জীবন BY (ডিমপুচ) (পর্ব-১০)

জীবন

লেখক – ডিমপুচ
পর্ব-১০
—————————

এর ঠিক একেবারে ৩৬৫ দিন পর টাপুর আর পুকুর পেল তাদের প্রথম সন্তান, ছেলে। মোটামুটি ২৫-৩০ টা নামে তাকে সবাই ডাকে, তবে গ্রহন যোগ্য হয়েছে বুবকা।সবে ৬ মাস হবে হবে। সারা দিন দিদুর বিরাট খাটে তাকে পাশে রেখে থাবা গেড়ে বসে থাকে দিদু। দিদু এখন সুস্থ, অকল্পনীয় মানসিক যন্ত্রণা সাথে ওই মারাত্মক অসুখ, সব ঝড় কাটিয়ে বৃদ্ধা আগের থেকে অনেক ভালো। তবে স্মৃতি পুরো আসতে সময় লাগবে । শুধু টুপুর আর টাপুর কে চিনতে পারে।। বাকিদের নাম গুলিয়ে ফেলেন। ডাক্তার আশ্বাস দিয়েছেন, ধীরে ধীরে উন্নতি হবে আর হচ্ছেও। সারাদিন কথা বলেন বুবকার সাথে।

পুকুর দুঃখের জীবন এখন পিছনে, তাদের ফ্লাটের তলায়, এক৬০০ স্কোয়ার ফিট এর ফ্লাট জোর করে বীথিকে দিয়ে কিনিয়েছে।প্রথম প্লান দেয় টাপুর। প্রথম শুনে বঙ্কিম লাফ দিয়ে উঠে
………পুকু আমাকে বিক্রি করলেও ওই ফ্লাট কেনার ক্ষমতা হবে না, তুই এই সব পাগলামি ছাড়
……… বঙ্কিমদা, আপনি টাপুর কে সম্প্রদান করেছেন, তা টাপুর তো বাবা কে কিছু দিতে পারে , হ্যাঁ কি না?………৩ দিন ধরে ঝোলাঝুলির পর ঠিক হয়েছে, যা দাম পড়বে  নরেশ বাবু তার থেকে ১০% কম নেবেন। আর বাকি দামের ৫০% এখন দেবে বঙ্কিম আর ৫০% পুকু।পুকুর টাকা রিটায়ের পর বঙ্কিম দেবে। এর পিছনে পুকুর স্বার্থ জড়িত। সপ্তাহে ৩-৪ দিন বোম্বে তে থাকবে। পাশে বীথি, বঙ্কিম এর মতো পড়শি কাম বন্ধু তাকে নিশ্চিন্ত রাখবে। কথায় বলে “ তুমি আত্মীয় ঠিক করতে পারনা কিন্তু বন্ধু  তোমার পছন্দের”। মাসিমা চোখের জলে বীথীদের বিদায়ের দিন পুকুকে বলেছিলেন
………সব থেকে অভাগা তোর মা পুকু। তোর মত ছেলেকে ছেড়ে চলে গেলেন।

পুকু সকালে অন্তত ৫ কি,মি, মতো দৌড়ায়, সে ষেখানেই থাকুক। ওঠেও ৬ টার আগেই।
এইরকম এক সকালে,পুকু দৌড় শেষ করে ঘুরে ঘুরে বাজার করেছে। তার পছন্দের বেশির ভাগ মাছ বোম্বে তে পাওয়া যায় না। আরও কিছু এটা ওটা করে বাড়ির লিফটে উঠবে

… এক্সকিউস মি ……।পুকু ঘুরে তাকিয়ে দেখে এক ভদ্রোলোক সাথে এক ভদ্রোমহিলা আর একটি মেয়ে, ২৪-২৫ বছর হবে বয়েস। এক গা গহনা পড়ে , যেন একটু হলুদের ছোপ লেগে মুখে, তাকে সম্বোধন করেছে
……হ্যাঁ, বলুন। কি ব্যাপার কাকে খুজছেন
………আচ্ছা এখানে টাপুর নামে একটি মেয়ে, এই আমার বয়েসের কেউ থাকে,?……মেয়েটির প্রশ্ন তে পুকু একেবারে অবাক
……হ্যাঁ, দেখা করবেন? আসুন আমার সাথে……লিফটে উঠে
………আপনি চেনেন?…… এইবার ভদ্রলোক প্রস্ন করলেন
……টাপুর আমার স্ত্রী……হাসি মুখে উত্তর পুকুর। আর সঙ্গে সঙ্গে “ অহ, ঠিক বলেছে যমুনা …” আওয়াজ। দুটো তলা উঠতে আর কত সেকেন্ড লাগে। সেকেন্ড ফ্লোর এ এসে পুকু সবাইকে নিয়ে ফ্লাটের দরজায় বেল টিপতে একটি কাজের মেয়ে দরজা খুলে দিল।
………বসুন আপনারা, আমি টাপুর কে ডেকে দিচ্ছি………টাপুর তখন যোগা করছে, টাইট যোগা প্যান্ট আর গেঞ্জি পড়ে।
………টাপুর এক ভদ্রলোক, ভদ্রমহিলা আর একটি মেয়ে তোমায় খুঁজছেন। তোমায় চেনে বলে মনে হলো………”কেরে বাবা” এই ভেবে ওপরের গেঞ্জি খুলে একটা সার্ট চাপিয়ে বাইরে এসে হাত জড় করে
……আমি টাপুর। আপনারা কোথা থেকে আসছেন? ………মেয়েটি টাপুরকে দেখে উঠে এসে বা হাতে জড়িয়ে
………বল তো আমি কে?……অবাঙ্গালির মতো বাংলা, ভদ্রোলোক আর ভদ্রোমহিলা হাসি হাসি মুখ
………টাপুর আমি অর্পণ মিত্র, হৈমন্তী মিত্র আমার মা………উঠে এসে টাপুরের সামনে দাঁড়িয়ে বললেন ভদ্রলোক।কথা কানের ভিতর দিয়ে মস্তিষ্কে পৌছে টাপুরকে কিছু সঙ্কেত বার্তা দিল। কয়েক সেকেন্ড
………মামা………।তুই তিন্নি, মায়িমা………হাসতে  হাসতে প্রনাম করে তিন্নি কে জড়িয়ে ধরল। পুকু পিছনেই দাঁড়িয়ে
………এই শুনছো। আমার মামা, মায়িমা আর তিন্নি। তোমায় তো বলেছি , সেই পুঁচকে বেলার বন্ধু আমার। পুকু হাসি মুখে প্রনাম করে
………এর সমস্ত গায়ে হলুদ লেগেছে নাকি?
………সেই জন্যই তো আসা। আজ ওর বিয়ে……”তাই…হি হি “ টাপুর খুব খুশি। “তোমরা বসো, টুপুর কে ডাকি।প্রায় ছুটে ভিতরে গিয়ে টুপুরকে ডেকে তুলে চা এর কথা বলে বাইরের ঘরে এসে দেখে, পুকু জমিয়ে আড্ডা মারছে।…।ওর মামা শুরু করলেন
………আমরা অনেক খুজেও তোদের কোন খবর পাইনি। কি আশ্চর্য, আমি উঠেছি তিন্নির মামার ফ্লাটে, ব্যাবস্থা সব ওর মামা করেছে। ওর মামার পাশের ফ্লাটে এক সিন্ধ্রি পরিবার থাকে। তাদের একটি মেয়ে যমুনা, টাপুরের সাথে পড়ত। কাল তিন্নি কথায় কথায়, ওদের ফ্লাটে ওর নিমন্ত্রণ ছিল,  বলেছে যে পুঁচকে বেলার বন্ধু টাপুর,  তাকে নিমন্ত্রণ করতে পারলাম না।তখন যমুনা বলেছে “টাপুর? টাপুর আর টুপুর দুই বোন খুব সুন্দর দেখতে, দিদিমার সাথে থাকে?” তিন্নি হ্যাঁ বলতে বলেছে
………” টাপুর আমার সাথে কলেজে পড়ত। অনেকদিন পর গরিয়াহাটে  দেখা হোল। ওরা এখন ওইখানে থাকে, নতুন ৫ তলা বাড়ি হয়েছে তার সেকেন্ড ফ্লোরে ।“……  শুনেই আমরা ঠিক করলাম , আজ সকালেই ঢু মারবো।। এদিকে আজ বিয়ে, গায়ে হলুদ,  তিন্নি গোঁ  ধরল আমিও যাব। তাই সকালেই এসেছি।  খুব ভালো লাগছে  তোদের দেখে। টুপুর তো অপ্সরা……… চা এগিয়ে দিল টাপুর আর টুপুর সাথে কথা।
………।মামা, আমার বাড়িতে এই প্রথম আমার বাপের বাড়ির কেউ এল, অন্তত দুটো মিষ্টি খেতেই হবে
………হ্যাঁ খাবো রে টাপুর, খাবো। তিন্নির খাওয়া বারন , তাই ও বাদ
কথা কি ফুরাতে চায় । প্রায় ১৮-১৯  বছর পর দেখা
………টাপুর মা কোথায় রে?
………।দিদু এখন ঘুমাচ্ছে। শরীর ভালো নেই। ম্যালিগন্যান্ট ম্যালেরিয়া হয়েছিল। এসো আমার সাথে …টুপুর সাথে করে নিয়ে গেল ২ জন কে

। “ তিন্নি, কাউকে চিনতে পারবে নারে দিদু। শুধুই  দেখা, তুই বস, কথা বলি তোর সাথে”……তিন্নি নিয়ম রক্ষার মতো একটু এগিয়ে আবার ফিরে
………টাপুর তুই কি সুন্দর দেখতে হয়েছিস রে, তোর বর টা দারুন ম্যানলি। বেশ ভালো লেগেছে আমার …।
………আর ভাললেগে কি করবি, বুকড………হাসিতে ফেটে পড়ল দুজনে। মিনিট ৫-৭ পর বাকিরা এসে
………ঠিকই  বলেছিস, চিনতে পারেনি। দোষ আমার , ছেলে হয়ে কোন কর্তব্য করিনি। লন্ডনে বসে ছিলাম। যাক ও কথা বলে আর কি হবে। তবে  আজ কিন্তু তোরা আসবি। আমরা আর বসব না, অনেক কাজ
………হ্যাঁ মামা। নিশ্চয়ই যাব। প্রায় ১৮-২০ বছর পর কোন আত্মীয় বিয়ে বাড়ি যাব। একটা অনুরোধ। আলাপ করিয় না কাউর সাথে, কেউ চিনে যদি বুকে টেনে নেয় ঠিক আছে। কিন্তু এতো কাঁটার পথ হাটার পর সোহাগ দরকার নেই
………ইয়েস,  বুঝেছি। তুই নিশ্চিন্ত থাক তোদের সম্মান বজায় থাকবে। আমরা বলব না। তবে মাসি আসবে। এখন যাই রে টাপুর……বেরনোর মুখে তিন্নি
………টুপুর তুই সাবধানে থাকিস। যা সুন্দর হয়েছিস ওই বিয়ে বাড়ির কেউ আবার প্রপোস না করে বসে………হাসিতে যোগ দিল সবাই , অন্তর থেকে।

ভারতীয় বাড়ির বিয়ে মানে মহিলাদের সাজের জায়গা। নিজেকে সুন্দর করে দেখাতে সবাই ভালবাসে। আর সেটাই হওয়া উচিৎ, এতে ‘আমি সুন্দর’ এই মনোভাব বেচে থাকতে খুব প্রয়োজন। সবাই নানা ভাবে সেজে যায়। টাপুর তার ব্যাতিক্রম নয়।তবে  এ ক্ষেত্রে অনেকটা “ সোনার হাতে সোনার কাঁকন, কে কার অলঙ্কার” সেই রকম ব্যাপার।  টাপুর দামি হালকা সবুজ রঙের শাড়ি , সুন্দর ম্যাচ করা ব্লাউস, গলায় সবুজ পান্না। কানে,  হাতে হীরে। চোখে অল্প টান , লিপস্টিক,  একটু হিল আছে এইরকম জুতো, সব মিলিয়ে সবাই একবার ঘুরে  দেখবেই। আর টুপুরকে বিধাতা সাজিয়ে পাঠিয়েছেন। কোন কিছুর দরকার পড়ে না। তাও পুকুদার কথায় হালকা রূপটান , আর এক গোলাপি বালুচরি। মারমার কাটকাট ব্যাপার। কেউ দুজনকে  চিনতে পারেনি। দুজনেই তিন্নির সামনেই বসে ছিল। পুকু একটু আলাদা ব্যালকনিতে সিগারেট ধরিয়েছে। কিন্তু বাড়ির বয়েস্কা মহিলা বা বুড়িদের আগ্রহ বাকিদের থেকে একটু বেশি। তাই, মনীষার এক মায়ের দিকের বোন, মনীষার থেকে কিছু বড় অনেকক্ষণ থেকে একে তাকে জিজ্ঞাসা করছে ওই রুপের ডালি সাজিয়ে বসে আছে ওই মেয়েরা কারা? কে ওরা। কেউ কিছু বলতে পারছে না। শেষে আরেক বোন কে ধরলেন,
………বিনি, ওই মেয়ে দুটোকে দ্যাখ? কার মতো দেখতে বল তো?
………কার মতো বলতো,  চেনা চেনা লাগছে?
………।মনির মুখের ছাপ না?
………।আরে , তুই ঠিক বলেছিস। টাপুর আর তুপুর তাই না? চল তো …।কাছে এসে
……… এই মেয়ে । তিন্নি তোমাদের কে হয়?……প্রশ্ন না করে পারলেন না
………বন্ধু……ছটো করে উত্তর দিল টাপুর
………তোমরা কি লন্ডনে থাক?………ঘার নেরে না বলতে]
……তাহলে, আমাদের  মন যা বলছে তোমরা কি তাই? মুখ দেখে কিন্তু তাই মনে হচ্ছে…একেবারে সেই মুখ বসানো ……দুই বোন চুপ করে থাকল “ কি আপদ। সারা জীবন যে এড়িয়ে গেল এখন তার সুত্রে পরিচয়”……।।টুপুর একটু গম্ভীর
………তোরা টাপুর টুপুর তাই না? ………।বাধ্য হয়ে টাপুরকে হ্যাঁ বলতে হোল।  সম্পর্কের সেই মাসির খুসির ডাক………” টাপুর , টুপুর, উফফ ভাবতেও পারছি না। কি সুন্দর হয়েছিস”……ব্যাস, সমস্ত বিয়ে বাড়ির কেন্দ্রবিন্দু এখন দুই বোন। তিন্নি যদি তাতে একটু দুঃখ পায় তাতে কেউ রাগবে না। কিন্তু তিন্নি হাঁসিতে ফেটে পড়ছে। এদিকে কনের সাঁজ অন্যদিকে সেই পুঁচকে বেলার বন্ধু , তিন্নি মনে মনে চাইছিল, এটাই।
ঘরের সবাই পারলে  জাপটে ধরে। এরপর যথারীতি মনীষার কি খবর? শেষ মেশ বিরক্ত হয়ে দুই বোন ঠিক করলো খেয়ে কেটে পড়াই ভালো। বুফে সাজান। নিজেদের খাবার তুলে তিন জনে আলাদা করে খাচ্ছে অনেকেই এসে দু একটা কথা বলছে “ কি সুন্দর দেখতে” কতবার যে শুনল তার ঠিক নেই। খাবার খেয়ে টুপুর সমবয়েসি আরও ৩-৪ মেয়ের সাথে নানা গল্প জুরেছে। দুই বোনের ভালই লাগছে। এতো লোকের সাথে কথা বলতে পেরে। আর রুপের সুখ্যাতি শুনতে কেইবা অপছন্দ করে। টাপুর অনেকদিন পর আইসক্রিম খাবে ঠিক করে এসেছিলো। এমন সময় এক মৃদু গুঞ্জনে আন্দাজ করলো মনীষা এসেছেন। মনীষা খুব সেজেছে। অনেকদিন পর সেরাকে নিয়ে বেড়িয়েছে। সবাই এসে কথা বলছে। আইসক্রিম নিয়ে টাপুর ছেলেবেলার ৩ জন সমবয়েসি মেয়ে আর ছেলের সাথে জীবনের নানা কথা বলছে। বুজতে পারছে মনীষা এই দিকেই আসছে। মনীষার দিকে পিছন করে দাঁড়িয়ে কথা বলছে।

মনীষা দূর থেকে টাপুরকে দেখেছে। চিনতে পারেনি। কিন্তু এতো সুন্দর মেয়েটা কে? এই প্রশ্ন মাথায়। নিজের মাসিকে দেখে পায়ে দিয়ে প্রনাম করতে, সেই বুড়ি
………মণি? তোর মাইয়ারা তো আইছে, কথা হইছে? ………চাবুকের মতো স্থির হয়ে আবার টাপুরের দিকে তাকিয়ে নিশ্চিত মনীষা, ওই টাপুর। দ্রুত টাপুরের পিছনে গিয়ে হাত ধরে ঘুড়িয়ে, যুগপৎ, বিস্ময়, আনন্দ মিশিয়ে
………টাপুর?………চোখে চোখ রেখে
…………মানে ঠিক চিনতে পারলাম না তো? আপনি, মানে ?
………আমি মনীষা টাপুর, তোর মা, মা………
……অহ! আচ্ছা, চিনতে পারিনি আপনাকে। কেমন আছেন। ……সেরা এসে পাশে দাড়াতে “ এইবার চিনতে পারছি’। কতক্ষন এসেছেন?
………মনীষা জড়িয়ে ধরতে, টাপুর আড়ষ্ট হয়ে চুপ করে আছে
……তোমার হাসবনড, স্বামী আসেনি
পুকু কে ডেকে “ এই শুনছো ইনি মনীষা সাক্সেনা,’ পুকু হাত জড় করে নমস্কার করে
…… আমার নাম পিনাকী চক্রবর্তী ।এই নিন আমার কার্ড, বড় মেয়ের বাড়ি আসবেন। যখন খুশি আসবেন………কার্ড দেখে “সিএ, বাহ। হ্যাঁ আসব।“ চিনতে  পারল না পুকুকে। অবশ্য ৮-৯ বছর আগে দেখা কাজের ব্যাপারে,  মনে রাখা সহজ নয়। আবারও টাপুর কে হাতে জড়িয়ে নিল কিন্তু মনীষা বুঝল যে মেয়েদের কাছে এখনও গ্রহণযোগ্য নয়। “ইনি মনীষা সাক্সেনা” কথাটা কানে বাজলো। কিন্তু মনে মনে প্রস্তুত হয়ে ছিল অনেকদিন ধরে,  যে দেখা হলেও সম্পর্ক কি হতে পারে। টাপুরের মুখে হাতে স্নেহের হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। মুখে চোখে ঝরে পড়ছে মমতা। সেরা কথা বলছে পুকুর সাথে।
………উদয়ন?……ঘার নেরে টাপুর বোঝাল নেই “তোমার জন্য নেই। তুমি খুন করেছ”
………টাপুর, টুপুর আসেনি?
………হ্যাঁ, ওই দিকে । চলুন………সাথে করে নিয়ে এল যেখানে টুপুর ছিল। কাছে গিয়ে একটি মেয়েকে জিজ্ঞাসা করতে “ ওই ঘরে দেখুন। ওয়াশ রুমে গেছে” ৪ জনে ঘরে ঢুকে দেখে আর কেউ নেই আর তখনোই টুপুর ওয়াশ রুম থেকে বাইরে আসছে। “টুপুর”।খুব আবেগ কণ্ঠে ডাক দিলেন মনীষা। টুপুর ঘুরে একেবারে মনীষার সামনে চোখে চোখ রেখে দাড়াতে সেরা আর মনীষার ওপর  একসাথে শঙ্খচূড় সাপের ছোবল। এ কে, ? কার সাথে মিল? সে কেন এখানে? কি নাম এর? কি বলবে বুঝতে পারছে না দুজনেই
………সেরা, একেবারে এক রকম দেখতে, তাই না?
………হ্যাঁ ইশা এ কে? এই তোমার নাম কি? কে তুমি?
……।।টুপুর, দময়ন্তী ………” তা কি করে হয় ইশা”……সেরার জিজ্ঞাসা
……… কেন মিস্টার সাক্সেনা, মিসেস মনীষা, চিনতে পারছেন না আমায়? কি নামে ডাকবেন ভাবছেন?টুপুর, দময়ন্তী , দামিনী না বেশ্যা,কোন নাম আপনার পছন্দ মিসেস মনীষা? আর আপনি মিস্টার সাক্সেনা, ধর্ষণ কেমন উপভোগ করেছিলেন? একটা ২০ বছরের নিঃসহায় মেয়েকে ভোগ করতে কেমন লেগেছিল? ……।।সাপ কি মাথায় ছোবল মেরেছে, মাথা কাজ করছে না কেন?
………টুপুর, টুপুর, প্লিস প্লিস। এখানে নয় প্লিস………।আকুতি ঝরে পড়ছে মনীষার।
……নয় কেন? মিসেস সাক্সেনা,  কেন না? মা বলে জড়িয়ে বলেছিলাম বাঁচান? আর আপনারা দুজনে আমাকে বেশ্যা বলে দিলেন অত ঘর ভর্তি লোকের সামনে। তাহলে এখানে নয় কেন?………গলা চড়িয়ে টুপুর
………উত্তর আপনাকে আজ দিতে হবে মিসেস সাক্সেনা। আপনি আমাকে কেন পৃথিবীতে এনেছেন? কেন? মাএর কোন কর্তব্য পালন করেছেন? তখন আমি  মাত্র ২ বছর, আপনি চলে গেলেন কেন?   আপনি বাবাকে চিঠি দিয়েছিলেন “ তুমি টুপুরের ওপর কোন অধিকার ফলাতে পার না। তোমার ডিএনএ মিলবে না টুপুরের সাথে। সেরার ডিএনএ মিলবে, তার মানে কি? আমার পিতা কে? বাবা কে, আমি জানি। তিনি  পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বাবা। কিন্তু পিতা কে?  এই ধর্ষক কি আমার পিতা?  মিসেস মনিষা।ইনি সেদিন কাকে ধর্ষণ করেছিলেন? একটু বুঝিয়ে বলুন ?

চলবে —————————



from বিদ্যুৎ রায় চটি গল্প কালেকশন লিমিটেড https://ift.tt/hZJcDWY
via BanglaChoti

Comments