টান BY (ডিমপুচ) (পর্ব-২০)

টান

লেখক – ডিমপুচ
পর্ব-২০
—————————

সেইদিন রাতে, পূবা তপুকে নিজের বিছানায় তার সাথে শুতে বলল। তপু বিছানায় শুয়ে শুয়ে বই পড়ছে, দিপু এসে

…….মা, তপুকে একটা কথা জিজ্ঞাসা করব। তোমার সামনেই ….তপু বই মুরে রেখে দাদার দিকে চাইল।পূবাও দিপুর দিকে তাকালো
…….তপু, কৌশিক, আমাকে বলেছে যে ও একটা বাইরের ইউনিভার্সিটি তে চান্স পাচ্ছে । হয়ত ৫ বছর বাইরে থাকতে হবে, ও কি তোর্ জন্য অপেখ্যা করবে?তপু গম্ভীর হয়ে অন্য দিকে ঘুরে শুয়ে পড়ল। দিপু একটু ইতস্তত করছে, পূবাও কি বলবে ভেবে পাচ্ছেনা।
……..তপু, মা হয়ে একটা কথা বলি তোকে। আমি যা ভুল করেছি, তুই করিস না। জীবনে একবারই ভালবাসা যায়। যাকে ভালোবাসবি, শুধু তাকেই ভালোবাসবি, বুনো হাস ধরার চেষ্টা করবিনা। জিততেও পারিস কিন্তু হারার সম্ভবনাই বেশি। ডিসিশন যা নেবার তুই নিবি, কোনো জোর কেউ খাটাবে না, কিন্তু স্পষ্ট ভাবে বলবি …….কোনো উত্তর নেই। খালি হাত দিয়ে চাদরে আকিবুকি কাটছে তপু।
……… আলো নিবিয়ে দাও। ঘুম পাচ্ছে ……দিপু একটু হতাশ হলো। পূবা চোখের ইশারায় দীপুকে ঘরের বাইরে যেতে বলে নিজেও আলো নিবিয়ে,দিপুর সাথে তার ঘরে এলো
……..শোন দিপু, চট করে কিছু বলবেনা। আমরা যা চাইছি দেখবি তাই হবে, ওকে আমি চিনি।
………আমারও তাই মনে হচ্ছে. মাত্র ১৮ বছর বয়েস, সেই ভাবে তো কোনদিন ভাবেনি, পড়াশুনো নিয়েই থেকেছে,লজ্জা পাচ্ছে আমাদের বলতে.
……….হ্যা রে দিপু, রাধাদী কি পাটনা থেকে ফিরেছেন, তাহলে একবার অনার বাড়ি যেতাম ,
………না. ফিরতে দেরী হবে. মাসির বাবার অবস্থ্যা খুব একটা ভালো না, কাল ফোন করব একবার. ..কথাগুলো বলে দিপু একটু চুপ করে কি ভাবছে,হঠাত .
……..মা, একটা প্রশ্ন করতে পারি, মনে করলে উত্তর নাও দিতে পার, .পূবা দিপুর দিকে গভীর ভাবে দৃষ্টি নিবদ্ধ করে, দিপুর পাশেই বিছানায় আধ সোয়া শুলো
………প্রশ্ন করার দরকার নেই। সঞ্জীব এর সাথে আমার সম্পর্ক, প্রথমে প্রয়োজনীয় সম্পর্ক ছিল। কিন্তু এক ছাদের তলায় বছরের পর বছর কাটানোর পর ভালোলাগার সম্পর্ক হয়ে উঠেছে। এখন ভাবি, সেইদিন যদি আমি ওই ৩-৪ ঘন্টা চুপ করে না কেঁদে, পুলিশকে সব বলতাম তাহলে কি হত! সঞ্জীবের শাস্তি হত।আমিও ছার পেতামনা। এই পরিবারে ভয়ংকর অসম্মান নেমে আস্ত। মা কিছুতেই আর তোকে আমার কাছে দিতেননা।কোর্ট ও দিতনা। কিন্তু আমার উচিত ছিল জোর করে তোকে আমার কাছে রেখে দেওয়া। অন্তত তোর্ সাথে যোগাযোগ রাখা উচিত ছিল। আসলে আমি ওই ঘটনা ভুলে যেতে চেয়েছিলাম, তাই ব্যবসায় ঝাপ দিয়েছিলাম। মুল্য দিতে হয়েছে। তোকে ওই ফার্ম হাউস এ দেখেই আমার ছেলের কথা মনে পরে গেছিল। থেকে থেকে খালি ঘুরে ফিরে আমার ছোট দিপুর কথা মনে পরত। তোর্ চিঠি পেয়ে প্রথমে নিজেকে ধ্হিকার দিই, ছি, আমি এত নিচে নেমে গেছি। পরে অপার শান্তি পেয়েছিলাম এই ভেবে যে আমার ছেলে আমাকে খুঁজে পেয়েছে। হেরে গেছি, কিন্তু মধুর হার, বার বার হারতে চাই, আর কিছু না। তোর্ চিঠি পড়ার পর আমি কোনদিন মেকআপ নিই নি।আর নেবও না। সেইদিন MP সাহেব রাজি না হলেও আমি ঠিক তোর্ বাড়ি খুঁজে বার করে যেতাম, সুধু একবার তোকে ছুয়ে দেখার জন্য। সেই ইয় ইয় ভাঙ্গার মুখ, রোজ মনে পরত। বিশ্বাস কর এই বয়েসে মিথ্যা বলার প্রয়োজন নেই, কিন্তু প্রতিদিন অন্তত একবার তোর্ কথা মনে পরত।আবেগে এক টানে বলে পূবা দীর্ঘনিশ্বাস ছাড়ল। চুপ করে থাকলো দুজনেই। তারপর
……….ছেলের কাছে কি মা ক্ষমা চাইতে পারে? আর কেউ না পারুক তুই অন্তত ক্ষমা করে দিস বাবা …দিপু তাকিয়ে দু হাত ধরে আস্তে চাপ দিল হাসি মুখে
পরের দিন সকালে,
…….দাদা, তুই আজ ‘১৯৪২ অ লভ স্টোরি’ দেখাবি বলেছিলি কি হলো ?
….চল আজকেই যাব .
…… সিনেমা যাওয়ার আগে ওই রেল্লিং এর কাছে একবার যাব, তুই নিয়ে যাবি তো? তপুর চলে যাওয়ার দিকে একটু অবাক হয়ে দিপু চেয়ে রইলো

বিকালে তপুকে নিয়ে রেল্লিং এর কাছে গিয়ে দেখে কৌশিক দাড়িয়ে। তপুকে
…….তুই ওর সাথে কথা বল, আমি গিয়ে টিকেট কাটছি, ৩ টে …দিপু চলে গেল। তপু আজ একটা লেভিস এর জিন্স আর ওপরে হালকা রঙের গেঞ্জি পড়েছে। পায়ে আদিদাসএর স্পোর্টস জুতো। মাথার একরাশ চিরুনি ভাঙ্গা চুল ক্লিপ দিয়ে পনি টেল করে আটকানো। রেলিং ধরে লেক এর দিকে তাকিয়ে দাড়িয়ে। “এইখানে আমার পিতার মৃত্যু হয়েছিল। আজ সেইখানে আমি জীবনের সবচাইতে বড় ডিসিশন নিতে চলেছি”. কৌশিক একটা সিগারেট ধরিয়ে রেল্লিং এ পিঠ রেখে টান দিচ্ছে।
………..কি কিছু বলছ না কেন? প্রিয় তোমাকে জিজ্ঞাসা করেছিল উত্তর দাওনি আমায় এখানে ডেকে আনলে কেন? একটু অধৈর্য গলার স্বর কৌশিকের। নিরুত্তর তপু। প্রতিটি মানুষ ,পুরুষ , নারী একবার তপুকে দেখে যাচ্ছে, তপু এক ভাবে লেক এর দিকে তাকিয়ে, ভিতরে উথাল পাতাল হচ্ছে, কি বলবে, মার মাস্টারমশাই মায়ের জীবনের ভালবাসার পুরুষ, কিন্তু সে কি করবে
……….কি হলো উত্তর দাও, ১০ মিনিট হয়ে গেল, একটা সিগারেট খেলাম কিন্তু তুমি একটাও কথা বলছ না, তাহলে ডাকলে কেন? তপু কি দুরে রামধনু দেখতে পাচ্ছে বৈশাখের এই পড়ন্ত বিকালে? কি ভাবে বলবে?
…………”” বাবা, কি করব, বল না বাবা, আমি তপু বাবা, তোমাকে ছুয়ে আছি বাবা, তুমি কি আমায় চিনতে পারছনা বাবা””
…….তুই আমার অঙ্গের অংশ তপু।তোকে চিনব না। একবার যদি তোকে ছুতে পারতাম মা। কি সুন্দর তুই, মা, তুই কি ভাবছিস? মন যা বলছে তাই করবি।আর কিছু না,
………হাঁ, বাবা মনের কথা শুনব। ..হঠাত সম্বিত ফিরে পেল তপু ..কৌশিক ট্যাক্সি ডাকছে,
…….শোনো আমি যাচ্ছি, তোমার বোধহয় কিছু বলার নেই। আর আমাদের দেখা না হওয়াই ভালো।result বেরোলে প্রিয়র কাছ থেকে খবর পেয়ে যাব, চলি।
……….কি করব বাবা, ও তো চলে যাচ্ছে, কি ভাবে আটকাবো?
…কেন তোর্ মন দিয়ে, চকিতে তপু ঘুরে দাড়ালো, ডান হাতে কৌশিকের বা হাত ধরে তাকিয়ে বড় বড় স্বাস নিছে, দুই চোখএর তারায় কি যেন খেলে যাচ্ছে।কৌশিক অবাক হয়ে একবার নিজের বাঁ হাত দেখে তপুর দিকে তাকালো
………কি হলো ছাড়, আমি যাই …..তপুর ঠোট কাঁপছে, কিছু বলবে কি? কি ভাবে বলবে,? .
………কি হলো হাত ছাড়, সবাই দেখছে, ..বেশ অধৈর্য স্বর, ঠোট কাপছে তপুর, চোখের মনি ঘুরে ঘুরে দেখছে মাস্টারমশাইকে, না না কৌশিককে,”” কি ভাবে বলব, এই হাদারামকে, না বলেও তো থাকতে পারবনা, এখুনি না বললে সারাজীবন কি করব….””
……..ঘাট হয়েছে আমার দীপুকে বলার. হাত ছাড়, সবাই দেখছে, কি ভাববে? আমি চলে যাব, আর আসবনা, কথা দিলাম…..কৌশিকের সুরে অভিমান, হতাশা
…….. দেখুক, কিছু এসে যায়না আমার, ছাড়বনা. এ হাত সারা জিবন ছাড়বনা,ধরে থাকব. বেশ করব ধরে থাকব .ইসস বাইরে যাবে, মেমদের সাথে লুকোচুরি খেলবে, খুব শক , কোথাও যাবে না. phd করতে হলে iit তেই করবে দিল্লিতে, হাদারাম কোথাকার….. প্রথমে রাগ, অভিমান মিলিয়ে আর শেষে হেসে ভালবাসা মিশিয়ে তপু কৌশিককে ঝেন্ঝিয়ে উঠলো
কৌশিকের মুখে হাসি খেলছে
……. কত সখ ছিল, মেমদের সাথে লুকোচুরি খেলার. টু…………কি বলবে সুন্দরী মেম, অন্ধকারে খুজবো, হলনা এই জন্মে. কিন্তু আবার বলবে ওই শেষে যা বললে
…….কি?
………ওই রাম ? হাসিতে ভেঙ্গে পড়ল তপু,, তারপর চেঁচিয়ে
…….হাদারাম, হাদারাম, হাদারাম কোথাকার ….এইবার কৌশিক ও তপুর হাসিতে মিলিয়ে দিল তার হাসি
…….বলতে থাক, থামবে না …এক প্রৌর দম্পতি প্রশান্ত মুখে স্মিত হাসি নিয়ে চেয়ে চেয়ে দেখল, বৈশাখের গোধুলিবেলার এই দুই নবীনের চলে যাওয়া. কৌশিক আর তপুর ভেঙ্গে পরা হাসি দেখে, উল্টো দিক দিয়ে আসা এক প্রেমিক যুগল দৃষ্টি বিনিময় করে নিজেদের হাত নিজেদের মুঠোয় ভরে নিলো.
সিনেমা দেখে বাড়িতে ফিরতেই পূবা আর কনা দুই ভাইবোন কে দেখেই বুজলো, যা প্রার্থনা করেছিল মনে মনে তা পূরণ হয়েছে. পূবা ভিতর ভিতর খুবই অস্থির ছিল, যদিও জানত যা চাইছে সেটাই হবে. কনা হাসি মুখে।
………দিদি, আমি তোমাকে বলতে পারিনি, কিন্তু আমার ছেলেটাকে ভিশন ভালো লেগেছে. খুব ভালো ছেলে, খুব ভালো হবে দেখে নিও।
……..হাঁ রে কনা, আমিও অন্তর থেকে চাইতাম,যাক ভালই হবে. তবে তোকেই সব করতে হবে, কেননা সঞ্জীব ততদিন বাঁচবেনা, আর বিধবাদের তো এই সব করতে নেই. পূবার কথা শুনে কনা মাথা নাড়ল,
…….ভুলে যাও ঐসব, খালি মেয়েদের ছোট করার জন্য যত নিয়ম. তোমার মন চাইলে তুমিই করবে, না হলে আমি আমার প্রথম মেয়ের বিয়ে দেব. …দুই বোন হেসে উঠলো.
রাতে খাবার পর পূবা দিপুর ঘরে এসেছে. দিপু পুবাকে দেখেই উঠে বিছানার তলা থেকে একটা কাগজ বার করে
…….মা, তুমি আমাকে একটা কথা রাখতে বলেছিলে, আমি রাখতে পারিনি. আমি নিজে সঞ্জীব বাবুর সাথে দেখা করতে পারবনা, তুমি please কিছু মনে করনা. তোমায় মন থেকে বলছি, পুরানো ঘটনা মনে রাখতে চাইনা. কিন্তু সামনে দেখা হলে আবার ওই দুস্বপনর স্মৃতি ভেসে আসবে. তাই আমি একটা ছোট চিঠি তোমার হাত দিয়ে সঞ্জীব বাবুকে পাঠাতে চাই, তুমি কি বল?
……..বুঝিরে দিপু, তোর্ বাধা বুঝি. সেই ভালো তুই আমাকে দিস,আমি ওকে দিয়ে দেব. কি লিখেছিস, বলবি?
……..আমি লিখেছি, “” শ্রী সঞ্জীব মালহোত্রা, আপনার শারীরিক অবস্থ্যা মার কাছ থেকে নিয়মিত পাই. আমি চাই অতীত ভুলে আপনি খুব সিগ্রোহী সুস্থ হয়ে উঠুন. তপু, আমি নিশ্চিত,আর আপনিও শুনে খুসি হবেন যাদবপুরএ chance পাবেই. এই খবরটাই হয়ত আপনাকে তারাতারি সুস্থ্য হয়ে উঠতে সাহায্য করবে. শুভেচ্ছা নেবেন. …ইতি , দিপু””. ….আর কিছু কি লিখব?
………কোনো দরকার নেই, খুব ভালো লিখেছিস আর কিছু দরকার নেই. রাধা দির কি খবর?
…….মাসির বাবা, সংকট জনক অবস্থায়, আমি তোমার সাথে যাবনা. পরশু পাটনা যাব. তুমি তপুকে নিয়ে চলে যেতে পারবে তো? শিবু তো থাকবেই. আর হাঁ, তুমি কি সত্যি সত্যি শিবুর সাথে ব্যবসা করবে?
……..কয়েক বছর পর. তপুর বিয়ে দিয়ে, কারখানা ওদের হাতে তুলে দিয়ে তারপর, তুই তো ওই কারখানা চালাবি না. সেই ভালো সারা জীবন একা একা লড়াই করেছিস, এখনো নিজের চেষ্টাতেই তুই দাড়াবি . আমি কিন্তু এখন সারা জীবন তোর্ পাসে আছি. থাকবই, কাছে আয়, একটু আদর করি তোকে
……..ধ্যাত, এই বয়েসে আবার কি.নাও কি করবে কর. ….পূবা হেসে মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে
……..এখন আমি সবাইকে ছাড়তে পারি, কিন্তু তোকে ছাড়তে পারবনা. হাঁ, তপুকেও, কিন্তু তোকে না.
……মঞ্জুদি কি রকম housekeeping করছে,তোমার বাড়ির ?
…….এতদিন সঞ্জীবকে ছেড়ে ওই রকম অবস্থায়, কলকাতায় আছি, সুধু মঞ্জুর ভরসায়. দারুন মেয়েরে দারুন.

পূবার উকিল, কথা মত তার ভাইদের নোটিশ পাঠানোর একদিন পরেই, তিন ভাই সদলবলে পূবার প্রথম ভালবাসার বাড়িতে উপস্থিত. একতলার একটা ঘরে বসার ঘর হিসাবে পূবা ব্যবহার করার জন্য রেখেছে. প্রণব কেও বলেছে তার লোকজন আসলে যেন ওই ঘরেই বসে. ভাইরা এসেছে শুনে, পূবা দিপু আর কনাকে বলে দিল যাতে বাড়ির কোনো ছেলে বা মেয়ে ওই ঘরে ওদের সামনে না যায়. বসার ঘরে এসে পূবা শক্ত মুখে ওদের সামনে বসলো. ” কিরে কেমন আছিস, বা বাড়ির কি খবর” কোনো কিছু জিজ্ঞাসা পর্যন্ত করলো না. কথা বার্তায় ভাইরা খুবই অনুতপ্ত মনে হচ্ছে. অনেক কথা বলার পর বড় ভাই মুখ কাঁচু মাচু করে
…….দিদি, তুই যদি তোর ভাগটা পুরো নিস তাহলে আমরা কোথায় যাব বল, আমরা বরঞ্চ সবাই মিলে তোকে ২ কোটি দেব, তুই তোর ভাইপো ভাইঝিদের লিখেদে. আমাদের যে টুকু জমানো টাকা আছে আর গয়না গাঁটি বিক্রি করে ওর বেশি যোগার করা সম্ভব নয়. . …ভাইরা পুবাকে চিনতে পারেনি, নাহলে এই কথা বলতনা. পূবা একটু গম্ভীর হয়ে শুনলো. বাইরের দিকে তাকিয়ে কি ভাবলো, তারপর চোখ স্থির রেখে একটু উচু স্বরে গম্ভীর ভাবে
…….কান খুলে শুনে নে, বাড়িতে গিয়ে আমাকে যা খুশি গালাগাল দেবার দিবি, এক কানাকড়ি আমি তোদের দেবনা. তুই, বাবার বড় ছেলে, পঙ্কজ আমাকে বিয়ে করেছিল বলে সব চাইতে নোংরা ব্যবহার তুই পঙ্কজের সাথে করতিস. আজ তার হিসাব চুকানোর সময় এসেছে. আমি অন্যায় করেছি, সেটা আমার আর দিপুর ভিতরের ব্যাপার, কিন্তু তোরা মামা হয়ে ১ কিলোমিটার এর মধ্হেয় হওয়া সত্তেও একদিন খোজ নিসনি. কিছু দেবার কথা তো দূর অস্ত. বাবা মারা গেছেন ৮ বছর, এই ৮ বছরের অসুধ আর মদের দোকানের যা লাভ তার অর্ধেক আমি নেব, যদি মামলা করতে চাস করবি, কিন্তু পারবি না আমার সাথে. আমার শক্তি সম্পর্কে কোনো ধারনাই নেই তোদের. আমার হিসাবে ১৬-১৭ কোটি পাওনা, আমার এখন যা আর্থিক অবস্থ্যা তাতে ওই টাকা এখন বিরাট কিছুনা, কিন্তু তোদের আমি এক পয়সা দেবনা. দেখি তোদের কতবড় ক্ষমতা. কি ভাবে দিবি তোদের ব্যাপার, কিন্তু দিতে হবেই. খালি একটা কথা বলছি, কিছু ধারণা করতে পারবি. আমার দিল্লির বাড়ি বিক্রি করলে , কম করেও ২৫ কোটি পাব. বাকি সম্পত্তি আর বললাম না. বছরে ১-২ কোটি এই কেস এ খরচা করলেও আমার কিছু হবেনা. কিন্তু তোদের আমি ছাড়বনা. মা আমি দিল্লি যাওয়ার আগে মারা গেছিলেন, তাই জানতে পারি, বাবাকে চিঠি দিলে উত্তর পেতামনা, তোরা হাফিস করতিস. বাবার মৃত্যু পর্যন্ত জানাসনি, এতবড় ছোটলোক তোরা. মাস্তান লাগিয়ে লাভ হবে না, তার ব্যবস্থা আমি করে নেব. ওই ১৭ কোটি তার সাথে আরো ৩ কোটি কেস তুলে নেবার জন্য, যদি দিতে পারিস তাহলে কেস তুলে নেব না হলে না. বাড়ি গিয়ে ভেবে দ্যাখ কি করবি. …চুপ করে তিন ভাই বসে রইলো. কনা ভিতর থেকে পুবাকে ডেকে পাঠালো
……..দিদি, ওনারা এসেছেন কি মিষ্টি দেব ওদের ? ….আরো শক্ত হয়ে গেল পূবার মুখ
…….কিছুনা, চা পর্যন্তনা. তুই এ নিয়ে চিন্তা করিস না. …কথা কটি বলে পূবা আবার বসার ঘরে এলো. কনা হা করে পুবাকে দেখল. সম্পূর্ণ অন্য পূবা, কোনরকম দুর্বলতার ছিটেফোটা নেই এই পূবার ভিতর. দিপু সব কিছু লক্ষ্য করছে, বুঝলো কেন আজ পূবা মালহোত্রা এই জায়গায়. এসেছে. ভাইরা আরো কিছু সময় বসে চুপ করে চলে গেল. দরজা পর্যন্ত এগিয়ে দেবার জন্যও পূবা উঠলনা।

চলবে —————————



from বিদ্যুৎ রায় চটি গল্প কালেকশন লিমিটেড https://ift.tt/hSjeR5c
via BanglaChoti

Comments