রেখেছি, কে জানতে পেরে যাবে, আর আমি কাল বঙ্কু কে ফোন করে চার্জারের ব্যবস্থা করে ফেলবো।”
“বাড়ী আসার পর থেকে চিন্তা হচ্ছিল তোমার জন্য, ঠিক পৌঁছালে কিনা?”
“অরে কাকী আমি কি এখনো সেই ছোট আছি নাকি?” বলেই বুঝলাম ভুল করে ফেলেছি।
কাকী একটু হেসে ফেললো বুঝতে পারলাম, তারপর বললো “ছোটই তো, না হলে ভাতার কোনোদিন তার হবু বৌ কে কাকী বলে?”
“না না, অভ্যেস নেই তো তাই।” তারপর কথা ঘোরাতে বললাম “আমার আজকের দিনটা খুব ভালো লেগেছে।”
কাকীমা যেন লজ্জা পেলো তারপর ফিসফিস করে বললো “আমারও।”
আমাদের মধ্যে লজ্জার আগলটা আস্তে আস্তে ভাঙছিলো। সেই কাকী যে একটু জমির জন্য কাকার মৃত্যুর পর ঠাকুমার সঙ্গে ঝগড়া করে বাপের বাড়ী গেছিলো, সেই কাকী যে আমাকে চান করিয়ে দিত, জামা প্যান্ট পড়িয়ে দিতো, আজ সেই কাকী আমাকে সন্মান দিয়ে তুমি করে কথা বলছে, কাল আমার বৌ হবে, আমাকে ভালোবাসবে।
“আবার কবে দেখা হবে ঝুমা। তোমাকে দেখতে খুব ইচ্ছে করছে” আমি ব্যাকুল গলায় বললাম।
“আমি কি পালিয়ে যাচ্ছি নাকি? আমি তো তোমার সঙ্গেই আছি তো, তুমি ভালো করে পড়াশোনা করো বাবু তোমার যে অনেক দায়িত্ত্ব।”
“আমি জানি, তোমাকে আজ খুব সুন্দর লাগছিলো। বারবার দেখতে ইচ্ছে করছিল।”
“চাইলে এক্ষুনি দেখতে পাবে” বলে হেসে ফেললো কাকী।
“কি ভাবে?” আমি চমকে জিজ্ঞাসা করলাম।
“হোয়াটস এপ লোড করে দিয়েছি। নেট টা অন করে কল করো।”
আমি তড়িঘড়ি ফোন কেটে ওয়াটস এপ খুলে কাকীকে কল করলাম। এবারেও এক রিংয়েই ফোন তুললো কাকী। বিছানায় আধশোয়া হয়ে ছিল। একটা সাদা রঙের নাইটি পড়ে। আমাকে দেখে হাসলো, আমিও হাসলাম। অনেক্ষন সাংসারিক, পড়াশোনা ইত্যাদির কথা বলার পর আমি কাকী কে বললাম “আমি পড়তে বসবো এখন রাখি। আবার কালকে রাত্রে ফোন করবো।”
“হ্যাঁ রাখছি তাহলে।”
“আই লাভ ইউ সোনা।” শুনেই কাকীর ফোনটা নড়ে উঠলো, একটু থমকে গেল, আমি লাইটের আলোতেও স্পষ্ট বুঝতে পারলাম লজ্জায় লাল হয়ে উঠলো কাকীর মুখ। বেশ কিছু মুহূর্ত পর “রাখছি” বলে ফোন কেটে দিলো।
আমি জানি কাকীর বুকে এখন কেউ হাতুড়ি পিটাচ্ছে, হাজার হাজার ঘন্টা বাজছে সারা রাত কাকী ঘুমোতে পারবে না। আমিও পারবো কিনা জানি না!

সকালে বেশ দেরী করেই ঘুম ভাঙলো, কাল অনেক রাত্তির অবধি পড়েছি। দায়িত্ব নিতে হবে, ঝুমার দায়িত্ব, আর সেটা নিতে গেলে আমায় যোগ্য হতে হবে। আমার হাতে মাত্র কটা বছর সময় আছে। আমি দুপুরে ঘরের দরজা বন্ধ করে বঙ্কুকে ফোন করে, একটা চার্জার কিনে কাল ইস্কুল আসতে বললাম, কাল ইস্কুল যাবো এডমিট আনতে। সবাই নিয়ে নিয়েছে কিন্তু আমি এতদূর থেকে যেতে হবে বলে যেতে পারিনি। বঙ্কুকে সব কিছু বলিনি, দেখা হলে বলবো শুধু বলেছি কাকী দিয়েছে। বঙ্কু বললো “দোস্ত, তোর কাকী ডবকা জিনিষ, চুমু ফুমু খেয়ে, টিপে টুপে সেট করে নে, উফফফ, কাল আমি তোদের বাড়ী গেছিলাম তোর মায়ের বিশাল পেট ফুলেছে। আমার মা বলছিলো নমিতা বৌদির বোধহয় যমজ হবে। পিকুদার যা আনন্দ না ভাই কি বলবো তোকে, বুকে দুধ এলে ভাগ পাবে।” আমি থামিয়ে দিলাম, তারপর ফোন কাটলাম। সারাদিন পড়লাম, বিকেলে মাঠে দাঁড়িয়ে ভাবলুম ফোন করবো কিন্তু বাপ্পাটা ছাড়লো না পিছু কিছুতেই। আবার রাতের অপেক্ষা, আমার ঝুমাকে আরেকটু আপন করার, আরেকটু চেনার, আরেকটু ভালোবাসার।

রাত্রে খেতে বসে পিসি জিজ্ঞাসা করলো “টুকুন তোর মায়ের সঙ্গে কথা বলে নিস, তোর মা বলছিলো ছেলের এখনো অনেক অভিমান জমে আছে।” আমি হ্যাঁ হুঁ করে খেয়ে নিলাম। আমার তখন মায়ের সঙ্গে কথা বলার কোনো ইচ্ছাই ছিল না। আগে কাকীর সঙ্গে কথা বলতে হবে, সেও নিশ্চই তরপাচ্ছে আমার মতোই। গত দুদিন আগে পর্যন্ত আমি মেজো কাকীর সঙ্গে কথা বলতে লজ্জা পেতাম কিন্তু এখন উৎসুক হয়ে পড়ছি, হাসি পেলো।

চার
খাওয়া হতেই ঘরে গিয়ে খিল দিয়ে ভৌত বিজ্ঞান নিয়ে বসলাম, এক ঘন্টা পড়ার পর মোবাইল অন করে দেখলাম তিনটে টাওয়ার বেঁচে আছে। কাকীকে ওয়াটস এপ এ ভিডিও কল করলাম। কাকী তুললো না দুবার রিং হবার পরেও। মনটা খুঁত খুঁত করছিল, পড়ায় মন দেবার চেষ্টা করলাম কিন্তু কিছুতেই মন বসাতে পারছিলাম না। একটু একটু ক্ষোভ বা অভিমান ও জমা হচ্ছিল মনে। প্রায় দেড় ঘন্টা পরে মোবাইলে একটা মেসেজ ঢুকলো, ওয়াটস এপ খুলে দেখি মেজো কাকীর মেসেজ,
কল করতে পারি?
আমি কোনো জবাব দিলাম না কিন্তু কাকী বুঝতে পারবে আমি মেসেজ পড়েছি। ৫-১০ মিনিট অপেক্ষার পর কাকীর বোধহয় ধর্য্যের বাঁধ ভাঙলো। ভিডিও কল এলো, তুললাম, কাকী একটা গোলগলা টপ আর স্কার্ট পড়েছিল, দেখে মনে হচ্ছিল স্কুলে পড়া মেয়ে।
“কি করছিলে?” জিজ্ঞাসা করলো
আমি একটু রাগী গলায় বললাম “পড়ছিলাম।”
কাকী বুঝতে পেরে বললো “আমি মা বাবার ঘরে ছিলাম, বুঝতে পারিনি তুমি কল করেছিলে।”
“হ্যাঁ তা বুঝবে কি করে? সব ভালোবাসার দায় দায়িত্ব তো আমার।”
কাকী এবার মিষ্টি হেসে বললো “ওলে বাবারে আমার কচি বাবুটার রাগ হয়েছে বুঝি? রাগ করে না সোনা” বলেই থেমে গেল কাকী, বুঝতে পারলো, লজ্জার আগল ভেঙে অনেকটা এগিয়ে গেছে ও।
“না আমি রাগ করিনি, কিন্তু তুমি ফোন না তুললে যে আমার ভালো লাগে না।” আমি বললাম।
“সরি বাবা, কান ধরছি আর কোনোদিন করবো না।”
আমি কাকীর কান্ড দেখে হেসে ফেললাম, “আমার সোনাটা কি করেছে সারাদিন।” আমি আদুরে গলায় বললাম।
“বাড়ির কাজ করেছি, রান্না করেছি, খেয়েছি, মা বাবার সেবা করেছি।” হেসে বললো কাকী। তারপর একটু থেমে বললো “তুমি কি করেছ বাবু?”
“আমি?”
“হুঁ”
“আমি আমার সোনাকে শুধু মিস করেছি সারাদিন।”
“যাঃ শুধু মিথ্যা কথা।”
“না ঝুমু সোনা আমি তোমাকে সারাদিন মিস করেছি।”
“উমম।”
“তোমাকে টপ আর স্কার্টে দেখতে পরীর মতো লাগছে।”
“যাঃ আমার রং কি বড়দির মতো ফর্সা নাকি? আমি তো কালো, পরী কোনোদিন কালো হয় নাকি।”
“কে বলেছে তুমি কালো? তুমি আমার চোখে সবচেয়ে সুন্দরী। আমার সোনা, আমার ঝুমু।” আমি গলায় অনেক সোহাগ এনে বললাম। কাকী অনেক্ষন চুপ করে শুধু আমাকে দেখলো, দেখতেই থাকলো, আমিও তন্ময় হয়ে দেখছিলাম। ওই চোখ ওই ঠোঁট ওই বুক, ওই মসৃন ত্বক। কিছুক্ষন পরে কাকী বললো “আমায় আজ বড়দি ফোন করেছিল, তুমি কথা বলো না বলে খুব দুঃখে আছে।”
“আমি তোমার কে হই?”
“ধ্যাৎ জানি না যাও।”
“বলো না ঝুমু।”
“আমি বলতে পারবো না, লজ্জা লাগে।” বলে লজ্জায় মুখ ঘুরিয়ে নিল।
“না বললে আমি রাখছি।” আমার জেদ চেপে গেল।
“তুমি না খুব দুস্টু হয়ে যাচ্ছ, তুমি আমার কচি বর, হয়েছে!” কাকী ফিক করে হেসে ফেললো।
“তাহলে আমার মা তোমার বড়দি কি ভাবে হয়?” আমি চোখ নাচিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম।
“এই যা, যখন আমাদের বিয়ে হবে তারপর আমি মা বলবো, তার আগে আমার বড়দিই থাকবে।” বলে লাজুক হাসলো ঝুমা।
“সোনা, আমার মোবাইলের শেষ, কাল বঙ্কু চার্জার আনবে, কাল কথা হবে।”
“বেশ, তুমি পড়ছো তো ঠিক করে সোনাই?” আমার ঝুমা এই প্রথম আমাকে আদরের নামে ডাকলো।
“হ্যাঁ আমি পড়ছি, শুধু আমার জন্য নয় আমার ঝুমুর জন্যেও।” আদর মিশ্রিত সোহাগে বললাম।
“উম গুড নাইট।”
“আমাকে একটা হামি দাও ঝুমু।”
“ধ্যাৎ দুস্টুমি কোরো না সোনাই।”
“দাও না প্লীজ।”
“না আমার লজ্জা লাগে।”
“বেশ রাখছি।”
“উফফ এই ছেলেটাকে নিয়ে পারা যায় না। প্লীজ বোঝো আমার সময় লাগবে, ওই সময়টুকু দাও।” ঝুমা পুরো মিনতির সুরে বললো।
“ওকে বাবা, তোমার যখন ইচ্ছে দিয়ো, আই লাভ ইউ।”
ঝুমা চুপ করে ফোনটা কাছে টেনে নিয়ে আস্তে করে বললো, “লাভ ইউ সোনাই।” তারপরেই ফোনটা কেটে দিলো। আমার বুকে তখন বিসমিল্লা খানের সানাই বাজছে, মনে হচ্ছে বুকটা ফাঁকা ফাঁকা, মা আর ঝুমার বাবা আমাদের মধ্যে যে সম্পর্কটা চেয়েছে সেটা পূর্ণতা পাচ্ছে ধীরে ধীরে। এ ভালোবাসায় কামনা হয়তো আছে কিন্তু সেটা অনেক পরে, সবার আগে আছে মিষ্টি সরল পবিত্র ভালোবাসা।

অনেকদিন পর আজ ইস্কুলে গেলাম, বঙ্কুর সঙ্গে দেখা হলো এডমিট নিয়ে বেরোবার সময়। আমাকে দেখেই বললো “দোস্ত চল মাঠে গিয়ে বসি, অনেক কথা আছে।” আমরা মাঠে গিয়ে বসলাম।

পাঁচ
ও ওর ব্যাগ থেকে একটা নতুন চার্জার বের করে দিলো, বললো “২৫০টাকা নিয়েছে, তুই আমাকে পরে দিস।” ও জানে আমি বাড়িতে থাকি না তাই হয়তো দাম এখনই নিতে চাইছিলো না। আমি হেসে ব্যাগ থেকে টাকা বের করে ওর হাতে দিলাম। ও আমাকে জিজ্ঞাসা করলো “কি রে নমিতা বৌদি টাকা পাঠিয়েছে নাকি?”
“আরে না রে ভাই, আমার কাছে ছিল।”
“বালটা আমাকেও লুকাতে শুরু করেছিস!”
“ঝুমা দিয়েছে।”
“আরে জিও গুরু আমার এখনো হ্যান্ডেল মেরে দিন কাটে আর তুমি শালা মাছ ছিপে গেঁথে ফেলেছো?”
একটু থেমে আবার বললো, “কবে দেখা করলি?”
“দুদিন আগে।”
“কোথায়?”
“কলকাতা”
“ওরে না, ওরে না, ভাই আমার ছোট খাটো স্টেশন ধরছে না। ওদিকে মা নিজের কচি নাগরের সামনে কাপড় তুলে সুখ নিচ্ছে আর এদিকে ছেলে ডবকা কাকীমাকে তুলে নিয়েছে। তা কবে? আর কি করে গেলি?”
“ঝুমাই প্ল্যান করলো, দুদিন আগে, রোববার। ওই ফোনটা দিয়েছে। ট্রেনেই গেছিলাম।”
“কি করলি? টিপতে ফিপতে পারলি?”
“ধুর কি যে বলিস, ফালতু কথা, এমনি দেখা করলাম।”
“চুমু ও খাসনি?”
“না, শুধু হাত ধরেছিলাম।”
“ধুর, ওদিকে কেস জন্ডিস।”
“কি হয়েছে?” আমি উৎসুক হয়ে জিজ্ঞাসা করলাম।
“ঝুমা বৌদির বাবা এসেছিল, তোর বিয়ের পাকা কথা বলতে, তোর মায়ের কোনো দাবী নেই কিন্তু তোর ঠাকুমা কাঠি করেছে।”
আমার মাথায় যেন বাজ পড়লো, “কি হয়েছে? আর তুই কি করে জানলি?”
“আরে দোস্ত কাল সকালে মা আর চম্পা মাসি গল্প করছিল বলছিলো বুড়ী মাগীটার খাঁই দেখো? বলে নাকি ঝুমা বৌদির নামে যা জমি আছে সব টুকুনের নামে লিখে দিতে হবে, তোর শ্বশুর রাজি হয়নি।”
আমি বুঝতে পারলাম কি ব্যাপার, এটাও বুঝতে পারলাম এবার আমায় বড় হতে হবে, আমার জীবনের পরের সিদ্ধান্তগুলো আমিই নেবো। চাইনা আমার জমি, ঝুমার জমি মানেই আমার, ঝুমা আমাকে কিছু না দিলেও চলবে শুধু মনটা আমাকে দিক। এদিক সেদিক কিছু কথা বলে একটা রায় মার্টিন টেস্ট পেপার কিনে পিসির বাড়ী যাবার জন্য।

পিসির বাড়ী ফিরে আমি পিসির থেকে মোবাইলটা চাইলাম। পিসির মোবাইল থেকে মা কে ফোন করলাম।
“হ্যালো মা, শুনতে পাচ্ছ।”
“ওমা কে ফোন করেছ দেখ, ভুল করে করে ফেলিসনি তো?”
“না একটু কথা আছে?”
“আগে বল কেমন আছিস?”
“ঠিক আছি, আমাকে পড়তে যেতে হবে তুমি আসল কথা শোনো।”
“তুমি প্রথমে আমাকে বিয়ের কথা বলেছিলে আমি মেনে নিয়েছি, এখন যেন কথা না পাল্টায়।” আমি গম্ভীর স্বরে বললাম।
“মানে,” মা অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলো।
“কাল আমি স্কুলে গেছিলাম, শুনলাম নাকি ঠাকুমা ঝুমার বাবার সঙ্গে ঝগড়া করেছে। আমার কোনো জমি জমা চাইনা। দিলেও নেবো না। আমি পনের জন্য বিয়ে করবো না।”
আমার কথা শুনে মা পুরো বিস্ময়ে হাঁ হয়ে গেছিলো “ওরে টুকুন, তুই কি করে জানলি? আর তুই ঝুমাকে নাম ধরে দেখছিস!!!”
“হ্যাঁ, হবু বউকে লোকে নাম ধরেই ডাকে। তুমি তোমার জীবনের সিদ্ধান্ত নিয়েছ, আমাকে এবার আমার টা নিতে দাও। শরীরের যত্ন নাও।”
মা বোধহয় বুঝতে পারলো ছেলের উপরেই এবার সব ছেড়ে দেওয়া উচিৎ, আস্তে করে বললো “হ্যাঁ তোর ছোটকা আমাকে দিয়ে কোনো কাজ করতে দেয় না এখন, আগে শুধু মোক্ষদা ছিল এখান চম্পাকেও রেখেছে।”
“হুম এই সময় কেয়ার দরকার, এখন রাখছি।”

পিসির ফোন যথাস্থানে রেখে ঘরে ঢুকে ঘর বন্ধ করে মোবাইল চার্জে বসিয়ে পড়ায় ডুবে গেলাম।ঠিকমতো প্রশ্ন এলে আর আমি যা জানি লিখতে পারলে ষ্টার কেউ আটকাতে পারবে না আমার। অনেককিছু প্রমাণের আছে আমার, অনেক। বিকেলবেলার পিসি ডাকলো, “টুকুন ওঠ, একবার বেড়িয়ে আয় বাইরে দিয়ে সেই কখন থেকে পড়ছিস।”
আমি মোবাইলটা চার্জ থেকে খুলে ব্যাগে ঢুকিয়ে মাঠের দিকে গেলাম।
মাঠ থেকে ফিরে এসে ঘরে ঢুকেই দেখি পিসেমশাই বসে আছে, আজ বোধহয় তাড়াতাড়ি চলে এসেছে দোকান থেকে। আমায় দেখেই বলল “কি টুকুন বাবু ঠাকুমাকে কি বলেছো? তিনি তো রাগে অগ্নিশর্মা।”
আমি বললাম কিছু বলিনি আমি। বলে পড়তে বসলাম। পিসিমোসাইকে ওটা বললেও আমি জানি মা গিয়ে ঠাকুমাকে দুপুরের কথাগুলো বলেছে আর ঠাকুমা সেই শুনে রেগে গেছে। এখন একবার ঝুমার সঙ্গে দেখা করা খুব দরকার, কিন্তু পরীক্ষার আর মাত্র ৬ দিন বাকী। ভারী দোটানায় পড়লাম। ব্যাগ থেকে বই বের করতে গিয়ে দেখি মোবাইলটা অফ না থাকায় প্রায় ২০টা মিস কল, সাইলেন্ট ছিল বলে বুঝতে পারিনি। সব গুলোই ঝুমার কল। আমি চুপচাপ ফোন নিয়ে পিসির বাড়ীর পিছনের সিঁড়ি দিয়ে ছাদে চলে গেলাম। গিয়েই ফোন করলাম ঝুমাকে, বেশ খানিক্ষন রিং হবার পর ঝুমা তুললো। হ্যালো শোনার সঙ্গে সঙ্গে বুঝলাম ওদিকে বেশ ঝড় বয়ে গেছে। একটু থেমে আমি বললাম “কি হয়েছে আমাকে বলো ঝুমা। সব বলবে কিচ্ছু লুকোবে না।” আমার কথায় অধিকারবোধ ছিল, দায়িত্ব নেবার পূর্বাভাস ও ছিল। ঝুমা যা বললো সেটা হলো, আজ দুপুরে ঠাকুমা নাকি ফোন করে ঝুমার বাবাকে যা নয় তাই বলেছে, বলেছে ঝুমা নাকি আমার মাথা খাচ্ছে, আমায় বাড়ীর লোকের থেকে পর করে দিচ্ছে। এসব বরদাস্ত করা হবে না। আমি সব শুনে বললাম “ঝুমা কাল দুপুরে দুটো নাগাদ তুমি আমার জন্য স্টেশনে অপেক্ষা করবে, আমি পৌঁছানোর পর একসঙ্গে দুজন বাড়ী যাবো। তোমার কোনো চিন্তা নেই, আমি কথা দিয়েছি তোমায় তোমার সারা ভার আমার, আমি কথা রাখার জন্য সব বাজি রাখতে রাজী।”
ঝুমা ডুকরে কেঁদে উঠলো, তারপর একটু থেমে আস্তে আস্তে বললো “আমার জন্য বড়দি আর মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করার দরকার নেই।”
“আমি কারোর সঙ্গে ঝগড়া করবো না, শুধু মতামত জানাবো, দরকারে তোমার বাবার সঙ্গেও কথা বলবো। আর সেটা কালই, কারণ আমার পরীক্ষা সামনে সময় নেই। তুমি যদি না আসো বুঝবো আমাদের মধ্যে ভালোবাসা বলে কিছু নেই, সম্পর্কের ইতি ওখানেই।”
ঝুমা ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে বললো “আমি কাল মরে না গেলে তোমার সঙ্গে দেখা করবো, কিন্তু আমার দিব্যি তুমি কারোর সঙ্গে ঝগড়া করবে না।”
“বেশ কথা দিলাম। এবার আমি নীচে যাচ্ছি, ছাদে লুকিয়ে বসে কথা বলছি, আমি তোমায় আবার রাত্রে খেয়ে ফোন করবো।”
ফোন রেখে ঘুরতেই দেখলাম বাপ্পা চুপচাপ দাঁড়িয়ে আমার কথা শুনছিলো, আমি চমকে উঠলাম। বাপ্পা মুচকি হেসে বললো “মেজো মামীর সঙ্গে কথা বলছিলি? তা ফোন পেলি কোথায়?”
আমি বাপ্পাকে মিনতির সুরে বললাম “লক্ষী ভাই আমায় কাউকে বলিস না, তুই যা বলবি তোকে দেবো।” বাপ্পা বললো “আরে আমি কি বাচ্চা নাকি? বলবো না, মেজো মামী কদিন পরে তো আমার বড় বৌদি হবে। বৌদির সঙ্গে দাদা কথা বলবে না তো কে বলবে? তুই চাপ নিস না।”
আমি ওর মাথায় হাত বুলিয়ে নীচে নেমে এলাম। দু ঘন্টা পড়ার পর পিসি খেতে ডাকলো, আমি খেতে বসে কোনো কথা বলিনি, পিসি বলে যাচ্ছিলো, ঝুমা খুব ঝগরুটে, টাকা চেনে, বিধবা মেয়ে কচি নাগর পাচ্ছে এই অনেক, কেন জমি লিখে দিচ্ছে না এইসব। আমি চুপচাপ খেয়ে ওঠার সময় বললাম “পিসি আমি কাল একবার বাড়ী যাবো ওই বারোটা নাগাদ বেড়িয়ে বিকেলে ফিরবো, আমি মুড়ি খেয়ে বেরোবো।” ইচ্ছে করেই সত্যিটা বললাম জানি একটু পরেই পিসি ফোন করে ঠাকুমাকে সব বলবে। থাকুক একটু চাপে।
আমি ঘরে ঢুকে খিল বন্ধ করে আবার পড়তে বসলাম, মনটা খুব হালকা লাগছিলো। একদম ফুরফুরে। অংক, ইতিহাস আর বাংলা রিভাইজ করে ওয়াটসএপে ভিডিও কল দিলাম ঝুমাকে, ঝুমা অপেক্ষাই করছিল বোধহয় ফোন তুললো, আজকে একটা নীল টি শার্ট পড়েছিল নীচে একটা পাজামা। চোখ দুটো দেখেই বোঝা যাচ্ছিল অনেক্ষন কেঁদেছে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, “খেয়েছো, সোনা?”
“না, খেতে ভালো লাগছে না।”
“এরকম করলে শরীর খারাপ হবে, খেয়ে নাও, তারপর ফোন করবো।”
“প্লীজ ফোন কাটো না, তোমার সঙ্গে কথা বলতে খুব ইচ্ছে করছে।”
“বেশ, এক্ষুনি খাবার নিয়ে এসো, আমার সামনে খাও।”
“আরে আমি খেয়ে নেবো, তুমি টেনশন নিয়ো না।”
“একটা কথা কানে যায় না? বলছি খাবার নিয়ে এসো, বুঝতে পারছো না নাকি?” আমার গলায় প্রচন্ড কতৃত্ব আর দৃঢ়তা ছিল, যা শুনে আমি নিজেই অবাক হয়ে গেলাম। ওদিকে ঝুমা “উফ, যাচ্ছি নিয়ে আসছি তুমি কেটো না।” ঝুমা খাট থেকে নেমে যখন বেরিয়ে যাচ্ছিল তখন পাছার দিকে নজর গেল, উফফ বঙ্কু ঠিকই বলে একদম নধর পাছা, আমার বাঁড়া মহারাজ ফণা তুলতে উদ্যত হলো। একটু পরেই ফিরে এলো ঝুমা, প্লেটে দুটো রুটি, একটু ডাল আর একটা সব্জী নিয়ে। খেতে খেতে কথা বলছিলো আর আমি ওকে দেখছিলাম, ঝুমা বললো “আমার খুব ভয় করছে, সোনাই, তোমার ঠাকুমা আমাকে একদম সহ্য করতে পারে না।”
“তুমি আমাকে ভালোবাসো তো?” আমি জিজ্ঞাসা করলাম।
“উম্ম, কতবার বলবো জানি না যাও” লাজুক স্বরে বললো ঝুমা।
“বলো ঝুমা বলো আমার জানা দরকার।”
“হ্যাঁ, নিজের থেকেও বেশী, আমি আর পিছতে পারবো না।”
“বিশ্বাস করো আমাকে?” আমি বললাম।
“হ্যাঁ, অনেক, সবার চেয়ে বেশী।”
“তাহলে জেনে রাখো তোমার সব বিশ্বাসের মর্যাদা আমি রাখবো। ঠাকুমা কি বললো কিচ্ছু এসে যায় না। আর মা তো চায় আমাদের বিয়ে হোক, যদি মা কিছু বলে তাহলে সেটাও আমি দেখে নেবো। তুমি শুধু সাথে থেকো, তুমিই আমার জোরের জায়গা।” আমি আর মাধ্যমিক দিতে যাওয়া সদ্য গোঁফ দাড়ি গজানো টুকুন নেই সেটা নিজেই বুঝতে পারলাম।ঝুমার প্রেম আমাকে ধীরে ধীরে সাবালক আর পরিণত করছিল।
ঝুমা আদুরে গলায় বললো, “কত্ত পাকা পাকা কথা শিখেছে আমার বাবুটা।”
“ঝুমা তুমি আমার সাথে থাকলে আমার কোনো ভয় নেই, মা নিজের সুখের জন্য আমায় পর করেছে, এখন আমার আপন বলতে শুধু তুমি।”
ঝুমার চোখের কোন চিকচিক করে উঠলো কিছু বললো না।
আমি মাথায় দুস্টু বুদ্ধি খেলে গেল, বললাম “ঝুমা আমি একটা জিনিষ চাইবো দেবে?”
“আমার দেবার ক্ষমতা থাকলে নিশ্চই দেবো, চেয়েই দেখো।”
“আমাকে একটা হামি দাও।” শুনেই ঝুমা প্রচন্ড লজ্জা পেয়ে গেল। তারপর একটু ধাতস্ত হয়ে বললো “এখন নয় সময় এলে দেবো।”
“তুমি কিন্তু কথা রাখছো না ঝুমা, ওদিকে আমার পড়ার দেরী হচ্ছে, আমি কিন্তু মনে রাখবো তোমার কথা খেলাপী।”
“উফফ, আমার লজ্জা লাগে।” লজ্জার চরম সীমায় পৌঁছে ঝুমা বললো।
“ঝুমু প্লিজ, আমি কিন্তু আমার প্রাপ্য চাইছি।”
“ধুৎ, তুমি আগে দাও।”
আমি শুনেই “মুউউউউউ আআআ” করে চুমু দিলাম। ওদিকে ঝুমা চোখ বুজে একটু সময় নিয়ে নিজের কমলালেবুর কোয়ার মতো লাল ঠোঁটদুটোকে জুড়ে “উমমউমউম, মুউউ আঃ” করে চুমু দিলো। আমি বললাম আরেকবার, ঝুমা আবার চুমু দিলো। তারপর আমি বললাম, “আই লাভ ইউ ঝুমু” আমার ঝুমু আস্তে করে মোবাইলটা মুখের কাছে ধরে বললো “আই লাভ ইউ সোনাই।” আমি জীবনের প্রথম পাওয়া চুমুর ঘোর তখনও কাটাতে পারিনি, হোক না দূর থেকে, তবু তো প্রেয়সীর থেকে পাওয়া। আজকের দিনটা জীবনে ভুলবো না। ফোনটা রাখতে রাখতে, কালকের যুদ্ধের জন্য মনে মনে তৈরী হতে লাগলাম।

সারারাত ঘুম হয়নি, এপাশ ওপাশ করে সকালে উঠে পড়লাম। উঠে ফ্রেশ হয়ে ঘন্টা চারেক পড়ে ব্যাগটা নিয়ে পিসির খাবার টেবিলে গিয়ে বসলাম। পিসি উঠে পড়েছিল পরোটা বানাচ্ছিল। পিসিকে খেতে দিতে বললাম। পিসি খেতে দিয়ে আমার পাশে এসে বসলো, আমি খাচ্ছিলাম আর আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছিল। আমায় বললো “বাবা টুকুন বাড়ী যাচ্ছিস যা, কিন্তু ঝগড়া করিস না। তুই বংশের বড় ছেলে, আমার মাকে তো জানিস একটু লোভ আছে, তুই বুঝিয়ে বললে সব মেনে নেবে। আমি পিকুকে বলেছি থাকতে, হাজার হোক পিকু এখন সম্পর্কে তোর বাবা হয়। যা দরকার হয় আমাকে বলিস আমি তোকে সাহায্য করবো, তোর বাবা আর মেজোকাকা মারা যাবার পর, ছেলে বলতে তুই আর পিকু তোদেরও কাঁচা বয়েস। যা করবি ভেবে করিস।” সত্যি বলতে পিসি কোনোদিন আমাকে আর বাপ্পাকে আলাদা চোখে দেখেনি। পিসি লুকিয়ে আমায় ১০-২০ টাকা মাঝে মাঝেই দিতো, মাছের মুড়ো আমার পাতে দিতো, এটা সেটা খেতে দিতো। আমি পিসিকে বললাম “পিসি আমাকে কোনোদিন দেখেছো ঝগড়া করতে? তোমরা শুধু একটা দিক দেখছো, ওদিকে মেজো কাকী মানে ঝুমার দিকটা কেউ দেখছো না। মায়ের বিয়ে নিয়ে আদিখ্যেতায় সবচেয়ে বেশী অবহেলিত আমি আর ঝুমা। সব মেনে নিয়েছি কিন্তু এখন আমি আর মানতে পারছি না। তাই মুখোমুখি সব ঠিক করে নিতে চাই। আর কিছু নয়।”

ছয়
আমি খেয়ে পিসিকে প্রনাম করে বেড়িয়ে পড়লাম স্টেশনের উদ্যেশ্যে। ১২.০৫ এর ট্রেনটা ২০ মিনিট লেট ছিল ওটাতেই চেপে বসলাম। চন্দননগর পৌঁছাতে ২ টো ১০ বাজলো। ট্রেনে ঝুমা কি পড়ে আসবে ওকে কেমন লাগবে এই সব ভাবতে যাচ্ছিলাম, চন্দননগর পৌঁছানোর পনেরো মিনিট আগে ঝুমা ফোন করে বললো ও পৌঁছে গেছে। আমি স্টেশনের বাইরে মিষ্টির দোকানের সামনে দাঁড়াতে বললাম। ট্রেন থেকে নেমে দৌড়ে মিষ্টির দোকানের সামনে গিয়ে দেখি ঝুমা দাঁড়িয়ে আছে। একটা লাইট কালারের গোলাপী শাড়ী পড়েছিল। বাড়ী যাবে বলে বোধহয় বেশী সাজেনি। আমাকে দেখে স্মিত হাসলো, আমিও হেসে জিজ্ঞাসা করলাম, “দাঁড়াতে কষ্ট হয়েছে না? কি করবো বলো লোকালটা আজকেই লেট।”
“আরে না না এই তো এলাম।”
আলতো করে ঝুমার হাতে হাত ছুঁইয়ে দিলাম, ঝুমার গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠলো, উপরের দাঁত দিয়ে নীচের ঠোঁটটা চেপে ধরেই ছেড়ে দিলো। আমি হাত না সরিয়েই বললাম, “বাড়ীতে তো নিশ্চই তোমার খাবারের জোগাড় করেনি, ওরা জানে আমি যাচ্ছি, তুমি যাচ্ছ জানে না। তাই চলো খেয়েনি কোনো হোটেলে।”
“না আমি খেয়ে এসেছি।”
“বেশী বোকো না, চলো, আমি বলছি।” আমার গলায় ভালোবাসার দাবী ছিল তাই ঝুমা মানা করতে পারলো না। স্টেশন থেকে একটু গিয়েই অলকা হোটেল, ওটার দোতলায় কেবিন আছে, ওই কেবিনে বসেই আমার স্কুলের বন্ধুরা মাঝে মাঝে খেতে এসে সিগারেট খেত। না ডাকলে কেউ এ ডিস্টার্ব করে না। আমি সোজা দোতলায় উঠে গিয়ে ওয়েটারকে বললাম “কেবিন খালি আছে নাকি?” ওয়েটারটা ডানদিকের প্রথম কেবিনটা দেখিয়ে দিলো। কেবিন মানে একদিকে দেওয়াল আর বাকী তিনদিক পর্দা দিয়ে ঘেরা। ঝুমা অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়েছিল, বুঝতে পারছিল না আমি এত সব কি করে জানলাম। মুখোমুখি বসে আমি ওয়েটারকে বললাম “এক প্লেট চিকেন পাকোড়া, এক প্লেট চিকেন ভর্তা আর রুটি ৫টা।” ওয়েটার বেড়িয়ে যেতেই ঝুমা বললো “বাইরে বসলেই তো হতো, এখানে বেশী টাকা নেয়।”
“নিক, আমাদের নিরিবিলিতে কথা বলার দরকার আছে ”
ঝুমা আমার দিকে এক পলক তাকিয়ে নিজের মুক্তোর মতো দাঁত বের করে হাসলো। আমি নিজের হাত দুটো টেবিলের উপরে নিয়ে গিয়ে ঝুমার হাত ধরলাম। ঝুমা যেনো আকস্মিক শক খেলো, ওর গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠলো স্পষ্ট বুঝতে পারলাম, আমি বললাম, “ঝুমু, সোনা আমার প্রতি তোমার বিশ্বাস আছে আজ বুঝেছি। তুমি আমার কথা শুনে এখানে এসেছো। আমার বিশ্বাসের মর্যাদা দেবার জন্য তোমাকে অনেক ধন্যবাদ।”
ঝুমা একটু থেমে, সব কথা শুনে আস্তে আস্তে বললো, “টুকুন এখন আর আমার তোমার বলে আলাদা কিছু নেই। সব দুজনের তাই আগেও বলেছি তুমি বললে আমি গাছতলাতেও গিয়ে দাঁড়াবো।”
আমি সেই কলকাতা যাবার পর থেকে রোজ ঝুমাকে নতুন করে আবিষ্কার করি। আরো নতুন করে একটু একটু করে আরো কাছে পাই। ঝুমা তখনো হাতটা আমার হাত থেকে সরায়নি। হটাৎ বাইরে পায়ের আওয়াজ শুনে টেনে সরিয়ে নিলো হাতটা। ওয়েটার মে আই কামিং স্যার বলে ঢুকে পড়লো। খাবার রেখে আর কোনো অর্ডার আছে নাকি জিজ্ঞাসা করে চলে গেল। ঝুমা হটাৎ খেতে খেতে আমার দিকে তাকিয়ে বললো “টুকুন যদি তোমার ঠাকুমা না মেনে নেয় আমাদের সম্পর্ক? আমি বাঁচবো না।” চোখের এক কোণে জল চিকচিক করে উঠলো ঝুমার। আমি শুনে আমার চেয়ার থেকে উঠে ঝুমার পাশে এসে বসলাম, একদম ওর কানের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে আস্তে করে বললাম “কাঁদলে তোমায় একদম ভালো দেখায় না।” তারপর হাত দিয়ে চোখ মুছিয়ে দিলাম। ঝুমা যেন কারেন্ট খেলো। একটু দূরে সরে গেল, আমি ওর কোমরে হাত দিয়ে কাছে টেনে নিলাম, তারপর আমার কি হলো জানি না, আমি দু হাত দিয়ে ঝুমার মুখটা কাছে টেনে ঝুমার ঠোঁটে নিজের ঠোঁট ডুবিয়ে দিলাম। ঝুমা প্রাথমিক ঝটকা সামলে একবার আবেশে চোখ বুজে পরক্ষনেই আমার ঠোঁট থেকে নিজের ঠোঁট সরিয়ে দিলো। আমি চোখের ইশারায় জিজ্ঞাসা করলাম কি হলো? আস্তে করে বললো “এখন নয়।” আমি বললাম না এখনই প্লিজ। বলেই আবার ঝুমার লাল ঠোঁটে নিজের ঠোঁট ডুবিয়ে দিলাম দুজনেই চোখ বুজলাম আবেশে, প্রায় মিনিট খানেক পর ঝুমা আমাকে সরিয়ে বললো “খুব দুস্টু হয়েছ, ডাকাত কোথাকার। আর নয়।” আমি তখনও ঘোরের মধ্যে ছিলাম, ভালোবাসার ঘোর। আর চাইছিলাম সারা জীবন এই ঘোরের মধ্যেই থাকতে।

আমরা দুজনে আবার নিজেদের জায়গায় বসতেই ওয়েটার ঢুকলো। আমার কাছে সব মিলিয়ে ৫০০ টাকা ছিল, বিল হয়েছিল ৩৭০ টাকা। ঝুমা দিতে যাচ্ছিল, আমি ওর হাত চেপে ধরে নিজে দিলাম। ঝুমা মুচকি হাসলো।

সাত
ভ্যানটা গ্রামের মোড়ে নামিয়ে দিলো আমাদের দুজনকে। আমি আগে আগে হাঁটছিলাম আর ঝুমা পিছনে, পাশে হাঁটতে লজ্জা পাচ্ছিল ও। আজ থেকে দশ বছর আগে এই গ্রামেই ঝুমার বিয়ে হয়েছিল আমি সেদিন বরযাত্রী গেছিলাম, কত আনন্দ হয়েছিল। বিয়ের পর বাসর ঘরে নিয়ে গিয়ে মা বলেছিল যা নতুন কাকীর কোলে বস, আমি লাজুক মুখ করে দাঁড়িয়ে ছিলাম, ঝুমা হাত বাড়িয়ে কোলে টেনে নিয়েছিল। ভাগ্যের পরিহাসে, সেই ঝুমাকেই আমি বিয়ে করবো কিছুদিন পরে। মনে করে অদ্ভুত একটা অনুভূতি হচ্ছিল। ঝুমা অনেকটা মাথায় ঘোমটা টেনে ছিল, অবিকল নববধূর মতো।
বাড়ীতে ঢুকেই বুঝতে পারলাম পরিবেশ থমথমে, ছোটকা দাওয়ায় বসে নখ কাটছিলো, মোক্ষদা মাসী কলতলায় মাছ কুটছিলো, মা বোধহয় রান্নাঘরে ছিল আর ঠাকুমা শুয়ে ছিল ঘরে। আমি বাড়ী ঢুকেই গলা খাঁকারি দিলাম। ছোটকা আমাকে দেখেই হেসে বললো “আরে টুকুন কেমন আছিস?” আমি কিছু বলার আগেই চেঁচিয়ে বললো “নমিতা দেখো কে এসেছে?”
আমার পিছনে ঝুমাকে লক্ষ্য করেনি ছোটকা কিন্তু মোক্ষদা মাসী ঠিক লক্ষ্য করেছিল, মোক্ষদা মাসী চেঁচিয়ে বললো “বড় বৌদি তোমার ছেলে একা আসেনি বউ নিয়ে এয়েছে।” বলেই হ্যা হ্যা করে হেসে উঠলো। আমি লজ্জা পেলাম ঝুমা আমার পিছনে থাকলেও বুঝতে পারলাম ও আরো লজ্জায় লাল হয়ে উঠলো। মা রান্না ঘর থেকে বেরিয়ে এসেই আমাকে জড়িয়ে ধরলো, বললো, “টুকুন তোর বাবার পাশে মোড়ায় বস, আমি জল খাবারের জোগাড় করি।” তারপরেই ঝুমার দিকে তাকিয়ে এক গাল হেসে বললো, “মুখপুড়ি আমার সঙ্গে আয়।” ছোটকা আমার থেকে মাত্র ৫ বছরের বড়, সেই ছোটকাকে মা আমার বাবা বলে সম্মোধন করলো দেখে কেমন যেনো অস্বস্তি হলো। মায়ের পেটটা বিরাট উঁচু হয়েছে, আট মাস হয়ে গেছে, এক মাস পরেই ডেলিভারি। আমার ভাই / বোন হবে, ভেবে আবার অস্বস্তি হচ্ছিল। মোক্ষদা মাসী মাছ ধুয়ে ঘরে নিয়ে যেতে যেতে বললো, “হ্যাঁ হ্যাঁ এতদিন জা কে সব হাতে ধরে শিখিয়েছিলে এবার সেই জা কেই বৌমা মনে করে সব শেখাতে হবে।” ছোটকা মুচকি মুচকি হাসছিল, আমায় বললো, “কি রে পরীক্ষার প্রস্তুতি কেমন চলছে?”
“ভালো, তোমার কলেজ কেমন?”
“ওই চলছে।”
“ঠাকুমা কোথায়?”
“মা ঘুমোচ্ছে, বিকেলে কথা বলিস।”
“না আমি পাঁচটার লোকাল ধরবো, চারটে নাগাদ বেড়িয়ে যাবো।”
“সে কি? রাত্রে খেয়ে থেকে কাল যাবি।”
“আরে না না বই আনিনি।”
“আমার পুরোনো বই গুলো আছে, ওগুলো নিয়ে নিস।”
“কিন্তু ঝুমা, মানে মেজো কাকী তো বাড়ীতে বলে আসেনি।”
“সে তোর মাকে বলে দিচ্ছি মেজো বৌদির বাড়ীতে ফোন করে দেবে। কতদিন পরে এলি, আজকের রাত টা থেকে যা।”
আমি মেজকাকী কে ঝুমা বলছিলাম আর ছোটকা মেজো বৌদি, অদ্ভুত একটা জগাখিচুড়ি রিলেশনশিপের কথা হচ্ছিল। দুজনেই বুঝতে পারছিলাম অসামঞ্জস্যটা কিন্তু দুজনেই এক্ষেত্রে অসহায় ছিলাম। মা ঝুমা কে নিয়ে বেড়িয়ে এলো এসেই বললো, “উপরে চল, দু জনের সঙ্গেই আমার কথা আছে।”
আমি বললাম, “যা কথা হবে সবার সামনেই হবে, ঠাকুমা উঠুক আমি কথা বলে নেবো, আলাদা করে নয়। ছোটকা এখন বাড়ীর গার্জেন ওর ও থাকা উচিৎ।” আমার স্বরের দৃঢতায় চমকে উঠলো মা আর ছোটকা, ঝুমা এক কোণে চুপ করে দাঁড়িয়ে ছিল। মা আবার বললো, “সব কথা হবে, আমারও একটা দায়িত্ত্ব আছে। কিন্তু তার আগে তোর আমাদের অবস্থা বোঝা উচিৎ।”
“দেখো মা আমি এখানে ঝগড়া করতে আসিনি। কিন্তু দায়িত্বের কথা বোলো না, আমার মাধ্যমিকের বছরে তুমি নিজের বিয়ের জন্য আমাকে পিসির বাড়ী পাঠিয়ে নিজের দায়িত্ব খুব পালন করেছ। যাই হোক, আমি আমারটা বুঝে নেবো। ঠাকুমা উঠুক একেবারে কথা হবে।” মা শুনে অপরাধবোধে মাথা নামিয়ে নিলো। ছোটকা বললো, “আরে টুকুন তুই যা, জামাকাপড় ছেড়ে রেস্ট নে। নমিতা তুমি মেজো বৌদিকে ঘরে পড়ার কাপড় দাও। আর বৌদির বাবাকে ফোন করে দাও। ওরা রাত্রে আজ থেকে কাল ফিরবে।” আমি উপরে উঠে সোজা চিলেকোঠায় চলে গেলাম। গিয়ে শুয়ে পড়লাম।
ঘুম ভাঙলো বিকেল পাঁচটায়, ঠাকুমার চিৎকারে। তড়িঘড়ি নীচে নামতে নামতে শুনলাম ঠাকুমা বলছে, “ওই মাগী আমার ছেলেকে খেয়েছে, ওই মাগী বাঁজা মাগী, এখন কচি নাতিটার মাথা খাবে, বড় বৌমাকে বলেছিলাম ওই মেয়ে মানুষকে আবার ঘরে তুলো না কিন্তু শুনবে আমার কথা কেউ? দেখো কোনো লজ্জা নেই, হাঁটুর বয়েসী ছেলেটার খাটে উঠতে মুখিয়ে আছে, কোনো লজ্জা শরমের বালাই নেই।” আমি নীচে নেমে দেখলাম ঝুমা হাউহাউ করে কাঁদছে, ছোটকা বাড়ীতে নেই, মা ঝুমা কে সামলাচ্ছে। আমি নীচে নেমে বললাম, “ঠাকুমা চুপ করো, আমি এখানে কথা বলতে এসেছি, তোমার আজেবাজে কথা শুনতে নয়।” এবার মায়ের দিকে ঘুরে বললাম, “মা তোমার লজ্জা লাগছে না, ঠাকুমা এই সব উল্টোপাল্টা বলছে, ঝুমাকে অপমান করাই উদ্দেশ্য হলে বোলো এক্ষুনি চলে যাচ্ছি এখান থেকে।” আমি কোনোদিন এই ভাবে কথা বলিনা, তাই ঠাকুমা শুনে হকচকিয়ে গেল। এমন সময় ছোটকা ঢুকলো বাড়ীতে, পরিস্থিতি আন্দাজ করেছিল বোধহয়। এবার আমি আবার বললাম, “আমি একটাই কথা বলবো, আমি ঝুমাকেই বিয়ে করবো, কোনো পণ যৌতুক আমার চাই না। যদি অসুবিধা থাকে কারোর তো বলো।”
ঠাকুমা চেঁচিয়ে উঠলো, “ওই তো কালনাগিনী কানে বিষ ঢেলেছে কচি ছেলেটার, যে ছেলে সাত চড়ে রা কাড়তো না সে কিনা চোপা করছে মুখে মুখে।” ছোটকা বললো “আহঃ মা চুপ করো না।” অন্যসময় হলে ঝুমা উপযুক্ত জবাব দিতো ঠাকুমাকে কিন্তু এখন পরিস্থিতি অন্য তাই দাঁত দিয়ে নখ খুঁটছিলো।
আমি বললাম, “আজ অনেক দেরী হয়েছে তাই আজ যাবো না। কাল ভোরের ট্রেনে ফিরবো। পরীক্ষা আমি পিসির বাড়ী থেকেই দেবো। তারপর আমি ফিরবো এখানে। আমি ভালো রেজাল্ট করলে সায়েন্স নেবো, জয়েন্ট দেবো, উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে ঝুমাকে বিয়ে করবো। তোমাদের কারোর কোনো অসুবিধাতে আমার কিস্যু যায় আসে না। আমি এখন বঙ্কুর সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছি, ফিরে এসে চিলেকোঠায় পড়তে বসবো, কারোর কিছু বলার থাকলে বলে দিয়ো, আর মা রাত্রের খাবার উপরে পাঠিয়ে দিও।”এক নিঃশ্বাসে বলে আমি ঝুমার দিকে তাকিয়ে বললাম, “ঝুমা তোমার কাউকে ভয় পাবার দরকার নেই, যারা বড় তাদের সন্মান করা কর্তব্য, কিন্তু কেউ অপমান করলে চুপ করে থেকো না।” ঝুমা হাউহাউ করে কেঁদে ফেললো, মা মেঝেতে পায়ের বুড়ো আঙ্গুল ঘষছিলো আর ছোটকা হাঁ করে আমার দিকে তাকিয়েছিল। সবচেয়ে শকড ছিল ঠাকুমা, পুরো বোবা হয়ে গেছিলো। আমি কিছু না বলে উপরে উঠে গেলাম।
বাড়ী থেকে বেরোনোর পর আমার নিজের উপর গর্ব হচ্ছিল। ঝুমার যে দায়িত্ব আমি নিয়েছি সে দায়িত্ব পালন করতে আমি সক্ষম সেটা বুঝতে পারছিলাম।

বঙ্কু আমাকে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা, বললো “দোস্ত, তোকে ছাড়া ভালো লাগে না। কবে ফিরবি বল?”
“দাঁড়া আগে বাড়ীর দিকটা সামলে নি।”
“তোর মা কচি নাগর পেয়ে খুব ঠাকুমার আঁচল ধরে ঘুরছে। ঝুমা বৌদি একটু চাপে আছে বোধহয়।”
“হুম, ভাবছি কি করা যায়। এই পরিস্থিতিতে ঝুমার কি অবস্থা বুঝতেই পারছিস। ওদিকে ওর বাবা আবার অন্যকিছু ভেবে বসলে আমার চাপ। আমি কোনো কামধান্ধা করলে এত চাপ হতো না। এট লিস্ট বছর পাঁচেক চাই আমার।” চিন্তায় আমার কপালে ভাঁজ পড়লো।
“আরে দোস্ত চিন্তা করিস কেন? সব ঠিক হয়ে যাবে। নমিতা বৌদি আর যাই হোক পাষান নয়।”
আমি আর বিশেষ কিছু আলোচনা করলাম না। এটা সেটা বলে উঠে পড়লাম।

আট
অনেক্ষন পড়ার পর ঘুমিয়ে গেছিলাম। নানা চিন্তা মাথায় ভর করে আসছিল, আমার আর ঝুমার ভবিষ্যৎ, আমি কি করবো? পড়াশোনার কি হবে? এইসব। মাথাটা ভারী হয়ে আসছিল। ঘুম ভাঙলো ছাদে কাদের সব কথা বার্তার শব্দে। ছোটকার বন্ধুরা এসেছিল, সজলদা বলছিলো, কি রে পিকু দেখলাম তোর মেজো বৌদি এসেছে কি ব্যাপার?
রমেশ দা পাশ থেকে ফুট কাটলো “উফফ কি মাল রে ভাই! যেমন মাই তেমনি পাছা, দেখলে ৮০ বছরের বুড়োর বাঁড়া খাড়া হয়ে যাবে।”
ছোটকা এবার বললো “তোরা চুপ কর তো বাঁড়া, এদিকে বাড়ীতে দক্ষ যজ্ঞ চলছে আর ওনাদের রসের আলোচনা চলছে।”
“কেন রে বাঁড়া, কার আবার ফাটা বাঁশে বিচি আটকালো?” রমেশ দা জিজ্ঞাসা করলো।
“আর বলিস না, নমিতা টুকুনের সঙ্গে ঝুমা বৌদির বিয়ে দেবে বলেছিল, সেই মতো টুকুন আর ঝুমা বৌদি তো কাল বিয়ে করতে পারলে কালই করে ফেলে ওদিকে মা বলছে মেজো বৌদি সব জমি টুকুনের নামে না লিখে দিলে বিয়ে হতে দেবে না।”
“তোর মা মাইরি একটি যন্ত্র।” সজল দা বললো।
আমি আবার পড়ায় মন দিলাম। সন্ধ্যে বেলায় সিঁড়িতে কারোর পায়ের আওয়াজ পেলাম, দরজা খুলেই দেখি ঝুমা হাতে চায়ের পেয়ালা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। একটা আটপৌরে শাড়িতে অপরূপ লাগছিলো। সজলদা রমেশ দাদের হিংসা হবারই কথা। ঝুমা মুচকি হেসে চা হাতে ধরিয়ে দিয়ে বললো “বড়দি পাঠালো, আর বললো বাবুকে বলিস রাগ কমলে নীচে গিয়ে রাতের খাবার খেতে।” বলেই নীচে যাবার চেষ্টায় ছিল, আমি হাত ধরে টেনে ঘরে ঢুকিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলাম। ঝুমা লজ্জায় মাটির দিকে তাকিয়ে পায়ের বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে মেঝেতে ঘষছিলো, আমি বললাম, “যাচ্ছ কোথায় ম্যাডাম, আমার সঙ্গে কথা বলার সময় নেই বুঝি।”
“ছি, দরজা বন্ধ করলে যে বড়, বড়দি কিন্তু জানে আমি এখানে এসেছি। আর কেউ চলে এলে।” কাঁপা কাঁপা গলায় বললো ঝুমা।
“মা আট মাসের পেট নিয়ে উপরে উঠতে পারবে না। আর কেউ এই সময় এখানে আসে না। আর এলেও আমি আর আমার বউ কি করছি সে নিয়ে লোকের অতো চিন্তা কি?”
“বউ বুঝি আমি তোমার?”
“নয়তো কি?”
“এখনো হইনি, হলে না হয় অধিকার জমিয়ো।”
আমি খাটে বসে ঝুমাকেও ইশারায় বসতে বললাম। ঝুমা বসে আস্তে আস্তে মুখ তুলে বললো, “বাবা খুব রেগে গেছেন, বড়দি বিকেলে ফোন করেছিল বাবাকে, বাবা বলেছে অমন ছোটলোক ঘরে একবার মেয়ে দিয়ে ঠকেছে আর দেবে না।” বলে ফুঁপিয়ে উঠলো ঝুমা।
আমি দুহাত দিয়ে ঝুমার গালদুটো ধরে মুখটা আমার দিকে তুলে বললাম, “আমার দিকে দেখো ঝুমা।” ঝুমা তাকালো, আমি আবার বললাম, “তুমি আমার সঙ্গে থাকলে কে কি বললো, কি ভাবলো আমার কিচ্ছু এসে যায় না। নিজেকে খুব অসহায় মনে হতো যখন আমাকে মা বিয়ের আগে পিসির বাড়ী পাঠিয়ে দিয়েছিল, কিন্তু তোমার কাছাকাছি আসার পর বুঝেছি আমারও কেউ আছে।” আমি আবেগী গলায় বললাম।
“আমার তুমি ছাড়া কেউ নেই কাছের। তোমাকে হারানোর ভয় পাই আমি।” ঝুমা কান্না ভেজা গলায় বললো।
“তোমাকে আমার দিব্যি অকারণে কাঁদলে। তুমি কাঁদলে আমার ভালো লাগেনা ঝুমু।”
“ছি ঐভাবে কেউ দিব্যি দেয়! তুমি ভালো করে পরীক্ষা দিয়ে নাও তারপর আমাদের বাড়ী গিয়ে বাবার সঙ্গে কথা বোলো।”
“নিশ্চই বলবো, তোমাকে পেতে যার যার সঙ্গে কথা বলতে হয় বলবো।” আমি ঝুমার হাতটা ধরলাম, ধরে বললাম, “তুমি আমার জীবনের প্রথম আর শেষ নারী, তোমার জন্য যার সাথে দরকার লড়ে যাবো।” ঝুমা এক দৃষ্টে তাকিয়ে ছিল আমার দিকে, বাকরোহিত হয়ে, তারপর মুখ নামিয়ে বললো “আমার কপালে ভগবান এত সুখ লিখে রেখেছেন জানতাম না,” ওকে কথা শেষ করতে না দিয়েই মুখটা টেনে এনে ওর ঠোঁটে নিজের ঠোঁট ডুবিয়ে দিলাম, দুপুরের চুমুটা আকস্মিক ছিল, ঝুমার মধ্যে জড়তা ছিল কিন্তু এখনকার চুমুটা অনেক স্বতঃস্ফূর্ত ছিল, অনেক ভালোবাসা ছিল। ঝুমা যোগ্য সঙ্গত করছিল। প্রায় এক মিনিট টানা স্মুচ করার পর ঝুমা ঠোঁট সরিয়ে নিলো। আমি আবার টেনে নিয়ে ঠোঁটে ঠোঁট রাখলাম। আমি আর নিজেকে সামলাতে পারলাম না, হাত নেমে এলো বুকের উপর, ঝুমার নরম বড় বুকের উপর আমার প্রথম হাত পড়লো, ডানদিকের স্তনে চাপ পড়তেই ঝুমার সম্বিৎ ফিরলো ও নিজেকে দূরে সরিয়ে নিলো, তারপর উঠে দাঁড়িয়ে বললো “দুস্টুমি বাড়ছে প্রতিদিন, আমাকে খেয়ে নেবে পারলে। শোনো আমি নীচে গেলাম দশটার সময় নীচে এসো, এসে খেয়ে নিয়ো। আর চা টা ঠান্ডা হয়ে গেল, খেয়ে নাও।”
আমি মুচকি হেসে বললাম, “অতো সুন্দর একটা জিনিষ খাবার পর এই বিস্বাদ চা কে খাবে? ও তুমি নিয়ে যাও।” ঝুমা জিভ ভেংচে নীচে চলে গেল। ওর পাছার দুলুনি আমার মনেও দোলা লাগিয়ে গেল।

বেশ কিছুক্ষন পড়ার পর আমি নীচে গেলাম। মা আর ছোটকা ঘরে ছিল, ঝুমা রান্না ঘরে। ঠাকুমা বোধহয় ঠাকুর ঘরে ছিল। আমি নেমে এসে বললাম, “খেতে দাও, খিদে পেয়েছে ” মা ঘর থেকে বেড়িয়ে এলো। এসে বললো, “ঝুমা খেতে দে বাবুকে, অনেক খেটেছে বিকেল থেকে।”
আমি কিছু না বলে আসনে বসলাম, আমার পাশে ছোটকা বসেছিল, ঠাকুমা ও বেড়িয়ে এলো। ঝুমা ঠাকুমাকেও জল আসন করে দিয়েছিল আগেই। ঝুমা খাবারের থালা নিয়ে আসতেই ঠাকুমা চেঁচিয়ে উঠলো, “বড় বৌমা আমি কিছুতেই ওই অলুক্ষুনের হাতে খাবো না। ও অলক্ষী।” ছোটকা বলে উঠলো “আহঃ মা, কি হচ্ছে কি?” ঠাকুমা চেঁচিয়ে উঠলো “তুই চুপ করতো পিকু, ওই অলক্ষী আমার অপুকে খেয়েছে এবার টুকুনকে ধরেছে।” আমি আর থাকতে না পেরে বলে উঠলাম, “যাক অনেক কিছু খেলাম, ভালো লাগলো এবার আমি শুতে যাচ্ছি। কাল ভোরে উঠে চলে যাবো। ঝুমা তুমিও তৈরী থেকো। আর হ্যাঁ যতদিন না ঝুমাকে স্বসন্মানে তোমরা একসেপ্ট করবে ততদিন এ বাড়ির অন্ন জল আমি মুখে তুলবো না।”
মা পরিস্থিতি আয়ত্তের বাইরে যাচ্ছে দেখে বললো, “টুকুন বোস, ঝুমা ওকে খেতে দে।”
আমার মেজাজ তখন সপ্তমে ছিল, আমি বলে উঠলাম, “আমার উপর তোমার বা ঠাকুমার কোনো অধিকার নেই। তোমার পেটে যে আছে তাকে তোমার সব সম্পত্তি দিয়ো আমার কোনো দাবী দাওয়া নেই। আমি নিজের পায়ে দাঁড়াবো শুধু ঝুমার জন্য। তুমি ভেবো না মা যে আমি সব ভুলে গেছি। এখন নাটক বন্ধ করো।” তারপর ঝুমার দিকে ঘুরে বললাম, “তোমার রাত্রে শোয়ার ব্যবস্থা না হলে আমাকে বলো, চিলেকোঠার ঘরে চলে এসো আমি নীচে বারান্দায় শুয়ে পড়বো।”
ঠাকুমা কি যেন বলতে যাচ্ছিল দেখে ছোটকা বলে উঠলো, “মা, খেতে বসে ওসব কথা না বললেই চলছিল না? ছেলেটা না খেয়ে উঠে যাচ্ছে দেখছো তো।” ঠাকুমা এবার বললো, “সব আমার কপাল, বিষ দাঁত বেরিয়েছে, সব ওই কালনাগিনীর চক্করে।” আমি আর বাক্যব্যয় না করে উপরে উঠে গেলাম। খুব খিদে পেয়েছিল কিন্তু এখন আর নেই। যা আছে সেটা হলো প্রত্যয়।

উপরে উঠে এসে বই নিয়ে বসলাম। না সব ভুলে পরীক্ষায় কনসেনট্রেট করতে হবে। ওদিকে ঝুমার বাড়ীতেও কেস ঝুলে আছে, কিন্তু আমি জানি সব ম্যানেজ হয়ে যাবে, শুধু আমাকে ঠিক থাকতে হবে। পড়তে পড়তে কখন ঘুমিয়ে পড়েছিলাম খেয়াল নেই। রাত্তির সাড়ে বারোটা নাগাদ দরজায় কড়া নাড়ার আওয়াজ শুনলাম। এত রাতে কে এলো?

নয়
দরজা খুলে দেখি ঝুমা, একটা প্লেটে কিছু মিষ্টি ডাল আর রুটি নিয়ে দাঁড়িয়ে। ওর মুখটা দেখে আমার মুখেও হাজার ওয়াটের আলো জ্বলে উঠলো, কাটা কাটা চোখ, নাক, কমলালেবুর কোয়ার মতো ঠোঁটদুটো, দুধ দুটো যেন তিন নম্বর ফুটবল এক একটা। আমাকে এক দৃষ্টে তাকিয়ে থাকতে দেখে বললো “কি হলো আবার বাবুর রাত দুপুরে, অমন তাকিয়ে কি দেখছো?”
“তোমাকে”
“আমাকে আগে দেখোনি বুঝি?”
“না এই ভাবে দেখিনি কোনোদিন”
“হয়েছে হয়েছে, আমার ঠান্ডা লাগছে, এই নাও খেয়ে নাও, খেয়ে থালা টা দাও আমি নিয়ে যাবো নিচে।”
“এত রাতে তোমায় আবার এসব কে করতে বললো। আমি না খেয়ে একরাত থাকতে পারতাম।”
“তাহলে আমি রাতে ঘুমোতে পারতাম না।” ঝুমা অল্প হেসে বললো।
“মা কোথায়?”
“বড়দি ঘুমিয়ে পড়েছে। সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে।”

ভিতরে ঢুকে চৌকির উপরে বসলাম, ঝুমা ও বসলো। আমি একটু দুস্টুমি করে বললাম “আমার আবার রাত্রে দুধ ছাড়া চলে না।”
ঝুমা প্রথমে বুঝতে পারেনি বললো, “দুধ নেই” তারপরেই আমার দৃষ্টি অনুসরণ করে নিজের ম্যাক্সির দিকে একবার তাকিয়ে বললো “আই কি আজেবাজে কথা বলছো? একদম দুষ্টমি নয়।”
আমি ঝুমাকে প্রায় কোলের উপর টেনে নিয়ে “আমার খুব ইচ্ছে করছে” বলে ঠোঁটের উপর ঠোঁট ডুবিয়ে দিলাম, ঝুমা ঘটনার আকস্মিকতায় একটু হকচকিয়ে গিয়ে তারপর সঙ্গ দিতে লাগলো। আমার ডান হাত ধীরে ধীরে ঝুমার দুটো দুধের উপর নেমে চটকাতে লাগলো। অবর্ণনীয় সুখ। ঝুমা আবেশে মাতাল হতে শুরু করলো। কিছুক্ষন চুমু খাবার পর আমি ঝুমাকে চৌকির উপর তুলে নিজে ওর উপরে চেপে বসলাম। ঝুমা একটু বাধা দেবার চেষ্টা করলেও শেষ অবধি হার মানলো। প্রথমে আমি ঝুমার চুল শুঁকলাম তারপর কপালে চুমু খেলাম তারপর দুটো চোখে, তারপর ঠোঁটে, তারপর গলায়, ঝুমা আবেশে চোখ বুজে ছিল। আমি ধীরে ধীরে নীচে নামছিলাম, সাহস বাড়ছিল আমার। নাভির কাছে এসে অনেক্ষন চুমু খেলাম। এবার হাঁটু গেঁড়ে বসে, ঝুমার ম্যাক্সি কে উপরে তুলতে চেষ্টা করলাম, ঝুমা বুঝতে পেরে পা দিয়ে ম্যাক্সির কোনাটা খাটে চেপে ধরলো আমার হাত আবার উপরে গিয়ে বুক দুটো জোরে টিপে দিলো, ঝুমার পা দুটো একটু আলগা হতেই তুলে দিলাম ম্যাক্সিটা। একটা ফুল ছাপ প্যান্টি পড়েছিল ঝুমা। প্যান্টিটা চেপে বসেছিল ঝুমার যৌনাঙ্গের উপর। হালকা হালকা রেশমী বাল দেখা যাচ্ছিল প্যান্টির ইলাস্টিকের উপরে। প্যান্টিটা টেনে নামাতে যাবার চেষ্টা করতেই ঝুমা ঝটকা দিয়ে আমাকে সাইডে ফেলে আস্তে আস্তে বললো, “এখুনি ওখানে নয় প্লিজ” তারপর উঠে দাঁড়ালো। আমি কিছুটা অপ্রতিভ হয়ে নিজেকে সামলে বললাম, “কেন নয় তুমি আমাকে এখনো বিশ্বাস করো না?”
“তোমাকে বিশ্বাস না করলে এত রাত্রে তোমার ঘরে আসতাম না সোনা। তুমিই আমার সব, আর কেউ নেই।”
“তাহলে বাধা দিলে কেন?”
“এখনো সময় আসেনি বাবু, ঠিক সময় আমি আমার সব কিছু উজাড় করে দেবো তোমায়, আর নিজেরটাও বুঝে নেবো।”
আমি একটু অভিমানি স্বরে বললাম, “আমার কি হবে তাহলে?” তারপর ঝুমা কে আমার উত্থিত লিঙ্গের দিকে ইশারা করে বললাম, “এটার কি হবে?” ঝুমা একটু লজ্জা পেয়ে বললো “যাহ, এরকম করলে চলে যাবো কিন্তু।”
আমি হতাশ হয়ে খাটে বসে পড়লাম। ঝুমা আমার মান ভাঙাতে আমার গা ঘেঁষে বসে আমার বাঁ হাত নিজের কোলে তুলে নিয়ে বললো, “তুমি খেয়ে নাও, জানি শুধু রুটি খেতে অসুবিধা হবে, কিন্তু রান্নাঘরে কিছুই ছিল না আর। প্লিজ খেয়ে নাও।”
আমি নরম স্বরে বললাম, “আমার ঝুমু এত রাতে শুকনো মুড়ি নিয়ে এলেও আমি অমৃত ভেবে খেয়ে নিতাম।”
ঝুমা আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বললো, “ভালোবাসি খুব ভালোবাসি।”
“আমিও” বলে প্লেটটা তুলে খেতে শুরু করলাম। ঝুমা ঠায় আমার দিকে তাকিয়ে বসে রইলো। প্লেটে ৪টে মিষ্টি ছিল ৩টে আমি খেয়ে একটা ঝুমার ঠোঁটের কাছে ধরলাম, ঝুমা না না করেও আমার মিনতিতে খেয়ে নিলো। আমি হাত মুখ ধুয়ে প্লেটটা ওর হাতে দিয়ে বললাম, “আমার পাওনা কিন্তু আমি আদায় করবোই।”
ঝুমা আদুরে স্বরে বললো “সুদে আসলে কোরো।” বলেই আমার ঠোঁটে একটা হালকা কিস করে ছুটে ঘর থেকে বেড়িয়ে গেল।

সারা রাত একটা আবেশ একটা অদ্ভুত তৃপ্তি আমাকে ঘিরে রেখেছিল। ভালোবাসার কোনো মাত্রা হয় না, কোন বাধা মানে না। আমি যেন সময়ের আগেই বড় হয়ে গেছি। ঝুমা আজ থেকে ২ বছর আগেও চূড়ান্ত ঘরোয়া কিন্তু মুখরা একটা বউ ছিল, এখন যেন সে অষ্টাদশী প্রেমিকা। আমি আর তার ভাসুরপো নই প্রেমিক। সামনেই পরীক্ষা তাই মোবাইলে ঝুমার ছবিতে একবার চুমু খেয়ে পড়ায় মন দিলাম। সারারাত ঘুমাইনি, ভোরের আলো ফুটতেই নীচে এলাম, দেখি বারান্দায় ঝুমা মোড়ায় বসে আছে, আমি ওকে আস্তে আস্তে বললাম, “গুড মর্নিং সোনা।” ঝুমা চোখ তুলে হাসলো, মুক্তোর মতো ঝকঝকে দাঁতগুলো বেড়িয়ে এলো। যেনো একরাশ শিউলি ফুল শীতের নরম সকালে শিশিরের উপর পড়লো। আমি বললাম “তৈরী হয়ে নাও ঝুমু, কেউ জেগে ওঠার আগেই বেরোবো।”

দশ
সারারাস্তা ঝুমা আমার পাশে হাতে হাত রেখে বসেছিল। ওকে বললাম “তোমাকে তোমাদের গ্রামে ছেড়ে দিয়ে আসি।”
ঝুমা বললো “কোনো দরকার নেই, তুমি যাও গিয়ে মন দিয়ে পড়ো। আর পরীক্ষা না শেষ হওয়া অবধি দিনে দুবারের বেশী কথা নয়।” বলে মুচকি হাসলো।
“আমি তো থাকতে পারবো না।”
“আমি তো তোমারই আছি, সারাজীবন তোমার পাশটিতে থাকতে চাই। এই কদিন পড়ে নাও ভালোকরে বাবু। আমাকে ওদিকটা সামলাতে হবে, তুমি পরীক্ষা দাও তারপর আমাদের বাড়ী এস।” আমার ইচ্ছে হচ্ছিলো এক্ষুনি ঝুমার বাবার সামনে গিয়ে দাঁড়াই, বলি ‘আপনার মেয়েকে আমি ভালোবাসি, ওকে আমি বিয়ে করবো।’ কিন্তু আমি এখনো স্বাবলম্বী নই, আমাকে আগে নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে।
পিসির বাড়ী এসে কারোর সঙ্গে কথা না বলে ঘরে চলে এলাম। খানিক্ষন পড়ার পর, স্নান করে খেতে গেলাম, দেখলাম পিসি মুখ গোমড়া করে বসে আছে। আমি কি ব্যাপার জিজ্ঞাসা করতে বলল “দেখ টুকুন তোদের জন্য আমার বাড়ীতে ঝামেলা হচ্ছে সকালে মা ফোন করে তোর পিসেমশাই কে যা নয় তাই বলেছে। আমরা নাকি তোকে ঝুমার সঙ্গে ফষ্টিনষ্টি করতে উৎসাহ দিচ্ছি, তোকে ওদের থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছি। এভাবে আমি পারবো না।”
“পিসি তুমি এই মুহূর্তে আমাকে এখান থেকে চলে যেতে বললেও আমার কিছু করার নেই কিন্তু আমি তোমায় নিজের মায়ের থেকে বেশি ভালোবাসি তাই একটাই রিকোয়েষ্ট পরীক্ষা শেষ হওয়া অবধি আমায় থাকতে দাও। আমি তারপর নিজে চলে যাবো।”
পিসির চোখে জল চলে এলো, উঠে এসে আমায় জড়িয়ে ধরলো পিসি, ঠিক নিজের ছেলের মত, তারপর চোখ মুছে বলল, “আমার ইচ্ছায় হলে আমি তোর বিয়ে এই বাড়ী থেকেই ঝুমার সঙ্গে দিতাম কিন্তু পারবো না রে। তুই অনেক বড় হবি দেখে নিস। তুই ঝুমাকে অনেক খুশীতে রাখবি জানি। ভালো করে পড় বাবা।”
পিসি আমাকে মায়ের মত জড়িয়ে ধরে ছিলো, ঠিক যেমন মা জড়িয়ে ধরতো ১০ বছর আগে। পিসিকে ঢিপ করে একটা প্রণাম সেরে আমি পড়তে চলে গেলাম। বায়লজি ভালো করে পড়ছিলাম আমার সাবজেক্টটা ভালো লাগে। সন্ধ্যাবেলায় ঝুমু ফোন করে খুব কাঁদছিলো ওর বাবা নাকি বলেছে আর আমাদের বাড়ী গেলে কেটে রেখে দেবে। আমার খুব রাগ হলেও কিছু বলার ছিল না বা করার ছিল না।
সব পরীক্ষা বেশ ভালো হলো, ঝুমার সঙ্গে এই কদিন সকালে বিকেলে কথা হলেও বেশিক্ষন কথা হয়নি, শেষ পরীক্ষার আগে বঙ্কু ফোন করে জানালো আমার মায়ের মেয়ে হয়েছে। পরীক্ষার পর একদিন দেখে আসবো ঠিক করলাম। শেষ পরীক্ষা অঙ্ক ছিল। পরীক্ষা দিয়ে বেরিয়েই দেখি ঝুমা দাঁড়িয়ে আছে, আমি পুরো সারপ্রাইজড। ঝুমা এগিয়ে এসে হেসে বললো, “কেমন পরীক্ষা হলো?” আমি বললাম “ভালো। চলো কোথাও গিয়ে বসি।”
বিবেকানন্দ পার্কে এসে বসলাম, লোকে আমাদের দিকে তাকাচ্ছিল বারবার কারণ একটা উচ্চ মাধ্যমিক দেওয়া স্কুল ড্রেস পড়া ছেলে আর একটা বয়সে বড় শাড়ি পড়া মেয়ে এই সময় পার্কে সত্যি খুব অদ্ভুত দৃশ্য।
ঝুমা আমার কাঁধে মাথা রেখে বললো “এবারে কি করবে?”
“জয়েন্টের রেজাল্ট টা বেরোক, ডাক্তারি পড়ার ইচ্ছে ছিল কিন্তু হবে না, ভাবছি জেনারেল ফিজিক্সে অনার্স পড়বো।” আমি অসহায় গলায় বললাম। কারণ আমি জানি ডাক্তারি পড়তে যা টাকা দরকার সেটা আমি বাড়ী থেকে পাবো না।
ঝুমা জিজ্ঞাসা করলো “কেন, ডাক্তারি হবে না কেন?এবারে না পেলে আবার জয়েন্ট দাও।”
“না আশাকরি পাবো, কিন্তু অনেক টাকার ব্যাপার।”
“টাকা নিয়ে তোমায় ভাবতে হবে না। আমি জোগাড় করবো।”
“ছি, আমি তোমার থেকে টাকা নিতে পারবো না। তাছাড়া তুমিই বা পাবে কোথায়?”
“আমার গয়না আছে ১৫ ভরি বিয়ের সময় বাবা দিয়েছিল, তারপর জমি বেচে দেবো?” ঝুমা দৃঢ় স্বরে বললো।
“আমি তোমার কোনো টাকাই নেবো না। ডাক্তারি পড়লে মিনিমাম ৭ বছর লাগবে দাঁড়াতে। কিন্তু জেনারেল পড়লে তিন বছরে গ্রাজুয়েট তারপর একটা কিছু জুটিয়ে নেবো। আমাকে যা করার তাড়াতাড়ি করতে হবে।” আমি বললাম।
“তুমি ডাক্তার হলে আমি সব ফিরে পাবো, তুমি আমার অহংকার গর্ব হবে, তোমার জন্য যে টুকু করার আমি করবোই, কোনো বাধা মানবো না। ধার হিসেবে নিয়ো।” ঝুমার গলায় এমন কিছু একটা ছিল যা আমার সব প্রতিরোধ ভেঙে দিলো।
ঝুমা কিছুক্ষন বসার পর বললো, “সামনের রোববার আমাদের বাড়ী এসো, আমি তোমাকে সঙ্গে নিয়েই বাবার সঙ্গে কথা বলতে চাই। তোমার বড্ডো ধকল গেল, তোমাকে নিজে রেঁধে খাওয়াবো।” আমি জানি ঝুমা দারুন রাঁধে, আমি হেসে বললাম, “দই চিকেন রেঁধে রেখো আমি আসবো।” বলেই ঝুমার ঠোঁটে ঠোঁট রাখলাম, ঝুমা নিজের মুখ সরিয়ে অনেকে দূরে সরিয়ে বললো, “এখানে নয় প্লিজ।”
“ধুর কবে যে তোমায় নিজের করে পাব। খালি তুমি বাধা দাও। চুমুও খেতে দাও না ঠিক করে।” আমি বিরক্তিরস্বরে বললাম।
ঝুমা প্রথমে লজ্জা পেলেও পরে একটু থেমে বললো, “নিজেকে উজাড় করে দেবো তোমায়। সমর্পন করবো নিজেকে, খুব তাড়াতাড়ি।” লাজুক স্বরে বলেই উঠে পড়লো।

এরপর ঝুমা কে বাসে তুলে দিয়ে আমি পিসির বাড়ী ফিরলাম। আমার সব হতাশা কোথায় চলে গেছে, আছে শুধু বড় হবার প্রত্যয়। ঝুমার বাবার সঙ্গে কথা বলে তাড়াতাড়ি বিয়েটা সেরে নেবো, কলেজ শুরুর আগেই ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়লাম।

ঘুম ভাঙলো পিসির ডাকে, পিসি চা খেতে ডাকছিল। চা খেতে বসে পিসেমশাই জিজ্ঞাসা করলেন, “কি টুকুন বাবু পরীক্ষা তো শেষ, কি ঠিক করলে?”
“এখনো ঠিক করিনি কিছু, দেখি জয়েন্টের রেজাল্ট বেরোক।” আমি চা খেতে খেতে বললাম।
“শোনো পরীক্ষা তো শেষ এবার বাড়ী ফিরতে হবে তো নাকি? আমরা ভাবছি পরের সপ্তাহে কদিন পুরী বেড়াতে যাবো। ফিরে আসবো ৪ দিন পরে। তারপর না হয় চলে যেও।” পিসেমশাই এর স্বরে একটু কাঠিন্য ছিল যেনো।
“ঠিক আছে, তাই হবে। তবে ও বাড়িতে আমি নাও যেতে পারি, কোথায় যাবো সেটা দেখছি। তোমরা ঘুরে এসো, আমি একাই থাকবো। তোমরা এলে চলে যাবো।” আমি জবাব দিলাম
” দেখো তুমি এখানে থাকলে আমার বা সোমার কোনো অসুবিধা নেই কিন্তু তোমার ঠাকুমা আর নমিতা বৌদি চান তুমি বাড়ী ফেরো, আমাদের কিছু করার নেই টুকুন আশা করি তুমি বুঝবে।”
“ইটস ওকে পিসেমশাই। আমি বুঝেছি।” বলে আধ খাওয়া চায়ের কাপটা বেসিনে রেখে নিজের ঘরের দিকে গেলাম। আড় চোখে তাকিয়ে দেখলাম পিসিমা রান্না ঘরের দরজায় দাঁড়িয়ে কাপড়ের খুঁট দিয়ে চোখ মুছছেন।

এগারো
পিসেমশাই দোকান চলে যেতেই আমি পিসিমার কাছে গেলাম। পিসিমা নিজের ঘরে বসে জামা কাপড় গোছাচ্ছিলেন। আমাকে দেখে বললেন “আয় বোস।” আমি পিসিমার হাত টা জড়িয়ে ধরে বললাম, “পিসিমা তুমি তখন কাঁদছিলে আমি দেখেছি। তুমি আমার মায়ের থেকেও বেশী। আমি সারাজীবন তোমার অবদান ভুলবো না। তোমাকে কোনোদিন যেনো আমার জন্য দুঃখ না পেতে হয়।”
“আমার ছোট্ট টুকুন বড় হয়ে গেছে। ইচ্ছে হয় তোকে আমার কাছে রেখে পড়াই, স্বাবলম্বী করে তুলি, তুই ভালো স্টুডেন্ট তোর ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল। কিন্তু আমি পাড়া গাঁয়ের বউ আমার হাত পা বাঁধা। মা চায় না তুই এখানে থাকিস, নমিতা বৌদির সবে বাচ্ছা হয়েছে দেড় মাস হলো। তুই বাড়ীই চলে যা বাবা।” আবার চোখের কোন চিকচিক করে উঠলো পিসিমার।
“পিসিমা বাড়ী আমি যাবো, তবে থাকবো কিনা জানিনা। আগে ঝুমার বাড়ী যাবো, ও খুব চাপে আছে। তারপর বাড়ী যাবো বাচ্চাটাকে দেখতে। হাজার হোক আমার বোন তো। তুমি আমাকে হাজার পাঁচেক টাকা ধার দিতে পারবে পিসিমা? খুব দরকার, আমি চাকরী পেলেই ফিরিয়ে দেবো।” খুব লজ্জা লাগলেও চাইলাম।
পিসিমা চিন্তিত মুখে বললো,”আমার কাছে তো অতো নেই, দেখি জোগাড় করে দেবো। কাল হলে চলবে তো?”
সম্মতি সূচক ঘাড় নেড়ে চলে এলাম। রাত্রে ঝুমার সঙ্গে কথা হলো, পরশু রোববার ওইদিন ওদের বাড়ী যাবো এই কথা ঠিক হলো।

হরিহরপুর একেবারে আজ গাঁ, বাস থেকে নেমে অনেকটা পথ হাঁটতে হয়। আমি আল ধরে হাঁটছিলাম। সেই কোন সকালে পিসিমার থেকে টাকা নিয়ে বেড়িয়েছি। শুধু পিসিমা জানে আমি কোথায় যাচ্ছি আর কেউ না। এই পৃথিবীতে দুজন নারী কে আমি বিশ্বাস করি, ঝুমা আর পিসিমা আর কাউকে নয়। রাস্তায় মিষ্টি কিনলাম এক প্যাকেট। আল রাস্তা ধরে প্রায় দেড় কিলোমিটার হাঁটার পর একটা মোড় এলো, পাশের ধান জমিতে একজন চাষী কাজ করছিল তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, “কাকা হরিহরপুর কোন দিকে?”
“হরিহরপুর এইতো এখান থেকে ডান দিকের রাস্তা ধরো প্রথম গ্রাম। তা কাদের বাড়ী যাবে?”
” মণ্ডলদের বাড়ী”
“কোন মন্ডল?”
“সুবল মন্ডল।”
“অ, সুবল মন্ডল মানে ছোট মন্ডল, আগে নায়েব ছিল সুবলদার দাদু, ওনার বাবা বিষয় আশয় সব হারিয়েছিলেন জুয়াতে। সুবল দার একটা মেয়ে, তারও কপাল খারাপ ৫-৬ বছর সংসার করেই জামাইটা খুন হলো।”
আমি এগুলো সব জানি তাই কথা না বাড়িয়ে রাস্তা ধরলাম। বেলা প্রায় ১১.৩০, সকালে এক কাপ চা খেয়ে বেড়িয়েছি। এই মার্চ মাসেই সূর্য মাথার উপরে উঠেছে, খুব গরম না পড়লেও বেশ গরম। খিদেও পেয়েছে জবর। আমি একটু এগিয়ে ঝুমাকে ফোন করলাম, জানালাম প্রায় এসে গেছি। ও বললো বাড়ীর সামনে খিড়কি পুকুরের সামনে এসে ওকে মিস কল দিতে। আমি ছোটবেলায় মানে ফাইভে পড়ার সময় কাকার বিয়ে হয়েছিল তখন এসেছিলাম বরযাত্রী, মনে আছে একটু একটু। পুকুরের পাড়ে গিয়ে কল করতে হলো না, ঝুমা দাঁড়িয়েই ছিল। আমাকে দেখেই মুক্তোর মতো দাঁত বের করে হাসলো। আমিও হাসলাম। ঝুমাকে দেখলেই আমার সব দুঃখ কষ্ট নিমেষে দূর হয়ে যায়। মনে হয় আমি সব পেয়ে গেছি। ঝুমা একটা নীল শাড়ি আর গায়ে একটা সাদা শাল জড়িয়ে ছিল। অপরূপা লাগছিলো আমার চোখে, আমি আসবো বলে ঝুমা নতুন শাড়ি পড়েছে ভাবতেই কেমন লাগলো একটা, রোমাঞ্চকর অনুভূতি। আমি এগিয়ে যেতেই বললো “এসো”। জানি ঝুমার মনেও ভয় আছে, একটা অবশ্যম্ভাবী বিবাদের আশঙ্কা আছে, এই কদিন ঝুমার সঙ্গে যতবার কথা হয়েছে ও একটাই কথা বলেছে, “দুজনে একে অপরের পাশে থাকলে কারোর ক্ষমতা নেই আলাদা করার।” আমাদের বাড়ীর ঘটনা হবার পর থেকে ঝুমার নজরে আমি অনেক উপরে উঠে গেছি বুঝতে পারছিলাম।
যখন ঝুমাদের বাড়ীতে ঢুকলাম তখন দাওয়ায় বসে মাছ কাটছিলেন ঝুমার মা। আমার হবু শাশুড়ি। ঝুমার বাবা বোধহয় বাড়ীতে ছিল না। আমি এগিয়ে গিয়ে আস্তে করে প্রনাম করলাম ওর মাকে। উনি ঘুরে উঠে দাঁড়িয়ে আমার মাথায় হাত দিয়ে আশীর্বাদ করলেন, “বেঁচে থাকো বাবা, সোনার দোয়াত কলম হোক। অনেক বড় হও।” ওনাকে ঝুমা নিশ্চই কিছু বলে রেখেছে আগে থেকে এটা বুঝতে পারলাম, কারণ এই উষ্ণ অভ্যর্থনার জন্য আমি তৈরী ছিলাম না। আমাকে একটা মোড়া দিলেন বসতে, তারপরেই ডাক দিলেন “ঝুমা, ও ঝুমা, অর্ণবকে মিষ্টি জল দে।” আমার ভালো নাম অর্ণব। আমি আমার হাতে থাকা জলভরার প্যাকেটটা ঝুমার মায়ের হাতে দিয়েই বললাম, “ব্যস্ত হবেন না, আমি সকালে খেয়ে এসেছি।”
“বসো বাবা বসো, ঝুমার বাবা আসার আগে আমার তোমাদের দুজনের সঙ্গে অনেক কথা আছে। সেই কোন সকালে বেড়িয়েছ, আগে খেয়ে নাও।”
ঝুমা চা আর একটা প্লেটে মিষ্টি নিয়ে এলো লাজুক মুখ করে। আমাকে দিলো চোখ নামিয়ে, লজ্জা পাচ্ছে মায়ের সামনে, কথাতেই আছে লজ্জা নারীর ভূষণ, আরো সুন্দর দেখাচ্ছিল ওকে। ঝুমার মা বললো, “লুচি আর আলুর দম কখন দিবি? দেরী করিস না। তোর বাবা আসার আগে ও ভাতটুকু খেয়ে নিক আমি চাই।” ঝুমা “দিচ্ছি মা” বলে রান্নাঘরে চলে গেল।
একটু পরে খেয়ে বসে আছি এমন সময় ঝুমা পাশে এসে দাঁড়ালো, আমি জিজ্ঞাসা করলাম “মা কোথায়?” ও বললো”স্নানে গেছ”। আমি ওকে টেনে আমার কোলে বসালাম। ঝুমা আচমকা সামলাতে না পেরে আমার কোলের উপর পড়ে গেল। তারপর ছটফটিয়ে উঠতে গেল, আমি আমার ঠোঁট ওর ঠোঁটে বসিয়ে দিলাম। আহঃ কি অনির্বচনীয় আরাম, ঝুমা প্রথমে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও পরে সঙ্গ দিতে শুরু করলো। প্রায় মিনিট দুই চুমু খাবার পর আমি ঠোঁট তুলে ঝুমাকে ভালো করে কোলে বসিয়ে দুধ টিপতে শুরু করলাম। বড় বড় দুধ আমার হাতে আঁটছিলো না। এক হাতে ঝুমার কোমর ধরে ছিলাম। মাঝে মাঝে চুমু খেতে খেতে ঝুমার বুক টিপছিলাম। ঝুমা না না করলেও এনজয় করছিল বুঝতে পারছিলাম। একটু পরে গেট খোলার আওয়াজ পেতেই ঝুমা ঝট করে উঠে দাঁড়ালো। দাঁড়িয়েই ঘরে ঢুকে গেলো, ঝুমার মা ঢুকে বললো, “বাবা তোমরা দুজনেই আমার ঘরে এসো, আমি ঠাকুর দিয়েই আসছি।” বলে উপরে উঠে গেল। আমি আস্তে করে ডাকলাম “ঝুমু।” ঝুমা বেড়িয়ে এলো।
“কাছে এসো।”
“না তুমি আবার দুষ্টামি শুরু করবে। দস্যি একেবারে।”
“আরে প্রায় দেড় মাস পরে তোমাকে কাছে পেলাম একটু আদর করবো না” আমি দুস্টুমিমাখা স্বরে বললাম।
“ওটা আদর, উফফ কি জোর হাতে, টিপে ব্যাথা করে দিয়েছো। ওরকম করলে কোনোদিন হাত দিতে দেবো না।”
“লোকসান তাহলে তোমারই সোনা।” বলে একটু থেমে জিজ্ঞাসা করলাম, “শাশুড়ি মা কি কথা বলবেন আমার সাথে?”
“বাবাঃ শ্বাশুড়ি বুঝি! বিয়ের আগেই শ্বাশুড়ি! খুব উন্নতি হয়েছে ছেলের।” ঝুমা ঠোঁট উল্টে বললো।
“তাহলে কি দিদুন বলে ডাকবো? বউয়ের মা কে দিদুন।”
“এখন বউ হইনি মহারাজ, দেরী আছে।”
“সে লিগালি না হলেও আমি মনে মনে তোমায় বউ করে নিয়েছি। তুমি নাওনি?”
“দস্যি একটা। শ্বাশুড়ী জমাইয়ে কি কথা হবে আমি কি জানবো? বোধহয় দেনা পাওনার কথা বলবে।” বলে মুচকি হাসলো।
“ও তাহলে অনেক কিছু চাইবো।”
“যেমন?”
“ওনার ঘরের সবচেয়ে সুন্দর আর দামী রত্ন টা চাইবো।”
“যদি না দিতে চান?”
“ছিনিয়ে নিয়ে যাবো
সিঁড়িতে পায়ের শব্দ শোনা গেল, ঝুমা আবার ঘরে ঢুকলো।

ঝুমা আর ওর মা খাটে বসেছিল, আমি সামনে চেয়ারে। ঝুমার মাই প্রথম কথা শুরু করলেন “দেখো বাবা, তুমি বয়সে ঝুমার থেকে অনেকটাই ছোট, তোমার মা বছর খানেক আগে যখন বিয়ের কথা বলেছিলেন আমি অমতই করেছিলাম একটু। কিন্তু এখন পরিস্থিতি বদলে গেছে।” একটু থেমে ভালো করে আমার দিকে তাকিয়ে তারপর বললেন, “ঝুমাকে তোমার কাকার সঙ্গে বিয়ে দিলাম, ৭ বছর সংসার করতে না করতেই সে চলে গেল। সোমত্ত মেয়ে, ভরা যৌবন, কিন্তু তোমার ঠাকুমা বাঁজা বাঁজা করে বদনাম করে দিল মেয়েটার। তাই আমার মত ছিল না ও বাড়ীতে আবার বিয়ে দেওয়ার কিন্তু শেষ তিন মাস আমি আমার ঝুমা কে বদলে যেতে দেখেছি। দেখেছি মুখ গোমড়া করে থাকা, কথায় কথায় খিঁচ খিঁচ করা ঝুমা একদম হাসিখুশি। তাই আমি মত বদলেছি। কিন্তু তোমার ঠাকুমা ঝুমার বাবাকে যা নয় তাই বলে অপমান করেছে। তাই তিনি তেলে বেগুনে জ্বলে আছেন। আমি জানতে চাই তুমি তোমার আর ঝুমার ব্যাপারে কি ভেবেছো? জানি তুমি ছোট অনেক এই বয়েসে এত ভারী প্রশ্নের উত্তর দেওয়া শক্ত তোমার পক্ষে কিন্তু মেয়ের ভবিষ্যতের প্রশ্ন বাবা।” বলে উনি থামলেন।
ঝুমা এতক্ষন মায়ের মুখের দিকে তাকিয়েছিল এবার আমার মুখের দিকে তাকালো। আমি গলা ঝেড়ে বললাম, “আমি আমার জীবনে কোনো মেয়ের দিকে তাকাইনি। ঝুমা জীবনে আসার পর আমার জীবনে বিরাট পরিবর্তন এসেছে, আমি ভালোবাসা কি তা জানতে শিখেছি। আমি ঝুমা ছাড়া আর কিছুই ভাবতে পারি না। আপনার প্রশ্নের উত্তরে আমি অনেক বড় বড় কথা বলতে পারি কিন্তু বলবো না।” তারপর ঝুমার দিকে ঘুরে বললাম, “ঝুমা তোমার হাতটা দাও।” ঝুমা প্রথমে চমকে উঠলেও পরে নিজের হাত বাড়িয়ে দিলো, আমি ঝুমার হাত ধরে বললাম, “আমি আপনাদের ঝুমার কোনো অসন্মান কোনোদিন হয়ে দেবো না, চেষ্টা করবো সারা জীবন যেনো ও সুখে থাকে। ওকে সুখী রাখার জন্য যা করার তাই করবো।

আমার যেটুকু সামর্থ্য সেই টুকু উজাড় করে দেবো।” ঝুমা আমার মুখের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিল। ও জানতেই পারেনি আমি কবে বড় হয়ে গেছি। টপ করে এক ফোঁটা জল পড়লো ওর চোখ দিয়ে, আমি আস্তে করে বললাম, “ঝুমু কেঁদো না ওতে গৃহস্থের অকল্যাণ হয়।” তারপর ওর মায়ের দিকে ঘুরে বললাম, “আমি চাই আপনাকে দিদুন নয় মা বলে ডাকতে, আপনি কি সে সুযোগ দেবেন আমায়?”

এত ম্যাচিউর উত্তর বোধহয় ঝুমার মা আশা করেননি আমার কাছ থেকে। অবাক হয়ে তাকিয়েছিলেন আমার দিকে। ঝুমারও বিস্ময় ভাব কেটে গিয়ে মুখে গর্বের মৃদু হাসি। ঝুমার মা বললেন, “আমি বুঝতে পেরেছি বাবা। আমি চাই তুমি সুখী হও, তুমি সুখী হলেই আমার মেয়েটা সুখী হবে” আমি বললাম, “মা, দেখুন আমার বাড়ীর যা পরিস্থিতি তাতে ওখান থেকে আমি কোনো সাহায্য আশা করি না। চাই ও না কোনো সাহায্য। আমাকে যা করতে হবে নিজেকেই করতে হবে। তাই আমার নিজের পায়ে দাঁড়াতে হয়তো সময় লাগবে। কিন্তু ততদিন অপেক্ষা করার সময় বা সুযোগ না আমার আছে না ঝুমার, তাই আমি চাই আমার কলেজ শুরুর আগেই বিয়েটা সেরে ফেলতে। তবে আমার চাওয়াটাই সব নয়। আপনারা কি চান সেটাও সমান গুরুত্বপূর্ণ।” আমার মুখে মা ডাক শুনে ঝুমা মিটিমিটি হাসছিল, আর ওর মার মুখেও ছিল প্রশান্তির ছাপ। ওর মা ঝুমা কে জিজ্ঞাসা করলো, “তুই কি চাস ঝুমা?”
ঝুমা লজ্জা পেয়ে বললো, “যা তোমরা ঠিক করবে।”
“তোর বাবার যা রাগ আর ইগো তোর বাপ মেনে নেবে না। যা করার আমাকেই করতে হবে। তবু আমি চাই অর্ণব একবার তোর বাবার মুখোমুখি বসুক, ও বয়সের থেকে অনেক বড় চিন্তায়। আমি অনেক শান্তি পেলাম।” একটু থেমে উনি আবার বললেন, “আমি বলি কি বাবা তুমি আরেকটু ভাবো তারপর না হয় কবে কি করবে সেই সিদ্ধান্ত নিয়ো।” তারপর ঝুমার দিকে ঘুরে বললেন, “মা ঝুমা, আমাকে একটু দাসদের বাড়ী যেতে হবে, বড়ি কিনেছি সেই টাকা দিতে, তোরা বোস কথা বল। আমি আধঘন্টা ঘুরে আসি। তোর বাবা আসবে ৩টে নাগাদ, আমি এসেই অর্ণব কে খেতে দেবো।” বলে উনি উঠে পড়লেন। ঝুমাও জল নিয়ে আসার অছিলায় বেড়িয়ে গেল ঘর থেকে।

বারো
প্রায় পাঁচ মিনিট পর ঝুমা এলো, এসে বললো, “বা বাবু বা, এই সেদিনের বাচ্চা ছেলে টুকুন কত বড় বড় কথা বলছে, ১০ মিনিটে দিদুন থেকে মা!”
“তুমি কি বাইরে দাঁড়িয়েই কথা বলবে না ভিতরে আসবে?”
“কথা দাও দুস্টুমি করবে না তাহলে আসবো।”
“বেশ করবো না এসো।”
ঝুমা ঘরে ঢুকে আমার পাশে বসলো, আমি ওর হাতে হাত রেখে চোখের দিকে তাকালাম, টলটলে দীঘির মত চোখ, কত গভীর, এরকম চোখে চির জীবনের জন্য হারিয়ে যাওয়া যায়, হাসতে হাসতে মরে যাওয়া যায়। আমি তন্ময় হয়ে তাকিয়ে ছিলাম। ঝুমা নীরবতা ভেঙে বললো, “কি দেখছো? অমন করে।”
“তোমাকে।”
“আমাকে আগে দেখোনি বুঝি?”
“এরকম ভাবে কোনোদিন দেখিনি।”
“এত দেখো না মন ভরে যাবে, আর তারপর অন্য কারোর জন্য মন উতলা হবে।” মুচকি হাসলো ঝুমা।
“কোনোদিন নয়, যতদিন বাঁচবো এ ভাবেই দেখে যাবো। মন ভরবে না। আজ থেকে ৩০-৪০ বছর পরে, আমাদের নাতি নাতনিরা যখন খেলবে তখন বারান্দায় ইজি চেয়ারে বসেও তোমাকেই দেখবো।”
ঝুমা একটু আমার কাছ ঘেঁষে আমার কাঁধে মাথা রেখে বললো, “আমার মতো কালো, নির্গুণ, বাঁজা মেয়ের এত সুখ কপালে সইবে না। প্রতি মুহূর্তে তোমাকে হারাবার ভয় পাই।”
“নিজেকে কালো আর নির্গুণ বলা বন্ধ করো ঝুমু। তোমার মত গুন ক জনের আছে। আর কালো? ওটা তোমার ভুল ধারণা, আমার চোখে তুমি সর্বশ্রেষ্ঠ। আমি কথা দিয়েছি সারাজীবন তোমার হাত ধরে পাশটিতে থাকবো তোমার হয়ে তোমার সাথে।”
ঝুমার চোখ ভিজে এলো, তারপর আস্তে করে উঠে আমার কোলে বসে নিজের ঠোঁট আমার ঠোঁটে ডুবিয়ে দিলো। অপ্রত্যাশিত ভালোবাসায় আমিও সঙ্গ দিলাম। আমার জিভ ঝুমার জিভের সঙ্গে খেলতে শুরু করলো। প্রায় ২-৩ মিনিট। তারপর আমার হাত ঝুমার দুধের উপর রেখে আস্তে আস্তে টিপতে শুরু করলাম, ঝুমা একটুও বাধা দিচ্ছিলো না, আজ ও একেবারে নিজেকে আমার করে নিয়েছে। আমি চুমু খাওয়া বন্ধ করে ওর শাড়ির আঁচল সরিয়ে ব্লাউজের হুক খুলতে শুরু করতেই ঝুমা বললো, “মা এসে পড়বে।”
“এখন আসবে না, এলেও জানবেন জামাই মেয়েকে আদর করছে।”
“ছি অসভ্য, তুমি কিন্তু কথা দিয়েছো দুষ্টমি করবে না।”কামনা মদির স্বরে বললো ঝুমা। ও চায় আমি আদর করি কিন্তু লজ্জার আগল ভেঙে বেড়োতে পারছে না। আমি ততক্ষণে ব্লাউজের হুক খুলে ফেলেছি, একটা গোলাপী ব্রা পড়ে ছিল ঝুমা। আমি তার উপর দিয়ে সুউচ্চ বুকের খাঁজে মুখ গুঁজে দিতে দিতে বললাম, “ভালবাসছি, খুব ভালবাসছি।” ঝুমা এবার বাধা না দিয়ে আমার মাথা গুঁজে দিলো ওর দুধের খাঁজে। আমি জিভ বুলিয়ে চেটে একাকার করে দিলাম। ও মাথায় হাত বলানো বন্ধ করে বললো, “ব্রা টা ভিজে যাবে সোনা।”
“তবে খুলে দাও।”
“যা মা এসে পড়বে।”
“আসবে না এখন, তুমি খোলো।”
“জানি না তুমি খুলে দাও।” বলে লজ্জায় আমার কাঁধে মুখ গুঁজলো।
আমি আমার হাত পিছনে নিয়ে গিয়ে অনেক চেষ্টা করেও ব্রাটা খুলতে পারলাম না। আমার অবস্থা দেখে হেসে ফেললো ঝুমা, নিজেই দুহাত পিছনে নিয়ে গিয়ে খুলে দিল হুকটা। আমার চোখের সামনে কখনো না দেখা, অথচ কল্পনায় আকাশকুসুম ছবি এঁকেছি যে দুটি ঐশ্বরিক জিনিসের জন্য সেই দুটো জিনিষ উন্মুক্ত হয়ে গেল। ঝুমার দুধদুটো গড়পড়তা বাঙালি মেয়ের থেকে অনেক বড়। খুব অল্প ঝুলেছে বয়সের ভারে, স্তনবৃন্ত টা বাদামী বেশ বড় আকারের আর তার ঠিক মাঝখানে ছোট্ট দুটো তীক্ষ্ণ বোঁটা। দুধদুটো দেখে ঠিক যেনো মনে হলো অভিমানিনি কোনো অষ্টাদশী আদর না পেয়ে নীচের দিকে তাকিয়ে আছে। আমি থাকতে না পেরে বাম মাই টা মুখে ভরে চুষতে শুরু করলাম আর ডান মাইটা বাম হাত দিয়ে চটকাতে শুরু করলাম। ভাষায় বর্ণনা করা যাবে না আমার সুখ তখন। ঝুমা আদরের জানান দিয়ে হালকা স্বরে “উফফ” করে উঠলো। আমি বাম মাই ছেড়ে ডান মাই মুখে পুড়লাম। চুষতে চুষতে মনে হচ্ছিল আজই দুধ বের করে দেবো। ঝুমা আমার মাথায় চুলে হাত বুলিয়ে যাচ্ছে কনস্টান্ট। আমি মাই থেকে মুখ তুলে দুহাতে দুটো টিপতে টিপতে ঝুমার কানের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে ফিসফিসিয়ে বললাম, “আই লাভ ইউ।”
ঝুমা আবেশে বলে উঠলো, “এত সুখ, মরে যাবো টুকুন আমি মরে যাবো। তোমার কাকা কোনোদিন এত আদর করেনি আমায়। আমি আর পারছি না সোনা। আমায় তোমার করে নাও।” আমি অনুমতি পেয়ে গেছি বুঝে ঝুমাকে কোল থেকে নামিয়ে খাটে বসালাম, মুখোমুখি দাঁড়াতেই আমার লিঙ্গ যেনো প্যান্ট জাঙ্গিয়া ভেদ করে বেরোতে চাইলো, ঝুমার দৃষ্টি এড়ালো না। ও মুচকি হেসে বললো, “আজ এটুকুই থাক।” বলে উঠে ছুটে বাইরে পালিয়ে গেল। আমি ফ্যালফ্যাল করে ওর চলে যাওয়া দেখলাম। ওর ব্রা আর ব্লাউজ তখনো খাটের উপর পড়ে। প্রায় দশ মিনিট পর ঝুমা ঘরে ঢুকলো একটা নাইটি পড়ে, আমার দিকে দুস্টুমি ভরা হাসি হেসে তাকিয়ে ব্রা আর ব্লাউজ তুলতে যেতেই আমি ওর হাত টেনে ধরলাম। ও হাতটা ছাড়িয়ে নিতে যেতেই বললাম, “আমার কি হবে?” আমার ইশারা আমার লিঙ্গের দিকে ছিল সেটা বুঝতে পেরে বললো, “সময় আসুক সব ভালোবাসা বুঝে নেবো। এখন যা পেয়েছো সেটাই অনেক।” বলে ব্রা আর ব্লাউজ তুলে বেরিয়ে গেল। আমি হতাশ হলেও অখুশী নই। মনে মনে হেসে ফেললাম। ঝুমা তো আমারই সবসময় আমার।

প্রায় দুপুর দুটো বাজচ্ছিলো, ঝুমার মা প্রভা দেবী আসন পিঁড়ি করে দিলেন বারান্দায়। খাবার বেড়ে আমার ঘরে এসে আস্তে করে ডাকলো ঝুমা, “এই শুনছো খেতে এসো।” ঠিক যেনো কোনো নবপরিণীতা নিজের স্বামীকে ডাকছে। প্রভা দেবী ও বোধহয় শুনতে পেয়েছিলেন মেয়ের ভালোবাসার ডাক। তাই আমি যখন খেতে বসলাম তখন ঝুমা কে ডেকে বললেন, “বর খাবার সময় দাঁড়িয়ে থাকতে হয় পাশে।” বলে হওয়া করতে লাগলেন পাখাটা তুলে নিয়ে। ঝুমা লজ্জায় লাল হয়ে দাঁত দিয়ে নিজের ঠোঁট চেপে ধরলো। ঝুমা দই চিকেন রেঁধেছিলো, এটা ও দুর্দান্ত রাঁধে আমি জানি, আমার হবু শ্বাশুড়ী আমার জন্য মাছ রেঁধেছিলেন। বহুদিন বাদে এত তৃপ্তি করে খেলাম। খেয়ে উঠলাম ঝুমা মৌরি দিলো। এমন সময় বাইরে থেকে আওয়াজ শুনলাম “কোই গো প্রভা, মামনি বেরিয়ে আয় সব্জীগুলো নিয়ে যা।” বুঝলাম যার জন্য আমরা কেউ অপেক্ষা করছিলাম না কিন্তু যার আসাটা অবশ্যম্ভাবী ছিল সেই ঝুমার বাবা এসে গেছেন।

সুবল বাবু সাইকেল নিয়ে ভিতরে ঢুকলেন। ঝুমা শাকসব্জি নিয়ে ভিতরে গেল রাখতে। আমাকে লক্ষ্য করেননি ভদ্র লোক তখনও। প্রভা দেবী বললেন, “ওগো শুনছো, দেখ কে এসেছে?”
“এই অসময়ে কে এলো আবার।”
“অর্ণব এসেছে ওদের বাড়ী থেকে কথা বলতে।”
“কে অর্ণব?”
“আরে ঝুমার শ্বশুরবাড়ীর তরফে।”
“কেন কি দরকারে এসেছে? বলেই তো দিয়েছি, একবার ভুল করেছি ও বাড়ীতে মেয়ে দিয়ে আর দেবো না।”
“আরে ছেলেটা এসেছে ওর কথা শোনো, নাকি বাইরে দাঁড়িয়েই সব কথা বলবে?”
সুবল বাবু ঘরে ঢুকে দাওয়ায় উঠে এলেন। আমি তখন ঘরে বসে।

তেরো
সুবল বাবু খাটে বসে ছিলেন, আমি চেয়ারে।
“একটা কথা সোজা করে বলি তোমায়, ঝুমাকে বিয়ের আশা ছেড়ে দাও। আমি মেয়ে দেবো না ও বাড়িতে। আমার মেয়েকে গলায় কলসি বেঁধে জলে ভাসিয়ে দেবো তাও আচ্ছা কিন্তু কেষ্টপুরের সরকার বাড়ীতে দেবো না।”
“আহা ওর কথাটা তো শোনো।” প্রভা দেবী বললেন।
“শোনার কিছু নেই প্রভা, আমি ডিসিশন জানিয়ে দিয়েছি।”
“তবু শোনো। ও একটা সবে উচ্চ মাধ্যমিক দেওয়া ছেলে তোমার মেয়ের জন্য এতদূর এসেছে ওর কথাটা শুনেই দেখো একবার।” প্রভা দেবী বেশ দৃঢ় স্বরে বললেন।
আমি তখন নির্বাক শ্রোতা, দরজার কপাটের ও পাশে ঝুমার নির্বাক উপস্থিতি ও বুঝতে পারছিলাম।
আমি ঝুমার মা কে যা বলেছিলাম সেটারই পুনরাবৃত্তি করলাম ওর বাবার সামনে, শুধু এটুকু জুড়ে দিলাম সাথে, “আপনার মেয়ের সুখের কোনো অভাব কোনোদিন হবে না। আমার নিজের ডাল ভাত না জুটলেও আপনার মেয়ের জুটবে। আর এমনিতেই বাড়ির সঙ্গে আমার যোগাযোগ ক্ষীণ।”
উনি সব শুনে বললেন, “আমরা ভদ্রলোক, তায় তুমি আত্মীয়, এসেছো, খাওয়া দাওয়া করো, তারপর চলে যাও।” তারপর প্রভা দেবীর দিকে তাকিয়ে বললেন, “প্রভা আমাকে আর অর্ণবকে খেতে দাও। ও বেলাবেলি বেড়িয়ে পড়ুক নইলে লাস্ট বাসটা মিস করবে।” বলে উঠে পড়লেন। প্রভা দেবী শেষ চেষ্টা করলেন, “ঝুমাকে অন্তত একবার জিজ্ঞাসা করো, প্লীজ।”
এবার সুবল বাবু বেশ রাগী গলায় বললেন, “যা বলার বলে দিয়েছি। আমার সিদ্ধান্ত ফাইনাল। কোনো কিন্তু নেই। বোশেখ মাসে ঝুমার বিয়ে দেবো শীতলাতলার স্বপন বিশ্বাসের সঙ্গে। ছেলেটার বউ মারা গেছে সাপে কেটে। ছেলে ভালো, গ্রামেই থাকবে মেয়ে। ওদের দাবী দাওয়া নেই সেরকম।”
“সেকি!!!! ওই ৫০ বছরের বুড়োর সঙ্গে ঝুমার বিয়ে!!!! তুমি মেনে নেবে? ওর বড় মেয়েটাই তো টুকুনের থেকে বড়।” শাশুড়ী মা প্রায় কেঁদে ফেললেন। আমার মাথায় প্রায় বজ্রাঘাত হলো। সুবল বাবু বললেন, “আমার বাপ দাদারা অনেক পাপ করেছে। স্বপনের দাদু মরেছিল আমার দাদুর জন্যে, সেই পাপ স্খলন হবে একটু। আমি পুকুর থেকে স্নান সেরে আসছি, দেখো অর্ণব যেনো খেয়ে যায়।” বলে উনি বেরিয়ে গেলেন।
উনি বাড়ির বাইরে যেতেই ঝুমা ঘরে ঢুকে খাটে মুখ লুকিয়ে কাঁদতে শুরু করলো। প্রভা দেবী মেয়ে কে ধরে বললেন, “ওঠ ঝুমা, এটা কাঁদার সময় নয়।” তারপর আমার দিকে ঘুরে বললেন, “তোমাকে সাত দিন সময় দিচ্ছি বাবা, তুমি ঝুমাকে সাত দিন পর মানে পরের রোববার নিয়ে যাও বাড়ী থেকে, টাকা পয়সা আমার কাছে যা আছে সব দেবো। তুমি নিজের পায়ে না দাঁড়ানো অবধি ঝুমার আর তোমার চলে যাবে।” তারপর ঝুমার হাত টা আমার হাতে দিয়ে বললেন, “আমার মেয়ের অতবড় সব্বনাশ হবে আর আমি দেখবো সে হবে না। আমি বেঁচে থাকতে তোর বাবাকে অনর্থ করতে দেবো না।” আমি ঝুমার হাত শক্ত করে ধরে ছিলাম, ঝুমার মায়ের মুখটা অবিকল পুজোর প্যান্ডেলের মা দুর্গার মতো লাগছিলো। আমি ঝুমার হাত থেকে আমার হাতটা ছাড়িয়ে ওনাকে প্রনাম করলাম উনি আশীর্বাদ করলেন তারপর আমি বললাম, “মা, আপনার বিশ্বাসের মর্যাদা আমি রাখবো। আজ অনেক দেরী হয়ে গেল, আমি আসছি। আপনি ব্যবস্থা করুন পরের রোববার আমি ঝুমাকে নিয়ে যাবো।” বলে উঠে পড়লাম। ঝুমার মা বললেন, “দাঁড়াও আমি একটু আসছি।” উনি বেরিয়ে যেতেই ঝুমা আমাকে জাপটে ধরলো। এতক্ষন যেনো আশ্রয় খুঁজচ্ছিলো সেটাই পেলো আমার বুকে। আমি আস্তে আস্তে বললাম, “ভালোবাসি, এই মেয়েটাকেই ভালোবাসি।”
ঝুমাও ফিসফিসিয়ে বললো, “এক আকাশ ভালোবাসি এই পাগলটাকে।”
“তুমি তৈরী থেকো ঝুমা আমি আসছি তোমায় নিতে, যে ভাবে চেয়েছিলাম সেভাবে হলো না কিন্তু পূর্বজন্মে কোনো পুন্য করেছিলাম তাই তোমাকে পাচ্ছি। না পেলে বাঁচতাম না।” ঝুমা আমার ঠোঁটে আঙ্গুল রেখে বললো, “ওরকম বলে না।” এমন সময় প্রভা দেবী ঢুকছেন দেখে আমাকে ছেড়ে দূরে সরে গেল। প্রভা দেবী আমার হাতে কিছু টাকা দিয়ে বললেন, “এগুলো রাখো, আমার জমানো, আরো আছে পরে দেবো। তুমি সাতদিনে সব ব্যবস্থা করে ফোন কোরো। এবার বেরিয়ে পড়, মনে রাখবে সময় কম, জানি তোমার বয়স কম তবু যা করার তোমাকেই করতে হবে।”
“টাকা আমি নিতে পারবো না মা। আশীর্বাদ করুন তাহলেই হবে।”
“মা দিলে ছেলেকে না করতে নেই। তোমায় যখন চাকরী হবে, অনেক উন্নতি হবে তখন ফেরৎ দিয়ো। এখন রাখো ১০০০০ আছে।”
আমি কিছু না বলে টাকাটা পকেটে রেখে বেরিয়ে এলাম।

রাস্তায় যেতে যেতে ভাবছিলাম ৭ দিন, মাত্র ৭ দিন আছে আমার হাতে। খুব গুরুত্ত্বপূর্ণ সময়, জীবনের অদ্ভুত সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আমি এবং ঝুমা। ঝুমা আমায় বিশ্বাস করেছে, এ বিশ্বাসের মর্যাদা আমায় রাখতেই হবে। ভাবতে ভাবতে হাঁটছিলাম।

পিসিরা কাল বেড়াতে যাচ্ছে, আমি ফিরে আসতে পিসি খুব উৎসুক ছিল কি হলো, আমি পিসিকে সব খুলে বললাম। পিসি সব শুনে জিজ্ঞাসা করলো ‘কি করবি ভাবলি?’
“ভাবাভাবির কিছু নেই পিসি, বিয়ে করবো। আইনি ভাবে করতে গেলে এক মাসের নোটিশ দিতে হয় সেটা পরে করবো আগে কালীঘাটে গিয়ে বিয়ে করে নেবো। পরে রেজিস্ট্রি করবো।” তারপর পিসির দুহাত ধরে বললাম “তুমি পাশে থাকবে তো পিসি?”
পিসি আমার হাতে হাত বুলোতে বুলোতে বললো “সারাজীবন আমাকে তোর পাশে পাবি।”
“কেউ যেনো ঘুনাক্ষরেও টের না পায় পিসি আর তুমি আমার মা হয়ে চলো পরের রোববার আমাদের বিয়ে দেবে। যাবে পিসি?”
পিসি কিছুক্ষন নিজের ভ্রূ কুঁচকে কি যেনো ভাবলো তারপর বললো, “হ্যাঁ যাবো।”

চোদ্দ
পিসিরা চলে যাবার পর আমি ঠিক করলাম এক বেলার জন্য বাড়ী যাবো। মায়ের নতুন মেয়েটাকে দেখতে। সেই মতো বুধবার আমি বাড়ী গেলাম। বাড়িতে বোধহয় ঠাকুমা ছিল না, মোক্ষদা মাসীকেও দেখতে পেলাম না। ভিতরে ঢুকে এদিক সেদিক দেখছি এমন সময়ে চোখে পড়লো বাচ্চা মেয়েটা দোলনায় শুয়ে রয়েছে, বোধহয় ঘুমিয়ে পড়েছে। মা কে ডাকতে যাবো এমন সময় রান্নাঘর থেকে ছোটকার আওয়াজ পেলাম, “নমিতা প্লিজ খেতে দাও কতদিন উপোস আছি।”
আমি পা টিপে টিপে দাওয়ায় উঠে লুকিয়ে রান্না ঘরে কি হচ্ছে দেখতে লাগলাম। ছোটকা মা কে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে আছে আর মা খুন্তি নাড়ছে কড়াইয়ে। ছোটকার হাত দুটো মায়ের মাই এর উপর। মা মুখ ঘুরিয়ে ছোটকাকে একটা চুমু খেয়ে বললো, “এই এরকম করে না জানু, দেখ তোমার টেপন খেয়ে ব্লাউজ ভিজে গেল। কেউ চলে আসবে তো।”
“পুচু সোনা, আমি কতদিন উপোস বলো তো, আর কদিন হ্যান্ডেল মেরে কাটাবো? দুধ অন্তত খেতে দাও।” বলে সজোরে মায়ের মাইদুটো টিপে দিলো। মা ব্যাথায় ওঁক করে উঠলো তারপরেই মুখ ঝামটা দিয়ে বলে উঠলো, “এত জোরে টিপলে কেন? বলেছি না রাত্রে মামনিকে দুধ দেবার কিছু বাঁচলে তুমি পাবে। উফফ কি লাগলো।”
“ধুর বাল, আমি চললাম, যাবো যেদিন বেশ্যা পাড়ায় সেদিন বুঝবে।”
মা বুঝতে পারলো ছোটকার রাগ হয়েছে তাই একটু নরম হয়ে বললো, “আর একটা মাস ওয়েট করো তারপর সব খুলে তোমায় খাওয়াবো।”
“না আমার এক্ষুনি দুধ চাই।” বলে আবার মাই টিপে দিলো। মা বুঝতে পারলো ছোটকা মাই না চুষে যাবে না। তাই বাঁদিকের ব্লাউজ টা তুলে দিতেই ৩৬ সাইজের একটা সাদা ফর্সা মাই লাফিয়ে বেরোলো। ছোটকা লোভী হুলো বেড়ালের মতো ঝাঁপিয়ে মায়ের মাই চুষতে লাগলো চোঁ চোঁ করে। মা সুখে আহঃ উঃ করতে লাগলো। ঠিক এমন সময় বাচ্চাটা কেঁদে উঠলো।
মা বলে উঠলো “ছাড়ো খুকী কাঁদছে।” অনিচ্ছা সত্ত্বেও মাই ছেড়ে দিলো ছোটকা, বললো “ধুর ভালো লাগে না।” মা বেরিয়ে আসতে আসতে বললো, “রাত্রে খেতে দেবো খুকীর খাওয়ার পর।” বলে হেসে বেরিয়ে এসে দেখলো আমি খুকীকে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। ছোট্ট পুতুলের মতো বোন আমার, কাটা কাটা নাক চোখ, গায়ের রং পুরো মায়ের মতো। মা বেরিয়ে এসে বললো “টুকুন কখন এলি?” মনে মনে ভাবলাম বলি তুমি যখন কামকেলি করতে ব্যস্ত ছিলে তখন। কিন্তু মুখে বললাম “এই আসছি, এসে দেখি খুকী কাঁদছে তাই কোলে নিলাম।” মা ব্যস্ত হয়ে বললো, “ওগো শুনছো, টুকুন এসেছে একটু মাছ কিনে নিয়ে এসো না।” আমি “আমি খাবো না মা। খুকী কে দেখতে এলাম। খুকীর জন্য জামা প্যান্ট আর খেলনা কিনেছিলাম দিতে এলাম। চলে যাবো এক্ষুনি।”
“ওমা সেকি!!!! আবার যাবি কেন তোর তো চলে আসার কথা!” মা বেশ অবাক হলো।
“আমি তো বলেছি এ বাড়ীতে আর আসবো না, যতদিন না ঝুমা কে এ বাড়ীতে মেনে নেওয়া হয়।”
“তোর ঠাকুমা থাকতে সেটা হবে না। আমি ঝুমার বাবাকে ফোন করেছিলাম উনিও বিয়ে দিতে চান না। আমি তোর অন্য জায়গায় বিয়ে দেবো।”
“তোমাদের কারোর চাওয়া না চাওয়ায় কিচ্ছু এসে যায় না।”
“টুকুন খুব বড় বড় কথা বলছিস এত ফুটানি সব বেড়িয়ে যাবে যদি খেতে না পাস।”
“তোমরা পেট ভরে খাও। আমারটা আমি দেখে নেবো।” খুকীকে মায়ের হাতে দিয়ে ওর গালে একটা চুমু খেয়ে বেরিয়ে এলাম বাড়ী থেকে। মা ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে রইলো আমার যাত্রাপথে।
পিসির বাড়ী ফিরে আমি প্রথমে কিছুক্ষন ভাবলাম কি করবো তারপরেই পিসির ফোন এলো ওরা আজ পৌঁছে গেছে সকালে কাল উদয়গিরি আর খন্ডগিরি যাবে। পিসির সঙ্গে কিছু কথা বলে ফোন রেখে বঙ্কু কে ফোন করলাম, অনেকদিন পর ওর সঙ্গে কথা হলো। রাত্রে ঝুমাকে ফোন করে বলে দিলাম আমি কলকাতা যাচ্ছি ঘর দেখতে, রোববার ওখানেই উঠবো ওকে নিয়ে।
কলকাতা গিয়ে ঘর ঠিক করে এডভান্স ইত্যাদি দিতে পুরো একদিন গেল। ওখানে অনেক জবাবদিহি করতে হলো, আমার বয়স দেখে অনেকেই ভ্রূ কোচকাচ্ছিলো। তবু হাওড়াতে একটা ছোট্ট একতলা বাড়ী পেলাম। ভাড়া নেবে ৫ হাজার, দুটো রুম, বেশ পছন্দ হলো, ওটাই নিলাম। পিসির বাড়ী ফিরে এলাম রাত ৮টার সময়, এসেই দেখি বাইরে বঙ্কু দাঁড়িয়ে খুব উদ্বিগ্ন ভাবে, কি হয়েছে জিজ্ঞাসা করতে যা বললো তাতে আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো, উদয়গিরি থেকে ফেরার পথে পিসিদের বাস একসিডেন্ট হয়েছে, পিসেমশাই মারা গেছে আর বাপ্পা মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। পিসির ও চোট লেগেছে তবে এখন বিপদসীমার বাইরে। বঙ্কু বলল, “তোদের বাড়ী থেকে তোর কাকা ভুবনেশ্বর যাচ্ছে, তুইও চল, আমাকে নমিতা বৌদি পাঠালো।”

আমি বললাম, “বানচোত ফোন করিসনি কেন?”

ও বললো, “তুই না তুললে কি করবো?”

পকেটে হাত দিয়ে দেখি ফোন সাইলেন্ট করা ছিল বুঝতেই পারিনি। আমি ঝড়ের মতো ঘরে ঢুকে অল্প ব্যাগ গুছিয়েই বেড়িয়ে পড়লাম।

ছোটকা আর আমি বাস ধরে ভুবনেশ্বর পৌঁছে সানশাইন হসপিটাল খুঁজে সেখানে যেতে যেতে প্রায় বেলা ১১টা বেজে গেল। কিচ্ছু খাওয়া হয়নি। রাত্রে ঝুমার ফোন এসেছিল, ২ মিনিট কথা বলে খবরটা দিয়েই ফোন রেখে দিয়েছিলাম কারণ কথা বলার মত অবস্থায় ছিলাম না। চোখের সামনে পিসির হাসিখুশি মুখটা ভেসে উঠছিল বারবার। বাপ্পাটা আমার খুব ন্যাওটা ছিল বিশেষ করে খেলার জন্য। খুব মন খারাপ হচ্ছিল। হাসপাতালে পৌঁছে দেখলাম পিসি রিসেপশনে বসে আছে ডান ভুরুর উপরে একটা পট্টি, কম করে গোটা পাঁচ স্টিচ পড়েছে। ডান হাতে প্লাস্টার, আমাকে দেখে জড়িয়ে ধরেই কেঁদে উঠলো।
পনের

শেষ সাত দিন পুরো ঝড়ের গতিতে পেরিয়েছে। পিসিকে বাড়ী এনেছি, পিসেমশাইয়ের দাহ কার্য সম্পন্ন করেছি। বাপ্পার চিকিৎসার জন্য ওকে কোলকাতাতে এডমিট করেছে ছোটকা। ডাক্তার বলছে বেঁচে যাবে কিন্তু মাথায় আঘাত পাবার জন্য হয়তো সুস্থ হয়ে বাঁচতে পারবে না। এর মধ্যে ঝুমাকে নিয়ে আসা হয়নি, ঝুমার সঙ্গে নিয়মিত কথা ও হয়নি। বাপ্পাকে বেশিদিন আর হাসপাতালে রাখা যাবে না ওকে বাড়ীতে রেখেই ট্রিটমেন্ট করাতে হবে। এরই মধ্যে ডিক্লেয়ার হলো ১৬ ই উচ্চ মাধ্যমিক আর ১৫ ই জয়েন্টের রেজাল্ট বেরোবে। পিসির উপর দিয়ে ঝড় বয়ে গেছে, কদিন মা এখানে এসে থাকতে চেয়েছিল কিন্তু বাচ্চা মেয়ে নিয়ে অসুবিধা হবে বলে মানা করেছিলাম। পিসির সব দায়িত্ব আমি নিজে নিয়েছি। ঠিক করলাম গ্রামের বাড়ীতে তালা দিয়ে পিসি কে নিয়েই কলকাতা চলে যাবো পিসেমশাইয়ের শ্রদ্ধা শান্তি হয়ে গেলেই। ঝুমাকে আর ওর মা কে বললাম ওরা যেনো ২৯শে এপ্রিল হাওড়ার ঠিকানায় চলে আসে। রাত্রে আমি পিসির পাশে বসেছিলাম, পিসি আমার হাত ধরে কেঁদে উঠে বললো, “টুকুন আমার কি হবে? বাপ্পাটা যদি না বাঁচে আমি মরবো।” আমি বললাম, “পিসি বাপ্পাকে বাঁচতেই হবে। আর আমি তো আছি।” পিসি কাঁদতে কাঁদতে মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছিল।

কাল পিসেমশাইয়ের শ্রাদ্ধ শান্তি হয়ে গেছে। পিসি প্রায় সাড়ে তেরো লক্ষ টাকা পাবে ইনসিওরেন্সের। আমি বুঝিয়ে রাজি করিয়েছি কলকাতা যাবার জন্য। পিসেমশাইয়ের দোকানটা বেচে দেবে বললো পিসি।

আমি পিসি কে নিয়ে ২৭ তারিখ কলকাতায় পৌঁছালাম। পিসি খুব মনমরা ছিল কিন্তু আমার কিছু করার ছিল না, বাপ্পার খেয়াল রাখতে পিসিকে কলকাতায় আসতেই হত। ২৯ তারিখ আমি সকালে স্টেশনে গিয়ে ঝুমাকে নিয়ে এলাম, ওর মা বললো “সোজা কালীঘাটে চলো ওখান থেকে বাড়ী যাবে।” আমি বললাম “পিসিকে নিয়ে যাবো।” ঝুমা একটা লাল শাড়ি পরে ছিল, ওর মুখে একটা আনন্দ মাখা আশঙ্কা ছিল। আমি বাড়ী ফিরে পিসিকে বললাম তৈরী হয়ে নিতে, পিসি একটা সাদা থান পড়তে যাচ্ছিল, ঝুমা পিসির হাত থেকে ওটা ছিনিয়ে নিয়ে নীল রঙের একটা শাড়ি দিলো। পিসি গুমড়ে কেঁদে উঠে বললো, “ঝুমা রে যার জন্য পড়তাম সেতো পরপারে চলে গেল। এখন কার জন্য পড়বো বল?”

ঝুমা বললো, “আমাদের জন্য পড় দিদি। আমাদেরকে ভালোবাসো না?”

পিসি আর বাক্য বিনিময় না করে নীল শাড়ি পড়ে নিলো। এই কদিন পিসির দিকে তাকাতে পারিনি। ওরকম সুন্দর ফর্সা মুখটা কেমন যেনো হতাশায় কালো হয়ে গেছিলো। ঝুমার মা তাড়া দিচ্ছিল ওনাকে গ্রামে ফিরতে হবে।
আমি ঝুমা কালীঘাটে গিয়ে বিয়ে করলাম। ঝুমার মা আর পিসি দাঁড়িয়ে থেকে বিয়ে দিলো। আমরা দুজনে প্রনাম করলাম ওদেরকে। বিয়ের কাজ মিটিয়ে বেড়িয়ে আসার পর আমরা অল্প কিছু খেয়ে ঝুমার মা কে ট্রেনে তুলে দিলাম। ঝুমা সারা রাস্তায় সিঁথিতে সিঁদুর নিয়ে মাথা নিচু করে বসেছিল। কাল পর্যন্ত যাকে শুধু মনে মনে পাশে চেয়েছি, কামনা করেছি আজ সে অর্ধাঙ্গিনী। একটু আগে অগ্নিসাক্ষী করে বিয়ে করেছি ওকে। ঝুমাও বোধহয় আসন্ন সংসারের কথা ভেবে খুব দোলাচলে ছিল। আমরা কেউ কথা বলিনি সেরকম সারা রাস্তা।

পিসি এক জায়গায় গাড়িটা দাঁড় করাতে বললো ড্রাইভার কে। আমি কেন জিজ্ঞাসা করাতে বললো, “তোদের ফুলশয্যার ফুল কিনবো।” আমি আর ঝুমা লজ্জায় মুখ নামিয়ে নিলাম। পিসি নেমে একটা ফুলের দোকান থেকে কিছু রজনীগন্ধা আর গোলাপের পাপড়ি কিনলো। আমি জানি পিসিমার মানসিক অবস্থা কি, তবু মনে হলো পিসিমা আমাদের জড়িয়ে বাঁচতে চাইছে। ঝুমা হটাৎ মুখ খুললো, বললো, “দিদি তুমি বাড়ীতেও সাদা কাপড় পড়বে না। আমার ভালো লাগবে না।” পিসিমা ওর মাথায় হাত বুলিয়ে বললো, “ওরকম বলতে নেই মুখপুড়ি, আজ টুকুনের কথা ফেলতে পারিনি, কিন্তু আমি বিধবা মানুষ সাদা থান না পড়লে অকল্যাণ হবে। আর কার জন্যেই বা পড়বো বল?” পিসিমা উদাস হয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে রইলেন। আমি বললাম, “তোমার বয়স এমন কিছু নয়, আজই আমি ছোট অনুষ্ঠান করতাম কিন্তু বাপ্পা ঠিক নেই বলে করিনি। ডাক্তার ওকে ছাড়ুক, ঠিক হয়ে আসুক তারপর পার্টি হবে। আর তুমি মোটেই সাদা থান পড়বে না। আমাদের জন্য আর নিজের জন্য।
আস্তে আস্তে গাড়ী এসে দাঁড়ালো বাড়ীর সামনে, পিসিমা ঢুকতে বারণ করলেন ঘরে। নিজে আগে ঢুকে গিয়ে বরণ করে ঘরে তুললেন নতুন বউ কে। হাতে ৫০০ টাকার নোট দিয়ে ঝুমাকে বললেন, “একদিন তোকে বরণ করেছিলাম ভাইয়ের বউ হিসেবে, আজ করছি ভাইপোর বউ হিসেবে। ছেলেকে যেনো আদরে শাসনে নিজের সংসারে বেঁধে রাখবি।” আমরা পিসিকে প্রনাম করে ঘরে ঢুকলাম।
ষোলো

রাত্রে পিসি অনেক মানা করা সত্ত্বেও মাছ রাঁধলো। খেয়েদেয়ে ঘরে ঢোকার আগে আমায় বললো, “টুকুন যা একটু ঘুরে আয়, আমি ঘর সাজাবো।” আমি লজ্জা লজ্জা মুখ করে বেড়িয়ে পড়লাম নতুন পাড়া দেখতে। পাশেই ঝিলের ধারে একটা নতুন পার্ক হয়েছে ওখানে গিয়ে বসলাম। আমার তর সইছিল না, কালীঘাট থেকে আসার পর থেকেই মনে হচ্ছিল কতক্ষনে ঝুমাকে পাবো একান্তে। কত ফ্যান্টাসি আছে, সব পূরণ করবো ধীরে ধীরে। ভাবতে ভাবতেও সময় কাটছিলো না। আমি আধ ঘন্টা পরেই ঘরেঘপাঘাপ ফেরার রাস্তা ধরলাম। বাড়ী ফিরে দেখি পিসি তখনও ঝুমা কে নিয়ে ঘরের ভিতরে। আমি বাইরের ব্যালকনিতে বসে রইলাম। কিছুক্ষন পর পিসি বেরিয়ে এসে বললো, “যা, ঘরে যা।” আমি লাজুক মুখ করে ঘরে ঢুকলাম।

ঢুকে দেখি গোটা খাটে গোলাপের পাপড়ি ছড়ানো, খাটের পাশে রজনীগন্ধার স্টিক রাখা রয়েছে দুটো ফুলদানি তে। আর খাটের ঠিক মাঝখানে ঘোমটা দিয়ে বসে রয়েছে ঝুমা, একটা লাল রঙের বেনারসী পড়ে। আমি ধীরে ধীরে খাটের দিকে এগিয়ে গেলাম, তারপর খাটে বসে আস্তে করে ডাকলাম, “ঝুমু, মুখ তোলো।” ঝুমা নিরুত্তর থাকলো। আমি এবার হাতে করে ঘোমটা সরিয়ে দিতেই প্রচন্ড লজ্জা পেয়ে আমায় জড়িয়ে ধরলো ঝুমা। অল্পক্ষণ জড়িয়ে ধরে থাকার পর, আমি ওর কাঁধ দুটো ধরে সোজা করলাম। তারপর বললাম, “শেষ পর্যন্ত তোমায় পেলাম তাহলে।” ঝুমা লাজুক হাসি হাসলো, আমি ওর ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দিলাম, প্রথমে আলতো করে, পরে আরো গভীর চুম্বন শুরু হলো, ঝুমা যোগ্য সঙ্গত শুরু করলো, ওর কমলালেবুর কোয়ার মতো ঠোঁট দুটো চুষতে চুষতে কোনো কিছু খেয়াল ছিল না। একটু পরে ঝুমা নিজেই ঠোঁট সরিয়ে নেবার চেষ্টা করলো, আমার ছাড়ার মন ছিল না কিন্তু লড়াইয়ে ঝুমাই জিতলো। মুখ থেকে মুখ ছাড়িয়ে ঝুমা আস্তে করে বললো, “দাঁড়াও দুধ নিয়ে আসি।” আমি থতমত খেয়ে তাকিয়ে ছিলাম, ঝুমা খাট থেকে নেমে সামনে রাখা ছোট্ট কাঠের টেবিলে রাখা দুধের গ্লাসটা হাতে ধরিয়ে দিয়ে বললো, “খেয়ে নাও।”

“ধুর এই সময় দুধ কে খাবে? আমি ওসব খাবো না। আমি তোমাকে খাবো আজ শুধু।”

“ধুর বোকা আজকের দিনে এ টুকু খেতে হয়। এটাই রীতি।”

আমি অনিচ্ছা সত্ত্বেও একটু দুধ খেয়ে ঝুমাকে গ্লাসটা ধরিয়ে দিলাম। ঝুমা আমাকে অবাক করে গ্লাসের বাকী দুধটুকু খেয়ে নিলো। ও দুধটা শেষ করতে না করতেই আমি ওকে খাটে টেনে নিলাম। খিল খিল করে হেসে উঠে ঝুমা বললো, “বাবুর আর তর সইছে না।” আমি খাটে টেনে ঝুমাকে শুইয়ে দিলাম, তারপর ওর উপর উঠে ওর দুধ দুটো টিপতে শুরু করলাম, আমার অপটু হাত তাই বোধহয় উৎসাহে টেপাটা জোরে হয়ে গেছিলো। ঝুমা উফ করে উঠলো আমি বুঝতে পেরে টেপা থামাতে ঝুমা বললো, “কাপড়টা খারাপ হয়ে যাবে।” আমি আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে এক লহমায় ওর শাড়ির আঁচল ধরে টেনে শাড়িটা খুলে দিলাম। ঝুমা বুঝতে পারলো ওর কচি নাগর বোধহয় তাড়াহুড়োয় সব গোলমাল করে ফেলবে তাই উঠে বসে বললো, “সারারাত পড়ে আছে, আর আমি পালিয়েও যাচ্ছি না। আস্তে আস্তে করো যা করার।” আমি কোনো কথা না বলে ওর ব্লাউজের হুক খুলতে চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু বেশ কিছুক্ষন চেষ্টার পর বিফল হলাম। ঝুমা মুচকি হেসে ব্লাউজের হুক খুলতে খুলতে বললো, “বীরপুরুষ আমার, ব্লাউজের হুক ও খুলতে পারে না।” আমি ওদিকে পাত্তা না দিয়ে ব্লাউজ খুলতে না খুলতে ওর লাল ব্রা এর উপর দিয়ে মাই দুটো টিপতে শুরু করলাম। ঝুমার পরনে তখন লাল ব্রা আর লাল সায়া। মিনিট খানেকের মধ্যেই ঝুমা কামনার আবেশের বশবর্তী হলো। আমার অপটু হাতের টেপা খেতে খেতে আবেশে বলছিলো “উফফ, কতদিন অপেক্ষা করেছি উফফ, আর পারছিনা টুকুন।” বলে আমার গোটা মুখে চুমু খেতে লাগলো। আমি ডান হাত দিয়ে মাই টিপতে টিপতে বাঁ হাতটা সায়ার ভিতরে ঢোকাতে উদ্যত হলাম। ঝুমা বুঝতে পেরে আমায় জড়িয়ে ধরলো। আমি সায়ার ভিতরে হাত ভরে প্যান্টির উপর দিয়ে বহু কাঙ্খিত যোনিদেশে হাত বোলাতে শুরু করলাম। আমার ডান হাত তখনো ঝুমার তিন নম্বর ফুটবল সাইজের মাই দুটো পালা করে টিপে চলেছিল। ঝুমার মুখ থেকে মাঝে মাঝেই “আহঃ, উফ,উই মা, আহঃ” করে শীৎকার বেরোচ্ছিল। আমি প্রচন্ড উত্তেজিত ছিলাম, যেনো একটা ঘোরের মধ্যে কাজ করে চলেছি। ঝুমার সিঁথির টিকলিটা আমাকে ডিস্টার্ব করছিল বারবার, ঝুমাকে বললাম ওটা খুলে দিতে। ঝুমা প্রচন্ড আবেশে আমার আদর খেতে খেতে ওটা খুলে ফেললো। ওদিকে ততক্ষনে ঝুমার সায়া খুলে নিচে ফেলে দিয়েছি আমি। ঝুমার আওয়াজে সম্বিৎ ফিরলো, “এই তুমিও খোলো।” আসলে প্রায় ৪-৫ বছর অভুক্ত ঝুমার দেহে ও আগুন জ্বলছিল। আগুন দু তরফেই ছিল। আমি বিনা বাক্যব্যয়ে আমার পাজামা আর পাঞ্জাবী খুলে ফেললাম। আমার বাঁড়াটা ততক্ষনে খাড়া হয়ে কুতুব মিনার হয়ে আছে। সেদিকে ঝুমার নজর যেতেই হেসে ফেললো। আমি আবার ঝুমাকে জড়িয়ে ধরে চুমু খেতে শুরু করলাম, আমার হাত ওর গোটা শরীরে ঘুরছিল। আমি ওকে ঘুরিয়ে কোলে বসিয়ে নিলাম ওর পিঠ টা আমার বুকের ঠেকেছিল, আমি একটু ওকে সামনে ঝুকিয়ে ব্রার হুকটা খুলে দিতেই লাফিয়ে বেরোলো ফর্সা বাতাবি লেবুর মতো মাই দুটো। এ দুটোকে আমি আগেও দেখেছি তবে তখন সময় কম ছিল আর লজ্জার আড় ছিল, এখন সেগুলো নেই। আমি ঝুমার ঘাড়ে চুমু খেতে খেতে দুধ দুটো ময়দা ঠাসার মতো ঠাসতে শুরু করলাম। ঝুমা ওর প্যান্টির উপর থেকে আমার ঠাঠানো বাঁড়ার উপস্থিতি জানান পাচ্ছিল। কিছুক্ষন আদর খাবার পর ঝুমা বললো, ” ওগুলোকে কি আজকেই চিঁড়ে দেবে? এরকম টিপলে তো ঝুলে যাবে!”

“সে যাক, তাও ওগুলো আমারই থাকবে।” ঝুমা ঘুরে আমার ঠোঁটে একটা চুমু খেয়ে উঠে দাঁড়ালো। তারপর আমার জাঙ্গিয়ার দিকে তাকিয়ে বললো, “ওটা খোলো।”

আমি বললাম “তুমি খুলে নাও।”

আমিও উঠে দাঁড়ালাম, ঝুমা একটু ঝুকে আমার জাঙ্গিয়ার ইলাস্টিক ধরে আমার চোখের দিকে তাকিয়ে আস্তে আস্তে টেনে নামিয়ে দিলো জাঙ্গিয়াটা, আমার কালো লম্বা ঠাঠানো বাঁড়াটা লকলক করতে থাকলো ঝুমার সামনে। আমিও ঝুমাকে কোনো সুযোগ না দিয়ে ওর প্যান্টিটা টেনে নামিয়ে দিলাম, ঝুমা ঘটনার আকস্মিকতায় প্রথমে হতচকিত হয়ে গেলেও পরে লজ্জায় দু হাত দিয়ে নিজের গুদ ঢেকে ফেললো, আমি ঠিক মতো দেখতে অবধি পেলাম না। আমি বললাম “হাত সরাও।”

“ধ্যাৎ লজ্জা লাগে।”

“আরে আমার সামনে আবার লজ্জা কি! দেখো আমার বাঁড়া মহারাজ তোমাকে স্যালুট করছে।”

ঝুমা হাত সরালো না। আমার মাথায় দুস্টু বুদ্ধি খেলে গেলো, আমি ঝুমার কাছে গিয়ে ওর মাইয়ের বোঁটা দুটো ধরে জোরে মুচড়ে দিলাম, ঝুমা উফফ করে উঠে হাত নীচ থেকে সরিয়ে আমার হাত সরাতে গেল নিজের মাই থেকে আমি সঙ্গে সঙ্গে নীচে ঝুঁকে আমার কাঙ্খিত জায়গাটা দেখতে শুরু করলাম। ঘন কোঁকড়ানো চুলে ঢাকা একটা জায়গা, শুধু মাঝখানে একটা চেরা অংশ দেখা যাচ্ছে। আমি আঙ্গুল দিয়ে বালগুলো সরিয়ে দিতেই চেরা জায়গাটা স্পষ্ট হলো চোখের সামনে। আমি দুটো আঙ্গুল দিয়ে চেরা জায়গাটা ফাঁক করতেই লাল টকটকে গুদের ভিতরটা দেখতে পেলাম। এমন সময় ঝুমা বলে উঠলো, “এই শুনছো প্লিজ লাইটটা অফ করো না।”
(সমাপ্ত)



from বিদ্যুৎ রায় চটি গল্প কালেকশন লিমিটেড https://ift.tt/3fIVoM3
via BanglaChoti

Comments