দেবশ্রী-এক স্বর্গীয় অনুভূতি (পর্ব-১৮)

দেবশ্রী-এক স্বর্গীয় অনুভূতি
লেখক- Jupiter10
পর্ব আঠারো
—————————

                                                             II ১ II

আমি অন্যমনস্ক ছিলাম। আচমকা তার গলার আওয়াজ শুনে পেছন ফিরলাম, “হুম……। কি…কি বললে?”
মা আবার চুপ করে গেলো, যেদিকে চেয়ে ছিল সেদিকেই চোখ মেললো। আমি ছাদের ধার থেকে ফিরে তাঁর কাছে এসে দাঁড়ালাম, “হ্যাঁ…। তুমি ঠিকই বলেছ মা! ভালোবাসার মানুষ গুলো আমাদের ছেড়ে চলে গেলে ভীষণ কষ্ট হয়”।
মায়ের মৌন ধারণ দেখে চেয়ারের পেছনে এসে তাঁর দুই কাঁধে হাত রেখে দাঁড়ালাম।দেখলাম মা নিজের বাম হাত দিয়ে আমার বাম হাতের আঙ্গুল স্পর্শ করল। তারপর ধরা গলায় বলল, “কিছু খেয়েছিস বাবু? ব্রেকফাস্ট করেছিস?”
মায়ের এই কথাটা শোনার জন্য আমার মনে হচ্ছিলো যেন কয়েক যুগ ধরে অপেক্ষা করছি। নইলে গত বিয়াল্লিশ ঘণ্টা ধরে তাঁর এক আলাদা রুপ দেখতে পাচ্ছিলাম।এক অজানা চরিত্রের মানুষ। যে আমার মা নয়, বরং বছর ছয় সাতের এক মেয়ে, যার প্রিয় জিনিস খোয়া গিয়েছে। ফলে সে কান্নায় ভেসে পড়েছে। যে রাত দিন দেখে নি। সময় পরিস্থিতি দেখে নি। আশে পাশের মানুষ জন কেও অগ্রাহ্য করেছে।যে কেবল নিজের বায়নার উপর অটল থেকেছে। সবকিছু ভুলে পিতৃশোকে দিশেহারা হয়ে পড়েছিল বেচারি। টানা দুই দিনের শোকাচ্ছন্ন ভাব কাটিয়ে মা নিজের সন্তানের খোঁজ নিচ্ছে এটা জেনে আমার মনের মধ্যে যে কি পরিমাণ তৃপ্তির অনুভূতি হচ্ছিলো তা বলে বোঝানো সম্ভব নয়।
খুশি মিশ্রিত টলমলে গলায় আমি তাঁর কানের কাছে মুখ এনে বললাম, “মা…। তুমি কথা বলছো, আমার খোঁজ নিচ্ছ, এতেই আমার খিদে মিটে গেছে…। নইলে গত দুই দিন ধরে তোমার বড্ড অভাব বোধ করছিলাম গো। আমার সেই রাগী স্বভাবের পুরনো মাকে যেন কোথায় হারিয়ে ফেলেছিলাম”।

মায়ের আবার ধরা গলায় বলল,“এটা তোর নিজের ঘর নয় বাবু। যেখানে তুই নিজের ইচ্ছা মতো যখন তখন  মুখের কাছে খাবার পেয়ে যাবি।সবাই সবার কাজে ব্যস্ত থাকবে। সুতরাং তাঁদের সুবিধা মতো চলবি। কাউকে অর্ডার দিবিনা একদম”।
মায়ের এই রকম গম্ভীর সতর্কবাণী পেয়ে আমি আবার তাঁর মুখের সামনে এসে দাঁড়ালাম। তাঁর ম্লান মুখশ্রীর দিকে তাকিয়ে চাপা হাসি দিয়ে বললাম, “এটা তো আমার নিজেরই ঘর মামনি। দাদাইয়ের বাড়ি ছিল। তাঁর অবর্তমানে এই বাগানবাড়ি এখন আমার”।
মা আমার কথার কোন উত্তর দিলো না। পুনরায় সে পশ্চিম দিকে চোখ রাখল।
আমি তাঁর সামনে থেকে উঠে গিয়ে পুনরায় ছাদের কিনারায় এসে দাঁড়ালাম, “এমনিই মস্করা করছিলাম মা।তুমি কিছু মনে কর না”।
সে এবারও চুপ করে রইল। আমি হাফ ছাড়লাম।তারপর অপর একটা চেয়ার টেনে তাঁর মুখোমুখি বসে পড়লাম। তাঁর দু’হাত আমার হাতের মধ্যে নিয়ে বললাম, “সত্যি কথা বলতে জানো মা?আমি তোমার জন্য চিন্তিত। গত দুই দিন ধরে নিজেকে একবার তাকিয়ে দেখেছো…। চোখে ঘুম নেই তোমার। খাবার ঠিক মতো খাচ্ছ কি না জানি না। চোখের নীচ দুটো ফুলে উঠেছে।মুখ ফ্যাকাসে হয়ে গেছে তোমার…”।
মা আমার কথার কোন উত্তর দিলো না।
আমি তাঁর কোমল হাত দুটো শক্ত করে চেপে ধরলাম। বললাম, “দাদাই… আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছেন। এটা যেমন সত্য, ঠিক এটাও সত্য যে আমাদেরও জীবন আছে। আমারও জীবন আছে। তুমি আমার জীবন মা!তুমি তা ভালো করেই জানো। তবে তুমি যে ভাবে শোক পালন করছো তাতে আমার ভয় হচ্ছে মা। দয়া করে তুমি এমন করো না। তুমি শীঘ্রই ঠিক হয়ে যাও।আমি আমার মাকে স্বাভাবিক রূপে  ফিরে পেতে চাই তাড়াতাড়ি”।   

আমার কথা শুনে মায়ের ঠোঁটের কোণে অস্পষ্ট হাসি ফুটল। তাতে আমি কিছুটা আশার আলো দেখতে পেলাম। সে আমার দিকে চোখ তুলল, “মন মানতে চায় না রে বাবু!”
আমি তাঁর কথায় কিঞ্চিৎ উৎসাহিত হলাম।তাঁর  দুটো হাত পুনরায় চেপে ধরলাম, “মনকে বোঝাও মামনি…। এই ভাবে জীবন চলে না। তুমি শুধু আমার পুরনো মাকে ফিরিয়ে দাও…। দ্যাখো দিদামণিকে! তিনি কত সুন্দর আছেন। দিব্যি মেনে নিয়েছেন সত্য টাকে”।
মা আবার ম্লান হাসল। তাঁর বাম হাত দিয়ে আমার বাম গাল বুলিয়ে দিলো, “আমাকে কিছুটা সময় দে বাবু। সব ঠিক হয়ে যাবে”।
আশ্বস্ত মন নিয়ে উঠে দাঁড়ালাম। মনে মনে বললাম, “মা যখন বলছে, তখন মা সত্যিই খুব তাড়াতাড়ি স্বাভাবিক ছন্দে ফিরে যাবে”।
প্রসঙ্গ বদলানোর জন্য আলাদা কথা বলা শুরু করলাম। পশ্চিম দিকের বহুদূরে অবস্থিত আবছা দেখা যাওয়া চিমনীটার দিকে আঙ্গুল দেখিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, “আচ্ছা মা! ওই চিমনী টা কিসের?”
মা চোখ মেললো, “ওটা বক্রেশ্বর থার্মাল প্লান্টের চিমনী। আকাশ পরিষ্কার বলে এখান থেকেও দেখা যাচ্ছে”।
আমি মুখ নামালাম, “হুম” !
তারপর পুনরায় মনের একটা কৌতূহল সামনে রাখলাম, “আচ্ছা মা! ওই দিকেই কি সঞ্জয় দের মামারবাড়ি?”
মা একটু আশ্চর্য হয়ে মুখ তুলল, “ কে সঞ্জয়?”
আমি বললাম, “আঃ ওই যে গো মা। সুমিত্রা! তোমার বান্ধবী। তোমার ঘর আর ওর ঘর একই জেলায় অবস্থিত হওয়ায় তোমাদের মধ্যে বন্ধুত্ব তৈরি হয়েছিল”।
মা মুখ নামাল, “ ওহ সুমিত্রা! ওর বাড়ি রামপুরহাটের দিকে। বহুদূর। উত্তর পশ্চিমে আরও অনেকটা যেতে হবে”।
মায়ের কথা শুনে আমি দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেললাম, সত্যিই শুধু একটি বারই সুমিত্রার সঙ্গে আমার দৃষ্টি বিনিময় হয়েছিলো। শুধু একবার তাঁর চোখের সঙ্গে আমার চোখ মিলিত হয়েছিলো। সেই চোখের গভীর চাহনি আমি কোনোদিন ভুলবো না।
সুমিত্রার ঘন বাঁকা ভ্রুর মধ্যিখানের লাল টিপের মধ্যে দিয়ে কোথায় হারিয়ে গিয়েছিলাম। এই বাড়ির ছাদের উপরের নীল আকাশে তাঁর অবয়ব দেখতে পাচ্ছিলাম। যেন আকাশ থেকে মুখ নামিয়ে সে আমাকে দেখছে।

এমন মুহূর্তে আবার মায়ের কথা শুনতে পেলাম, “আচ্ছা বাবু! আমার সঙ্গে একটা জায়গা বেড়াতে যাবি?”
আমি মা’র দিকে মুখ ঘোরালাম, “কোথায় বেড়াতে যেতে চাও মামণি?”
মা উত্তর দিকে তাঁর ডান হাতের তর্জনী আঙুল বাড়িয়ে দেখাল। আমি সেদিকে চোখ রাখলাম। বাড়ির পেছনের মোরামের রাস্তার ওপাশে পাকা ধানের খেত বহুদূর অবধি চলে গিয়েছে। তাঁর পর ফাঁকা প্রান্তর এবং বাবলা গাছের ছোট মাঝারি ঝোপ।
প্রশ্ন করলাম,“ওই দিকে কি আছে মা? জায়গাটা পুরো ফাঁকা মনে হচ্ছে তো”।
মা বলল, “ না আরও অনেক কিছু দেখবার জিনিস আছে। আঁখের বাগান আছে। আলুর খেত আছে”।
আমি এমনিতেই ঘুরতে প্রচুর ভালোবাসি বলেই মা’র এক কথায় রাজি হয়ে গেলাম।
“কখন বেরোবে মা?”
“এখন কয়টা বাজে?”
আমি মোবাইল বের করে বললাম, “এইতো সকাল দশটা”।
মা একটু ভেবে বলল, “বেলা এগারটায় বেরবো”।
আমি খুশিতে মাথা নাড়লাম।
মা বলল, “ আমরা এই বাড়ির পেছন দিকের গেট দিয়ে বেরবো।  তোর দিদাকে কিছু বলার প্রয়োজন নেই”।
আমি বেশি ভাবনা না বাড়িয়ে তাঁকে আশ্বস্ত করলাম।
“তুমি নিশ্চিন্তে থেকো মা”।
মা চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে বলল, “ তুই তৈরি হয়ে নে। আমিও শাড়ি পরে আসছি”।

                                                                     II ২ II

মায়ের পেছন পেছন আমিও সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে গেলাম। মা নিজের রুমে ঢুকে পড়ল আর আমি আমার রুমে গিয়ে পুরনো পোশাক বদলে ব্লু জিন্স এবং সাদা শার্ট পরে নিলাম। এখন শীত কম সেহেতু সোয়েটার পরার প্রয়োজন বোধ করলাম না।
আমি তৈরি হয়ে রান্নাঘরের দরজা দিয়ে পেছন দিকে এসে দাঁড়ালাম। মায়ের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। কিছুক্ষণ পর মাকে বেরিয়ে আসতে দেখলাম। মা হালকা ঘিয়া রঙের একখানা শাড়ি পরে বেরিয়ে এলো।হাতের  ইশারায়  আমাকে ডেকে চুপিচুপি বাঁশের গেট খুলে বেরিয়ে গেলো। আমিও মা’কে অনুসরণ করলাম। মোরামের রাস্তা ক্রস করে পাকা ধানের আল দিয়ে হাঁটতে লাগলাম মা ছেলে মিলে। মা শাড়ির কুচি সামলে নিয়ে সযত্নে হাঁটছিল। আমি তাঁকে অনুসরণ করছিলাম। মনে প্রশ্ন উঠছিল, “মা আমাকে কোনদিকে নিয়ে যেতে চাইছে?”
কিন্তু তার সদুত্তর খুঁজে পাচ্ছিলাম না। মনে মনে শুধু বলছিলাম, “ভাঙা মন যেদিকে যেতে চায় যাক না। তাতে যদি তাঁর মন ভালো হয় তাহলে তাঁকে সেটাই করতে দেওয়া উচিৎ”।

ধান মাঠের আল পেরিয়ে ফাঁকা মাঠ পেরিয়ে বাবলা গাছের ধার বেয়ে মায়ের পেছন পেছন হেঁটেই চলেছি। প্রায় পনেরো মিনিট আমাদের হাঁটা হয়ে গেলো। পা ব্যথা করছিলো আমার। বিরক্তও লাগছিলো। কিন্তু মায়ের মধ্যে কোন ক্লান্তি লক্ষ্য করছিলাম না। একবার ভাবলাম মা কি তাঁর ছেলেবেলার কোন পুরনো ঠিকানায় ফিরে যেতে চাইছে? নাকি অন্য কোথাও? 

আমি একটা বিরক্তিভাব প্রকট করলাম, “উফ! আর কতক্ষণ লাগবে বলতো? পা ব্যথা করছে আমার”।
সামনে তাকিয়ে মা উত্তর দিলো, “ এই তো চলে এসেছি বাবু”।
লক্ষ্য করলাম। ধানক্ষেত, ফাঁকা মাঠ অতিক্রম করে  এখন ঢালু মেঠো পথ দিয়ে হেঁটে চলেছি। কিছু কিছু ধানের মাঠ থেকে ধান কেটে নেওয়া হয়েছে। আর কিছু মাঠে এখনও চাষি মহিলারা ধান কাটছেন। 

মাকে অনুসরণ করতে করতে একটা নতুন জায়গায় পৌঁছে গেলাম। নদীর ধার। তার চারপাশে সোনাঝুরি গাছ। আমার একটু অবাক লাগল। হঠাৎ মা আমাকে এই খানে কেন নিয়ে এলো। এই ঝোপঝাড়ে ঘেরা নদীর ধারে। কৌতূহল ধরে না রাখতে পেরে তাঁকে জিজ্ঞেস করে ফেললাম, “ মা তুমি আমাকে কোথায় নিয়ে এলে বলতো?”
মা আবার আঙুলের ইশারায় আমাকে নদীর ধারের দিকে দেখাল।
বিনতিসুলভ আচরণ তাঁর, “বাবু এই নদীর ধার বেয়েই যাওয়া হয়। তুই আমায় নিয়ে চল না রে?”
আমি নদীর ধারে তাকালাম। নাহ এখানে তো কোন সুস্পষ্ট রাস্তা নেই যেখান দিয়ে হাঁটা যায়। এতো শুধুই জংলী গাছে ঘেরা। মা কি পাগল হয়ে গেলো নাকি?
বললাম, “কোথায় যেতে চাও বলতো মামণি?”
মা বলল, “কঙ্কালীতলা!”
আশ্চর্য হলাম, “কঙ্কালীতলা? ওটা আবার কিসের জায়গা মা?”
মা বলল, “ওটা এখানকার শ্মশান। তুই আমায় নিয়ে চল বাবু। তোর দাদাই এখন ওখানেই আছেন”।
মায়ের করুণ আর্জির মধ্যে তাঁর চোখের কোণায় অশ্রু লক্ষ্য করলাম। অসহায় নিবেদন। আর আমি অপারক। তাঁর সিক্ত চোখ দুটো আমার উত্তরের জন্য অপেক্ষা করছিলো। মায়ের কান্না আমাকে দুর্বল করে তুলছিল।
আমাকে নীরব থাকতে দেখে এগিয়ে এসে আমার ডান হাত টেনে ধরল, “নিয়ে চল না আমায়…”।
হতভম্ব হয়ে মাকে আশ্বস্ত করি, “থামো মা।থামো। আমি মোবাইলে সার্চ করি। দেখি তোমার কঙ্কালীতলা কোন দিকে অবস্থিত”।
আমার কথায় মা খানিক শান্ত হল। আমার মুখের দিকে চেয়ে রইল। মোবাইল বের করে মনে মনে বলতে লাগলাম, “মা আমাকে বেজাই ঠকালো। ভেবেছিলাম এক আর হল এক। মায়ের মন থেকে এখনও দাদাইয়ের শোক নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়নি”।

মোবাইল বের দশ মিনিট ধরে গুগুল ম্যাপে কঙ্কালীতলা সার্চ করলাম কিন্তু ইন্টারনেটের পরিষেবা দুর্বল হওয়ার কারণে কোন ফলাফল পেলাম না।
বেশ দুবিধায় পড়লাম মনে হল। এই মুহূর্তে কি করবো ভেবে পাচ্ছিলাম না। ওই দিকে মায়ের ধৈর্যের সীমা অতিক্রম হচ্ছিলো। সে শুধু বায়না করে যাচ্ছিলো আমাকে সেখানে নিয়ে যাবার জন্য।
মাকে বোঝানোর চেষ্টা করলাম। তাঁর দুই কাঁধ চেপে ধরে বললাম, “নিজেকে শক্ত কর মা। দাদাই আর এই দুনিয়ায় নেই। সেখানে গেলে ছাইয়ের অবশিষ্ট ছাড়া আর কিছুই দেখতে পাবে না”।
মা হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করে দিলো। কোপাই নদীর সন্নিকটে বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ আমরা দুই জন মিলে এই নির্জন এলাকায় দাঁড়িয়ে আছি। চারিদিকে ঝোপঝাড়,সোনালি ফুলের গাছ, বাবলা গাছ এবং চোখের সামনে শুকনো নদী।
দুই হাতের বুড়ো আঙুল দিয়ে মায়ের চোখের জল মুছিয়ে দিচ্ছিলাম। মা ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছিল। এই পরিস্থিতিতে হাল আমাকেই ধরতে হল।
মায়ের চোখের জল মুছতে মুছতে বললাম, “মা দাদাই মারা যাননি…”।
আমার কথা শুনে মা চোখ তুলল।
বললাম, “হ্যাঁ মা দাদাই মারা যাননি বরং তিনি পঞ্চতত্ত্বে মিশে গেছেন। আর আত্মা নাকি মরে না। সেহেতু তিনি মারা যাননি মা”।
মা আমার মুখের দিকে গভীর ভাবে চেয়ে ছিল। হয়তো কিছু ভাবছিল।
আমি তাঁর চোখের দিকে চেয়ে বললাম, “হ্যাঁ মা। দাদাই হয়তো অন্য কোন রূপে পরিবর্তিত হয়ে গেছেন। হয়তো এই শীতল বাতাস রূপে আমাদের শরীরকে স্পর্শ করছেন। অথবা দূরের কোন পাখির রূপ ধারণ করে ভিন দেশে উড়ে চলেছেন”।
মায়ের গভীর চোখের কালো মণি দুটোর মধ্যে আমার চোখ স্থির হল। মা কাঁদা থামিয়ে দিয়েছে। আমি তাঁর কপালে একখানা চুমু খেলাম। তারপর তাঁর সিক্ত ঠোঁটে আমার ঠোঁট স্পর্শ করালাম। সঙ্গে সঙ্গে মা মুখ ঘুরিয়ে নিলো। আমি তাঁকে বুকে জড়িয়ে নিলাম। চারিদিক নিস্তব্দ। শুধু হিমেল বাতাস সোঁ সোঁ শব্দ করে আমাদের গায়ে আছড় মারছে আর দূরে পাখি দের কলরব শুনতে পাচ্ছিলাম। মানুষজনের কার্যকলাপের ধ্বনি কানে আসছিলো না। নইলে কলকাতার গাড়ির হর্নের শব্দ এবং মানুষের চেঁচামেচিতে এতক্ষণ অতিষ্ঠ হয়ে উঠতাম। এই সময় উপভোগ করার মতো। শোক পালন করার জন্য নয়।
শীতের রোদের মধ্যেও একটা মাঝারী উত্তাপ অনুভব করছিলাম। মায়ের কপালে তেলচা ঘাম জমেছে। আমি তাঁর কাঁধ জড়িয়ে ধরে পাশের একটা সোনাঝুরি গাছের নীচে সবুজ ঘাসের উপর বসে পড়লাম। মা আমার ডান পাশে বসে ছিল। দুজনের চোখ ছিল নদীর চিকমিকি বালির উপর। আমি মায়ের মুখের দিকে  তাকালাম। মায়ের চোখ অশ্রুশূন্য থাকলেও মনের অন্তরে বেদনাভাব স্পষ্ট অনুভব করছিলাম। তাতে আমার মন ব্যথিত হচ্ছিলো।
আমি ডান হাত বাড়িয়ে তাঁর ডান বাহু জড়িয়ে আমার কাঁধের কাছে টেনে নিলাম। এখানকার নীরবতা কিছু  একটা যেন বলছিল। মায়ের একমনা হয়ে বসে থাকা দেখে প্রশ্ন করলাম, “এই ভাবে চুপ করে কী ভাবছো মামণি?”

মা মুখ নামিয়ে বলল, “পাখীর ডাক শুনছি বাবু”।
আমি আশ্চর্য হলাম। মনে মনে হাসলাম, “পাখীর ডাক শুনছো মানে?”
মা বলল, “হ্যাঁ । তুইও শোন দ্যাখ ভালো লাগবে”।
এই মুহূর্তে মায়ের মন ঠিক রাখার জন্য আমি সবকিছুই করতে রাজি।তাই মায়ের কথা মতো আমিও পাখীর ডাকের দিকে মনোযোগ দিলাম।
মা জিজ্ঞেস করলো, “শুনছিস বাবু?”
আমি বললাম, “হ্যাঁ মা। শুনছি”।
“কতগুলো পাখীর ডাক শুনতে পাচ্ছিস বলতো?”
আমি মনোযোগ দিয়ে শুনে বললাম, “দুই রকম! দুই রকম পাখীর ডাক শুনতে পাচ্ছি মা”।
মা হাসল। মায়ের মুখে হাসির ঝলক দেখে আমারও মন উছলে উঠল।
জিজ্ঞেস করলাম, “হাসলে কেন মা?”
মা বলল, “আরও ভালো করে মন দিয়ে শোন, দিয়ে আমায় বল কয়টা পাখী?”
তাঁর কথা মতো আমিও তাই করলাম। বাতাসে ভেসে আসা কিচিরমিচির শব্দ গুলোকে বিশ্লেষণ করতে লাগলাম। হ্যাঁ খুব সম্ভবত আরও একটা নতুন পাখীর ডাক শুনতে পেলাম। তারমানে মোট তিনটে।
মাকে বললাম, “তিন রকমের পাখীর ডাক শুনতে পেলাম মা”।
মা আবার হেসে বলল, “চার রকমের। চার ধরণের পাখী রয়েছে আমাদের চারপাশে”।
আমি অবাক হলাম, “ওমা সত্যি! কিন্তু আমি তো তিনটেই শুনতে পাচ্ছি মা”।
মা আবার হেসে বলল, “ওই পাখী কলকাতার পরিবেশে থাকেনা বলে তার ডাক কোনোদিন শুনিসনি। তাই কানে ধরছে না”।
আমি হাসলাম।
যাইহোক মাকে স্বাভাবিক রূপে ফিরিয়ে আনতে আমি ব্যর্থ হলেও পাখীরা তা করে দেওয়াতে একপ্রকার খুশিই হলাম। ভালো লাগছিলো পাখীর কলরবে এই জায়গাটা উপভোগ করতে। শীতল বাতাসের অবিরাম প্রবাহে সোনাঝুরি গাছের হলুদ ফুল ঝিরঝির করে খসে পড়ল আমাদের চোখের সামনে।
“দ্যাখো মা সোনাঝুরি গাছের ফুল গুলো ঝরে কেমন হাওয়ার সঙ্গে বাতাসে মিশে যাচ্ছে”।
আমি আঙুল দিয়ে তা মাকে দেখাতে মা আবার বলে উঠল, “জানিস বাবু সোনাঝুরি গাছের নামকরণ কে করেছিলেন?”
আমি ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলাম, “এটা আবার কেমন প্রশ্ন মা? কোন বস্তুর কোন বিশেষ ব্যক্তি নামকরণ করেন নাকি? এটা নাম তো প্রচলিত হয়ে আসছে তাই না?”
মা আবার হালকা হাসল, “রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর! তিনিই এই গাছের নাম রেখেছিলেন সোনাঝুরি। যার ফুল সোনার মতো ঝরে পড়ে”।
আমার খেয়াল হল, “হ্যাঁ সত্যিই তো। এই গাছের উজ্জ্বল হলুদাভ ফুলের রং কিছুটা সোনার মতোই”।
আমি মায়ের দিকে চাইলাম, “ মা তুমি ঠিকই বলেছ। এখন আমি বুঝতে পারছি এই গাছের নামকরণের সার্থকতা”।
মা শুধু, “হুম” বলে চুপ করে রইল।

তারপর বেশ কিছুক্ষণ আমরা নিরব রইলাম। মাও হাঁটু মুড়ি দিয়ে সামনের দিকে চেয়ে ছিল। আমি স্তব্ধতা ভাঙলাম।

“দ্যাখো মা, বাবা কেমন সকাল সকাল আমাকে না জানিয়েই কেটে পড়ল”।

মা সামনের দিকে চোখ মেলে উত্তর দিলো, “ভালোই করেছে। এখন কয়েকদিন নিজের হাতেই রেঁধে খাক ব্যাটা!!”
মায়ের মুখে বাবার সম্বন্ধে এমন উক্তি পেয়ে মনে মনে হাসলাম। বললাম, “আহা মা!এমন কেন বলছো গো?”
মা বলল, “আর নয়তো কি? ওর জন্যই আমার বাবা মরেছে। ওর জন্যই আমি বাবাকে মরার আগে পর্যন্ত দেখতে পেলাম না”।
আমি আবার হাসলাম, “বলো কি মা? মানে বাবার জন্য দাদাই মারা গেছেন? এটা কেমন যুক্তি তোমার?”
কড়া গলায় মা বলল, “হ্যাঁ সব কিছুর জন্য ও দায়ী”।
আমি অবাক হলাম, “বলো কি মা? সব কিছুর জন্য বাবা দায়ী?”
মা জোর গলায় বলল, “ হ্যাঁ ওই দায়ী”।
আমি হাসি ধরে রাখতে পারলাম না, “মানে এই পৃথিবীতে যা খারাপ কিছু ঘটছে সব? মা?”
“হ্যাঁ সব! আমার জীবনের প্রত্যেকটা খারাপ ঘটনার পর তোর বাবার আবির্ভাব হয়”।
সত্যি এবার আমার পাগল হয়ে যাবার উপক্রম। মনে হচ্ছে উল্টো দিকে ঘাসের উপর চিৎ হয়ে শুয়ে  হো  হো করে হাসি। কিন্তু মায়ের নজরে তা অশোভনীয় দেখাবে বলে নিজেকে সংযত করে রাখলাম।
বললাম, “মা, বাবা কিন্তু তোমায় ভীষণ ভালোবাসেন। গতকাল বাবা তোমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছিলেন”।
আমার কথা শুনে মা একটু অস্বস্তি অনুভব করলো। ঠোঁটের কোণে তাঁর আবছা হাসিও লক্ষ্য করলাম। যদিও ক্ষণিকের মধ্যেই সেই হাসি বিলীন হয়ে পুনরায় গম্ভীর রূপ ফিরে এলো।
“তুই কখন দেখলি রে?” আশ্চর্যান্বিত অভিব্যক্তি মায়ের।
“ওই তো গতকাল বিকেল বেলা সিঁড়ি দিয়ে নামবার সময়”।
“হুম” আবারও একটা গম্ভীর প্রতিক্রিয়া।
“তাহলে তুমি কি বলতে চাইছো মা? এটা কি ভালোবাসা নয়? আপন জনের জন্যই তো কাঁদে মানুষ তাই না মা…?”
মায়ের মুখে হুঙ্কার ধ্বনি, “ও’টা সে নিজের দুঃখে কেঁদেছে ব্যাটার ছেলে! জানে এই কয়দিন নিজের হাতে রেঁধে  খেতে হবে। তাই সে কেঁদেছে”!
আমি হাসলাম, “হ্যাঁ মা সেতো নিশ্চয়ই। এবার তিনি নিজের হাতে রাঁধবেন, বাড়বেন এবং খাবেনও। কি বলো মা?”
মা আবার গম্ভীর গলায়, “হুম” বলে চুপ করে রইল।

                                                                         II ৩ II

কয়েক মুহূর্ত সেখানে কাটানোর পর দিদার বাড়ি ফিরে এলাম। একটু বেড়াতে পেরে মায়ের মনের বোঝা কমেছে বলে মনে হল। কারণ বাড়ির বাকী সদস্য দের সঙ্গে স্বাভাবিক রূপে খোলামেলা হয়ে মিশছিল। এক দুই বার খোলা ঠোঁটের ঈষৎ হাসিও লক্ষ্য করেছিলাম।
কয়েক ঘণ্টার জন্য আমাদের বাড়িতে দেখতে না পেয়ে দিদাও চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন। পরে মা তাঁকে আমাদের বেড়াতে যাবার কথাটা বলায় তাঁর দুশ্চিন্তার নিবারণ হয়।
সারাদিন পিতৃ পরায়ণের বিধি পালনে ব্যস্ত ছিল মা। তাই আর তাঁকে কাছে পাওয়ার সৌভাগ্য হয়নি। আমিও মায়ের কথা মত নিজের পরিসরেই আনন্দিত ছিলাম। কাউকে ডিস্টার্ব করিনি। কাউকে অর্ডার দিইনি।
দুবার ফোন এসেছিলো। বাবা ঠিক মতো পৌঁছে গিয়েছেন সেটা জানিয়ে দিয়ে ছিলেন।আর দ্বিতীয়বার তিন্নি করেছিলো। আমি ফোন তুলিনি।
সারাদিন ছাদের মধ্যে পায়চারী করতে করতে কাটিয়ে দিলাম। রাতের বেলা মা ফলাহার করে নিজের রুমে বাবার সঙ্গে ফোনে কথা বলছিল।
আর আমি দিদার পাশে বসে গল্প শুনছিলাম। তিনি খোশমেজাজে পান সাজাতে সাজাতে আমায় দাদাইয়ের গল্প শোনাচ্ছিলেন।
কিছুক্ষণ পর সরলা মাসি আমাদের কাছে এসে বললেন, “দেবী দির আবার মন খারাপ করছে গো। জামাই বাবুর সঙ্গে ফোনে কথা বলার পর আবার মন মরা হয়েছে বসে রয়েছে”।
কথাটা শোনার পর দিদা সরলা মাসির দিকে চেয়ে দেখলেন। কিছু একটা ভাবছিলেন দিদা। তারপর মাথা নেড়ে বললেন, “এতো ভারী সমস্যা দেখছি রে সরলা”।
“হুম গো মাসিমণি। তা আমি বলছিলাম কি রাতে দেবী দির সঙ্গে কে থাকবে?”
“কেন তুই থাকতে পারবি না?” দিদা প্রশ্ন করলেন।
“হুম তা থাকতে পারি। কিন্তু আমি থাকলে কি দেবী দির মন ঠিক হবে মাসিমণি?”
“তাহলে কি বলিস কি করবো?” দিদার মুখে উদ্বিগ্নের ছাপ।
“আজ্ঞে আপনিই শুয়ে জেতে পারেন তো মাসিমণি”।
দিদা নিজের চশমা ঠিক করলেন, “না! আমি ওর সঙ্গে থাকলে ও সারা রাত ঘুমাবে না। বকবক করে কাটিয়ে দেবে”।
“তাহলে উপায় কি মাসিমণি?”
দিদা, সরলা মাসির দিকে মুখ তুলে বললেন, “ওকে বল ওর ছেলে শোবে ওর সঙ্গে। মায়ের কাছে ছেলে থাকলে মায়ের মন এমনিতেই ভালো থাকে। আমি এখুনি দাদুভাই কে ওর কাছে পাঠিয়ে দিচ্ছি”।

একি বললেন দিদা? মনে মনে খুশি হলাম আমি। সত্যিই এখন মায়ের আমার সান্নিধ্যের প্রয়োজন আছে। গতকাল বাবা অনেক খানি মাকে সামলে ছিলেন। আমি তাঁর পাশে থাকলে হয়তো মা ভালো থাকবে।
আমি উঠে দাঁড়ালাম, “তুমি ঠিকই বলেছো দিদা। মা’র সঙ্গে আমি থাকলে হয়তো মা’র মন খারাপ করবে না”।
দিদা আমার মুখ চাইলেন, “হ্যাঁ দাদুভাই। মা’র কাছে গিয়ে বলতো অতো শোক করতে নেই। যার যাবার তিনি চলে গিয়েছেন। সে আর ফিরবেন না। সুতরাং বিলাপ করে আর লাভ নেই। বল যে কৃষ্ণের আশীর্বাদে সব ঠিক হয়ে যাবে”।
আমি মাথা নিচু করে দিদার অনুমতি নিলাম, “আচ্ছা দিদামণি। দেখি মাকে বোঝাতে পারি কি না”।

মা’র রুমে এসে দেখলাম মা একখানা নাইটি পরে বিছানার মধ্যে শুয়ে আছে। চিৎ হয়ে। ডান হাত কপালের উপর তুলে চোখ দুটো ঈষৎ ঢেকে রেখেছে। বাম ভাঁজ করে পেটের উপরে রেখে এবং এক পা অপর পায়ের উপর রেখেছে। আমি ঘরে প্রবেশ করাতে মা ডান দিকে মুখে ঘোরালো।
“মা তুমি মনখারাপ করছো শুনলাম”।
আমার কথা শুনে মা তাঁর কপালের উপর রাখা ডান হাতটা সরাল। তারপর মুখ তুলে বলল, “নাহ! তেমন কিছু না রে বাবু!”
আমি বিছানার ধারে এসে দাঁড়ালাম, “দিদা আমাকে তোমার কাছে শুতে বলল মা”।
মা একটু দেওয়ালের দিকে সরে গিয়ে বলল, “হ্যাঁ আয়। আমার পাশে শুয়ে পড়। আর আলোটা নিভিয়ে দে”।
আমি ঘরের টিউব লাইট অফ করে নাইট বাল্বটা অন করে দিলাম। বিছানার ডান দিকে মা’র পাশে শুয়ে পড়লাম। পায়ের কাছে ভাঁজ করে রাখা লেপটা গায়ে তুলে নিলাম। মা আর আমি এখন এক বিছানায়। একই লেপের তলায়।
“বাবা ফোন করে কি বলছিলো মা?”
চিৎ হয়ে শুয়ে থাকা মা আমার দিকে পাশ ফিরলো, “ কাল ফিরছেন ভদ্রলোক!”
আমি অবাক হলাম, “বলো কি মা? তাহলে রাঁধা বাড়া ক্যান্সেল?”
“হুম। বলেছিলাম না। ওই সব ওর দ্বারা সম্ভব নয়”।
মনে মনে বললাম, “ভালোই তো চলছিলো সব। আজ থেকে টানা দশ দিন মায়ের পাশে ঘুমাতে পারতাম। কিন্তু তা আর হয়ে উঠবে না বোধয়। বাবা আবার আগামীকাল ফিরছেন। আমার জায়গাটা আবার তিনি নিয়ে নেবেন”।
মা’র মুখের দিকে তাকালাম, “এক প্রকার ভালোই হল মা। কি বল? বাবা থাকলে তোমার মনও ভালো থাকবে”।
মা মুখ তুলে বাম হাত দিয়ে আমার কপালের চুল গুলো ঠিক করতে করতে বলল, “শুধু তুই থাকলেই হবে। তুই কি জানিস? তুই আমার সোনা ছেলে”।
মায়ের এই কথা গুলো আমার হৃদয় কে আন্দোলিত করে তুলল। অনেক দিন পর আমার প্রতি মায়ের এই স্নেহে ভরা মধুর উক্তি শুনতে পেলাম। উত্তরে কি বলবো তা ভেবে উঠতে পারছিলাম না। আমিও তাঁর বাম হাতের তালুতে চুমু খেয়ে বললাম, “কিন্তু তুমি আমার কাছে অনেক কিছু মা। মোর দ্যান আ ম্যাদার!!”
মা নিজের বাম হাত আমার ডান হাত থেকে সরাল। তারপর দেওয়ালের দিকে মুখ করে শুয়ে পড়লো।
“ঘুমিয়ে পড় বাবু! গুড নাইট”।
আমি মাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলাম। তাঁর ডান হাতের তলা দিয়ে কোমরের ঢাল বেয়ে আমার ডান হাত তাঁর নরম পেটের উপর রাখলাম। মুখ তুলে তাঁর ডান গালের সঙ্গে আমার বাম গাল স্পর্শ করালাম। মা চুপ করে শুয়ে ছিল। বহু যুগ পর মাকে এইভাবে কাছে পেলাম। তিন্নির সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার পর থেকে মা বহুদিন আমার উপর রেগেছিল। সেই রাগ যেন এখন ধীরে ধীরে প্রশমিত হচ্ছে। তাঁর সেই সোনার ছেলেকে মা আপন করে নিচ্ছে।
মা’কে এইভাবে জড়িয়ে ধরে তাঁর গালের উপর গাল রেখে ,কানের মধ্যে কান ঘষে শুয়ে থাকতে পেরে কেমন যেন এক আলাদাই অনুভূতি হচ্ছিলো। এক স্বর্গীয় অনুভূতি। আমার দেবী স্বরূপা মা দেবশ্রী যেন এক স্বর্গীয় অনুভূতি।
যার নিঃশ্বাসের সঙ্গে আমার নিঃশ্বাস মিলিত হচ্ছিলো। যার বন্ধ চোখের গভীর ভ্রু’তে চোখ রেখে কখন ঘুমিয়ে স্বপ্নের দেশে হারিয়ে গিয়েছিলাম বুঝতেই পারিনি। স্বপ্নের মধ্যেও মায়ের সেই সুমিষ্ট যোনি আমাকে আহ্বান করছিলো।যেন তাঁর যোনিতে আমার হৃদয় বাঁধা পড়েছে। আর আমি বোঁ বোঁ করে ঘুরছি।
ঘুম যখন ভাঙল তখন দেখলাম লেপের সর্বাংশ আমি নিজের দিকে টেনে নিয়েছি। মা চিৎ হয়ে শুয়ে ডান হাতের বাহু দিয়ে নিজের চোখ আড়াল করে ঘুমাচ্ছিল। আমি তড়িঘড়ি নিজের দিকের লেপ খানা সামনে ঠেলে মা’র পায়ের দিকটা ঢেকে দিতে লাগলাম। ঘরের নাইট বাল্বে আলোতে তাঁর সাদা নাইটি উজ্জ্বল আভা বিকিরণ করছিলো। আমার নজর সে’দিকে ছিল। মায়ের ভরাট বক্ষস্থল! নাইটির বুকের কাছের কাটা অংশে তাঁর স্তন বিভাজিকা আবছা দেখা যাচ্ছিলো। শুয়ে থাকার কারণে তাঁর সুতির নাইটি গায়ে লেপটে  ছিল। ফলে মা’র ডান স্তনের বোটা সুস্পষ্ট ভাবে আমার চোখে ধরা দিচ্ছিল। আমি ভেবেই বিস্মিত হচ্ছিলাম। এই নারীই আমাকে জন্ম দিয়েছেন। এবং এই নারীর দুধ পান করে আমি বড় হয়েছি।
মায়ের স্তন বৃন্তের উঁকি আমাকে দুর্বল করে তুলছিল। কতই না সুদিন ছিল যখন আমি ইচ্ছা মতো তাঁর মাই চুষে খেতাম। কোন বাধা থাকতো না তখন। নির্দ্বিধায় যখন তখন তাঁর স্তন পান করতে পারতাম। যার স্নেহে পোষিত আমি হয়েছি।
আমার ইচ্ছা হলো সেই স্তনে পুনরায় মুখ দিই। পুনরায় সেই শৈশবে ফিরে যাই। পুনরায় মা আমাকে নিজের বুকে আগলে রাখুক।
কিন্তু এই মুহূর্তে মায়ের বক্ষস্থল উন্মুক্ত করা সম্ভব নয়। তাঁর ঘুম ভেঙ্গে যেতে পারে। তাই মাথায় একটা অন্য বুদ্ধি নিয়ে এলাম।নাইটির উপর দিয়ে গম্বুজ আকার ধারণ করা মা’র স্তন বোঁটায় আমি আমার ডান হাতের তর্জনী আঙুল দিয়ে স্পর্শ করলাম। বোঝা গেলো মা ভেতরে ব্রা পরে নি। তর্জনী আঙুল দিয়ে তাঁর ডান স্তন বৃন্ত নাড়াতে থাকলাম। কোমল স্তনের বোঁটার আগায় উষ্ণতা অনুভব করছিলাম। একবার মনে হলো সেখানে জিব লাগাই।তাই বালিশ থেকে মাথা নামিয়ে মায়ের ডান কাঁধের উপর মুখ নিয়ে এলাম। চোখের অতীব  নিকটে মা’র ভরাট স্তনের বৃন্ত আমায় হাতছানি দিচ্ছিল। আমি খুবই নিরাপদে নিজের জিব নিয়ে গেলাম সেখানে। মুখ তুলে নাইটির উপর থেকেই মায়ের স্তন বৃন্তের অগ্রভাগে জিবের ছোঁয়া লাগতেই শরীর ঝিনঝিন করে  উঠল। তখন অবিলম্বে নিজের জিব সরিয়ে ফেললাম সেখান থেকে। যদি মা জেগে যায়। যদি মা বকে!
তাই পুনরায় সাহস সঞ্চয় করার জন্য প্রতীক্ষা করতে লাগলাম।
মা ওইভাবেই চিৎ হয়ে ঘুমাচ্ছিল। কোনরকম নাড়াচাড়া করছিলো না। আমি আবার সেখানে মুখ নিয়ে গেলাম। জিব রাখলাম মায়ের স্তন বোঁটার অগ্রভাগে। মুখের মধ্যে অজস্র লালা সঞ্চার হয়েছিলো। ফলে নাইটির কাপড় সম্পূর্ণ ভিজে গিয়েছিলো। মা’র স্তন বৃন্ত আরও স্বচ্ছ রূপে আমার চোখের সামনে ধরা দিচ্ছিল। আমি আবার তাঁর স্তনাগ্র মুখে পুরে নিলাম। ক্ষুধার্ত শিশুর মতো চোখ বন্ধ করে চুষে নিচ্ছিলাম সেখানটা। সেই কোন চার বছর বয়সে তাঁর স্তন পান করা ছেড়ে ছিলাম। এখন দীর্ঘ পনেরো বছর পর পুনরায় সেখানে মুখ লাগালাম। নিজেকে স্মৃতিবেদনাতুর মনে হচ্ছিলো। মাকে ভালোবাসি বলতে ইচ্ছা হচ্ছিলো।

দু চোখ বন্ধ করে মা’র দুধের বোঁটা চুষে খাচ্ছিলাম। নাইটির সূক্ষ্ম পরত কোন বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছিল না। মাতৃঘ্রাণ অনুভব করছিলাম। বিস্মিত হচ্ছিলাম এটা মনে করে যে এই রমণীয় নারীর সন্তান আমি।

মাই চোষা অবস্থাতেই চোখ তুলে দেখলাম।রাতের অন্ধকারের ক্ষীণ আলোতেও আমার মামণির শ্বেতাভ  গায়ের রং প্রজ্জ্বলিত হচ্ছিলো। ডান হাতের বাহু দিয়ে চোখ আড়াল করে ঘুমিয়ে ছিলো মা। তাঁর মসৃণ হাতের কব্জির কাছে হেলে থাকা শাঁখা পলা এবং সোনার চুড়ি চকচক করছিলো।  মা’র কোন সাড়া পাচ্ছিলাম না দেখে আমার উৎসাহ আরও বেড়ে যাচ্ছিলো। মনের মধ্যে সকালের দৃশ্য ভেসে বেড়াচ্ছিল। মায়ের অতীব সুন্দরী যোনি। যা আমি গতকাল প্রথম বার দেখলাম। কত ফোলা। কালো কোঁকড়ানো চুল দ্বারা সুসজ্জিত। অপরাজিতা ফুলের পাপড়ির ন্যায় চমৎকৃত ভগাঙ্কুর। রসালো তার ফটক। যার মধ্য দিয়ে সোনালী  ধারা বয়ে যাচ্ছিলো। যা আমাকে অবাক করে তুলেছিলো। মন চাইছিল সেখানে মুখ রেখে সেই অমৃত ধারা পান করি।

মা এখন আমার সন্নিকটে। আমার প্রবল ইচ্ছা জাগছিল মায়ের সেই পুণ্যময় অঙ্গের পরিদর্শন করার। ডান হাত চঞ্চল হয়ে উঠেছিল। হাতের তালুর মধ্যে যদি একবার সেই অলীক বস্তু ধরা দেয়। মন ধন্য হয়ে উঠবে। সেই ত্রিকোণ ফোলা মাতৃ অঙ্গের প্রতি আমার আসক্তি প্রচণ্ড রূপে বেড়ে উঠছিল। আমি সেখানে হাত রাখতে চাইছিলাম। মা’তো গভীর নিদ্রায় আচ্ছন্ন। আমার হাত সেখানে পড়লে তার ব্যাঘাত ঘটবে কি?
সাহস করে আমার ডান হাত তাঁর মসৃণ পেটের উপর রাখলাম। ঘুমের কারণে মা’র তুলতুলে পেট একবার উঠছে আবার নামছে। মা’র পেট এতোই নরম যে সেখানে একবার হাত রাখার পর তা সরাতে ইচ্ছা করছিল না। তাঁর অতীব কোমল উদরের সঙ্কোচন প্রসারণে আমার হাতও ওঠা নামা করছিলো। আমি দু’চোখ বন্ধ করে তার সুখানন্দ নিচ্ছিলাম। মন চাইছিল হাত আরও নীচের দিকে নিয়ে যাবার। আবার ভয়ও হচ্ছিলো প্রচণ্ড। এমনিতেই মা’র মন মেজাজ ভালো নেই। তার উপর যদি তাঁকে জ্বালাতন করি তাহলে কি পরিমান রেগে যাবেন কে জানে।
বেশ কিছুক্ষণ মায়ের কোন রকম সাড়া না পাওয়ায় আমার হাত ধীরে ধীরে নীচের দিকে প্রসারিত করতে লাগলাম। মা’র তুলতুল উদরের নিম্নাংশে ,নাভির আরও নীচে যেখানে তল পেট শেষ হয়। সেই জায়গায় হাতের স্পর্শে বুঝলাম মা ভেতরে প্যানটি পরে আছে। কারণ তাঁর প্যানটির ইলাস্টিক আমার ডান হাতের কড়ি আঙুলে অনুভব করলাম।কিঞ্চিৎ নিরাশ হলাম। কারণ আমার অতটা সাহস হচ্ছিলো না সেই গণ্ডি পার করে হাত রাখার।  তাই আমার আবার উপরে তুলতে লাগলাম। পুনরায় মা’র তুলতুল পেটের উপর হাত রাখলাম।
মা’র ভারী স্তন দুটো আমাকে প্রলোভিত করে তুলছিলো। মনে হচ্ছিলো যোনিদেশ নাই বা হল ।অন্তত  সেখানে একবার হাত লাগাই। মনের চঞ্চলতা এতটাই বেড়ে গিয়েছিলো যার ফলে মা’কে দু’বার ধীরে ধীরে হাঁক দিলাম, “মা…মা” বলে। কিন্তু মা কোন সাড়া শব্দ দিলো না। বুঝলাম সে গভীর নিদ্রায় আচ্ছন্ন। এদিকে আমার মন মাতৃ প্রেম এবং স্ত্রী প্রেম উভয় পাবার জন্য উদ্গ্রিব হয়ে রয়েছে। পাজামার তলায় লিংগ সম্পূর্ণ আকার ধারণ করে মাতৃ আরাধনায় লীন হতে চাইছিল। যা আমার দেবী মা’র শরীর থেকে মাত্র চার আঙুল দূরত্বে রয়েছে।
তাঁর পেটের উপর রাখা আমার ডান হাত সামান্য তুলে আরও ভালো করে জড়িয়ে ধরলাম। আমার লিংগ তাঁর কোমর স্পর্শ করলো মনে হল। মুখ গুঁজে দিলাম তাঁর ডান বাহু মূলে। মা একটু নড়ে উঠল। নিঃশ্বাসের প্রবাহ দুমড়ে গেলো তাঁর কিছুক্ষণ। পরে আবার তা আগের মতো পর্যায়ক্রমিক হল। বোঝায় যায় মা ঘুমের অনন্ত পরতে অবস্থিত। তাঁকে ধরে সজোরে ঝাঁকালেও জাগবে না বোধয়।
আমি তাঁর গায়ের মধুর সুবাসে মেতে উঠছিলাম। যেন সেই শিশু বেলায় ফিরে গেছি। যখন তাঁর স্তন পান করার অবাধ ছাড় ছিল আমার। যখন তখন আমি তাঁর ব্লাউজ তুলে স্তন পান করে নিতে পারতাম। ক্ষণিকের জন্যও মনে হয়েছিলো মা তাঁর সেই ছোট্ট শিশুকে তাঁর বুকে আগলে রেখেছেন। কথা গুলো ভাবার সঙ্গে সঙ্গে মনে একটা আলাদা উত্তেজনা তৈরি হচ্ছিলো।
এখন আমার ডান হাত তাঁর বাম বাহুর কাছে। তার কিছুটা উপরে মা’র বাম স্তন। যেটাকে আমি খামচে ধরে মর্দন করতে চাই ছিলাম। কিন্তু মনে একটা ইতস্তত ভাব কাজ করছিলো। যদি মা জেগে যায়। আবার পরক্ষণে মন বলছিল মা তো গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। তাই একটি বার আলতো করে টিপে নেওয়া যেতেই পারে। মনে সাহস সঞ্চয় করে ডান হাত কিছুটা উপরে তুললাম। মা’র তুলতুলে অঙ্গের উপর হাত পড়লো বলে মনে হল। চোখ বন্ধ করে সেই কোমলতার আস্বাদ নিচ্ছিলাম। হাতের আঙুল ছড়িয়ে দিলাম। মায়ের বাম স্তনের আকার যতটা, ততটা অবধি আমার হাতের তালুকে প্রসারিত করলাম। তবে তাঁর স্তনের আকার বেশ  বড় আমার ডান হাতে আঁটে না। তাই আমি আবার পাঁচ আঙুল সঙ্কুচিত করে মা’র স্তনের তলদেশে স্থাপন করলাম। নাইটির উপর থেকে তাঁর স্তনের ভাঁজের মধ্যে হাত বোলাতে লাগলাম। মা যেমন স্থির হয়ে শুয়ে ছিল ঠিক সেরকমই অবস্থায় শুয়ে রইল। আমার মন বলছিল তাঁর বাম স্তন মর্দন করলে মা জেগে উঠবে না। তাই আবার ধীরে ধীরে হাত উপরে তুলতে লাগলাম। এবার আমার হাত তাঁর স্তনের উপরি পৃষ্ঠে স্থির হল। আমার তালুর মধ্যে মায়ের দুগ্ধ বৃন্ত অনুভব করছিলাম। হাতের মাঝখানে যেন খোঁচা মারছিল মা’র স্তনাগ্র। আমি আবার স্বর্গীয় জগতে ফিরে যাচ্ছিলাম মনে হল। মা’র দিক থেকে কোন বাধা পাচ্ছিলাম না দেখে সাহস করে আলতো করে তাঁর বাম স্তন টিপে দিলাম। মন খুশিতে ভরে গেলো। এইতো। এতো দিন পর সফল হলাম।যার অনুভূতি ভাষায় বর্ণনা করা যায় না। আমি ঈষৎ বল দিয়ে তাঁর স্তন চেপে ধরে রেখেছি।  বুঝলাম  মা’র স্তন মঞ্জু কাকিমার মতো ঢিলা নয়। তাঁর মতো অতো ছড়ানও নয়। মা’র স্তন অপেক্ষাকৃত রূপে তাঁর থেকে ছোট এবং আঁটসাঁট। যা হাতে নিয়ে মর্দন করতে অতীব সুখ পাওয়া যাচ্ছে।  আমি আলতো আলতো করে দলন করে যাচ্ছি। যেন পৃথিবীর সর্ব সুখ আমার ডান হাতের তালুতে অবস্থিত। মা’র স্তন বৃন্তের খোঁচা অনুভব করছিলাম এবং আঙুলের চারপাশে অতীব কোমল সুখানুভূতি। যার ফলে আমার হৃদস্পন্দন দ্রুত থেকে দ্রুততর হতে শুরু করে দিয়েছিলো। মুখ দিয়ে উষ্ণ ভাপ বের হচ্ছিলো আমার। মায়ের ডান স্তনের কাছে মুখ গুজে রেখেছিলাম। ঠোঁট তুলে সেখানে দু’বার চুমু খেয়ে নিলাম। আর চঞ্চল ডান হাত দিয়ে সমানে তাঁর বাম স্তন খুবই ম্লান গতিতে মর্দন করে যাচ্ছিলাম। পাছে মা না জেগে যায়। মনের উত্তেজনা বাড়তে শুরু করেছিলো। আমি আরও মায়ের দিকে এগিয়ে এলাম। তাঁর শরীরের সঙ্গে নিজের শরীর এমন ভাবে সাঁটিয়ে নিলাম যাতে মা জেগে না যায়। লেপের তলা থেকে ডান পা বের করে আনলাম। হাঁটু ভাঁজ করে তাঁর সুঠাম দুই ঊরুর উপর রাখলাম। ক্ষণিকের জন্য তাঁর স্তন মর্দন থেকে বিরত নিলাম। ডান হাত দিয়ে তাঁর পেট জড়িয়ে ধরলাম। এবং মাথা তুলে দিলাম তাঁর ডান বুকের ওপরে।  মা’র লাবডাব করতে থাকা হৃদয় ধ্বনি শুনতে পাচ্ছিলাম। তাঁর বুকে মাথা রেখে মনে হচ্ছিলো স্বর্গীয় বিছানায় শুয়ে আছি। তাঁর ঘন নিঃশ্বাস আমার কপালের উপর পড়ছিল। আর আমার মাথার তালু তাঁর চিবুক স্পর্শ কর ছিল। ইচ্ছা হচ্ছিলো মুখ তুলে একবার তাঁর চিবুকে চুম্বন করি। কিন্তু তা সম্ভব নয় কারণ মায়ের চোখ ঢেকে রাখা ডান হাত নড়ে গেলেই মায়ের ঘুম ভেঙ্গে যাবে।
তাই তাঁকে জড়িয়ে চুপটি করে শুয়ে ছিলাম। মিঠে সুখের আনন্দ নিচ্ছিলাম।
কিছুক্ষণ পর মা নড়েচড়ে উঠল এবং ডান পাশে আমার দিকে পাশ ফিরে শুয়ে পড়লো।আমি ভয় পেয়ে তাঁকে ছেড়ে দিয়ে ঘুমানোর ভান করতে লাগলাম। তাঁর প্রশ্বাস ধ্বনি সমান্তরাল হলে আমি পুনরায় তাঁর গায়ে ডান হাত চাপালাম। মুখ গুজে দিলাম দুই স্তনের মাঝখানে। কোমল,সুবাসিত,মসৃণ এবং উষ্ণ মা’র বক্ষঃস্থল। আমি শিহরিত, পুলকিত, উত্তেজিত। আমার পুরুষাঙ্গে পুনরায় রক্ত সঞ্চার হল। পুনরায় সে কোঠর রূপ ধারণ করলো। মা’র শরীরের সংস্পর্শে আমার চঞ্চল হৃদয় বলছিল তাঁর নাইটি উতরে দিতে। কিন্তু এতটাও মনোবল পাচ্ছিলাম না যে আমি তা করতে পারি।
তাঁর কোমরের কাছে রাখা আমার ডান হাত ধীরে ধীরে আরও ডান দিকে প্রসারিত করতে লাগলাম। কোমরের গভীর খাঁজের উপর মা’র ঊরুর বক্র উতরাই। হাতের তালুর মধ্যে আমি অসীম মসৃণতা অনুভব করছিলাম। দুই স্তনের মাঝখানে মুখ গুঁজে রাখার পর মা’র দুধের বোঁটা আমাকে পুনরায় উজ্জীবিত করে তুল ছিল। ভালোই তো নাইটির উপর তাঁর নিপল হাতড়ে মুখ লাগিয়ে চুষছিলাম। এখনও তাই করি। ভারের কারণে বিছানার দিকে ঝুলে পড়া স্তন বৃন্ত খুঁজতে সামান্য সময় লাগলো আমার। মুখ বেঁকিয়ে জিব বের করে মা’র বাম স্তনাগ্রে বলাতে লাগলাম। নাইটির কাপড় ভিজে যাবার পর মুখ পুরে নিচ্ছিলাম পুরোটা। মধুর স্বাদ পাচ্ছিলাম মনে হচ্ছিলো। সাহস করে এবার ডান হাত সামনে নিয়ে গিয়ে মা’র বাম স্তন আগের মতো আলতো করে টিপে দিচ্ছিলাম। এতেই সুখ। বুঝলাম এই প্রকার চলতে থাকলে মায়ের ঘুম ভাঙবে না। তাই আরও একটু দুঃসাহসিক কাজ করতে অসুবিধা নেই।
সুতরাং আমি মা’র স্তন মর্দনের গতি আরও তীব্র করলাম। আরও একটু শক্ত করে খামচে ধরলাম তাঁর বাম স্তন। সীমাহীন আনন্দ! পাজামার ভেতরে ধোন লম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সেও মাতৃ স্পর্শ খুঁজছিল। আমার ডান পা মা’র বাম ঊরুর উপর তুলে দিলাম। এবং শক্ত করে জড়িয়ে ধরার ভান করে আমার লিঙ্গ তাঁর দুই ঊরুর সন্ধি স্থানে অনুভব করার চেষ্টা করলাম। মা কেঁপে কেঁপে উঠলেও কোন বাধা অথবা সাড়া দিলো না।
আমি মুখ তুলে তাঁর গলায় চুমু খেলাম। তাঁর চিবুকে ঠোঁট রাখলাম। ডান হাত বাম স্তন থেকে সরিয়ে ডান স্তনে রেখে পূর্বাপেক্ষা একটু জোরেই টিপতে থাকলাম। একবার বাম স্তন আবার একবার ডান স্তন। মায়ের নীরবতা আমার উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে দিচ্ছিল। কোমর ঠেলে ঠেলে আমার লিঙ্গ দিয়ে তাঁর ঊরু সংযোগে অনুভব করে নিচ্ছিলাম আর বাম স্তন মনের সুখে মর্দন করে যাচ্ছিলাম। কামোত্তজনায় শরীর গরম হয়ে উঠতে লাগলো। নাক মুখ দিয়ে ঘন নিঃশ্বাস বের হচ্ছিলো। এমন মিষ্টি সুখ আমি কোন দিন পাইনি। আমার সুন্দরী মা সত্যিই অতুলনীয়। তাঁকে মন ভরে আদর করতে ইচ্ছা হচ্ছিলো। আমার নিঃশ্বাস তাঁর থুতনির উপর পড়ছিল। ঠোঁটে ঠোঁট রেখে চুমু খেতে চাইছিলাম।মুখ তুলে তাঁর রসালো অধর জিব দিয়ে চেটে নিলাম।  

এমন মুহূর্তে মা জেগে উঠল, “উফ কি করছিস তুই বাবু!” একটা বিরক্তি ভরা তাঁর অভিব্যক্তি। হাত দিয়ে নিজের ঠোঁট মুছে নিলো।
আমি তাঁকে আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরে নিলাম।বাসনার বাঁধ ভেঙ্গে পড়েছে।তাঁর মুখের কাছে মুখ নিয়ে গেলাম, “মা! আমি তোমার সঙ্গে সেক্স করতে চাই। প্লিজ একবার দাও না গো”।
আমার কথা শোনার পর দেখলাম মা প্রচণ্ড রেগে গেলো আর সজোরে আমার বাম গালে কষিয়ে একখানা চড় বসালো।
“ভ্যাট! খালি অসভ্যের মতো কথা! ঘুমা শয়তান ছেলে”।
মারার সময় মায়ের দিকদিশা থাকে না। ছোট থেকেই দেখে আসছি। খুব জোরে প্রহার করতো আমায়। এবারও তাঁর সোনার চুড়িতে আমার চোয়াল জ্বলে উঠলো। কান্না পাচ্ছিলো আমার। আমাকে এক থাপ্পড় মেরে রাগে বিড়বিড় করে কিসব বলতে বলতে উল্টো দিকে মুখ ঘুরিয়ে শুয়ে পড়লো।
আমি গালে হাত দিয়ে মনে মনে কাঁদছিলাম। ভালোবাসার বিনিময় তিরস্কার। আগামীকাল দেখবো। আগামীকাল মা যদি আমায় ক্ষমা না চেয়ে পুনরায় আদর না করে তো কোনোদিন কথা বলবো না।

II ৪ II

পরেরদিন সকাল বেলা মায়ের পাত্তা পেলাম না। নিজের কাজে ব্যস্ত ছিলেন বোধয়। আমি মুখ ধুয়ে ছাদের উপরে পায়চারি করছিলাম চা খেতে খেতে। মা’কে একটি বার মাত্র চোখে দেখার জন্য মন উসখুস করছিলো।
সময় তখন প্রায় সাড়ে দশটার কাছাকাছি। আমাদের সুইফট গাড়িটা দেখলাম বাড়ির সামনের পাঁচিলের কাছে এসে দাঁড়ালো। বাবা এতো সকাল সকাল! মনে মনে বললাম। আমি দৌড়ে গিয়ে ঘরের মুখ্য দরজা দিয়ে বেরিয়ে বাবার কাছে ছুটে এলাম।
বাবা কারের দরজা বন্ধ করে আমার দিকে ঘুরে তাকাল, “ঠিক আছিস তো বাবু? তোর মা কোথায়?”
আমি মুখ নামিয়ে বললাম, “আমি ঠিক আছি বাবা। মা নিজের কাজে ব্যস্ত আছে”।
বাবা কার থেকে একগাদা ফল মিষ্টির ব্যাগ বের করে সেগুলো হাতে নিয়ে ঘরে প্রবেশ করলো।
ভেতরে এসে দিদা, বাবাকে দেখে খুশি হলেন। এমন মুহূর্তে মা’ও কোথা থেকে হাজির হল। বাবার দিকে একবার রাগী চাহনি দিয়ে মুচকি হাসল, “গতকাল কোন অসুবিধা হয়নি তো গো? আর আজ কখন বেরিয়েছিলে? একবার ফোন করে তো জানাতে পারতে?”
মায়ের বহুল প্রশ্নে বাবা কুপোকাত। এদিকে আবার আমি তাঁদের মধ্যে তৃতীয় ব্যক্তি হয়ে উঠলাম। মা আমার দিকে বড়বড় চোখ করে তাকিয়ে অন্য দিকে চলে গেলো।

চা পানের পর প্রায় সাড়ে বারোটা নাগাদ বাবার সঙ্গে আমার দেখা হল। আমি ছাদেই বসে ছিলাম।
বাবা সিঁড়ি দিয়ে উঠল।
আমি বললাম, “তুমি তো বলেছিলে দাদাইয়ের শ্রাদ্ধ্য -এর সময় আসবে? কিন্তু আজকে এতো সকালে কেন এলে বাবা?”
বাবা বলল, “কাল অফিস গিয়েছিলাম। তোর দাদাইয়ের মারা যাওয়ার কথাটা বললাম তাঁদের। আরও কিছুদিন সময় চেয়ে নিলাম।আর এমন করে এখানে একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজে দায়িত্ব না নিলে সবাই খারাপ ভাববে আমায় বাবু”।
আমি হুম বলে মাথা নাড়ালাম।
বাবা বলল, “এই ঘরের জামাই আমি। শ্বশুরের শ্রাদ্ধ্য কার্যে অনুপস্থিত থাকলে সবাই আঙুল তুলবে। তার উপর তোর মা একমাত্র কন্যা। পরে তোর মা’ই আমাকে কথা শোনাবে”।
আমি বললাম, “হ্যাঁ তা ঠিক বাবা। তুমি ঠিকই করেছো। তুমি আর স্বরূপ মামা এই কাজের দায়িত্ব নিলে বেশি ভালো হয়”।
বাবা ছাদের চারিদিকে ঘুরে ঘুরে দেখছিল। তারপর আমায় বলল, “সকালে আসার সময় স্নানটা করা হয়নি বাবু। চল আজ কুয়োর জলে চান করবো”।
আমরা নীচে চলে এলাম। বাবা গামছা পরে বাইরে বেরিয়ে এলেন। পেছন দিকে কুয়োর চারপাশে গোল করে ঘেরা সিমেন্টের বাঁধানো চাতালের ধারে বাবু হয়ে বসে বাবা বলল, “কই কুয়ো থেকে বালতি করে জল তুলে আমার মাথায় ঢাল দেখি”।
আমি তাঁর কথা মতো কপিকলে দড়ি পরিয়ে বালতি করে জল তুলে তাঁর মাথায় ঢেলে দিলাম। গায়ে জল লাগতেই বাবা খানিকটা লাফিয়ে উঠে বললেন, “আহা কুয়োর টাটকা জল গায়ে পড়তেই কি স্বস্তি। এই জল কিন্তু কলকাতা মিউনিসিপ্যালিটির বাসি ট্যাঙ্কের জলের থেকে অনেক গুণে ভালো। গায়ে নিয়েই সেটা বোঝা যায়। শরীর মন তরতাজা হয়ে উঠল রে। ঢাল ঢাল আরও ঢাল”।
আমি কুয়ো থেকে জল তুলে বাবার গায়ে ঢেলে দিচ্ছিলাম আর বাবা স্নানের আনন্দ নিচ্ছিল।
আমি বললাম, “বাবা এখানে কেমন বাথরুম গুলো ঘরের বাইরে তাই না? ঘরের মধ্যে বাথরুম থাকলে ভালো হতো না?”
বাবা নিজের গা ডলতে ডলতে বলল, “ভারতীয় বাস্তুশাস্ত্র নিয়মে শৌচাগার মুখ্য ঘরের বাইরে করতে হয় বাবু। মানে ওগুলো এক ছাদের তলায় হলে চলবে না”।
“ওহ আচ্ছা তাই নাকি বাবা?”
“হুম”, বাবা দু’হাত দিয়ে গা ঘষ ছিল, “আগে মানুষ শৌচ কর্ম বাড়ির অনেক দূরে গিয়ে করতো। মুক্ত প্রাঙ্গণে। তারপর হল বাড়ির নিকটে। এখন শোবার ঘরের মধ্যে। দুই দিন পর হয়তো বলবে বিছানার উপরেই একখানা কমোড বানিয়ে দাও”। বাবা হাসল।
আমিও হাসলাম, “খোলা প্রাঙ্গণে বল বাবা?”
“হ্যাঁ। বিলিতি নিয়মে আহার হবে সবার সামনে কিন্তু শৌচ হবে গোপনে। কিন্তু আমাদের নিয়ম হল উল্টো আহার হবে গোপনে। পরিশুদ্ধ স্থানে। কিন্তু শৌচ হবে মুক্ত গগণে”।
আমরা দুজন আবার হাসলাম।
আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম, “আচ্ছা বাবা। দাদাই রা এই বাড়িটা দুতলা কেন বানান নি?”
বাবা একবার ছাদের দিকে তাকিয়ে বলল, “ঘরের পাশে কৃষ্ণ মন্দির টা দেখেছিস? দেখবি ওর সিঁড়ি টাই এই ঘরের প্রায় ছাদের সমান সমান। তাই হয়তো দুতলা বানান নি। ঠাকুরকে পায়ের নীচে রাখা হয়ে যাবে বলে”।
আমি বললাম, “হ্যাঁ এবার বুঝলাম বাবা”।
বাবা আমার দিকে তাকিয়ে বলল, “থামলি কেন? ঢাল আরও জল ঢাল। আমার খুব ভালো লাগছে। কুয়োর উষ্ণ জল গায়ে নিতে। বাড়িতে এই জল পেতে গেলে গিজার অন করতে হয়। কিন্তু এখানে প্রাকৃতিক বুঝলি”।
আমি মৃদু হাসলাম।
বাবার মাথায় জল ঢালতে ঢালতে আমার গতকাল মায়ের কথা গুলো মনে পড়লো। হঠাৎ মুখ ফসকে বেরিয়ে গেলো, “আচ্ছা বাবা! তুমি মা’কে ভালোবাসো?”
বাবা একটু গম্ভীর হয়ে উত্তর দিলো, “না বাসার কি আছে?”
আমি বললাম, “না মানে গতকাল মা তোমায় নিয়ে অনেক অভিযোগ করছিলো। বলছিলো নাকি দাদাইয়ের মারা যাওয়ার পেছনে তুমিই দায়ী ইত্যাদি। তোমার উপর মা রেগেও ছিল প্রচণ্ড”।
আমার কথা গুলো শুনে। বাবা গা মাজা বন্ধ করে দিলো। তারপর বলল, “জানিস বাবু। আমি যখন ছোট ছিলাম, প্রচুর দুষ্টু ছিলাম। সারাদিন দিন দস্যিপনা করে ঘুরে বেড়াতাম। লোকের ঘরে আম,জাম পেড়ে বেড়াতাম আর লোক তোর ঠাকুমাকে এসে নালিশ করতো। তোর ঠাকুমাকে আমি একদম ভয় করতাম না। তবে তোর ঠাকুর দা কে করতাম। তিনি সকালে অফিস গেলে গোটা দিন আমি শয়তানি করে ঘুরে বেড়াতাম। তা দেখে তোর ঠাকুমা মানে আমার মা আমাকে মাঝে মাঝে রেগে গিয়ে বলতেন। দেখবি তোর জীবনে এমন এক মেয়ে আসবে যে তোকে উপযুক্ত শাসন করবে। এমন মেয়ের সঙ্গে তোর বিয়ে দেবো যার ভয়ে তুই জড়সড় থাকবি…। আমার ওকে তো পছন্দ ছিল না!! তোর ঠাকুমা’ই জোর করে আমার সঙ্গে তোর মা’র বিয়ে দেন”। 

মনে মনে বললাম, “আঙ্গুর ফল এখন টক হয়ে গেলো”। তবে দুঃখ হচ্ছিলো। বাবাকে কথা গুলো লাগিয়ে খামাকা তাঁর মন খারাপ করিয়ে দিলাম।
আমি বললাম, “তবে মা যে বলে তুমি নাকি মা’র প্রেমে পাগল ছিলে”।
বাবা ক্ষিপ্ত গলা করে বলে উঠল, “ওই সব বাজে কথা। আমি কখনই ওর প্রেমে পাগল ছিলাম না”। 

                                                                      II ৫ II

বাবার স্নান করার পর স্বরূপ মামা এসেছিলেন। তাঁরা দু’জনে একসঙ্গে কোথায় যেন বেরিয়ে পড়লেন। ঘরে ভিড়ের মধ্যে আমার চোখ দুটো মা’কে খুঁজছিল। ভাগ্য ক্রমে দেখাও হল। মা’র তীক্ষ্ণ চক্ষু আমার উপর পড়েছিলো। রান্নাঘরে। আমার জন্য ভাত এবং আলু সেদ্ধ বেড়ে দিচ্ছিল। আমি তাঁর দিকে ভয়ার্ত নজরে চেয়েছিলাম।
মা গলা গম্ভীর করে আমার দিকে চাইল, “গত রাতে কি করছিলি? হ্যাঁ?”
আমি ভয় পেয়ে গেলাম, “কই কিছুই না তো”।
মা প্রশ্ন করলো, “দুধ বের হচ্ছিলো? মা’র বাট থেকে?”
আমি আড়ষ্ট গলায় বললাম, “কই না তো”।
মা ভ্রু কুঁচকালো, “আরও একটা কি যেন বলেছিস তুই? আমার মনে আছে। এখন মন মেজাজ ভালো নেই।তাই কিছু বলছি না। বাড়ি গিয়ে তোর ব্যবস্থা করা হবে”।
মা আবার আমাকে ভয় দেখাল।
“এই নে। মেঝেতে বসে এখানেই খেয়ে নে”।

দশ দিন পর দাদাইয়ের শ্রাদ্ধ সম্পন্ন করে আমরা বাড়ি ফিরে এসে ছিলাম। বহু দিন ছুটিতে থাকায় বাবার কাজের চাপ খুব বেড়ে গিয়েছিল। তাই তাঁকে একটু বেশি সময় ধরে সাইটে থাকতে হচ্ছিলো। বাড়িতে শুধু আমি আর মা।

নিজের বাপের বাড়ি থেকে ফিরে আসার পর বেশ উদাসীন লাগছিলো তাঁকে। একটা বিরাট ঝড় তাঁর উপর দিয়ে বয়ে গেছে। পিতৃহীনা মা আমার। দিদা আর বাবা বলেন কিছু সময়ের উপর ছেড়ে দিতে।সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মা সবকিছু ভুলে যাবে।সব কষ্টের নিবারণ হবে।

রান্নাঘরের স্ল্যবের ধারে দাঁড়িয়ে মা দীর্ঘক্ষণ জানালার দিকে তাকিয়ে সময় পের করতো। আমার সঙ্গে তেমন কথা বলতো না। সে বারে আমার ব্যবস্থা নেবে বলেছিল।কিন্তু কই সে নিয়েও তো মা কোন কথা বলেনি। আমিও নিজের রুমে শুয়ে বসে থাকতাম।  

প্রায় তিন দিন পর দুপুর বেলা। বাবা বাড়িতে ছিল না। আমি ডাইনিং রুমে সোফায় বসে টিভি দেখছিলাম। মা রান্নাঘর থেকে আমায় ডাক দিলো।
আমি দরজার সামনে এসে দাঁড়ালাম, “কিছু বলছো মা?”
মা আমার দিকে চোখ মেলল, “আর কত দিন তোর ছুটি আছে রে বাবু?”
“আর দশ দিন আছে মা। আঠারোই জানুয়ারী কলেজ খুলবে”।
“আর দশ দিন মাত্র…”। মা’র কথার মধ্যে কেমন হতাশা লক্ষ্য করলাম। মা জানালার দিকে চোখ রাখল।
বুঝতে পারলাম।দশ দিন পর মা সম্পূর্ণ একা হয়ে যাবে। তাঁর একাকীত্বে সঙ্গ দেবার মতো কেউ থাকবে না। এই পরিস্থিতিতে মা’র একজন সঙ্গীর প্রয়োজন ছিল। যে সর্বদা তাঁর সঙ্গে থেকে তাঁর একলা পনা দূর করবে।
“কেন কিছু বলছিলে? মা?” আমি প্রশ্ন করলাম।
মা জানালার দিকে চোখ রেখে বলল, “নাহ কিছু না রে”।
মা’র কথা শুনে আমি সেখান থেকে চলে এলাম। নিজের রুমে বিছানার ধারে দাঁড়িয়ে আমিও জানালার দিকে চেয়ে ছিলাম। কষ্ট পাচ্ছিলাম। কিভাবে সবকিছু বদলে গেলো। মা আমার কেমন মন মরা হয়ে পড়েছে। আবার কলেজে লম্বা ছুটি পাবো সেই চার মাস পর।
নিজের রুম থেকে বেরিয়ে পুনরায় মা’র কাছে চলে এলাম। দরজার সামনে দাঁড়িয়ে তাঁর দিকে তাকালাম, “মা…”। বলে ডাকতেই তাঁর অধর কেঁপে উঠলো। আমি তাঁর কান্না দেখতে চাইনা।
দৌড়ে গিয়ে মা’কে আলিঙ্গন করলাম।
“তোমার চোখের জল আমার সহ্য হয়না মা”।
“তুই চলে যাবি শুনে মনটা ভারী হয়ে উঠল রে…। তুই যাস না”।
“আমি কোথাও যাচ্ছি না মা। তুমিও চলো না আমার সঙ্গে কলেজ। আমরা হউস রেন্ট করে নেবো।শুধু তুমি আর আমি থাকবো”।
“তোর বাবাকে আমি বলেছিলাম। ছেলেকে দূরে না পাঠাতে। আমার কত কষ্ট হয় বলতো”।
মা আমার বুকে মাথা রেখেছিলো। আমি তাঁর দুই বাহু ধরে তাঁকে তুলে চোখ রেখে বললাম, “তিন্নির ঘটনার পর তুমি আমাকে দূরে সরিয়ে দিয়েছিলে। আমি কি আগের মতো তোমার বাবু হতে পারি না? আমরা আগের মতো বন্ধু হতে পারি না মা?”
মা’র চোখের কোণায় জল বিন্দু। আমি তাঁর ঠোঁটে উপর চুমু খেলাম। একবার নয়। দুই বার নয়। তিন বার। তারপর মা’র ওষ্ঠদ্বয়ে ডুব দিলাম। মা বাধা দিলো না। এই প্রথম মা আমাকে নির্দ্বিধায় পরিণত চুম্বনের আস্বাদ দিচ্ছিলো। আমি তাঁর অধর রস পান কর ছিলাম। সত্যিই অভাবনীয়। মা’র কোমল ঠোঁট দুটো কোন পদ্ম পাপড়ির থেকে কম নয়। যার মধ্যে একটা মাখনের মতো মসৃণতা আছে। মিষ্টি সুবাস আছে আর আছে অতুলনীয় স্বাদ। নিজের প্রেমিকা, প্রানপ্রিয়া মা’র  ওষ্ঠাধরে ডুব দেবার আনন্দ অপরিসীম। তাঁর পিঠ জড়িয়ে আলিঙ্গন করে ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে অমৃত সাগরে পাড়ি দিচ্ছিলাম। মা’র নাক মুখের উষ্ণ শ্বাস আমার নাকের ডগায় অনুভব করছিলাম। আর একটা ম্লান মধুর শিরশিরানি ধ্বনি তাঁর মুখ দিয়ে ভেসে আসছিলো। চঞ্চল ছিল মা’র মন।ছেলের বাহুর মধ্যে নিজেকে বিলিয়ে দিচ্ছিল। মা’র মনে একটা বিরাট খালি ভাব তৈরি হয়েছে সেটা বুঝতে পারছিলাম। তাঁর এখন ভালোবাসার প্রয়োজন। সংস্পর্শের প্রয়োজন। জীবনে প্রথমবার মাকে গভীর ভাবে মুখ চুম্বন করে আমি অকল্পনীয় সুখ পেলাম। যেন মা শুধু আমারই। মা আমার বান্ধবী, আমার প্রেমিকা। সব কিছুই।

কিছুক্ষণ পর আমরা আলিঙ্গন মুক্ত হলাম। মা’র মুখে লজ্জা ভাব স্পষ্ট। সে আমার দিকে তাকিয়ে মুখ নামিয়ে স্ল্যাবের দিকে চোখ রাখল।এই অদ্ভুত অভিজ্ঞতার কারণ জিজ্ঞাসা করার প্রয়োজন বোধ করলাম না। শুধু একটা অবাক সুলভ দৃষ্টি নিয়ে তাঁর দিকে চেয়েছিলাম।
মা আমার দিকে ঘাড় ঘোরালো, “তুই আমার সোনা ছেলে”।
আমি মৃদু হাসলাম। তাঁর বাম কাঁধে ডান হাত রাখলাম, “কিন্তু তুমি আমার সব মা। আমি তোমাকে ভালোবাসি মা”।
মা করুণ দৃষ্টি নিয়ে আমার দিকে তাকাল।
“আমি তোমার দুঃখ কষ্ট মনখারাপ সব কেড়ে নিতে চাই তোমার কাছে থেকে। তোমাকে হাসি খুশি দেখতে চাই মা”।
মা মাথা নাড়ল।
আমি বললাম, “ এখন কয়েকদিন বাবা নিজের কাজে ব্যস্ত থাকবেন। তাই শুধু আমি আর তুমি এই মুহূর্ত গুলো একসঙ্গে থেকে উপভোগ করবো। আজ থেকে আমি তোমার বন্ধু। আর তুমি আমার বান্ধবী”।
মা হাসল।
জিজ্ঞেস করলাম, “রান্না হয়ে গেছে মা?”
মা বলল, “ না রে মাছের ঝালটা এখনও বাকী আছে”।
আমি বললাম, “থাক না মা। আর ঝাল বানাতে হবে না। ভাজা মাছ দিয়েই ভাত খেয়ে নেবো”।
মা হাসল, “বা রে তুই যে বলতিস দাদাই মারা যাওয়ার পর সেদ্ধ সেদ্ধ খেয়ে তোর মুখে অরুচি ধরে গেছে”।
আমি বললাম, “ থাক । আজ নয়। আজ দাদাইয়ের কথা উঠল যখন,দাদাইয়ের গল্পই শুনবো তোমার কাছে থেকে”।
“কি গল্প শুনবি বাবু?”
“তোমার গল্প মা। দাদাইয়ের গল্প। তোমার ছেলে বেলার গল্প… সব শুনবো”।
রান্নায় মনোযোগ দিয়ে মা বলল, “বেশ ভালো কথা। আগে স্নানটা করে আয়। তারপর দু’জন মিলে খেয়ে একসঙ্গে বসে আমার গল্প শোনাবো”।
মা’র কথা মতো আমি স্নানে গেলাম। কিছুক্ষণ পর বেরিয়ে দু’জনে খেতে বসলাম। আজ মা রান্না করেছিলো গাজর দিয়ে বাঁধাকপির তরকারী, মেথির শাক, বেগুণ ভাজা, মাছ ভাজা এবং মুসুর ডাল।
খাওয়ার আগে মা বাবাকে ফোন করে জেনে নিয়েছিলো যে তিনি খেয়েছেন কি না?
বাবা জানিয়েছিলেন যে তিনি খেয়ে নিয়েছেন এবং ফিরতে রাত হয়ে যাবে।

                                                                   II ৬ II

খাওয়ার পর দুপুরবেলা মা সোফার মধ্যে বসে ছিল। আমি গিয়ে তাঁর কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়লাম। মা আমার চুলের উপর হাত রাখল।
আমি তাঁর দিকে তাকিয়ে বললাম, “এবার বল না মা”।
“কি বলবো বাবু?” মা আমার মাথায় হাত বুলিয়ে জিজ্ঞেস করলো।
“দাদাইয়ের গল্প”।
“কি গল্প বাবু?”
আমি সোফার মধ্যে উবুড় হয়ে শুয়ে পড়লাম। দু’হাত থুতনিতে রেখে মা’র দিকে চোখ মেলে তাকালাম, “তোমার কাছে দাদাই কেমন মানুষ ছিলেন মা?
মা হাঁফ ছেড়ে বলল, “তোর দাদাই আমার সব চেয়ে কাছের মানুষ ছিলেন। পথিকৃৎ যাকে বলে”।
আমি মনোযোগ দিয়ে মা’র কথা গুলো শুনছিলাম, “আচ্ছা। দাদা মশাই তো ভীষণ রাগী ছিলেন। গম্ভীর তাঁর ব্যক্তিত্ব ছিল। তিনি তোমাকে কড়া অনুশাসনে রেখে ছিলেন তাই না? হয়তো তুমি ভয় পেতে তাঁকে। ভুল করলে প্রহার দিতেন”। আমি হাসলাম।
মা সিলিঙের দিকে চেয়ে বলল, “না। তেমন কিছুই না। গোটা পৃথিবীর কাছে হয়তো বাবা কোঠর, রাগী, দাম্ভিক মানুষ ছিলেন। কিন্তু আমার কাছে তিনি সহজ সরল মানুষ ছিলেন। একজন পিতাপুত্রীর যেমন গভীর সম্পর্ক হয়। ঠিক সেই রকম”।
মা হাসল, “আর অনুশাসনের কথা বলছিস। ওটার জন্য ভয় দেখানোর প্রয়োজন হয়না। আমি ছোট থেকেই বাবা মায়ের অনুগত ছিলাম। শিক্ষক পরিবারে জন্ম বলে শিষ্টাচার হয়তো রক্তে ছিল। প্রহার, মারধর তো দূরের কথা। তোর দাদাই কোনদিন আমায় বকেছে বলে মনে পড়ছে না। রাঙা চোখ দেখিনি তাঁর কোনোদিনই। মুখে শুধু “মা” ছাড়া আর কোন শব্দ শুনিনি………। হ্যাঁ তবে তোর দিদা আমায় ভালোই শাসনে রাখতেন। পেটাতেন। বকতেনও খুব। তখন আবার বাবাই মা’কে বলতো আমাকে না বকতে। পরে একটা সময়ের পর অবশ্য তোর দিদাই আমার প্রিয় বন্ধু হয়ে দাঁড়ায়। আমার সুখ দুঃখ ভাগ করে নেওয়ার একমাত্র মানুষ”।
মা’কে বলতে দিচ্ছিলাম। মা যেন নির্দ্বিধায় সব কিছু বলে। প্রাণ খুলে মনের ভাব প্রকাশ করে।   আমি শুধু শুনছিলাম।
জিজ্ঞেস করলাম, “ দিদা কখন থেকে তোমার কাছে প্রিয় বান্ধবীর মতো হয়ে দাঁড়ায় মা?”
মা মুখ নামিয়ে স্বশব্দে হাসল, “প্রত্যেক মায়ে দেরই একটা সময়ের পর নিজ সন্তান দের কাছের মানুষ হয়ে দাঁড়াতে হয় বাবু। বিশেষ করে মেয়ের মা দের”।
আমি অবাক হলাম। তিন্নির কথা গুলো মনে পড়লো। মা মেয়ের অবাধ বন্ধুত্বের কথা। বুঝছিলাম অনেক কিছু।
“কেন মা? ছেলে আর মেয়ের মধ্যে কি তফাৎ আছে? মায়ের তো ছেলে মেয়ে উভয়ের ভালো বন্ধু হওয়া উচিৎ। এক্ষেত্রে মেয়েরা কেন বেশি অগ্রাধিকার পাবে?”
মা আবার হাসল, “ওটারও একটা ব্যাপার আছে বাবু। মেয়েদের বেড়ে ওঠা আর ছেলেদের বেড়ে ওঠা এক জিনিস নয়। মেয়েদের একটা বিরাট পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। সে সময় মেয়েদের মনের অবস্থা অনেক টাই উতলা সাগরের মতো হয়”।
“আমি ঠিক বুঝলাম না মা”।
মা আমার দিকে ঘাড় ঘোরালো, “সে সময় আমিও ঠিক বুঝতে পারিনি বাবু। তোর দিদাও হেঁয়ালির মতো কথা গুলো বলছিল সব”।
“কি কথা মা?”
মা মৃদু হেসে, “সে বলেছিল ঈরা, পিঙ্গলা, সুষুম্নার সংযোগ স্থলে যখন জোয়ার আসবে তখন আমায় জানাবি”।

আমি অবাক হলাম, “কীসব বলছো মা? ওগুলো আবার কি?”

মা হাসল, “আমিও সে সময় বুঝিনি। আর মা’কে প্রশ্নও করিনি। তারপর একদিন। ক্লাস সেভেন কি এইটে পড়ি। সত্যিই সেখানে জোয়ার আসে। রক্তের জোয়ার। তাও আবার স্কুলের মধ্যে। ভীষণ ভয় পেয়ে যায়। ঘরে এসে তোর দিদাকে জানাই। তোর দিদা তো রীতিমত চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলো। আমাকে বকেও ছিল। কেন আমি তাঁকে আগে জানাই নি। আমিও তোর দিদাকে বলেছিলাম তুমি তো বলনি এই বিষয় নিয়ে কোনোদিন। দিদা ভেবেছিলো আমি নাকি জানি। তাই সাংকেতিক অর্থে বলেছিলেন। পরে ব্যপারটা জানায় তিনি তাঁর উপযুক্ত ব্যবস্থা নেন। এবং পরে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের মা,মেয়ের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক তৈরি হয়”।
আমি কৌতূহল নিয়ে, “মা তুমি কি মেন্সটুরেশন নিয়ে বলছো কি?”
মা উত্তর দিলো, “হ্যাঁ। সাধারণ ভাষায় যাকে বলে পিরিয়ড”।
আমি ন্যাকা গলায় বললাম, “দিদারও যতসব। সোজা ভাষায় বললেই হয়”।
মা হাসল, “শুরুর দিকে সবকিছু অতো সহজে বলা যায় না বাবু। মেয়ে মানুষের সহজাত চিন্তাই হল গোপনতা। যদিও সে’বয়সে শারীরিক যে পরিবর্তন হয় তা লক্ষ্যনীয়। তাসত্ত্বেও”।
“আমি বুঝতে পারছি মা। তুমি ঠিক বলেছো। ছেলেদের সেই পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়না। তাই হয়তো বাপ ব্যাটার মধ্যে সেই বন্ধুত্বটা তৈরি হয়না। যেটা মা মেয়ের মধ্যে হয় কি বল?” আমি হাসলাম।
মা একটু ভেবে বলল, “হ্যাঁ তা হয়তো ঠিক। তবে পুরোপুরি ঠিক না। সে’সময় মেয়েদের একটা সীমিত পরিসরের মধ্যে থাকতে হতো। জ্ঞান অর্জনের এখনকার মতো বিস্তীর্ণ মাধ্যম ছিল না। স্বভাবতই একজন অভিজ্ঞ মানুষের প্রয়োজন থাকতো সব সময়”।
“ক্লাস সেভেনে পড়ার সময় তোমার প্রথম পিরিয়ড স্টার্ট হয় তাহলে? মা?”
আমার কথা শুনে মা, “হুম” বলে চুপ করে রইল। আমার কৌতূহল আরও বাড়ল। মা আমাকে আজ উচিৎ যৌন শিক্ষা দিয়েই থাকবে।আজ মা’কে খুবই খোলামেলা দেখছি।
“বল না মা। কি হয়েছিলো সেদিন। তোমার অনুভূতিই বা কি রকম ছিল? শুনেছি নাকি খুব ব্যথা হয় পেটে?”
মা একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বলা শুরু করলো, “সেদিন ক্লাসের বেঞ্চে বসেছিলাম। সাদা শাড়ি পরতাম তখন। রক্তের দাগ দেখে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম কোথাও আঘাত পেয়েছি হয়তো। বাড়িতে মা’কে বলতে ভয় পাচ্ছিলাম। পরে সেদিন’ই দেরী করে কথাটা জানায়। মা ধমক দেন। পরে ব্যপারটা বুঝতে পেরে আমাকে অভয় দেন। সে সময় এখনকার মতো স্যানিটারি ন্যাপকিন ছিল না। সুতির কাপড় ব্যবহার করতে দেন”।
মা’র কথা গুলো শুনে কোথায় হারিয়ে গিয়েছিলাম। মনোযোগ দিয়ে শুনছিলাম। সেই সময়ে মায়ের কষ্টটা বোঝার চেষ্টা করছিলাম।
“এতে তোমার ভালোই হয়েছিলো মা। দিদার মতো বান্ধবী পেয়েছিলে তুমি”।
মা অন্যমনস্ক হয়ে হাসল। তারপর খানিক চুপ করে রইল। আমিও তাঁর মুখ পানে চেয়ে ভাবতে লাগলাম আর কি প্রশ্ন করা উচিৎ। আমাদের ছেলে মানুষ দের মধ্যে একটা স্বভাব প্রচণ্ড রূপে থাকে। তা হল প্রিয় মানুষ টির অতীত জানার কৌতূহল। তাই একটু আড়ষ্ট ভাব নিয়েই জানার চেষ্টা করলাম।
“মা তোমার কোন প্রেমিক হয়নি? অথবা কাউকে তুমি প্রেম করেছো। এমন কেউ?”
মা হেসে আমার গালে আলতো করে একখানা চাটি মারলো, “মা’র প্রেম কাহিনী জানার বড় ইচ্ছা ছেলের……! প্রেম তো আমি একজন কেই করেছি বাবু। আর সে হলেন মিস্টার অনুপম মুখোপাধ্যায়”।
আমি মাথা নাড়লাম, “না না এটা তো ডিপ্লোম্যাটিক আনসার হয়ে গেলো মামণি। আমি তোমার বিবাহ পূর্ব প্রেমিকের কথা জানতে চাইছিলাম”।
মা আবার হাসল, “তিনিই আমার বিবাহ পূর্ব প্রেম সোনা”।
আমি ভ্রু কপালে তুলে জিজ্ঞেস করলাম, “আর তুমি যে বল তোমাদের দেখাশোনা করে বিয়ে?”
মা মাথা নেড়ে উত্তর দিলো, “হ্যাঁ তাতে কি হয়েছে? দেখাশোনা করে বিয়ে করলে প্রেম করতে নেই বুঝি?”
মা’র খাপছাড়া কথা এবং উত্তরের মধ্যেই বোঝা যাচ্ছিলো মা কিছু লুকাচ্ছে অথবা বলতে চান না। এদিকে আমি এটা জানা সত্ত্বেও যে যদি মা’র কোন পুরনো সম্পর্ক থেকে থাকে,সেটা শুনলে আমার হৃদয় ছিন্নভিন্ন হয়ে যাবে।  কিন্তু মন মানতে চাই ছিল না। মা’র যদি কোন অতীত সম্বন্ধ না থাকে তাতেই আমি ভীষণ খুশি হবো। এটা অনেকটা জেনে বুঝে নিজেকে আঘাত করার মতো ব্যপার হচ্ছে। অথচ আমি পিছু পা হচ্ছি না। আমি জানতে চাই মা শুধু আমার। তাঁর শরীর মনের উপর রাজত্ব কেবল আমারই তাতে সে অতীত হোক অথবা বর্তমান। আমি জেনে নিতে চাই মা’র জীবনের সময় রেখার প্রত্যেকটা পর্যায়ে শুধু আমি ছাড়া আর দ্বিতীয় মানুষ কেউ থাকবে না। থাকতে পারে না।
“আহ মা। ওভাবে উত্তর দেওয়া যায় না”। আমি গলা ঝাড়লাম, “ইয়ে মানে তোমার সৌন্দর্যতার অ্যাডমাইরার তো কেউ ছিল। যিনি তোমার রূপের প্রশংসা করতেন। যিনি তোমার রূপের দ্বারা আহত হয়েছিলেন। যেমন তোমার জিবে জল এনে দেবার মতো সুগঠিত পাছা দেখে কুপোকাত হয়ে পড়ে ছিল এমন কেউ?”।
আমি হাসলাম।
মা আমার কথা শুনে সজোরে একখানা থাপ্পড় মারল আমার ডান কাঁধে।
সে হেসে উত্তর দিলো, “ধ্যাৎ! অসভ্য কোথাকার। মা’র প্রেম নিয়ে এতো জানার কি আছে? বলবো না যাহ্‌”।
আমার ডান হাত তাঁর বাম ঊরুর উপর রাখলাম, “আহ মা। প্লিজ এমন করো না। ভালোই তো চলছিলো। তোমাকে এই ভাবে খোশ মেজাজে দেখে আমার খুব ভালো লাগছে…। বল না। আমি তোমার বন্ধুই তো”।
মা একটু দম নিয়ে পুনরায় বলা শুরু করলো, “সৌন্দর্যতার প্রশংসক পুরুষ মানুষের থেকে মেয়ে মানুষ বেশি ছিল আমার জীবনে”। মা হাসল, “আর নারীর সৌন্দর্যতা কি তাঁর একটা অঙ্গ থেকে হয় নাকি পাগল! নারীর সর্বাঙ্গ রূপ, তাঁর আচরণ, শিক্ষা, তাঁর বুদ্ধিমত্যা সব মিলে তাঁকে সুন্দরী বানায়। কোন একটা বিশেষ গুণ তাঁকে অনন্যা বানায় না”।
আমি মৃদু হাসলাম, “হ্যাঁ তা তুমি ঠিক বলেছো মা। আর কারা তোমার রূপের কমপ্লিমেনট দিতো শুনি?”
মা বলল, “অনেকেই। বান্ধবী, আত্মীয় স্বজন। কেউ বলতো আমার চুল এতো গোছালো কেন? কেউ বলতো ত্বক এতো উজ্জ্বল কেন? কি লাগাই? এইসব। পরে তোর দিদাকে এসে বলাতে তিনি কড়া নির্দেশ দিতেন,আমার মেয়েকে নজর দেওয়া হচ্ছে। কাউকে কিছু বলবি না। তোর দিদা তো কাঁচা হলুদ, ব্যাসন, আর ঘৃতকুমারী ছাড়া কিছু লাগাতেই দিতেন না”।
আমি থুতনি তে হাত রেখে, “হুম” শব্দ করে মা’র কথা গুলো মনোযোগ দিয়ে শুনছিলাম।
ওই দিকে মনে মনে কি ভেবে মা একবার হাসল। তারপর বলল, “আর তুই যেমন প্রশংসা শুনতে চাইছিস সেটা বোধয় একবারই পেয়েছিলাম। বাকী গুলো সব হয় মস্করা অথবা ঈর্ষা”।
বললাম, “কেমন প্রশংসা শুনি”।
মা আবার অতীতে ফিরে গেলেন, “তখন আমি এম.এ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। বয়স তখন কুড়ি একুশ। ভরা যৌবন যাকে বলে”। মা দাঁত বের করে হাসল, “তবে যৌন চেতনা তখনও পূর্ণতা পায়নি।বা সেটা নিয়ে মাথা ঘামাতাম না। নিজের শিক্ষার উপর মনোনিবেশ থাকতো চব্বিশ ঘণ্টা”।
বললাম, “হ্যাঁ তারপর?”
মা বলল, “ইচ্ছা ছিল শিক্ষিকা হবার। তোর দাদাইয়ের মতো। বাড়িতেও তাঁর পূর্ণ সহমত ছিল”।
বললাম, “হ্যাঁ বাবা যখন টিচার ছিলেন। মেয়ের তা হওয়াটাই স্বাভাবিক”।
মা আমার মাথায় হাত বোলালো, “তো সেই সময়। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বার সঙ্গে সঙ্গেও বেসিক টিচার্স ট্রেনিং টাও করে নিচ্ছিলাম। আর সপ্তাহে দুই দিন করে আমাদের ভিন্ন ভিন্ন স্কুলে গিয়ে ছাত্র ছাত্রী দের পড়াতে হতো। যেমন স্কুল টিচার্স রা করেন। সেই সময় আমার একজন স্কুল শিক্ষিকা দিদির সঙ্গে আলাপ হয়েছিলো। মিঠুদি।আমাকে অনেক ভালবাসতেন। অনেক সময় আমরা স্টাফরুমে একসঙ্গে বসতাম। যখন ক্লাস থাকতো না। তিনিই আমাকে বারবার দেখতেন। আপাদ মস্তক”।
“হুম” বলে পুনরায় তাঁর কথায় মন দিলাম।
মা বলল, “এখন থেকে বছর কুড়ি আগে। বোঝায় যায়। তখনকার রূপ আর এখনকার রূপের মধ্যে পার্থক্য থাকবে। যদিও তখনও আমার শরীর ভরাটই ছিল।যোগ ব্যায়ামের মধ্যে থাকতাম। এখনকার মতো মোটা হয়ে যাইনি”।
কল্পনার মধ্যে কুড়ি বছর বয়সী মা’র কথা মনে করতে লাগলাম। মা’র পুরাতন ছবি, বিয়ের ছবি, এখনকার রূপ, এখনকার কুড়ি বছরের মেয়েদের চলন গঠন মিলিয়ে মনে একটা রূপের আকার দিলাম। মা’র শুভ্র গায়ের রং এবং তাঁর মাথার ঢেউ খেলানো চুল দিয়ে যা আমার কল্পনায় ভেসে উঠল তাঁর রূপ কোন অংশেই বাগদেবীর থেকে কম নয়। সাদা শাড়ি পরে হাত দিয়ে বুকে বই জড়িয়ে ক্লাস রুমের দিকে হেঁটে যাচ্ছে।
মা বলে যাচ্ছিলো, “ তিনিই একদিন টিফিন আওয়ারে একলা পেয়ে আমায় জিজ্ঞেস করলেন। এতো সুন্দর পরিপাটি করে কে শাড়ি পরিয়ে দেয়? আমি অবাক হয়ে বলেছিলাম।কেন আমি নিজেই পরি। তিনি হাসলেন। বললেন বাহ শাড়ির কুচিটা বেশ সুন্দর করে তৈরি করেছো। আর চুলও খুব সুন্দর বাঁধতে জানো। তাঁর প্রশংসায় আমি মৃদু হেসে ছিলাম। তিনি বললেন, আসলে তুমি সত্যিই সুন্দরী। আমার কোন ভাই থাকলে তাঁর জন্য তোমাকে বউ করতাম।স্বামী সুখী হবে তোমাকে পেয়ে। আমি একটু লজ্জা পেয়েছিলাম। কারণ বিয়ের ব্যপারে বাড়িতে তখনও কোন আলোচনা শুরু হয়নি। আমি মুখ নামিয়ে ছিলাম। তিনি বললেন তোমার বুক, পেছন সব ভরাট। তাই শাড়ি পরলে বেশ মানায়। বিশেষ করে মেয়েদের ভারী পেছন না হলে শাড়িতে মানায় না। আমি লজ্জার হাসি দিয়েছিলাম। তিনি নিজের দিকে দেখিয়ে বললেন এই দ্যাখো না। আমার শরীর কেমন বেঢপ বানিয়ে ফেলেছি। বুক ঝুলে পড়েছে আর পেছন সমতল। পেটও বেড়ে গেছে। এতে কি আর শাড়ি মানায় বল দেখি”।
আমি বললাম, “হ্যাঁ মা। তিনি ঠিকই বলেছিলেন। শাড়িতেই নারী সুন্দরী। আর তোমার বুক পেছন নিয়ে তো কোন সংশয় নেই”।
মা আবার আমার মাথার চুলে মুঠি ধরল।
“আহ ছাড়ো মা! তুমি বলো। বেশ শিক্ষিকার মতো বলছো তুমি”।
“আমার আর কিছু বলার নেই বাবু। আমি এবার উঠি। বেলা হতে চলল। যাই ছাদে মেলা কাপড় গুলো নিয়ে আসি”।
আমি মা’র বাম হাত চেপে ধরলাম, “অনেক টাইম আছে মা। আরও গল্প বলো আমি শুনছি”।
“আর কিছু বলার নেই বাবু। সব গল্পই তো বলে দিলাম তোকে”।

                                                                II ৭ II

আমি মায়ের হাত ধরে তাঁকে পুনরায় সোফায় বসতে বললাম। তারপর কোলে মাথা দিয়ে তাঁর মুখের দিকে তাকালাম। মা আমার চুলে তাঁর ডান হাতের আঙুল ঢুকিয়ে চিরুনির মতো বুলিয়ে যাচ্ছিলো।

“মা তুমি আসল গল্প টাই তো বললে না”।

মা নিজের হাত থামাল, “কি আসল গল্প রে বাবু?”
“ওই যে তোমার প্রেমের গল্প। সেটাই তো শোনালে না”।
মা আমার চুলের মুঠি শক্ত করে ধরল।তাতে আমি আরাম পাচ্ছিলাম। মা ভাবুক মূর্তি ধারণ করলো। আবার হয়তো সে অতীতের সাগরে ডুব দেবে। আমি তাঁর চোখ পানে তাকিয়ে অপেক্ষা করলাম। ভয়ও হচ্ছিলো।  মা স্মৃতি মন্থন করে কোন দুঃস্বপ্ন না নিয়ে আসে। খানিক ভাবার পর মা মুখ নামালো। আমার চোখের দিকে তাকাল। মা’র চোখ আর আমার চোখ অনেকটাই এক। আমার শারীরিক গঠন শুধু বাবার মতো। লম্বা।
মা বলা শুরু করলো, “তুই যদি জানতে চাস মা’র অতীতে কোন প্রেম ছিল কি না? তাহলে বলবো হ্যাঁ ছিল। তোর মা’ও প্রেম করেছিলো। মন দিয়েছিল কাউকে। তোর মায়েরও মন ছিল। আর পাঁচটা  মেয়েদের মতো তোর মা’ও প্রেমের স্বাদ পেয়েছিলো”।
মা’র আবেগ ভরা কথা শুনে আমার বুকটা কেঁপে উঠল। পরক্ষনেই নিজেকে সামলে নিয়ে বললাম, “হ্যাঁ আর মানুষটি ছিলেন অনুপম মুখোপাধ্যায়। আমার বাবা”।
মা বোমা ফাটালো, “না! তিনি তোর বাবা ছিলেন না। অন্য পুরুষ ছিলেন তিনি”।
কথাটা শোনা মাত্রই আবার আমার বুকে দামামা বাজতে শুরু করলো। কাঁদতে ইচ্ছা করছিলো। যেটা শুনতে চাইছিলাম না সেটাই কানে এলো। কিন্তু উপায় নেই। যখন জানা শুরু করেছি তখন পুরটাই জানবো।হৃদয়ে আঘাত লাগিয়েও এগিয়ে যাবো।
অস্পষ্ট গলায় বললাম, “কে ছিল মা? আমাকে খুলে বল”।
মা বলা শুরু করলো, “যেটা আগে তোকে বলেছিলাম। ইউনিভার্সিটির ফাইনাল ইয়ার। উনিশশো বিরানব্বই সাল। নিজের পড়াশোনায় মগ্ন এক ছাত্রী। বাবা মায়ের অনুগত কন্যা। যার শিক্ষিকা হওয়ার লক্ষ্য ছিল জীবনে। যৌনতা, প্রেম, বিনোদন থেকে যে দূরে থাকতো। সেই মেয়ে একজনের প্রেমে হাবুডুবু খেয়ে সবকিছু ভুলে গিয়েছিলো। অথবা সেকি আদৌ প্রেম ছিল?”
নিজের মধ্যেই মা প্রশ্ন করলো।
আমি বললাম, “সে কে ছিল মা?”
মা বলল, “অনির্বাণ চৌধুরী। ইউনিভার্সিটির নবাগত সহকারী অধ্যাপক। বয়স তিরিশের কাছাকাছি। বুদ্ধিদীপ্ত চেহারা। উষ্ণ রক্ত। এবং সুদর্শন রূপ।উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব। লিটারেচারের ক্লাস নিতেন। মাথার চুল বড়বড়। গাল ভরা দাড়ি।খাদির পাঞ্জাবী পরতেন আর ব্লু জিন্স। যখন ক্লাস রুমে ঢুকতেন, ছেলে মেয়ে নির্বিশেষ পিন ড্রপ সাইলেন্ট হয়ে যেতো। যদিও তিনি ছাত্র দের সঙ্গে বন্ধুত্ব সুলভ আচরণ করতেন। তাসত্ত্বেও ছেলে মেয়েদের মধ্যে তাঁর প্রতি একটা শ্রদ্ধা ভাব বজায় ছিল। মোটর সাইকেল টার নাম ভুলে গেলাম। ওটা নিয়ে ক্যম্পাস দিয়ে পেরিয়ে গেলে তার শব্দে সবাই জানতে পারতো তিনি এসেছেন”।
জিজ্ঞেস করলাম, “ কি বাইক মা? বুলেট? রয়্যাল এনফিল্ড?”
মা বলল, “না না। ওই যে প্রচুর শব্দ হতো। কালো রঙের মোটর সাইকেল ছিল।”
আমি ভেবে বললাম, “ ওহ আচ্ছা রাজদূত?”
মা বলল, “হ্যাঁ হ্যাঁ ওটাই। নাম টা খালি ভুলে যাই”।
“যাইহোক তুমি কনটিনিউ করো”।
মা পুনরায় শুরু করলো, “তাঁর ক্লাস করতে ভালো লাগতো আমার। মনোযোগ দিয়ে তাঁর পড়া শুনতাম। ক্লাসে বেশ কয়েকবার চোখাচুখি হয়েছিলো। তাঁর গভীর চোখ দুটো দেখে হৃদয় চঞ্চল হয়ে উঠত। এমন তো নয় যে আমি কলেজের সেরা সুন্দরী ছিলাম। কিন্তু তাসত্ত্বেও তাঁর চোখ আমার দিকে থাকতো। আমি অজান্তেই হারিয়ে যেতাম। তিনি একবার হঠাৎ করেই আমাকে প্রশ্ন করে বসেন। কি প্রশ্ন ছিল সেটা আজও আমার মনে নেই। স্বভাবতই তার উত্তর দিতে পারিনি। তিনি আমায় প্রচুর বকেছিলেন। আর ক্লাসে মেধাবী ছাত্রী হিসাবে পরিচিতি ছিল আমার। এইভাবে সবার সামনে আপমান সহ্য করতে পারিনি। মুখ নামিয়ে কাঁদতে শুরু করে দিয়েছিলাম। তিনি সেটা দেখতে পেয়ে নিজের ভুল বুঝতে পেরেছিলেন। তিনি একটা বিড়ম্বনায় পড়ে গিয়েছিলেন। ক্লাস শেষ হবার পর তিনি আমার সঙ্গে একান্তে কথা বলেছিলেন। নিজে ভুলের ক্ষমা চেয়েছিলেন। একজন শিক্ষক। যিনি আমাদের গুরুজন তিনি ক্ষমা চাইবেন এটাও আমার পক্ষে গ্রহণ যোগ্য ছিল না। আমি নিজের দিক থেকে গ্লানিমুক্ত হতে চেয়ে ছিলাম।আমিও ক্ষমা চেয়েছিলাম। তারপর থেকে একটু একটু করে আমাদের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক তৈরি হতে শুরু করে।
মাঝে মধ্যেই তিনি কোন বাহানায় আমার সঙ্গে কথা বলতে চাইতেন। আমিও তাঁর কথার মধ্যে ডুবে যেতাম।
একদিন ক্যাম্পাসের মধ্য দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলাম। তিনি হঠাৎ আমায় প্রশ্ন করলেন, “এম.এ পাশ করার পর কি করবে ভেবে রেখেছো দেবশ্রী?”
আমি তাঁর দিকে চোখ মেলে উত্তর দিয়েছিলাম, “বেসিক ট্রেনিং করছি স্যার। ভবিষ্যতে শিক্ষিকা হবার ইচ্ছা আছে”।
তিনি মুচকি হেসে বলেছিলেন, “না মানে। বিয়ের ব্যপারে কিছু ভেবে রেখেছো? বাড়িতে আলোচনা হয় এই বিষয়ে? প্রস্তাব ,সম্বন্ধ আসে তোমার?”
আমি লজ্জা পেয়ে বলেছিলাম, “আজ্ঞে না। এখন তো সেরকম কিছু হয়নি। আর বাড়িতে সেরকম আলোচনাও হয়না”।
তিনি হাসিমুখে নির্দ্বিধায় বলেছিলেন, “যদি তোমার বাড়িতে আমার বাবা মা’কে পাঠাই। কিছু মনে করবে তুমি? বা তোমার বাবা মা?”
আমি নিরুত্তর ছিলাম। মুখ নামিয়ে কিছু না বলেই এগিয়ে গিয়েছিলাম। বাড়িতে বাবা মা শুনলে হয়তো রাগ করবেন। মেয়েকে কলেজ পাঠিয়েছি আর মেয়ে কি না প্রেম করে বেড়াচ্ছে। ভেবেই ভয়ে গলা শুকিয়ে গিয়েছিলো। আমার নিরুত্তর মানে আমার দিক থেকে না’ই ছিলো একপ্রকার। কিন্তু তিনি আমার না’কে হ্যাঁ ধরে বসবেন কে জানতো। হ্যাঁ একদিন সত্যিই অকস্মাৎ তাঁরা এসে হাজির হলেন। স্যারের বাবা মা। বাড়িতে আমার বাবা মা তাঁদেরকে দেখে অবাক।
স্যারের বাবা মা খুবই ভালো মানুষ ছিলেন। তিনি আমাকে দেখলেন। পছন্দও করলেন। আমাদের তাঁদের বাড়ি যেতে আমন্ত্রণ করলেন। তোর দাদাই প্রথমে একটু অসহজ ছিলেন। তারপর দেখলেন সম্বন্ধ পক্ষও শিক্ষক পরিবার। পাত্র একটা নাম করা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। তখন তিনি মেনে নেন। পরে আমার বাবা মা’ও তাঁদের বাড়ি যান। তাঁদের প্রস্তাব মেনে নেন। মেয়ের শিক্ষা পূর্ণ হলেই তাঁদের বিয়ে দেওয়া হবে। অনির্বাণ এবং আমি দুজনেই ভীষণ খুশি হয়েছিলাম। তবে আমরা দু’জন কে কথা দিয়েছিলাম যে এই বিষয় নিয়ে কলেজে কেউ জানতে না পারেন। এতে তাঁর সমস্যাও হতে পারে। লোকের মধ্যে বলাবলি শুরু হবে এইসব নিয়ে।
আমরা কলেজে আগের মতোই আচরণ করতাম। তিনি আমার শিক্ষক। আমি তাঁর একজন সাধারণ ছাত্রী।
সময় গড়িয়ে যাচ্ছিলো। বিয়ে হতে হয়তো আরও দেড় দুই বছর সময়। আমরা খুশিই ছিলাম। ব্রহ্মচর্য থেকে গৃহস্থের দিকে অগ্রসর হচ্ছিলাম। যৌনতার খেয়াল আসতো মাথায়। আগে বান্ধবীদের যৌন কৌতুক শুনতে বিরক্ত লাগতো। পরে সেগুলোই ভালো লাগতে শুরু করল আসতে আসতে। ওদের উদ্ভট কথা গুলোকে যৌনতার জ্ঞান মনে করতাম। 

“শুনছিস বাবু?”  মা আমাকে নাড়িয়ে জিজ্ঞেস করলো। আমি বর্তমানে ফিরে এসে মা’কে বললাম, “হ্যাঁ গো শুনছি মা। আমি হারিয়ে গিয়েছিলাম একটু। তুমি বলতে থাকো”।

মা আমাকে সতর্ক করলো, “গল্প একটু গভীর হবে কিন্তু। আমি তোকে পুরটাই শোনাতে চাই।”
“তুমি বলে যাও মা। আমি শুনবো”।

মা পুনরায় তাঁর কলেজ জীবনে আমায় ফিরিয়ে নিয়ে গেল। মা বলল, “মেয়েদের হা হা হি হির মধ্যে ছেলেদের যৌনাঙ্গ নিয়ে টিপ্পনী গুলো কেও আমার জ্ঞান মনে হতো। তখনকার দিনে যৌনতা এতো মুক্ত ছিল না। আর সস্তাও ছিল না হয়তো। যৌনতা নিয়ে একটা রাখঢাক বজায় থাকতো সর্বদা। শৌখিন ব্যক্তিরা বড় বড় দামী পাঠ্যপুস্ত্বকের সাহায্যে যৌন শিক্ষা গ্রহণ করতেন। সেই শিক্ষা যদিও আমি একজনের কাছে থেকে গ্রহণ করি…”।
“কার থেকে মা?” জিজ্ঞেস করলাম।
মা বলল, “পরে বলবো। এখন যেটা বলছি, শোন”। মা হাসল, “সেই সময় মেয়েরা বলতো নাকি ছেলেদের বিরাট যৌনাঙ্গ মেয়েদের বুকের মধ্যে রেখে আদর করতে হয়। পতি সুখ নাকি সেভাবেই পাওয়া যায়। আর আমি পুরুষাঙ্গ’ই কেমন হয় তা’ই দেখিনি”।
আমি হাসলাম, “কেন ছোট দের দেখনি?”
মা বলল, “বড় দের কথা বলছিলাম। তার দৈর্ঘ প্রস্ত উচ্চতা সম্বন্ধে ধারণা ছিল না। ওরা যা বলতো তাই মেনে নিতাম। তবে পরে তার কৌতূহল বাড়তে থাকে। মনে মনে বলতাম এখন তো পড়াশোনাও শেষ হয়ে যাবে। সুতরাং এখন সে বিষয় নিয়ে রুচি রাখবো না তো আর কখন রাখবো”।
আমি মা’র কথা গুলো শুনছিলাম। মা কতো সাবলীল ভাবে বলে যাচ্ছিলো নিজের কথা গুলো। আর আমি মন্ত্রমুগ্ধের মতো করে শুনছিলাম তাঁকে।

                                                                   II ৮ II

ঢোক গিলে মা বলা আরম্ভ করলো, “ধীরে ধীরে দিন পেরতে লাগলো। আমার আর তাঁর দেখা সাক্ষাৎ ওই ক্যাম্পাসের মধ্যেই সীমিত ছিল। সে সময় প্রেম বিবাহ ভালো নজরে দেখা হতো না। কেউ করলেও তাঁর চরিত্রের উপর প্রশ্ন উঠতো। ছেলে মেয়ে রাস্তায় একান্তে কথা বললে লোকে বাঁকা দৃষ্টতে তাকাতো।বাড়িতে কড়া নির্দেশ ছিল। যা হবে বিয়ের পর। বিয়ের আগে দেখা সাক্ষাত সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। সুতরাং আমাদের মেলামেশা বিয়ে অবধি বন্ধ। শুধু ক্যাম্পাসের মধ্যে গুরু শিষ্যার যা আলাপ হয় ওই টুকুই।তবে আমাদের চাওয়া পাওয়ার ব্যবধান দিন দিন কমতে থাকে। তাঁকে মনে মনে নাম ধরে ডাকা শুরু করেছিলাম। তাঁর হাত ধরে ঘুরতে চাই ছিলাম। দীর্ঘক্ষণ একসঙ্গে কথা বলে সময় পার করতে চেয়েছিলাম।

আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে বসন্ত উৎসবের পালা এসে পৌঁছয়। বিরাট সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সঞ্চালন করতে হয়। প্রায় সব ছাত্র ছাত্রী নিজের পছন্দ মতো বিষয় নিয়ে পারফর্ম করে থাকে। আমি নিয়েছিলাম নাচ এবং আবৃতি।কবি ঠাকুরের লেখা নাটক এবং গানে নৃত্য এবং তাঁরই কবিতা পাঠ।
ক্যাম্পাসের মধ্যে অডিটরিইয়ামে আমাদের নাটক, নৃত্য এবং আবৃতির অনুশীলন চলতো। ক্লাস শেষ করে আমরা সেখানে যেতাম এবং সন্ধ্যা নামার আগে বাড়ি ফিরতাম। আমাদের অনুষ্ঠানের পরিচালনায় ছিলেন অনির্বাণ স্যার। তিনিই চেয়ারে সবার অনুশীলন পর্যবেক্ষণ করতেন। সেদিন আমি রবীন্দ্র নৃত্য নাট্যর জন্য পোশাক পরে গিয়েছিলাম। আমায় দেখে তিনি বিস্মিত হয়ে পড়েছিলেন। তা তাঁর চোখের মধ্যে ধরা দিচ্ছিল।

বসন্ত উৎসব অতি নিকটে আসায় আমাদের অনুশীলনের সময় সীমা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিলো। সেদিন অনেক দেরীও হয়ে গিয়েছিলো। সবাই নিজের কাজ পূর্ণ করে বাড়ি ফিরছিল। আমার কাজ সব চেয়ে শেষে দেখা হবে বলে চিন্তিত ছিলাম। অনির্বাণ স্যার বললেন তিনি আমায় বাড়ি পৌঁছে দেবেন। এবং একটা টেলিফোন করে আমার বাড়িতে জানিয়ে দেওয়া হবে যে আমার দেরী হবে। বাড়িতে যেন চিন্তা না করে। আমি তাঁর কথায় আশ্বস্ত হয়েছিলাম। তিনি সবার অভিনয়, নৃত্য, এবং আবৃতি দেখছিলেন। বোঝায় যাচ্ছিলো এই বিষয়ে তাঁর অগাধ রুচি আছে। তাঁর লেকচার, কথাবার্তার মাধ্যমেও ধরা দিতো যে তিনি নাচ,গান, অভিনয় ভালোবাসেন।
সন্ধ্যা সাতটা বেজে গিয়েছিলো। সব সহপাঠী তখন হয়তো ঘর পৌঁছে গিয়ে থাকবে। আমার নৃত্য শেষ হবার পর স্যার সেদিনের মতো অনুশীলন বন্ধ করতে বললেন। আমরা ক্যাম্পাসের রাস্তার মধ্য দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলাম। তিনি আমার সঙ্গে ছিলেন। তিনি আমায় জিজ্ঞেস করলেন আমার জল তৃষ্ণা অথবা বাথরুমের প্রয়োজন আছে কিনা? আমি মাথা নামিয়ে উত্তর দিয়েছিলাম, “বাথরুম যাওয়ার ছিল”।
তিনি তা শুনে আমাদের সাহিত্য বিভাগের বিল্ডিঙের কাছে এলেন। দারোয়ানের কাছে চাবি চেয়ে নিলেন। বললেন যে চাবি তাঁর কাছেই থাকবে। আগামীকাল তিনি সবার আগে এসে বিভাগের গেট খুলবেন। সুতরাং দারোয়ান বাড়ি ফিরে যেতে পারেন। দারোয়ান স্যারের কথা মতো মাথা নাড়িয়ে চলে গেলেন।
স্যার গেট খুলে আমায় ভেতরে আসতে বললেন। রাতে একলা ভেতরে যেতে আমি ভয় পাচ্ছিলাম। তিনি আমার পেছনে ছিলেন। মেয়েদের বাথরুমের দিকে আমি অগ্রসর হলাম। অবাক হলাম তিনিও আমার সঙ্গে বাথরুমের ভেতরে এলেন। বুক টা কেমন দুরু দুরু কাঁপছিল। ঘাম ঝরছিল আমার মাথা দিয়ে। এমনিতেই নাচের কারণে প্রচুর ঘেমে গিয়েছিলাম। বাহুমূল সিক্ত হয়ে পড়ে ছিল। তাঁকে দেখে আমি একটু ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। আমাদের মধ্যে অপ্রকাশিত প্রেম থাকলেও মনে ভীষণ লজ্জা ছিল। তিনি আমার অতীব নিকটে এলেন। যেন বুক স্পর্শ করবে একে ওপরের। আমি তাঁর মুখের দিকে চাইতে পারছিলাম না। কিন্তু তাঁর গম্ভীর নিঃশ্বাসের শব্দ পাচ্ছিলাম। আমারও শ্বাস ঘন হতে শুরু করে দিয়েছিলো। এমন আজব অনুভূতি আগে কখনও হয়নি। এটাই বোধয় নারীর পুরুষের সংস্পর্শের অনুভূতি।গলা শুকিয়ে আসছিলো আমার। বাথরুমের বেগ ভুলে গিয়েছিলাম। অবশেষে নীরবতা তিনিই ভেঙ্গেছিলেন।
“তোমার বাথরুম যাবার প্রয়োজন ছিল দেবশ্রী”।
আমি থতমত খেয়ে মাথা নাড়লাম, “হুম”।
“আমি এখানে দাঁড়িয়ে আছি। ভয় নেই তুমি নিশ্চিন্তে যাও”।
আমি মাথা নেড়ে শারিবদ্ধ কক্ষের মধ্যে একটাতে ঢুকে পড়লাম। বেরিয়ে এসে দেখলাম তিনি বাথরুমের মুখ্য দরজার কাছে দাঁড়িয়ে আছেন। আমার মুখের দিকে চাইলেন।
“কোন অসুবিধা নেই তো?”
আমি মুখ নামিয়ে উত্তর দিলাম, “নাহ”।
তিনি বললেন, “আজ তোমাকে সাজের পোশাকে অসম্ভব সুন্দরী লাগছে দেবশ্রী”।
আমার লজ্জায় আবার মাথা হেট হল।
তিনি বললেন, “বিয়ের দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করা যাচ্ছে না”।
আমি চুপ করে রইলাম। তিনি আমার থুতনিতে হাত রেখে মুখ তুলে বললেন, “আজ আমি তোমার সুন্দরতা অনুভব করতে চাই দেবশ্রী”।
আমি একটু ভয় পেলাম। বিয়ের আগে শরীর স্পর্শ অনৈতিক। তার উপর এই রকম জায়গায়। আমি মুখ তুলে বললাম, “কিন্তু!”।
তিনি আমার কথা শুনলেন না। আমাকে শক্ত করে বুকে জড়িয়ে নিলেন। সঙ্গে সঙ্গে আমার হৃদস্পন্দন বাড়তে শুরু করে দিলো। জীবনে প্রথম পর পুরুষের আলিঙ্গন আমাকে চূর্ণ বিচূর্ণ করে তুলল। আমি অপারক নির্জীবের মতো হয়ে উঠলাম। তিনি আমার বাহু ধরে নিজের শরীরের থেকে পৃথক করলেন। তারপর আমার মুখে নিজের মুখ ডোবালেন। সবকিছু তেই প্রথম অভিজ্ঞ হচ্ছিলাম। তাঁর প্রথম চুম্বন না ভোলার মতো। আমার আছোঁয়া ঠোঁটে তাঁর ঠোঁট স্পর্শ করেছিলো। তাঁর শ্বাস আমার শ্বাসের সঙ্গে মিলিত হয়েছিলো। তিনি পাগলের মতো আমার ওষ্ঠ চুম্বন করে চলে ছিলেন।উন্মাদের মতো আমার অধর চুষে খাচ্ছিলেন। এমন অনুভূতি আমার জীবনে প্রথম। সুখের থেকে ভয় হচ্ছিলো বেশি। কিন্তু কিছু বলতে পারছিলাম না। চুম্বনের তেজ প্রচুর। যেন তিনি আমাকে আর পাবেন না। যেন তিনি আমার ঠোঁট কামড়ে খাবেন। আমি জ্ঞান শূন্য হয়ে পড়বো মনে হচ্ছিলো। মাথা ঘুরছিল। তাঁর হাত আমার বাহু থেকে সরে গিয়ে আমার ভরাট নিতম্বে এসে খামচে ধরে ছিল।আমার বুক কেঁপে উঠে ছিল। সত্যিই সে স্থান পুরুষের প্রচণ্ড প্রিয়? আমার উঁচু নরম পাছা যেন তাঁর কোঠর হাতের পীড়নে উছলে পড়বে। এমন ভাবে আমার গোপন অঙ্গে কেউ স্পর্শ করেনি। আমি ব্যথা পাচ্ছিলাম। কিন্তু তিনি যেন কোন অলীক বস্তু হাতে পেয়েছেন। আমাকে নিজের বুকের সঙ্গে সাঁটিয়ে রেখে মুখ চুম্বনে ব্যস্ত ছিলেন এবং কামার্ত হয়ে আমার নিতম্ব চূড়া দুহাতে খামচে ধরে কচলে যাচ্ছিলেন। আমি নিজের থেকে তাঁর মুখ থেকে আমার মুখ সরিয়ে চোখ বন্ধ করে তাঁর ডান বাহুতে মাথা রাখলাম। হাফিয়ে উঠে ছিলাম আমি।
“আর নয় প্লিজ!”
তিনি আমার কথা শুনলেন না। তিনি নিতম্ব মর্দন থেকে বিরতি নিয়ে আমার বুকের উপর হাত রাখলেন। আমি আঁতকে উঠলাম। হাই ভগবান একী হচ্ছে! তিনি কি আজই আমার সতীত্ব নাশ করবেন। মনে বড় ভয়

হচ্ছিলো। আমার ভরাট স্তনে এর আগে কেউ হাত দেয়নি। অতীব কোমল সুন্দরী মাংসপিণ্ড দুটি আমার খুব প্রিয় ছিল। যার অনুচ্চ বোঁটা এবং বোঁটার চার পাশে চওড়া বাদামী পরিধি আমার বড্ড প্রিয় ছিল। আজ সেই নরম মাংস পিণ্ড ময়দার মতো মর্দন করছে আমারই হবু স্বামী। বুকে জ্বালা জ্বালা অনুভব করছিলাম।

আরও আশ্চর্য হলাম যখন তিনি পুট পুট করে আমার ব্লাউজের হুক গুলো এক এক করে খুলতে শুরু করে দিলেন। আমি ধরেই নিয়েছিলাম আজ তিনি আমার কুমারীত্ব নাশ করবেন। তিনি আমার বাম গলায় দাঁতের কামড় বসালেন। আমি লাফিয়ে উঠলাম। এমন প্রেম আমি আগে কখনও পায়নি।ব্রা উপরে তুলে আমার বুক উলঙ্গ করে আমায় ডান দিকের দেওয়ালে ঠেস করালেন। আমার আছোঁয়া ডান স্তনে মুখ রাখলেন। আমি শিউরে উঠলাম। গা শিরশির করছিলো আমার। দুই ঊরুর মাঝখানে কেমন একটা বিচিত্র জিনিস অনুভব  করছিলাম। যেন কেউ সেখানে আলকুশি ঘষে দিয়েছে। আমার দাঁড়িয়ে থাকা ভার হয়ে যাচ্ছিলো। তিনি সমানে আমার বাম স্তন মর্দন করে যাচ্ছিলেন। এবং ডান স্তন মুখে নিয়ে চুষে খাচ্ছিলেন। যেন দুধ নিঃসরণ হচ্ছিলো সেখান দিয়ে। আমি চোখ বন্ধ করে তাঁর সুখ নিচ্ছিলাম। বাড়িতে কি বলবে ।সমাজ জানলে কি হবে সে দুশ্চিন্তা মাথায় আনছিলাম না।
তিনি আমার বুক থেকে পেটে নেমে এলেন। আমার নাভিতে জিব প্রবেশ করিয়ে নীচে নেমে গেলেন। দুই পায়ের মাঝখানে বসে পড়লেন তারপর আমার যোনি ওপর নাক মুখ রাখলেন। আমি দাঁড়িয়ে থাকতে পারছিলাম না।যোনি পিণ্ড শক্ত হয়ে এসেছিল।  মনে হচ্ছিলো যে বাথরুমের মেঝেতে শুয়ে দিই।
আমার শাড়ির উপর থেকেই তিনি আমার যোনি তে চুমু খাচ্ছিলেন। এদিকে আমি বুকের হুক একটা একটা করে লাগাতে শুরু করে দিয়েছিলাম। ব্রা একটু আগেই টাইট করে নিয়ে ছিলাম।
তিনি উন্মাদের মতো করছিলেন। যেন আমাকে পরে আর পাবেন না। তিনি আমার শাড়ি উপরে তুলে দিলেন। তারপর বাম হাত দিয়ে প্যানটি নীচে নামিয়ে সেখানে মুখ রাখলেন। আমি ভীষণ লজ্জা পেয়ে গেলাম। ভাবলাম হয়তো জীবনে তাঁর সঙ্গে চোখে চোখ রেখে দাঁড়াতে পারবো না। তাঁর জিব আমার ভগাঙ্কুরের চারপাশে ঘোরাফেরা করছিলো। আমি কেঁপে কেঁপে উঠছিলাম। যৌনতার স্বাদ বুঝি এমনই হয়? তাঁর ঠোঁট এবং জিব কখনও আমার ভগাঙ্কুরে সুখাঘাত করছিলো আবার কখনও কখনও যোনিওষ্ঠে। তাঁর নাক আমি আমার ফোলা ভগ পর্বতের সুসজ্জিত কেশের মধ্যে অনুভব করছিলাম। যেন সেখানে কোন সিংহ গরম নিঃশ্বাস ফেলে গর্জন করছে।
আমি দুহাত দিয়ে তাঁর মাথার চুল খামচে ধরে সেখান থেকে মুখ সরানোর চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু তিনি ছাড়বেন তবেই না। কিছুক্ষণ পর দেখলাম তাঁর জিব সঞ্চালন শিথিল করেছেন। কিন্তু কামক্ষুধা কমেনি। তিনি আমার কোমর জড়িয়ে ধরে আমাকে উলটে দিলেন। এখন আমার মুখ দেওয়ালের দিকে। তিনি আবার আমার শাড়ি কোমরে তুলে আমার পেছনের খাঁজে মুখ ডোবালেন। আমার আঁটসাঁট নিতম্বের খাঁজের  সারাদিনের ঘাম লেগেছিল। সেগুলোও হয়তো তিনি পরমানন্দে চুষে খাচ্ছিলেন। আমার বাম নিতম্বে জিব দিয়ে চাটলেন। বললেন, “অভাবনীয়”।আমি যেন আকাশ থেকে পড়ছিলাম। আমার ডান নিতম্ব চূড়ায় কামড় বসালেন। আমি তৎক্ষণাৎ মেঝে থেকে গোড়ালি উপরে তুলে দিলাম। অবশেষে তিনি আমার পাছার ফাটলে জিব রাখলেন। তাঁর মুখ দিয়ে লালারসের প্লাবন নেমে ছিল। যা আমার পেছনটাকে স্যাঁতস্যাঁতে করে ভিজিয়ে দিয়েছিলো। আমার কেমন অস্বস্তি হচ্ছিলো। তাঁর জিবের আগা নির্লজ্জের মতো আমার পায়ুদ্বারে টোকা মারছিল। আর আমি এদিকে লজ্জায় মরি মরি হয়ে পড়েছিলাম। তাঁকে বোঝাতে চাইছিলাম ওটা আমার যোনি দ্বার নয়। তিনি ভুল করে ভুল জায়গার স্বাদ নিচ্ছেন। আমিও নিজের হাতে তাঁর পুরুষাঙ্গের অভাব বোধ করছিলাম। তিনি যদি তাঁর প্যান্ট খুলে সেটা আমার হাতে ধরিয়ে দিতেন। সেই অসভ্য মেয়েগুলোর কথা মতো আমি তাঁর জননাঙ্গ পরম সোহাগে বুকে জড়িয়ে রাখতাম। তাঁকে সুখী করে তুলতাম।
কিন্তু দুর্ভাগ্য সেদিন তিনি আর বাড়াবাড়ি কিছুই করেন নি। সেখান থেকে মুখ তুলে তৃপ্তি ভরা চাহনি নিয়ে আমায় বলছিলেন, “তোমার রূপ আমি চোখে দেখলাম দেবশ্রী। তুমি অতুলনীয়। তোমায় পেয়ে আমি মুগ্ধ। আমাদের বিয়ে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব করে নেওয়ায় ভালো”।

                                                                       II ৯ II

ঘোড়ার গতিতে তিনি মোটর বাইক ছুটিয়ে আমায় বাড়ি পৌঁছে দিলেন। ফেরার সময় লজ্জায় একটাও কথা বলতে পারিনি। তাঁর ডান কাঁধে হাত রাখতেও লজ্জা বোধ হচ্ছিলো। কিন্তু মনে মনে খুশি ছিলাম এটা ভেবে যে তিনি সুযোগ পেয়েও আমার কোন ক্ষতি করেন নি। বিয়ের জন্যও অপেক্ষা করেছিলেন।
বাড়ি ফিরে এসে আয়নায় উলঙ্গ হয়ে নিজেকে দেখছিলাম। বুক, পেছন সব জায়গায় লালচে লালচে দাগ। আবার কোথাও দাঁতের কামড়ের চিহ্ন।
হয়তো তিনি কুমারীত্ব হনন করেন নি তবে আমার মনের মধ্যে যৌন ক্ষুধা বাড়িয়ে দিয়েছিলেন চরম রূপে।

“তুই শুনছিস বাবু?” মা’র কথা শুনে আমি বর্তমানে ফিরে এলাম।
অস্ফুট গলায় বললাম, “হ্যাঁ”।
তিনি অবাক হাসি দিয়ে বললেন, “তুই কাঁদছিস কেন বাবু?”
মা’র কথা শুনে আমি কান্না ধরে রাখতে পারলাম না, “কেন মা? তুমি কেন করেছিলে? সেই পর পুরুষের সঙ্গে? এবার আমি কোথায় যাই বলতো? আমি ভেবেছিলাম তুমি শুধু আমার। তুমি শুধু আমাকেই ভালোবাসো। কিন্তু কেন করলে মা? তুমি এমন?”
মা সোফা ছেড়ে উঠে গেলো। সিঁড়ি দিয়ে ছাদের দিকে হেঁটে চলল। আমিও তাঁর পেছনে গেলাম। কাঁদো গলায় বললাম, “কেন মা?”
মা আমার কথার কোন উত্তর দিলো না। রাগ বসত আমি তাঁর খোলা পিঠে একখানা কিল বসিয়ে দিলাম। সঙ্গে সঙ্গে মা রেগে গিয়ে বলল, “আহ লাগছে…!!অসভ্যতাম হচ্ছে বাবু কিন্তু। আমি মার দেবো তোকে”।
আমি তাঁর পিঠে মাথা রেখে কেঁদে কেঁদে বলতে লাগলাম, “আচ্ছা তাহলে তুমি বল ওগুলো সব মিথ্যে”।
মা রাগী গলায় বলল, “ অতীত বদলানো যায়না বাবু। আর তুই’ই তো শুনতে চেয়ে ছিলিস ওই গুলো”।
আমি ভাঙা মন নিয়ে বললাম, “কিন্তু কেন করেছো ওই সব। দ্যাখো না লোকটা তোমায় চিট করলো অবশেষে। সে এখন অন্য মেয়ের সঙ্গে ভালোই সংসার করছে। আমার মা’কে কলঙ্কিত করে। তাঁর প্রেম মিথ্যা। কোথায় আছে সেই লোকটা? মানে বুড়োটা? এখন হয়তো পঞ্চাশের উপর বয়স হবে তাঁর। কোথায় থাকেন তিনি বল? আমি তাঁকে কেলিয়ে আসবো”।
তারে মেলা কাপড় গুলো তুলতে তুলতে মা বলল, “সে এখন স্বর্গ লোকে আছেন। ওই ঘটনার কয়েকদিন পরেই সড়ক দুর্ঘটনায়  প্রাণ যায় তাঁর”।
মা’র কথা শুনে আমি কান্না থামালাম। চোখের জল মুছে বললাম, “ বল কি মা? তিনি মারা গেছেন?”
মা করুণ মুখ করে বলল, “ হ্যাঁ। তিনি এই পৃথিবী তেই নেই”। মা ছাদ থেকে ঘরে ফিরে এলো। বাবা মা’র শোবার ঘরে।
“বল কি মা? মানে তিনি মারা যাবার পর তাহলে তুমি অনেক মেনটালিক ট্রমার মধ্য দিয়ে গিয়েছো?”
মা মুখ নামিয়ে বলল, “ হ্যাঁ সে আবার বলতে। একটা বছর লেগেছিল আমার সেই বিষাদ কাটিয়ে উঠতে”।
“আই এম সরি মা। তারপর কি হয়?”
মা হাসল, “তারপর স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এলাম। শিক্ষিকার চাকরি নিলাম। বিয়ের সম্বন্ধ এলো”।
“তারপর?”
“তারপর আমার জীবনে অনুপম এলো। নতুন বসন্ত নিয়ে”। মা’র মুখে উজ্জ্বলতা অনুভব করলাম।

চলবে —————————



from বিদ্যুৎ রায় চটি গল্প কালেকশন লিমিটেড https://ift.tt/TGFp03L
via BanglaChoti

Comments