টান BY (ডিমপুচ) (পর্ব-৯)

টান

লেখক – ডিমপুচ
পর্ব-৯
—————————

সকাল ৭টার সময় দিপু দীপকের বাড়ি গিয়ে উপস্থিত।
…….কি ব্যাপার রে দিপু এত সকালে, কি হয়েছে , তোর্ চোখ মুখ এই রকম কেন? কি হয়েছে তোর্, বল আমাকে?
…….বলব, বলব, তোকে একটা কাজ করতে হবে এক্ষুনি। তুই পূবা মালহোত্রা দের বাড়ি চিনিস, তুই এখনি , মানে ৮ টার ভিতর ওর বাড়িতে গিয়ে এই প্যাকেট আর এই খাম টা দিবি, বলবি, ভিশন জরুরি, উনি যেন এখনি পরেন চিঠিটা। কিন্তু এই দুটি সুধু ওনার হাতে দিবি, দরকার পড়লে, অপেখ্যা করবি, কিন্তু অন্য কাউকে দিবি না। আর দিয়েই চলে আসবি, কিছুতেই , যতই বলুক দাড়াবি না। ,মনে রাখবি, কিছুতেই দাড়াবি না। আর সুধু ওনার হাতে দিবি। আমি বাড়িতেই থাকব।দু দিন কথাও বেরোব না, একটু সামলে নে ভাই
…….সে নিয়ে তুই ভাবিস না, কিন্তু ব্যাপারটা কি বল?
……দুটো দিন সবুর কর বলব। কিন্তু তোকে যে কাজটা দিলাম এটা ভিশন ভিশন জরুরি। তুই সাবধানে স্কুটার চালাস কিন্তু। আর আমাকে একটা খবর বাড়িতে দিবি।আমি অপেখ্যা করব। …দীপক তখুনি বেরিয়ে পড়ল পূবার বাড়ির দিকে। গিয়ে বেল বাজাতে পূবার মেয়ে দরজা খুলল
…..আরে ভাইয়া তুমি, এস ভিতরে এস,
……নারে অন্য দিন এসব, আজ খুব ব্যস্ত আছি, তুই আন্টি কে ডেকে দে
……মা, মা, দীপক ভাইয়া এসেছে, তোমাকে ডাকছে
…….আরে দীপক , এস এস ভিতরে এস, হাসি মুখে পূবা দীপককে আহবান করলো
…….আন্টি অন্য দিন বসব, আজ একটা কাজ নিয়ে এসেছি , দিপু আমার পাটনার এই দুটো আপনাকে পাঠিয়েছে, বলেছে খুব জরুরি। নিন ধরুন
…… এত সকালে , কি ব্যাপার, একটু বসবে না
…..না আন্টি , ফ্যাক্টরি খুলতে হবে। দীপুকে, মানে অশোককে খুব আপসেট দেখলাম ,আমি যাই কেমন। ..বলে ও বেরিয়ে বাইকে স্টার্ট মারলো। দিপুর বাড়িতে এসে সব বলে ও ফ্যাক্টরি চলে গেল।

পূবা প্যাকেট আর খাম নিয়ে একটু অবাক হলো। প্যাকেট খুলে দেখল, অ্যালবাম। মেয়েকে চশমা আনতে বলল , চিঠি পরার জন্য। চশমা
পরে খামের ওপর নিজের নাম লেখা দেখল। খুলে আর একটা খাম, দেখেই,
” একি, ত্রস্ত হাতে খাম খুলে সাদা কাগজে কিছু পড়েই, হাঃ ভগবান, আমি আর কত নিচে নামব” .চরম হতাশার স্বরে কথা গুলো বাংলায় বলেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়ল । সঞ্জীব এসে পাসে দাড়িয়ে ছিল
…..কি হয়েছে পূবা, কে চিঠি দিয়েছে, কি লিখেছে,? পূবা মুখ ঢেকে নিঃসব্দে কাঁদছে, হাতের কাগজ আর খাম বাড়িয়ে দিল সঞ্জীবের দিকে।
সঞ্জীব খাম আর কাগজ নিয়ে
….এ তো বাংলায় লেখা মনে হচ্ছে, কে লিখেছে ? ভেঙ্গে পরা আর হতাশার হাসি হেসে,পূবা
…..খামের উপরে লেখা আছে, সবিতা /পূবা সাহা /ভট্টাচারজী /মালহোত্রা, আর কাগজে লেখা আছে, “” আপনি ঠিকিই ধরেছিলেন কালকে, আমি কিছু লুকিয়েছিলাম। আজ জানাচ্ছি। আমার নাম প্রিয়দর্শি ভট্টাচারজী ( দিপু). বাবার নাম –পঙ্কজ ভট্টাচারজী ,(মৃত) ঠিকানা ……..কলকাতা ২৯। মায়ের নাম — আপনি জানেন।
আপনার অ্যালবাম কাল আমার নিদ্রা বিহীন রজনীতে থেকে হৃদয় খুঁড়ে রক্ত ঝরিয়ে চলেছে, আর চরম সত্যর মুখোমুখি দাড় করিয়েছে।

আপনি যার খোজে এত উতলা হয়েছিলেন, তার খোজ আপনার আর দরকার হবেনা। আমার মনে হয় আমাদের আর কোন দিন দেখা না হলে ভালো হত। কিন্তু একবার দেখা হবার দরকার আছে । সুধু আপনার সাথে না, সূর্য কন্যা তপতী আর আপনার স্বামীর সাথে। যদি প্রয়োজন মনে করেন MP সাহেব এর বাড়িতে দেখা হতে পারে। একটা কথা জানতে ইচ্ছা করছে খুব, আপনার অল্প বয়েসের একটি ছবি আছে, কোলের শিশুটি কে? কিন্তু সেই শিশুটির মনে পরেনা সে কোন দিন তার মা/জন্মদাত্রীর হৃদয়ের ওম পেয়েছে। তবুও ছবিটি কেন? সূর্য কন্ন্যা কে দেখে আমার ছোটকার মেয়ে নিনি বলে কেন ভ্রমহলো, তার উত্তর এই আকাশের নিচে , একমাত্র আপনিই দিতে পারবেন/ যে অদৃশ্য শক্তি আপনি আমি সবাইকে নিয়ে বহতা পুতুল নাচের ইতিকথা রচনা করে চলেছেন,আপনার হাত দিয়ে অ্যালবাম দেওয়া টা সেই ইতিকথারই একটি ক্ষুদ্রাংশ মাত্র ””

…তার মানে অশোক ওর নাম না! ও তাহলে
……হাঁ ,অশোক বা প্রিয়দর্শি বা দিপু আমার ছেলে। আমার প্রথম সন্তান। পঙ্কজ আর আমার সন্তান।এই রকম গলার স্বর, স্নেহ আবেগ ভালবাসা মেশানো, তপতী আগে তার মায়ের মুখে শোনেনি “ ভগবান, আমি কোথায় নেমে গেছি, ছি ছি ছি, আমি এত নিচ। “
……মা, অশোক, প্রিয়দর্শি, দিপু কে ?, তুমি কি বলছ, তোমার ছেলে , এসবের মানে কি, বাবা , তুমিই বা চুপ করে কেন? তার মানে আমার একটা ভাই আছে, তোমার আর একটা বিয়ে হয়েছিল? কার সাথে, কোন দিন বলনি কেন? লুকিয়েছিলে কেন? বাবা তুমিও তো কোনদিন বলনি? উত্তেজিত কন্ঠে তপতী জানতে চাইল।
…… তপু, একটু চুপ কর, আমাকে একটু একলা থাকতেদে।সব বলব, সব।সত্য কোনো না কোন দিন প্রকাশ পাবেই। প্লিস ,একটু একা থাকতে দে, আয , এখানে বস।একটু পর বলব। মায়ের আদরের ডাক তপতী ফেরাতে পারলনা, জ্ঞান হওআর পর কখনো এই মাতৃরূপ দেখেনি। কে এই দিপু, সুধু তার নামেই এত দিনের চেনা মা আমূল পরিবর্তিত হলোi আস্তে এসে মায়ের পাসে বসলো।লাস্যময়ী পূবা,মালহোত্রা ইন্ডাস্ট্রিস এর মালকিন,যার তির্যক চক্ষুবানে ঘায়েল হয়নি এমন পুরুষ নেই,আজ স্নেহময়ী মা, নারীর সব চাইতে পরিচিত পূজিত রূপ।দেবী মূর্তির নগ্নতা ,ভক্তকে সূচী করে, কেননা দেবী মাতৃ রূপে পূজিত হন।

চুপ করে ঘরের সিলিং এর .দিকে চেয়ে দিপু সুয়ে ছিল। ১১টা বাজে, এখনো সে এক কাপ চাও খায়নি। হঠাত বেল বেজে উঠলো, তড়াক করে লাফ দিয়ে দিপু দরজা খুলে দেখে রাধা দাড়িয়ে, চোখে একরাশ উত্কন্ঠা নিয়ে। দিপু রাধাকে হাত ধরে ঘরে ঢুকিয়ে দরজা লাগিয়েই জড়িয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ল। রাধা দু হাতে জড়িয়ে ওখানেই বসে পড়ল। দিপু তার সব চাইতে কাছের মানুষকে পেয়ে, নিজেকে ধরে রাখতে পারলনা রাধার বুকে মাথা গুজে অবোধ বালকের মত কেঁদে চলেছে। কিছু সময় নিল নিজেকে সামলে নেবার,
……দিপু কি হয়েছে, বল আমায় , আমি তোর্ পাসে আছি। তুই বল আমায়
……মাসি, রাজা অউদিপাস অজান্তে নিজের মায়ের শয্যাসঙ্গী হয়েছিল বলে , নিজেই চোখ অন্ধ করে দিয়েছিল। আমি তো নিজের মা কে চরম রতিক্রিয়া অবস্থায় দেখেছি, আমি কি করব মাসি,তুমি বলে দাও।
…….তুই শান্ত হ , সব বল আমাকে, এরকম ভেঙ্গে পড়ছিস কেন। সব শুনি আগে … দিপু একে একে পূবার সাথে তার আলাপ থেকে কাল রাত , এবং সকালে চিঠি পাঠানো সব বলল।রাধা চুপ করে সব শুনলো
…….দিপু মাথা ঠান্ডা করে শোন। তোর্ বাবার হত্যাকারী কে তুই জানিস। তোর গলায় তিনি আছেন, তুই কি চাস না যে হত্যাকারী শাস্তি পাক। তুই তো বললি, তোর্ বন্ধু জানিয়েছে গাড়ির মালিকের নাম সঞ্জীব মালহোত্রা। তোর্ মা কিন্তু এই হত্যায় সহযোগী না হলেও হত্যাকারীকে আড়াল করেছেন। তাই তারও শাস্তি প্রাপ্য , বলে আমি মনে করি। তোর্ সহোদরা নিষ্পাপ, তাকে তুই বুকে টেনে নিবি, কিন্তু হত্যাকারীকে নয়। মন শক্ত কর,তোর্ সামনে এখন কঠিন কাজ। তপতীর সামনে মুখোশ খুলে দিবি, এটাই তোর্ কাজ। আর তুই যাকে রতিক্রিয়া করতে দেখেছিস, সে এক লোভী, অর্থ পিপাসু মহিলা, তোর্ মা নয়। এখন ওঠ স্নান করে নে আমিও তৈরী হয়ে নি, তারপর বিরজুর কাছে যাব। শোভা এসেছে, চল
……মাসি, এই জন্যই তোমাকে আসতে বলেছি, তুমি না থাকলে আমি যে অসহায়, যা বলবে তাই করব। চল .. দুজনেই স্নান করে তৈরী হয়ে বিরজুর কাছে গেল।

সকালেই পূবা বিরজু কে ফোন করেছিল,যাতে পরের দিন দিপুর সাথে দেখা হয়। বিরজু কোনো কথা দেয়নি, খালি বলেছে পরে জানাবে। রাধা আর দিপু বিরজুর বাড়ি গিয়ে প্রথমেই কিছু খেল, সকাল থেকেই উপবাস চলছে দুজনের। তারপর বিরজু দীপুকে জিজ্ঞাসা করলো সব কিছু খুটিয়ে খুটিয়ে , শেষে
…….দিপু কাল ওদের আসতে বল, আমার এখানে হলে সুবিধা হবে।
……ঠিক আছে সার , তাই করুন। বিরজু উঠে পূবা কে ফোন করে পরের দিন সকাল ১১ টা তে আসতে বলল সবাইকে নিয়ে।

ঠিক সকাল ১১ টার সময় ৩ জনে গাড়ি থেকে নামল,দিপু ঘরের ভিতর ছিল, রাধা গিয়ে ওদের ভিতরে নিয়ে আসলো। তপতী দীপুকে দেখে এক উজ্জল হাসিতে সমস্ত ঘর আলোকিত করে
……কি দারুন দেখতে মা, কি cute, মা, দারুন হ্যান্ডসাম না ? দিপু একটু এগিয়ে গিয়ে তপতী কে হাত ধরে নিজের পাসে বসালো, কিশোরীর হাসি যেন তীব্র দাবদাহ পর শান্তির বৃষ্টি……
…..তোমাকে এত সুন্দর দেখতে, আমি ভাবতেই পারছিনা, আবারও কিশোরী সুলভ উচ্ছলতা আর হাসি। …দিপু একটু হেসে পকেট থেকে একটা ক্যাডবেরী বার করে
……..তুমিও খুব সুন্দর দেখতে, ভিশন cute, সবার চাইতে সুন্দর তুমি
……দিপু , আমি একটু তোমাকে ছূতে পারি? এতক্ষণ পর পূবা কিছু বলল …দিপু ঘাড় নেড়ে সায় দিয়ে রাধার দিকে তাকালো , রাধা চোখের ইশারায় সায় দিল। পূবা, এ এক অন্য পূবা, কোনো প্রসাধন নেই , নেই কোনো রূপটান, একটি তাঁতের শাড়ি পরে, মায়ের সাজে এসেছে। দিপু উঠে দাড়ালো , পূবা এসে সামনে দাড়িয়ে মুখে চোখে হাত বোলাচ্ছে , চোখের কোনে কি জল? দিপুর মনে হলো যেন চিক চিক করছে
……আমার আজও মনে গাথা হয়ে আছে, ভাঙ্গা ইয় ইয় নিয়ে তোমার সেই অসহায় বেদনাভরা কান্না চাপা মুখ, যতবার মনে পরে ততবার নিজেকে ধিক্কার দি। দিপু একটু হাসার চেষ্টা করলো। তারপর পকেট থেকে একটা সরু সোনার চেন বার করলো, সাথে একটা ছোট মাদুলি
…….আপনি নিশ্চই বুজতে পারছেন যে এই বাবাদুলির ভিতর কি আছে, আমি এটা তপতী কে পড়িয়ে দিতে চাই, আপনার কোনো আপত্তি আছে কি? স্মিত হাসি হেসে পূবা ঘাড় নেড়ে সায় দিল। দিপু চেন টা রাধাকে দিয়ে ইশারা করলো পরিয়ে দেবার জন্য, রাধা পরিয়ে দেবার পর দিপু তপতীর হাত ধরে
……তপতী, এই মাদুলি বা বাবাদুলি এর ভিতর তোমার আর আমার বাবার চিতাভস্য আছে, তোমায় অনুরোধ করছি , কোনদিন এইটা খুলবে না কেমন।
……ভাইয়া, আমি কালকেই সব জেনেছি মায়ের থেকে, তোমাকে দাদা বলতে পারিকি ? ১৬ বছরের কিশোরী বয়েসের ধর্ম অনুযায়ী ছটফট করছে আর হাসছে, সমস্ত শরীর দিয়ে বুঝিয়ে দিচ্ছে আনন্দ আর দীপুকে জড়িয়ে ধরার আকাঙ্খা।
……নিশ্চই, একশো বার বলবি , দাদা বলে ডাকবি। মাসি, ওকে সুন্দর মানিয়েছে না ?
…… তপতীর মুখ একে বারে দিপুর মুখ বসানো, রাধাদি , তাই না , এই প্রথম শোভা কথা বলল
……আরে আমি তো রাস্তায় দেখলে ঘাবড়ে যেতাম, দিপু আবার সালবার কামিজ পরা শুরু করলো নাকি? বিরজুর কথায় . সবাই হেসে উঠলো।
….শুনুন, আপনি সার কে তো চেনেন। ইনি শোভা আন্টি, আর ইনি রাধা মাসি, আমার জীবন পাল্টে দিয়েছেন। এই তিন জন না থাকলে আপনার সাথে আমার কোনদিন দেখা হত না। আপনি এদের সামনে সব কিছু বলতে পারেন। এরাই আমার সব চাইতে আপন জন।
…..দিপু ,প্রথমেই জানতে চাইব, তোমার ঠাকুমার কথা , তিনি কি আছেন?
…. না, আজ ৬ বছর হলো মারা গেছেন।বাবার মৃত্যু ঠাম্মার মাথা খারাপ করে দিয়েছিল, কিছু মনে রাখতে পারতেন না, খিট খিটে হয়ে গেছিলেন।
…….খুব খারাপ লাগছে শুনে। আমাকে বরণ করেই উনি বলেছিলেন ” আমার মেয়ের শখ ছিল, কিন্তু হয়নি, তোকে আমি সাবি বলে ডাকবো, আমার মেয়ের মতই থাকবি”., আমারি দোষ, যাক সে কথা আর বাকিরা?
…..ছোটকা , এখন ব্যাঙ্ক এর AGM আহমেদাবাদ এ আছেন।মেজকা আছেন তার ব্যবসা নিয়ে . আমার নষ্ট না হওয়ার কারণ ছোট কাকিমা।আমার কয়েকটা প্রশ্ন আছে ,যদি satisfactory উত্তর পাই, তাহলে কিছুটা কাজ চালনোর মত আমাদের মধ্হে সম্পর্ক হতে পারে। আপনি নিশ্চই বুজতে পারছেন আমি বা আপনি যতই আন্তরিক হই না কেন আমাকে কোলে করে আপনার ফটো তোলার সময়কার সম্পর্ক আর কোন দিনই হবে না। দু একটা প্রশ্ন আপনাদের দুজনের পক্ষেই , সঞ্জীব আর পূবার দিকে ইঙ্গিত করে, একটু অসুবিধা জনক হতে পারে। আমি প্রশ্ন করতে পারি ? পূবা ঘাড় নেড়ে সায় দিল
……আমার কোন দিন জন্মদিন পালন হয়নি, তাই আমি আজও জানিনা আমার জন্মদিন কবে , আপনি কি সঠিক করে বলতে পারেন , আমার জন্মদিনটা ?
……১৯৭০ সাল ২১ জুলাই
….কিন্তু আমার মাধ্যমিক এর এডমিট কার্ড এ আছে ২০ জুলাই
……ভুল, ভুল আছে, ২১ জুলাই, ১৯৭০ মঙ্গলবার। দিপু, আমার প্রথম সন্তানের জন্মদিন ভুলে যাব, এতটা নিচে আমি নামিনি। পূবা আহত স্বরে বলল
……..না না , আপনিই ঠিক বলছেন। আমি অন্য কিছু বলতে চাইনি, কিছু মনে করবেন না এইটা একে বারে ভুলে যান। দিপুর হাসি মুখের কথা সুনে পূবা হেসে দিল।
…….. পরের প্প্রশ্ন টা কঠিন। তপতী, তুই এমন কিছু শুনতে যাচ্ছিস যাতে তোর্ পৃথিবীটা ভেঙ্গে যেতে পারে, মাসি তুমি ওকে ধরে থাক। আমার বাবার মৃত্যু কি ভাবে হয়েছিল?
…….এক্সিডেন্ট, এই প্রশ্ন কেন করছ? পূবা একটু অসহিস্নু কন্ঠে বলল। একটু চুপ করে দিপু পূবা আর সঞ্জীবের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে আস্তে কিন্তু দৃড় ভাবে
…….না এক্সিডেন্ট না। এক হজমিয়ালা , রাম লগন এক্সিডেন্ট টা দেখেছিল। আমি তার সাথে দেখা করেছিলাম, সে আমাকে বলেছে যে গাড়ি চালাচ্ছিল, সে ধাক্কা মেরে বলে উঠেছিল “সালা শুয়ার কি বাচ্চা “, তার পাশে এক সুন্দরী মহিলা বসে ছিলেন , তিনি বলে উঠছিলেন ” সনু এ তুম ক্যা কিয়া , তুমি ওকে মারলে কেন?” গাড়ির শেষ দুটো নম্বর ছিল ৩৩।আমি খোজ নিয়ে জেনেছি ওই সাদা রঙের এম্বাসেডর গাড়ি , যার শেষ দুটো নম্বর ৩৩ ছিল, তার মালিক সঞ্জীব মালহোত্রা। সঞ্জীব বাবু আপনি কি কোনো আলোকপাত করতে পারবেন? আপনার ঠিকানা আর গাড়ির মালিকের ঠিকানা একই , আপনি কি বলেন? আপনি তো আপনার স্বামী কে সনু বলেই ডাকেন তাই না? আপনি যখন আমাদের বাড়ি এসেছিলেন তখন আপনি একেবারেই ভেঙ্গে পরেছিলেন কিন্তু আপনার তো তখন জানার কথা না যে বাবা মারা গেছেন, কেন ভেঙ্গে পরেছিলেন ?

চলবে —————————



from বিদ্যুৎ রায় চটি গল্প কালেকশন লিমিটেড https://ift.tt/MdYKn1R
via BanglaChoti

Comments