কাজলদিঘী (পঞ্চদশ কিস্তি)

কাজলদিঘী

BY- জ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়

পঞ্চদশ কিস্তি
—————————

ঘরে এসে দেখলাম, একটা হুলুস্থূলুস কান্ড চলছে। আমি হিমাংশুকে বললাম
-দে কোথায় সই করতে হবে।
হিমাংশু দেখিয়ে দিলো, সই করে দিলাম, রেজিস্টারার ম্যাডাম তার সাঙ্গপাঙ্গরা ঘরেই ছিলেন, সব কাজ ওখানেই হয়ে গেলো। সত্যি সব গল্পের মতোই মনে হচ্ছে আমার কাছে।
ভাবিনি এত সহজে ওরা ব্যাপারটা মেনে নেবে।

না মানলে অবশ্য আমি মানতে বাধ্য করাতাম। সেই ডকুমেন্টসও আমি রেডি রেখেছিলাম।

নিজের জায়গায় বসলাম। মলের দিকে তাকিয়ে বললাম
-মনে কিছু করবেন না মল সাহেব। গত পাঁচ বছরে ব-কলমে অনেক কামিয়েছেন, আমি তাতে হাত দিলাম না। খুব সামান্যই নিলাম আপনার কাছ থেকে, আমার ভাগটা এখানে এসে বুঝিয়ে দেবেন, আমি আপনার কাছে কোনদিন যাবো না। যদি যাই কেড়ে কুরে নেবো। আপনি এখন আসুন, আজ থেকে আপনি আমাদের হাউসের বন্ধু।
-আমার কাগজপত্র।
-যেখান থেকে নিয়ে এসেছিলাম। সেখানেই রেখে দেবো।
মল আমার দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে রইলো।
-আমারতো প্রচুর লস হলো।
-আমি কিন্তু লাস্ট ফাইভ ইয়ার্সের ক্লেইম করিনি।
যাদের কাছ থেকে শেয়ারটা আমার নামে ট্রান্সফার করা হয়েছে। তারা কিছুই পায়নি।
-আমি বুঝতে পারছি আপনি এখন অনেক কিছু করতে পারেন।
-সবই যখন বোঝেন, তাহলে কাঁদুনি গেয়ে লাভ, আসুন আপনি বাকিটা সেরে ফেলি।
মল গট গট করে বেরিয়ে গেলো।
-সনাতনবাবু, কিংশুকবাবু, অরিন্দমবাবু আপনাদের টাকাটা।
-স্যার কিছু টাকা খরচ করে ফেলেছি, যেটা আছে সেটা কালকে দিয়ে দেবো। কিংশুক বললো।
-আপনারা সব ভালো ভালো ঘরের ছেলে এসব ঘোটালাতে জড়ালেন কেনো।
সবার মাথা নত।
আপনাদের সঙ্গে মিত্রার বাড়িতে আমার প্রথম সাক্ষাতে এরকম একটা কিছু ঘটতে পারে তার ইংগিত দিয়েছিলাম।

কেউ আর মাথা তোলে না।

-সনাতন বাবু আপনি বয়স্ক মানুষ এ কি করলেন।
সনাতন বাবু কিছু বললেন না। মাথা নীচু করে বসে আছেন।
-সুনীতদা।
-তুই আর কিছু বলিসনা অনি। এই কদিনে বাড়িতে, বাড়ির বাইরে, অফিসে, অনেক কিছু শুনেছি আর বলিস না।
-এইবার কাজটা কি ঠিক মতো হবে।
-কথা দিচ্ছি, আমার এখতিয়ারের বাইরে আমি কোনোদিন যাবো না।
-তোমার আর চম্পকবাবুর নতুন কাগজের তাহলে কি হবে।
সবাই চুপচাপ।
-বলো। বলতে হবে তোমাদের, এদের সকলের সামনে।
-তুইতো মলের কাছ থেকে সব লিখিয়ে নিলি।
-এই মেয়েটাকে ঠকাতে তোমাদের ইচ্ছে হলো।  যে তোমাকে নিজের আত্মীয় ভেবে সমস্ত দায়িত্ব দিয়েছিল। তার সম্বন্ধে নোংরা স্ক্যান্ডেল ছড়াতেও তোমাদের মুখে বাধেনি। আজও হাউসের চারপাশে কান পাতলে হাল্কা আওয়াজ শুনতে পাই।

চম্পকদা আপনি আমার পেছনে ফেউ লাগিয়েছিলেন!

দু-জনেই চুপচাপ।

-কতো টাকা দেনা করেছো এই মেয়েটার? তুমি না ওর আত্মীয়!
-আমার ভুল হয়েছে।
-সাত খুন মাপ।
-চম্পকদা, কমিশনটা ২০ কিংবা ২৫ নয় ১৩ পার্সেন্ট এটা ঠিক।
-হ্যাঁ।
-আমার কিন্তু কামিং ৬ মাসে ৩০০ কোটি চাই। কোথা থেকে আসবে আমি জানি না।
-আমি পারবো না।
-না পরলে তোমার সম্পত্তিগুলো লিখে দিতে হবে।
চুপচাপ।
-আমি আপনাদের কামিং থ্রি মান্থের জন্য একশো কুড়ি কোটি টাকার এ্যাড দেব। বাকি একশো আশি কোটি আপনারা জোগাড় করতে পারবেন?

কেউ যেন চম্পকদার গালে একটা থাপ্পর মারল। মাথা তুললো চম্পকদা। ফ্যাল ফ্যাল করে আমার দিকে তাকিয়ে।

সনাতনবাবু চশমাটা চোখ থেকে খুলে আমার দিকে খালি চোখে তাকাল।

-চেষ্টা করবো।
ফাইলটা খুলে পাঁচটা চিঠি এগিয়ে দিলাম।

-এই নাও ১২০ কোটির ডিল। কাগজটা চম্পকদার দিকে ছুঁড়ে দিলাম।
চম্পকদা আমার মুখের দিকে তাকিয়ে।

এটা জেরক্স অরিজিন্যাল আমার পকেটে।

মিত্রা আমার দিকে তাকিয়ে আছে। সবাই কেমন ভ্যাবাচাকা খেয়ে গেছে। অমিতাভদা নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলেন না,চেয়ার ছেড়ে উঠে এসে  আমাকে জড়িয়ে ধরে সবার সামনে আমার কপালে চুমু খেলেন।
আমি দাদার মুখের দিকে তাকিয়ে। হাসি হাসি মুখে প্রশান্তির ছোঁয়া।
-এবার তোমরা আমায় শাস্তি দিতে পার, আমি এই সাতদিনে অনেক অপরাধ করেছি, আজ স্বীকার করছি এই সব কান্ড কারখানা করার জন্য, আমি এই হাউস থেকে দুটো জিনিষ চুরি করেছি। একটা প্যাড, আর একটা স্ট্যাম্প, বাকি একটা ডিরেক্টরের স্ট্যাম্প আমি বানিয়ে নিয়েছিলাম। অন্যায় করেছি।
ওরা সবাই চুপচাপ।
হিমাংশুর দিকে তাকিয়ে বললাম
-কাগজগুলো গুছিয়ে নিয়ে দাদার বাড়িতে পৌঁছে দিবি, আমি রাতে ভালো করে একবার দেখে নেবো।
আমি উঠে বেরিয়ে চলে এলাম। দাদা, মিত্রা, মল্লিকদা তিনজনে একসঙ্গে অনি বলে ডেকে উঠলো। আমি পেছন ফিরে তাকালাম না।
তরতর করে সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে এলাম।

কে আমার দিকে তাকিয়ে আছে কে তাকিয়ে নেই কোনও খেয়ালই করলাম না।

বড় রাস্তায় এসে একটা ট্যাক্সি ধরলাম।

সোজা চলে এলাম দামিনী মাসির কাছে। ও পাড়ায় কম বেশি সবাই আমাকে চেনে, তাই কেউ বিরক্ত করে না, আমি ওপরের ঘরে আসতে দেখলাম দামিনী মাসির ঘরে তালা। পাশের ঘর থেকে একটা মেয়ে বেরিয়ে এলো, এপারার মেয়েদের যেমন দেখতে হয়, এই দুপুর বেলাতেও সেজেগুজে অপেক্ষা করছে, আমায় কাছে এসে বললো, দাদা তুমি চলো, আমার ঘরে, মাসি কাছাকাছি কোথাও গেছে, এখুনি চলে আসবে। একটু ইতস্ততঃ করছিলাম, তুমি চলো না, এখন কেউ আসবে না আমার কাছে, এলে ভাগিয়ে দেবো। ও আমার হাতটা ধরে টানা টানি করছিলো। ওর গলা শুনে পাশের ঘরগুলো থেকে আরো কয়েকটা মেয়ে বেরিয়ে এলো। আরে অনিদা তুমি এই সময়, কিছু একটা হয়েছে।
-নারে এমনি এসেছিলাম মাসির কাছে।
-লক্ষ্মী, মাসি না আসা পযর্ন্ত তোর ঘরে নিয়ে গিয়ে বসা অনিদাকে।
-কখন থেকে বলছি কিছুতেই যাবে না।
-ঠিক আছে চলো ।
ঘরটা আগের থেক অনেক বেশি ডেকোরেটেড, তার মানে লক্ষ্মীর খরিদ্দারদের মাল করি ভালই, দেখলাম এসিও লাগানো আছে, এই ঘরটা একসময় মেরিনা বলে একটা মেয়ে থাকতো, লক্ষ্ণৌ থেকে এসেছিলো, ইসলাম ভাই এই মেয়েটির ঘরে প্রতিদিন আসতো, সেখান থেকেই পরিচয়, তারপর মেয়েটি একদিন মার্ডার হয়ে গেলো, কি করে হলো কেনো হলো, তা জানি না। সেই কটা দিন ইসলাম ভাই পাগলের মতো হয়ে গেছিলো, মেয়েটি ইসলাম ভাইকে ভালোবেসে ফেলেছিলো, ইসলাম ভাইও মেয়েটিকে ভালোবেসে ফেলেছিলো আমি মদ এনে দিতাম, তার সঙ্গে আনুসাঙ্গিক চাট।
তখন আমি সবেমাত্র সাংবাদিকতায় ঢুকেছি। ইউনিভার্সিটিতে জার্নালিজম নিয়ে পরছি। হোস্টেল পাই নি টাকার অভাবে।
কলকাতার রাস্তাঘাট সেইরকম একটা চিনতাম না।  চেনা গন্ডির বাইরে খুব কমই পা রেখেছি। কম পয়সায় একটু থাকার আশ্রয় খুঁজতে খুঁজতে একদিন এই পাড়ায় চলে এসেছিলাম।

একটি মেয়ে আমাকে হাত ধরে ঘরে ঢুকিয়েছিলো, তারপর যা হয়, আমি ভয় পেয়ে চেঁচামিচি করতে দামিনী মাসি এসেছিলো, আমার মুখটা দেখে দামিনী মাসির কি মনে হয়েছিলো জানি না, আমাকে নিজের ঘরে নিয়ে গেলেন, বললেন কেনো এসেছিলাম। আমি মাসিকে মিথ্যে কথা বলিনি। সব সত্যি বলেছিলাম, আমি পড়াশুনো করছি, হোস্টেল ছেড়ে দিতে হবে, মেয়েটিকে রাস্তায় দেখা হতে বললাম, আমায় একটা ঘর জোগাড় করে দিতে পারেন, ও নিয়ে এসে….. সেইদিন থেকে দামিনীমাসি নিজের ঘরের এক কোনে থাকার জায়গা করে দিয়েছিলেন, প্রথম কয় মাস সেখানে ছিলাম, তারপর ছাদের ঘরে। যখন রোজগার করতে পারলাম, তখন দামিনী মাসিকে ভাড়া দিতাম। তাও সবটা নয়।

টিউশনি করে নিজের পেট চালিয়েছি, সেই সময় এই পাড়ার বহু মেয়ের ছেলে-মেয়েদের আমি পড়াতাম, একসময় মাস্টার মশাই উপাধিতেও ভূষিত হয়ে পরেছিলাম।মাস্টারের আড়ালে আমার সত্যি কারের নামটাই চাপা পড়েগেছিল।

  তারপর একদিন অমিতাভদা নিয়ে গেলেন তাঁর বাড়িতে। না আমার কোনো অসুবিধে হয় নি, প্রথম প্রথম একটা সেকি ভাব ছিলো তারপর সব অভ্যাস হয়ে গেছিলো। সত্যি কথা বলতে কি এদের এখানে এলে আমার মধ্যে কোনোদিন সেক্স ভাবটাই জাগতো না, কেনো জাগতো না বলতে পারবো না, আমি এপাড়ার গুড বয় হিসাবেই ছিলাম।

-কিরে তুই এই সময়। দামিনী মাসি।
-তোমার সঙ্গে দেখা করতে এলাম।
-ও বুঝেছি, মক্কেলটা বলেছে বুঝি।
মাথা নাড়লাম, হ্যাঁরে লক্ষ্মী কোথায় গেলোরে?
-কেনো? একটি মেয়ে কাছে এগিয়ে এসে বললো।
-ছেলেটাকে একা বসিয়ে দিয়ে কোথায় মারাতে গেছে।
-ওই ঘরে আছে।
-দেখলাম ছুটতে ছুটতে লক্ষ্মী এলো।
-খদ্দের এসেছিলো?
-না।
-তাহলে?
মেয়েটি মাথা নীচু করে চুপচাপ।
-ছেলটাকে একটু জলটল দিয়েছিস।
-না মানে।
-ও খদ্দের নয় বলে।
-দেখলে অনিদা দেখলে। আমি তোমাকে জিজ্ঞাসা করিনি বলো। লক্ষী আমার দিকে তাকিয়ে বলে উঠল।
-তুমি বৃথা রাগ করছো মাসি।
-তুই থাম। সব সময় পোঁয়ায় কুটকুটানি, দেবো একদিন লঙ্কা ডলে বুঝবি। তোর বাবু এসেছিলো?
-না।
-এলে ধোন চুষে আগে নোট নিবি। তারপর কাপড় খুলবি।
মাসি আমার দিকে তাকাল।
আয় অনি, এদের শেখাতে শেখাতেই শেষ হয়ে গেলাম।
মাসির ঘরে গেলাম।
কোথায় গেছিলে?

৯ নম্বরে।

কেন?

তোকে শুনতে হবে না।

ঠিক আছে বলতে হবে না।

খাটে বসে মাসিকে সব বললাম।

-এবার অনি তুই মালিক হলি। আমার ভীষণ ভালো লাগছে, তুই হচ্ছিস আসল হীরে,
আমি মাসীকে প্রণাম করলাম।

থাক থাক।

তুমি খুশী।

খুশী কি রে। ওই কয় মাসে তুই এ পাড়ায় থেকে বয়ে যেতে পারতিস। যাস নি। তোর লক্ষে অবিচল ছিলি। তোকে সেই সময় আমি অনেক ভাবে বাজিয়েছি। তুই বাজিস নি।

এবার আমার ছেলেটার একটু ব্যবস্থা করে দে।
-বলো, কি করতে হবে?
-আর কতদিন মদ আনবে, যে কোন একটা কাজ। কতো কাজ আছে তোর অফিসে।
-তুমি ভজুকে ডাকো।
-এখুনি?
-হ্যাঁ। ওর জন্য কিছু করতে পারলে, আমারও ভালো লাগবে।
দামিনী মাসি গলা হাঁকরে লক্ষ্মীকে একবার ডাকলো, লক্ষ্মী ছুটে চলে এলো, আঁচলের গিঁট খুলে লক্ষ্মীকে একটা পাঁচশো টাকার নোট দিয়ে বললো, মিষ্টি নিয়ে আয়, আমি আমার বাবুকে খাওয়াবো। আমার বাবুকে দেখেছিস, তোদের বাবুদের মতো নয়।
লক্ষ্মী হাসছে, আমিও হাসলাম।
-মাসি কম করে নিয়ে আসতে বলো।
-কেনো রে, তোর কি চিনি হয়েছে।
-ওঃ তোমার সঙ্গে পারা যাবে না। আমি হাসছি।
-পারবি কি করে। ষোলো বছরে এসেছিলাম। এখন ছেচল্লিশ। দুদিন পর মরে যাব। তিরিশ বছর এই এঁদো গলিতে কাটিয়ে দিলাম।

মাসি লক্ষীর দিকে তাকাল।

লক্ষী ভজুকে দেখলে একবার পাঠিয়ে দিস।

লক্ষ্মী কোমর দোলাতে দোলাতে চলে গেলো।
-তুই বোস একবার রাউন্ড মেরে আসি।
দামিনী মাসি কার ঘরে কে আছে দেখতে গেলো। না হলে পয়সা মার যাবে। ভজু দামিনী মাসির কত নম্বর ছেলে, দামিনী মাসি নিজেই জানে না। তবে ভজু একটু এ্যাবনরমাল বলে দামিনী মাসি নিজের কাছে রেখে দিয়েছে। শুনেছিলাম দামিনী মাসির নাকি গোটা পনেরো ছেলে মেয়ে, তখন সেই ভাবে প্রোটেকশন ছিলো না বলে, এতো ছেলে মেয়ে, এখন তো কত প্রোটেকশন। ঘরে ঢুকে ভজু আমাকে দেখে নাচানাচি শুরু করে দিলো।
-পয়সা দাও।
-দেবো, তুই আমার কাছে থাকবি।
ভজুর সে কি আনন্দ, আমায় নিয়ে যাবে, আমি যাবো। মা মারে জানো, খেতে দেয় না।
ভজু আমার থেকে বছর তিনেকের ছোট, ব্রেনটা ঠিক মতো ডেভেলপ করেনি। কিন্তু ও সব বোঝে, এ তল্লাটে তুমি খাটতে পারলে খাবার পাবে, না হলে তোমায় ক্রিমিকিটের মতো মরে পরে থাকতে হবে। এখানে কেউ কারুর নয়। আমার কপাল ভালো, আমি এখানে টিঁকে গেছিলাম।
লক্ষ্মী প্লেটে করে খাবার সাজিয়ে নিয়ে এলো। প্রায় ১০ রকমের মিষ্টি। পেছন পেছন মাসি ঢুকলো
-এই তো নাংয়ের মতো সাজিয়ে দিয়েছিস। এবার ঠিক আছে।
অনিদার সামনে একটু ভালো করে কথা বলতে পারো না। লক্ষী ঝাঁজিয়ে উঠলো।

মাসি হেসে লক্ষীর গাল টিপে দিল।

-মাসি এতো খেতে পারবো না। লক্ষ্মী তুমি কাছে এসো।
লক্ষ্মী কিছুতেই আসবে না।
-তুমি এসো না, আমি বলছি মাসি তোমায় কিছু বলবে না। আমি লক্ষ্মীকে দুটো, ভজুকে দুটো মাসিকে দুটো দিয়ে নিজে খেলাম। আসার সময় মাসির হাতে তিনটে হাজার টাকার নোট গুঁজে দিলাম। মাসির চোখ চক চক করে উঠলো, লক্ষ্মীকে দেখিয়ে দেখিয়ে বললো, দেখ গতর না দিয়ে ইনকাম, পারবি।
আমি মাসির দিকে তাকিয়ে বললাম, তুমি থামবে।
-ভজুর কি করলি।
-ভজু আমার সঙ্গে থাকবে বলেছে।
-কবে নিয়ে যাবি।
-তুমি আমাকে মাস খানেক সময় দাও। তবে ভজু আজ থেকেই আমার কাছে কাজ করছে ধরে নাও।
-সে কি রকম বাপু।
-উঃ তুমি এটা নিয়ে ভাবছো কেনো। আমি আগামী সপ্তাহে একবার আসবো। ফোন নং তো রইলো।
-ওরে ও লক্ষ্মী, অনি শিব ঠাকুররে শিব ঠাকুর, একটা পেন্নাম ঠোক অন্ততঃ।
মেয়েটা ঠক করে আমাকে পেন্নাম করলো।
আমি ভজুকে বললাম চল।
-এখন?
-না এখন না আগামী সপ্তাহে।
-তুমি মাকে বলে যাও আমাকে যেন না মারে।
-খানকির ছেলে তোমায় পূজো করবে।
-ওঃ মাসি।
সিঁড়ির দিকে পা বারালাম। মাসি ভজু পেছন পেছন এলো।
নিচে চলে এলাম। সিঁড়ি দিয়ে আসার সময় দেখলাম, অন্ততঃ প্রায় কুড়ি জোড়া চোখ আমার দিকে জুল জুল করে চেয়ে আছে।
তুই এখন কোথায় যাবি?

একটু নিউটাউনের দিকে যাব।

কার কাছে?

একটা মেয়ের কাছে।

মাসি মুখ টিপে হাসলো।

হাসছে কেন?

হাসি পেল তাই।

সে তুমি যাই ভাবো।

আমি কি ভাববো। তোকে আমার যাচাই করা হয়ে গেছে।

যাও ওপরে যাও।

আবার কবে আসবি?

কয়েকটা কাজ আছে সেরে নিই। আগামী সপ্তাহে এসে ভজুকে নিয়ে যাব।

কোথায়?

দাদার বাড়িতে।

তাহলে খুব ভালো হয়।

তোমাকে আর ভজুর ব্যাপার নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। ও বড়োমা, ছোটোমার কাছে থাকবে। দুজনেই বাড়িতে সারাটা দিন একা থাকে।

মাসি আমার হাতটা ধরে ফেললো। মুখের দিকে তাকালাম। চোখটা ছল ছলে।

এরকম করলে আর আসবো না।

মাসি মাথা নিচু করে নিল।

এবার ওপরে যাও।

আমি রাস্তায় নেমে এলাম। মাসি আমার পাশে।

নিচে এসে টিনাকে ফোন করলাম।
-হ্যাঁ বলো অনিদা।
-তুমি কোথায়?
-বাড়িতে।
-অফিসে যাও নি?
-না।
-শরীর খারাপ?
-সব দিন অফিস যেতে ভালো লাগে না।
-আসবো নাকি?
-সত্যি।
-সত্যি নাতো কি, মিথ্যে।
-চলে এসো।
-আজকে থেকে ক্লাস করাবে।
-অবশ্যই।

মাসির কাছ থেকে বিদায় নিয়ে গলি থেকে রাজপথে এসে উঠলাম।
একটা ট্যাক্সি ধরলাম। খুব কম করে ঘন্টা খানেক সময় লাগবে যেতে।

ট্যাক্সিতে উঠে প্রথমে বড়মাকে ফোনে ধরলাম, ফোন ধরেই বড়মা বললেন
-কিরে অনি কি হয়েছে।
-কি করছো।
-খেতে বসবো।
-এতো বেলায়।
-আমায় কে বেড়ে দেবে বল। নিজেরটা নিজে বেড়ে নিতে হয়।
-তোমার আমার একি অবস্থা।
-তুই খেয়েছিস।
-না এখনো জোটে নি।
-চলে আয় একসঙ্গে খাবো।
-তুমি অনিকে এত ভালোবাসো কেনো বলোতো।
-অনি যে আমার পেটের ছেলে নয়।
-জানো অনেক দিন পর আজ নিজেকে অনেক হাল্কা বোধ হচ্ছে।
-জানি, তোর দাদা ফোন করে সব বললো।
-কি বললো।
-শুনতে ইচ্ছে করছে।
-হুঁ।
-চলে আয়।
-এখন না রাতে যাবো।
-তুই এখন কোথায়।
-ট্যাক্সিতে, একটা কাজে যাচ্ছি।
-খালি কাজ কাজ কাজ, তোর আর তোর দাদার কাজ একটা ম্যানিয়া।
-মিত্রা ফোন করেছিলো।
-হ্যাঁ।
চুপচাপ।
-কথা বলছনা কেনো।
-তুই ওকে বাঁচিয়ে দিলি।
-শুধু ওকে নয়, সমস্ত কাগজের স্টাফকে। এইবার বলো, এই সাতদিন তোমার সঙ্গে ঠিক মতো কথা বলিনি বলে তুমি এখন কষ্ট পাচ্ছ।
-একবারে না।
-তাহলে সাতখুন মাপ।
-ওরে শয়তান, তুই ঘুরিয়ে কথা আদায় করছিস।
-তোমার কাছ থেকে করবো নাতো কার কাছ থেকে করবো।
-চলে আয় না।
-না, অনেক ঋণ করেছি এক একে শোধ করতে হবে। রাতে যাবো।
-তখন তুই তোর দাদার সঙ্গে কথা বলিস নি।
-ভালো লাগছিলো না। বিশ্বাস করো, কারুর সঙ্গে কথা বলতে ভালো লাগছিলো না।
-তোর দাদা কষ্ট পেয়েছে।
-রাতে গিয়ে সব ঠিক করে দেবো।
-রাতে কি খাবি।
-তোমায় কিছু করতে হবে না। আমি কিনে নিয়ে যাবো।
-না কেনা কিনির দরকার নেই, আমি রান্না করবো।
-ছোট কোথায়।
-ব্যাঙ্কে গেছে।
-আচ্ছা।
ফোনটা কেটে দিলাম, হিমাংশুকে একটা ফোন করলাম, ও বললো সব ঠিক আছে। মল তোর ওপর একটা রিভেঞ্জ নিতে পারে।

হাসতে হাসতে বললাম, ওর আর একটা ডকুমেন্টস আমার কাছে আছে, সেটা যদি শো করাই ওকে ভারতের পাততাড়ি গুটিয়ে চলে যেতে হবে। খবরটা ওর কানে পৌঁছে দিস।
-কি বলছিস।
-আমার দয়া মায়া একটু কম। ছোট থেকে একা একা বড় হয়েছি, যাক শোন তুই এবার এ্যাকাউন্টসে হাত দে।
-কাজগুলো গুছিয়ে নিই, আগামী সপ্তাহ থেকে হাত দেবো।
-আচ্ছা।
হিমাংশুকে রেখে  সন্দীপকে ফোন করলাম।

হ্যালো।

বল খবর কি?

-গুরু এত স্মুথ কাজ অনেক দিন পর দেখছি।
-কেনো।
-কি বলবো বস, সবাই অমিতাভদার পারমিশন ছাড়া কোনো কাজই করছে না।
-তাই নাকি।
-তুই বুড়োটাকে মেরে দিবি।
-কেনো।
-এখনো দেখছি, চম্পকদা, সুনীতদা, ম্যানেজমেন্টের সব দাদাকে ঘিরে বসে আছে।
-গম্ভীর সব?
-না রে হাসাহাসি করছে। সেই আগের অবস্থা।
-এনজয় কর।
সন্দীপ হো হো করো হেসে উঠলো। তুই কোথায়।
-সোনাগাছিতে।
-ভ্যাট।
-একটু খোঁজ খবর নে জানতে পারবি।
-ঠিক আছে, কিন্তু আমার এই বুদ্ধিতে কুলোবে না।
হাসলাম।
-তোর চাকরি পাকা।
-হ্যাঁ গুরু তোমার দয়ায় টেনশন মুক্ত হলাম।
-ঠিক আছে। রাখছি।
মিত্রাকে একটা ছোট্ট ম্যাসেজ করলাম, আমি রাত ৮টার মধ্যে অমিতাভদার বাড়ি ঢুকছি, অবশ্যই চলে আসবি।

ফোনটা স্যুইচ অফ করলাম।
টিনার হাউসিং এর সামনে এসে, ট্যাক্সিটাকে ছেড়ে দিলাম। ধীর পায়ে লিফ্ট বক্সের সামনে এলাম। লিফ্ট নিচেই ছিলো আমি যথাস্থানে বোতাম টিপলাম। হুস করে ওপরে চলে এলাম। শরীরটা কেমন যেন ছেড়ে দিয়েছে। এই সাতটা দিন আমার ওপর দিয়ে একটা ঝড় বয়ে গেছে। ঝড়ে ডালপালা অক্ষত থাকলেও, তার একটা রেশ সারা শরীরে। এটা আমি বুঝতে পারছি।

টিনা দরজা খুলে আমার সামনে দাঁড়ালো। একঝলক মুক্ত বাতাস আমার চোখে মুখে ছড়িয়ে পরলো। টিনাকে আজ কালো লাগছে না। বরং ওর চোখে মুখে রং ছড়িয়ে পরেছে। আমাকে দেখে ও একটু অবাক হলো। ওর চোখ তাই বলে। মুচকি হাসলো।
-ভেতরে এসো।
আমি ভেতরে গেলাম। সোফার ওপর নিজেকে ছুঁড়ে ফেলে দিলাম।

টিনা আমার দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে। চোখের পলক পড়ছে না। আমি ওর মুখের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলাম।
-তোমার কি শরীর খারাপ অনিদা।
-না।
-তাহলে এরকম দেখতে লাগছে তোমায়!

-কই না তো!

-না। কিরকম ঝোড়ো কাকের মতো লাগছে।
তাহলে এরকম দেখতে লাগছে কেন তোমায়। অফিসের কোনো সমস্যা।
-ছিলো, মিটিয়ে দিয়েছি।
-দাঁড়াও বলেই টিনা ভেতরের ঘরে চলে গেলো। কিছুক্ষণ পর একগ্লাস এ্যাপেল জুস নিয়ে এলো।
-আগে এটা খাও।
আমি দ্বিধা করলাম না। ঘট ঘট করে সব খেয়ে নিলাম। আমার খাওয়া দেখে টিনা আমার দিকে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে রইলো। খাওয়া শেষ হতে টিনা গ্লাসটা আমার হাত থেকে নিয়ে, সেন্টার টেবিলে রেখে, আমার মুখোমুখি সোফায় বসলো।
-কি হয়েছে অনিদা, আমায় বলো।
-না কিছু হয় নি।
-তোমার চোখ মুখ বলছে, তুমি বহুরাত ঘুমোও নি।
-তা বলতে পারো। একটা বড় কাজ ছিলো, বলতে পারো একটা জট পেকে ছিল। জীবনে প্রথম মালিক হলাম কিনা।
-হেঁয়ালি রাখো।
হাসলাম। তোমার বাথরুমটা ব্যাবহার করতে পারবো।
-অবশ্যই।
-আমি স্নান করবো।
-ঠিক আছে আমি সমস্ত ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।
টিনা বাথরুমে গিয়ে সমস্ত ব্যবস্থা করে এলো।
-কি খাবে বলো।
-হাল্কা কিছু খাবো।
-লাইট করে নুডলস তৈরি করে দিই।
-দাও।
আমি বাথরুমে গেলাম। গেঞ্জি প্যান্ট খুলে নেংটো হয়ে ভাল করে স্নান করলাম। টিনার বাথরুমটা বেশ গোছানো, ছোট, কিন্তু দারুন, চারিদিক সাদা, একটু দাগ পরলেই চোখে পরে যাবে। একটু শীত শীত করছে। বুঝলাম ভেতরটার রসদ কমে এসেছে।
দরজা খুলে বেরিয়ে এলাম।
-এ কি এটা পরলে কেনো।
-কেন?।
-তোমার জন্য একটা কাপড় বার করে রেখেছি।
-থাক।
-মেয়েদের বলে পরবে না।
কাপড়টা দেখলাম -কোথায়?
-ভেতরের ঘরে।
-চিরুনিটা দাও, অনেক দিন দেওয়া হয় নি। মনে হয় চুলগুলো জট পরে যাবে।
-কত দিন কাটো নি।
-প্রায় মাস ছয়েক।
-কেটো না।
-কেনো।
-তোমাকে এই অবস্থায় বেশ ভালো লাগছে। কাটলে মুখটা ছোটো ছোটো লাগবে।
-ভাবছি পনিটেল করবো।
-এ মা, না না। একেবারে না। টিনা মুখ ভেটকালো। খাবার নিয়ে আসি।
নিয়ে এসো।
টিনা প্লেটে করে সাজিয়ে নিয়ে এলো, আমি অবাক হলাম, নুডুলসের সঙ্গে ডিম ভেজেছে, ছোট ছোট পাঁপড় ভেজেছে।
-এতো খাবো না। তুমি একটা প্লেট নিয়ে এসো।
-না তোমাকে খেতেই হবে।
-একটা প্লেট নিয়ে এসো না। আমার কথার মধ্যে মনে হয় ওজন ছিলো, টিনা রান্নাঘর থেকে প্লেট নিয়ে এলো।
দুটো ভাগ করো, সমান মাপে, যদি কম বেশি হয় কমটা আমি খাবো।
-উঃ তুমি পারোও বটে।
টিনা আমার অপজিট সোফায় বসে, খাবার ভাগ করলো, দুজনে একসঙ্গে খেলাম।

টিনার সঙ্গে অনেক কথা হলো, সেই কলেজ লাইফ থেকে, ও শুনতে চাইলো সেই দিনকার তাজ হোটেলের অসমাপ্ত কথা, আমি গল্পগুলো ওকে বললাম, ও হাসতে হাসতে সোফায় গড়িয়ে পরে।
-তুমি এরকম দুষ্টু ছিলে।
-দুষ্টু ঠিক নয়, বলতে পারো ওটা বয়সের একটা ধর্ম, তখন নতুন করে জগত সংসারকে চিনতে শিখছি, একটা লিডারশিপ পাওয়ার ইচ্ছে মনের মধ্যে সব সময় বাসা বেঁধে থাকতো। সবার থাকে। আমারও ছিল। মনের মধ্যে সব সময় ‘নেতা হব’ এই বাসনা পোষণ করে রাখতাম।
-তাই বলে এরকম হ্যারাসমেন্ট। যাক আমার ভাগ্য ভালো কালো বলে তোমার হাত থেকে রেহাই পেয়ে গেছি।
-তুমি কালো বলে নিজেকে ছোট করছো কেনো।
-না গো অনিদা, ঠিক বলছি।
কথা ঘোরানোর চেষ্টা করলাম।
-আচ্ছা টিনা তুমি য়ে পোষাকটা পরে আছো এটার নাম কি।
-কেন?
-এমনি ইচ্ছে হলো তাই জিজ্ঞাসা করলাম।
-তোমার সব জিজ্ঞাসার মধ্যে একটা কারণ থাকে। খুব অড লুকিং লাগছে?
-না বাড়িতে পরার ক্ষেত্রে ঠিক আছে।
-সত্যি করে বলো না। এখন কিন্তু মেয়েরা এই পোষাক পরে বাইরেও বেরোয়।
-তোমার কথা হয়তো ঠিক, কিন্তু আমার চোখে পরে না।
-ওপরেরটা সাধারণ টপ, নিচেরটাকে বলে হারেম প্যান্ট।
-সেটা আবার কি।
-বলতে পারবো না, বাদশাহী আমলে হারেমে বাঁদীরা হয়তো এরকম পোষাক পরতো।
হাসলাম।
-হাসলে কেনো?
ওর দিকে মিট মিট করে তাকালাম।
-উঃ তোমার মাথা বটে, কি ইঙ্গিত করছো বুঝতে পেরেছি। আমি এখুনি ছেড়ে ফেলছি।
-না না, আমার কথায় ছেড়ো না। সবার পছন্দতো সমান নয়।
খাওয়া শেষ হলো, টিনা প্লেটগুলো তুলে নিয়ে গেলো, শরীরটা এবার ছেড়ে দিয়েছে। ঘুমতে পারলে ভালো হতো, গোটা পাঁচেক বড় বড় হাই উঠলো, একবার ভাবলাম, টিনাকে বলি তোমার ভেতর ঘরের খাটটা একটু ছেড়ে দাও। একটু ঘুমোই।
তারপর ভাবলাম না বেশি বিরক্ত করা হয়ে যাবে, তার থেকে বরং এই সোফাটাই বেশ।
টিনা ভেতর থেকে বাইরে এলো।
কিগো তোমার চোখটা এরকম লাল কেনো।
-ভীষণ ঘুম পাচ্ছে।
-চলো আমার খাটে শোবে চলো।
আমি টিনার দিকে একদৃষ্টে তাকালাম, ওকে দেখে খুব খুশি মনে হচ্ছে, দেবাশিস ঠিক কথা বলেছে, মেয়েটা তোকে ভীষণ ভালোবাসে, হয়তো ঠিক কিন্তু সব ভালোবাসার পরিসমাপ্তি হয় না, আমি তো দেবাশীষের মুখ থেকেই প্রথম শুনেছিলাম, টিনা আমায় কলেজ লাইফে ভালোবেসেছিলো। এখনোকি ও ভালোবাসে?
-কি ভাবছো।
-তোমার কাছে খেতে চাইলাম, তুমি খেতে দিলে, আবার শুতে চাইবো, হয়তো শুতেও দেবে। মানুষের মন চাহিদার শেষ নেই ভুল করে যদি আর কিছু চেয়ে বসি, তখন কি করবে?
-চেয়েই দেখো না দিতে পারি কিনা। টিনা মুখটা নীচু করে ফেললো।
-চলো, তোমার খাটটা কয়েক ঘন্টার জন্য একটু দখল করি।
উঠে দাঁড়াতে গিয়ে মাথাটা কেমন ঘুরে গেলো, টাল খেয়ে আবার সোফায় বসে পরলাম, টিনা আমার হাতটা ধরে ফেললো
-অনিদা শরীর খারাপ লাগছে। ওর চোখে মুখে ভয়ের ছাপ।
-না। ঠিক আছি।
আমি ওর পেছন পেছন, ওর বেডরুমে ঢুকলাম, খুব ছিমছাম ডবল বেডের একটা খাট, মাথার শিয়রে ছোট টেবিলে কম্পিউটার, একটা চেয়ার একটা আলমারি, পায়ের দিকে একটা ওয়ারড্রব, একটা দেয়াল আলমারি। অবাক হলাম এইটুকু ফ্ল্যাটে দুটো বাথরুম, একটা এই ঘরের সঙ্গে আর একটা বসার ঘরের সঙ্গে, ডানদিকে ছোট একটা ব্যালকনি। শরীর আর বইছে না, শুতে পারলে বাঁচি। টিনা খুব তাড়াতাড়ি বিছানাটা গুছিয়ে দিয়ে একটা বালিশ বার করে দিলো।
-প্যান্ট গেঞ্জিটা খুলে নেবে, আমার একটা কাপড় দিই। অনেকটা ফ্রি লাগবে।
হাসলাম।
-লজ্জা পাওয়ার কিছু নেই। অনেকটা ফ্রি লাগবে।
টিনা আমার মনের কথা মনে হয় বুঝতে পারলো। আমি গেঞ্জি প্যান্ট খুলে ওর একটা কাপড় পরলাম, খালি জাঙ্গিয়াটা খুললাম না। টিনা পাখাটা হাল্কাভাবে খুললো।
-তুমি শোও আমি তোমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি।
টিনার দিকে বোকার মতো তাকিয়ে হেসে ফেললাম। সত্যি টিনা কি করে আমার মনের কথা পট পট করে বলে দিচ্ছে।
আমি দেরি করলাম না, বিছানায় শুয়ে পরলাম, টিনা আমার মাথার শিয়রে বসে ওর শরু শরু নরম আঙুল আমার মাথায় রাখলো। যেনো পায়রার গায়ে আলতো করে কেউ হাত বোলাচ্ছে, টিনার গা থেকে একটা হাল্কা গন্ধ ভেসে আসছে, কিন্তু এটা কোনো সেন্টের গন্ধ নয়, এটা টিনার গায়ের নিজস্ব গন্ধ, আমায় মাতাল করে দিচ্ছে, আমার চোখে সারা রাজ্যের ঘুম মিহি কুয়াশার মতো ঝড়ে পরছে। এরপর জানিনা কি হয়েছে।

হঠাত একটা বিশ্রী স্বপ্নে ঘুমটা ভেঙে গেলো। কিছুতেই মনে করতে পারছিনা, কার যেন শ্মশান যাত্রা হচ্ছে, সারা শরীর অবশ, নড়া চড়া করতে পারছি না, মাথা ঘুরিয়ে চারদিক চাইলাম, ঘরে আমি একা। বারান্দার দরজাটা হাট করে খোলা, বিকেলের নরম রোদ বিছানায় এসে পরেছে, আমার গায়ে ধব ধবে সাদা একটা বিছানার চাদর, প্রথম সেন্স আসতেই নিজের কাপড়টা দেখলাম, ঠিক ঠাক পরা আছে কিনা, যা ভেবেছি তাই, গিঁট খুলে সে বিছানায় লোটাচ্ছে, ভাগ্যিস জাঙ্গিয়াটা পরা ছিল, তা না হলে কি কেলোর কীর্তিটাই না হতো। কিন্তু টিনা গেলো কোথায়। শুয়ে শুয়ে চাদর ঢাকা অবস্থাতেই, আগে কোমরে কাপড়টা বাঁধলাম। তারপর চাদর সরিয়ে বিছানায় উঠে বসলাম। টিনা টিনা বলে তিন-চারবার ডাকলাম, না কেউ কোথাও নেই, এইবার একটু ঘাবড়ে গেলাম, উঠে বসে রান্নাঘর বাথরুম সব দেখলাম। না টিনা কোথাও নেই। তাহলে কি টিনা, কোথাও গেলো। বাথরুমে গিয়ে মুখ হাত ধুলাম। টিনার ঘরের ঘরিটার দিকে তাকালাম, সোয়া পাঁচটা বাজে। বেলটা বেজে উঠলো, গিয়ে দেখলাম, লক করা। আবার ঘরে এসে বসলাম। বেশ কিছুক্ষণ পর দেখলাম বাইরের দরজার লক খোলার শব্দ, বেরিয়ে এলাম। দেখলাম টিনা একটা ব্যাগ হাতে ঢুকছে, সেই ঘাঘরাটা পরা, দারুণ উজ্জ্বল রং, ভীষণ সুন্দর দেখতে।
-কি হলো ঘুম ভেঙে গেলো।
কাপড় খোলা অবস্থার কথাটা মনে পরে গেলো, লজ্জায় আমার মাথা প্রায় পায়ে ঠেকে যাবার অবস্থা।
-আমি তো ভাবলাম, তুমি রাত এগারোটা বাজাবে। তাই এই ফাঁকে একটু বাজার সেরে নিলাম।
আমি টিনার দিকে তাকিয়ে হাসছি।
টিনা স্ন্টার টেবিলে ব্যাগটা নামিয়ে রেখে বসলো।
-সত্যি করে বলোতো অনিদা তোমার কি হয়েছে।
আমি সোফায় বোসলাম, টিনা আমার মুখো মুখি।
-কেনো।
-মিত্রাদির নাম করে ওরকম চেঁচাচ্ছিলে কেনো। অফিসে কি কোনো গন্ডগোল।
-না সেরকম কিছু না।
-ঘুমের ঘোরে তুমি যা বলছিলে জড়িয়ে জড়িয়ে তাতে তাই মনে হচ্ছিল। মল কে। কেন তাকে ছাড়বে না।
বুঝলাম, আমার অবচেতন মন ঘুমের ঘোরে অনেক কিছু বকেছে।
-তারপর জিতে গেছো। ব্যাপারটা কি।
আমি টিনার কথার কোন উত্তর দিলাম না।
আমি সোফা থেকে উঠে ভেতরের ঘরের খাটে এসে শুয়ে পরলাম।
টিনা আমার মাথার শিয়রে এসে বসলো। আমার মাথায় হাত রেখে বললো, তুমি কাউকে তোমার কথা বলতে পারো না। না।
আমি টিনার মুখের দিকে তাকালাম, ও একদৃষ্টে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
-বলো না বলো, বললে একটু হাল্কা হবে।
-না টিনা সব বলা যায় না।
-জানি।
-তবু যদি তোমায় কোনো হেল্প করতে পারি, ভালো লাগবে।
-তোমার সঙ্গে দেখা হওয়ার পর থেকে শুধু নিয়ে গেলাম।
-যখন চাইবো সুদে আসলে মিটিয়ে দিও।
-আমার সে ক্ষমতা নেই।
তোমার কতো ক্ষমতা আছে তা তুমি নিজেই জানো না। দাঁড়াও তোমার জন্য একটু চা বানাই।

টিনা উঠে চলে গেলো, পাখাটা ধীর লয়ে মাথার ওপর ঘুরছে, আমি চোখটা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ব্লেডটা দেখার চেষ্টা করলাম। খাট থেক রোদটা বারান্দার এক কোনে সরে গেছে। সূর্যটা এখন কমলা রংয়ের থালার মতো, বোঝা যাচ্ছে, বয়স হয়েছে। এবার ঝুপ করে ওই দিগন্তে মুখ ঢাকা দেবে।
-এত কি ভাবো। টিনা চায়ের ট্রে হাতে ঘরে ঢুকলো।
টিনার দিকে তাকিয়ে হাসলাম।
-কিছু জিজ্ঞাসা করলেই খালি একমুখ হাসিতে ভরিয়ে দাও। ওঠো।
আমি বালিসটা নিয়ে একটু ভেতর দিকে সরে শুলাম। টিনা ট্রেটা বিছানার ওপর রাখলো, চা তার সঙ্গে কাঠি ভাজা। খুব ভালো লাগলো খেতে, টিনা বার বার ঘুরিয়ে ফিরিয়ে জানতে চাইলো আমার কথা, আমিও খুব সন্তর্পনে এরিয়ে গেলাম, একথা সে কথা বলে। কখনো টিনা অভিমান ভরে আমার দিকে তাকিয়েছে, কখনো খিল খিল করে হেসে উঠেছে। চা পর্ব শেষ হতেই টিনা ট্রেটা রেখে এলো, আমি আবার বিছানায় এলিয়ে পরলাম। টিনা বারান্দার দরজাটা বন্ধ করলো, এখানে প্রচুর মশা, বন্ধ না করলে রাতে শোয়া যায় না।
-এতো উঁচুতে।
-মশার আবার উঁচু নীচু।
টিনা আমার মাথার শিয়রে এসে বসলো। আমার দিকে ঝুঁকে পরে বললো
-বললে না। আমি ওর দিকে তাকালাম
-তুমি আমার কাছে কি চাইবে বললে, চাইলে নাতো। টিনা মুচকি মুচকি হাসছে।
-তোমার কাছে চাইবার সাহস আমার নেই।
-কেনো। পাস ফিরে টিনার হাতটা ধরলাম।
-অনিদা মেয়েরা মুখ ফুটে সব জিনিষ চাইতে পারে না।
আমি টিনার চোখে চোখ রাখলাম। দেবাশীষের কথাটা মনে পরে গেলো। নিজে থেকে এগিয়ে যাবো। টিনা যদি আমাকে অন্য কিছু ভাবে।
-আমি চাইতে পারি, তুমি চাইতে পারো না।
টিনা আমার মুখ থেকে চোখ সরিয়ে নিলো।
আমি ওর থুতনিটা ধরে মুখটা তুললাম, বলো তুমি চাইলে আমি না করবো না।
টিনা আমার বুকের মধ্যে ঝাঁপিয়ে পরে মুখ লুকালো। আমি ওর খোলা চুলে হাত রাখলাম, বুকটা ভিঁজে ভিঁজে ঠেকছে। আমার বুকে মুখ লুকিয়ে টিনা ফিস ফিস করে বললো, চাইতে তো ইচ্ছে করে, কিন্তু পরের জিনিষ, নিই কি করে।
আমি বুকভরে নিঃশ্বাস নিলাম, বুকটা ফুলে উঠে আবার নেমে গেলো
-আমি পরের এটা তোমায় কে বললো।
-আমি জানি অনিদা।
-তুমি ভুল জানো। আমায় ধরে রাখার সাধ্যি কারুর নেই।
-সেই জন্য লোভ হয়, কিন্তু সেই লোভটাকে বুকের মধ্যে গলা টিপে মেরে ফেলি।
আমি টিনার মুখটা বুক থেকে তুললাম, চোখের পাতায় শিশিরের বিন্দুর মতো জল চিক চিক করছে, কালো ডাগর চোখে অনেক চাওয়া, ফোটা কমলফুল তোলার মতো আমি ওর মুখটা তুলে ধরলাম, থিরি থিরি করে ওর ঠোঁট দুটো কাঁপছে, দীঘির জলে আলো পরে কোমল ফুলের শরীর চিক চিক করছে। আমি টিনার ঠোঁটে ঠোঁট রাখলাম, গাছের পাতায় হাওয়ার মাতন, টিনা থির থির করে কেঁপে উঠলো।
কতোক্ষণ এইভাবে একে অপরের ঠোঁটের রস আস্বাদন করেছি জানি না। টিনা ডুকরে কেঁদে উঠলো।
-অনিদা…..।
আমি টিনাকে আমার বুকে টেনে নিয়ে শুয়ে পরলাম। টিনা আমার বুকে মুখ লুকিয়ে আছে, বারান্দার দিকে তাকালাম, সূর্য পাটে বসেছে।
আমার বুক থেক মুখ তুলে আবার টিনার ঠোঁটে ঠোঁট রাখলাম, টিনার নিঃশ্বাস ভারী হয়ে উঠেছে। এবার টিনা আর কোনো কথা বললো না, আমার জিভ নিয়ে খেলা শুরু করে দিলো। বুঝলাম জীবনে প্রথম ও রস আস্বাদন করছে, চোখ বন্ধ, আমার হাত ধীরে ধীরে কথা বলতে শুরু করেছে, আমি জামার ওপর দিয়েই ওর বুকে হাত দিলাম, নরম তুলোর মতো বুকটা। আমি টিনাকে বুকের আরো কাছে টেনে নিলাম, টিনা কোনো কথা বলছে না, আগুনের স্পর্শে মোম যেমন ধীরে ধীরে গলে পরে, টিনার অবস্থাও অনেকটা তাই।

আমি ওকে শরীরের সঙ্গে জাপ্টে ধরে ওর টপের পেছনের চেনটা নীচে নামিয়ে দিলাম। টিনা আমার বুকে মৃদু কামড় দিলো। আমি ওর খোলা পিঠে হাত রাখলাম। মিশকালো পিঠটা আয়নার মতো ঝকঝকে, মোলায়েম তক। কালো ব্রেসিয়ারের ফিতেটা ঢিলে করে দিলাম। টিনা আমার বুকে মুখ ঘষে না না বলছে, মুখে কোনো শব্দ নেই। আমি ওর জামাটা সামান্য তুলে ওর সুডৌল কোমলে হাত দিলাম, টিনা আবার কেঁপে উঠলো থর থর করে। আমি ওর ঠোঁটে ঠোঁট ডোবালাম।
এবার টিনা আমার ঠোঁট দুটো তীব্র ভাবে চুষতে লাগলো, আমি খুব মোলায়েম ভাবে ওর বুকে হাত বোলাচ্ছি, টিপছি, মাঝে নিপিলের চার দিকে আঙুল বুলিয়ে নিপিলটাকে নোখের আঘাতে খত-বিক্ষত করে দিচ্ছি।
টিনা আমার কাছ থেকে ছিটকে উঠে বসলো, চোখে বাঁকা চাহুনি, গ্রীবা বেঁকিয়ে না না করছে। আমি হাত বাড়িয়ে ওর বুক ছোঁয়ার চেষ্টা করলাম। টিনা আমার হাতের নাগালের বাইরে চলে গেলো।
আমি স্থানুর মতো শুয়ে রইলাম। টিনা বুকের কাছে উঠে যাওয়া জামাটা টেনে নামালো। আমি ওর গভীর নাভিমূল দেখে ফেললাম, টিনা চোখ পাকিয়ে বললো, দুষ্টু।
আমি হেসে ফেললাম।
টিনা পেছনে হাত বেঁকিয়ে খোলা চুল খোঁপা করলো, আমি হাত বাড়িয়ে ওর বুক ধরতে গেলাম, টিনা সরে গেলো। আবার চোখ পাকাচ্ছে। এ যেন বাঘ হরিণ ধরছে।
আমি ইশারায় ওকে কাছে আসতে বললাম। ও না না করছে।
আমি বিছানা থেকে উঠে নেমে আসার চেষ্টা করলাম, টিনা আমার ওপর ঝাঁপিয়ে পরলো। আমাকে জাপ্টে ধরে শুইয়ে দিয়ে আমার বুকে উঠলো।
-রাগ হলো।
-না।
-তবে।
-আমি কারুর কাছে জোর করে কিছু নিই না।
-তুমি তো জোর করো নি, আমি চেয়েছি।
টিনা বেশ ভারি, আমার দম বন্ধ হয়ে যাবার অবস্থা, মুখে কিছু বললাম না, একটু নড়েচড়ে শুলাম। টিনা আমার ঠোঁটে আঙুল রাখলো।
-তুমি ঠোঁটে লিপস্টিক লাগাও।
হাসলাম।
-তোমার ঠোঁটটা এত লাল কেনো।
-কি করবো, আমার মা নেই থাকলে হয়তো জিজ্ঞাসা করে তোমার প্রশ্নের উত্তর দিতে পারতাম।
-উঃ সব সময়……..টিনা আমার ঠোঁটে চুমু খেলো।
-তোমার ঠোঁট দুটো কামড়ে খেতে ইচ্ছে করছে।
-আমি তো বারণ করি নি।
আমি টিনার খোলা পিঠে হাত রাখলাম।
-একবারে দুষ্টুমি করবে না।
আমি দেখতে পাচ্ছি টিনার স্কার্টটা অনেকটা ওপরে উঠে এসেছে, ওর হাঁটুর নীচ থেকে অনেকটা অংশ অনাবৃত। আমি জামাটা ওপরে তুলে দিলাম। টিনার নরম বুকের স্পর্শ পেলো আমার খোলা বুক। টিনা লজ্জায় আমার ঘারের কাছে মুখ লোকালো। আমি টিনার ফোটা ফুলে হাত রেখেছি। বুঝতে পারছি আমার নুনু বাবাজি সারা দিতে শুরু করেছে। আমি টিনাকে জাপ্টে ধরে শুইয়ে দিয়ে ওর বুকে উঠো এলাম।
-ধ্যাত।
-কি হলো।
-আমার কেমন কেমন যেন লাগছে।
-সেক্সের সময় লজ্জা করতে নাই, তাহলে এর মজাটাই নষ্ট হয়ে যাবে।
-তুমি দেখবে না। না দেখে যা করার করো।
-এ মা, না দেখলে করবো কি করে।
টিনা আমার ঘাড় ধরে ওর কাঁধের কাছে চেপে ধরলো।
-তুমি এই ভাবে করো।
-তার থেকে এক কাজ করো।
-বলো।
-তুমি আমার চোখ দুটো বেঁধে দাও, বেশ তাহলে আমি কিছু দেখতে পাবো না।
-চোখ বাঁধলে তোমার মুখ ঢাকা পরে যাবে, আমি যে তোমার মুখ দেখতে পাবো না।
-তাহলে সমাধান কি তুমি বলো।
-তোমারটা খোলো আগে।
-আমার কি খুলবো বলো।
ও ইশারায় আমার ড্রয়ারের কথা বললো।
-তুমি তো কিছুই খোলো নি। আগে তুমি এটা খোলো, আমি ওর জামাটা ধরে উঁচুতে তুললাম।
ও জামাটা টেনে নামিয়ে দিয়ে বললো, ধ্যাত।
আমি হাসলাম।
-একবারে হাসবে না। আমার নাকটা ধরে টিনা নাড়িয়ে দিলো।

টিনা হাসছে, চোখ বন্ধ করো। আমি চোখ বন্ধ করলাম। টিনা জামা খুললো।
-চোখ খুলবো।
-না।
-কতোক্ষণ লাগে খুলতে।
-এবার খোলো।
আমি চোখ খুললাম, টিনা দুইহাত কাঁধের ওপর রেখে বুক ঢেকেছে, ওর কনুইদুটো ওর বুকের কাছে, আমি হাত বাড়িয়ে ধরতে যেতেই খাট থেকে নেমে গিয়ে নীচে দাঁড়ালো। বাধ্য হয়ে আমি দাঁড়িয়ে পরে খাট থেকে নীচে নামলাম। কাপড় খুলে খাটের ওপর, আমি ড্রয়ার পরে দাঁড়িয়ে আছি। টিনা খিল খিল করে হেসে উঠলো, নীচে নামলাম। টিনা একটু সরে গেলো, আমি ওকে কাছে টেনে নিলাম। হাত দুটো এখনো কাঁধের কাছে রেখে বুক ঢেকে রয়েছে, আমি হাত সরালাম, কালো পুরুষ্টু বুক, মাই নয় যেন কালো আপেল, বেশ বুঝতে পারছি, অতি সযত্নে কাউকে পুজো দেওয়ার জন্য গাছ থেকে তা পারা হয় নি। মাই-এর বোঁটা দুটো ছোটো কিন্তু বেশ ফোলা ফোলা। আমার চোখে নেশা। আমি টিনার বুকে হাত রাখলাম, টিনার দীর্ঘনিঃশ্বাস পরলো। আমি ওর ঠোঁট ছুঁলাম, তারপর গলার কাছে ঠোঁট নামিয়ে আনলাম, শেষে বুকে। আমার ঠোঁট ওর বুকের নিপিলে, জিভ দিলাম, টিনা আঃ করে উঠলো। জীবনের প্রথম পূজোর ডালি আমার জন্য টিনা সাজিয়ে রেখেছে। আমার আর একটা হাত টিনার আর একটা বুকে, আঃ। অনিদা। আমি জিভের খালায় ওকে পাগল করে তুলছি। আস্তে আস্তে নীচে নেমে এলাম। হাঁটু গেড়ে বসলাম। বুক থেকে ওর পেটে সুগভীর নাভিমূলে, টিনা আমার মাথাটা চেপে ধরেছে ওর নাভিমূলে, আমি ওর ঘাঘরাটা দাঁত দিয়ে টেনে নামাবার চেষ্টা করলাম, ইলাস্টিকটা বেশ টাইট নামলো না। আমি ঘাঘরার ওপর দিয়ে ওর পুশিতে মুখ দিলাম। টিনা ছিটকে সরে দাঁড়ালো।
-না না।
আমি চোখের ইশারায় বললাম কেনো।
-প্লীজ।
আমি কাছে আসতে বললাম ও আমার হাত ধরে দাঁড় করালো আমার বুকে মুখ লোকালো, টিনার বুক আমার তলপেটের কাছে, বুঝতে পারছি টিনা আমার মুনুতে মুখ দিয়েছে। আমি ওর পিঠে হাত বোলাতে বোলাতে ওর ঘাঘরাটা তোলার চেষ্টা করলাম। পারছি না। টিনা আমাকে জাপ্টে ধরে রয়েছে।

আমি এবার কোমরে হাত দিয়ে ঘাঘরাটা টেনে নামালাম। থাই পযর্ন্ত গিয়ে থেমে গেলো, কালো পেন্টি পরেছে টিনা, সঙ্গে সঙ্গে পুশিতে হাত দিয়ে পা জড়ো করে দাঁড়িয়েছে। আমি হেসে ফেললাম, নিজের ড্রয়ারটা কোমর থেকে টেনে নামালাম, আমার নুনু বাবাজি নাচানাচি করে উঠলো। টিনা ওই দেখে এক ঝলক তাকিয়ে মাথা নত করলো। ওর পুশি থেকে হাত সরে গেলো। আমি বসে পরে ওর ঘাঘরাটা টেনে খুলে দিলাম। উঠে দাঁড়ালাম, টিনাকে বুকে টেনে নিয়ে ঠোঁটে ঠোঁট রাখলাম, টিনা চকাত চকাত করে আমার ঠোঁট চুষছে। একটা হাত আমার নুনুতে, খামচে খামচে ধরছে। আমি পেছন থেকে ওর পেন্টির ভেতর দিয়ে পাছুতে হাত দিলাম, কি নরম, টিনা আঃ করে উঠলো। আমি ওর পেন্টিটা একটু নামিয়ে বুকে হাত দিলাম। টিনা কিছুতেই আমার মাথা নীচের দিকে করতে দিচ্ছে না। আমার ঘারটা ধরে ঝুলে পরে আমার ঠোঁট চুষছে, চোখ বন্ধ করে। আমি ওর পেন্টির ভেতর দিয়ে ওর পুশিতে হাত দিলাম, টিনা কেঁপে উঠলো। অনুভব করতে পারছি, ওর পুশিতে চুল আছে, বড় নয়, তবে আছে। মাঝখানের চেরায় তর্জনী দিয়ে, ভগাঙ্কুরে হাত দিলাম, টিনা আমার ঠোঁটে কামড় দিলো। ওর একটা হাত আমার নুনুর চামড়া সরাচ্ছে। আমি পেন্টিটাকে থাই পযর্ন্ত টেনে নামালাম। সোজা হয়ে ওকে বুকে টেনে নিলাম। টিনা নুনুটাকে ওর পুশির ওপর ঘষছে। আমি ওর নরম মাই টিপছি।

চারিদিক নিস্তব্ধ, পাখাটা মাথার ওপর বন বন করে ঘুরছে, তার শব্দ শুনতে পাচ্ছি। ঘরটা আধো অন্ধকার। পাশের ফ্ল্যাটের আলোর রেশ জানলার ভেতর দিয়ে ঘরে ছড়িয়ে পরেছে।

-চলো খাটে যাই।
টিনা চোখ বন্ধ করে আছে।
-চোখ খুলবে না।
-আমার কল্পনার সঙ্গে যদি না মেলে।
-সব কল্পনার যে মিল খুঁজে পাবে তার কি আছে।
-না অনিদা, আজ দশ বছর ধরে যে কল্পনা মনে পুষে রেখেছি, তাকে আমি নষ্ট হতে দিতে পারি না।
-তাহলে থাক।
-না অনিদা। আমার ভালোলাগাকে তুমি এভাবে নষ্ট করে দিও না।
টিনা চোখ বন্ধ করে আছে। আমি ওকে খাটে শুইয়ে দিলাম, আস্তে আস্তে টিনার প্যান্টিটা খুলে একপাশে রাখলাম। ধীরে ধীরে খাটে উঠে ওর পাশে শুলাম।
-টিনা চোখ খোলো, ঘর অন্ধকার।
-থাক।
আমি টিনার ঠোঁটে ঠোঁট রাখলাম, পুশিতে হাত দিলাম, টিনা পা দুটো দুপাশে সরিয়ে দিলো আমি ওর পায়ের মাঝখানে চলে এলাম। টিনার বুকে মুখ দিলাম, টিনা আমার মাথা ধরে রয়েছে, মুখে মৃদু শিৎকার। আমি ওর বুক থেকে নাভিমূলে। টিনার শরীর দুলে দুলে উঠছে। ওর দিকে তাকালাম, চোখ বন্ধ। আমি নাভিমূল ছেড়ে তলপেটে মুখ দিতেই টিনা উঠে বসলো
-না অনিদা এটা কোরো না। আমার হাত দুটো ধরেছে।
-কেনো।
-না। তুমি মুখ দিও না।
-প্লিজ একবার।
-না।
আমি জোর করলাম না। ওর বুকে উঠে এলাম, বুকের নিপিলে মুখ দিলাম, আস্তে করে আমার শক্ত হয়ে ওঠা নুনু, ওর পুশির ঠোঁটে ঘোষতে আরম্ভ করলাম। টিনা শুয়ে আছে, মাঝে মাঝে আমার পিঠে ওর হাত রাখছে, বুঝতে পারছি ওরা সারা শরীরে একটা আবেশ খেলা করে বেরাচ্ছে। আমি এবার হাঁটু মুরে ওর পুশির সামনে বসলাম, আন্ধকার ঘরে ওর পুশি ঠিক মতো দেখতে পাচ্ছি না। হাত দিয়ে স্পর্শ করে বুঝতে পারছি ওর পুশি ভিঁজে গেছে, আমি নুনুর চামড়াটা সরিয়ে মুন্ডিটা বার করে ওর পুশির মাঝখানে রেখে ওপর নীচ করলাম, টিনা কোমর বেঁকিয়ে উঃ আঃ করে উঠলো। নিস্তব্ধ ঘরটায় একটা পিন পরলে শব্দ হবে। আমি মনে মনে ঠিক করলাম, যা করতে হবে একবারে করতে হবে, একটু একটু করে করলে হবে না। বেশ কিছুক্ষন নুনু নিয়ে ওর পুশির সঙ্গে খেলা করলাম, টিনা শুয়ে শুয়ে মাথা দোলাচ্ছে, চোখ বন্ধ, আমি আমি আমার নুনু টিনার পুশির গর্তের মুখে রেখে দুহাতে ওর পাদুটো তুলে ধরলাম, টিনা মুখে হাত চাপা দিলো। আমি কোনো মুভ করছি না, আমার নুনুর মুন্ডি ওর পুশির মুখে, এবারে সজোরে একটা চাপ দিলাম, কতোটা গেলো দেখতে পেলাম না, টিনা মা গো করে উঠলো, আমি পা দুটো ছেড়ে দিয়ে ওর শরীরে আস্তে আস্তে ঢলে পরলাম, এবার চাপ দিচ্ছি। বুঝতে পারছি যতটুকু বাইরে আছে, তা পিছলে পিছলে ভেতরে ঢুকে যাচ্ছে। টিনার মুখে কোনো শব্দ নেই, হাত দিয়ে মুখ ঢাকা দেওয়া। আমি কোমর দোলালাম। টিনা পা দুটো জড়ো করতে চাইলো পারলো না। পা দুটো আমার পায়ের ওপর তুলে দিলো, মুখ থেকে হাত সরিয়ে আমাকে আষ্টেপৃষ্ঠে জাপ্টে ধরলো। চোখ বন্ধ।
আমি টিনার বুকে মুখ রাখলাম, বামদিকের মাই-এর নিপিলটা চুষতে আরম্ভ করলাম, কারুর মুখে কোনো কথা নেই। খালি চকাস চকাস শব্দ। আমি টিনার কানের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে ফিস ফিস করে বললাম।
-টিনা।
-উঁ।
-চোখ খুলবে না।
-টিনা চুপ।
-খুব ব্যাথা লাগছে। বার করে নেবো।
টিনা মাথা দুলিয়ে না বললো।
-তাহলে চোখ খোলো।
-তুমি চোখ বন্ধ করো।
-করেছি।
টিনা আমার মাথাটা ধরে আমার দুচোখে জিভ ছোঁয়ালো। আমার কোমর দুলে উঠলো। আঃ।
-চোখ খুলবো।
-খোলো।
টিনার চোখে চোখ রাখলাম। এই আধা অন্ধকারেও দেখতে পাচ্ছি ওর চোখে পরিতৃপ্তির হাসি।
-ভালো লাগছে।
টিনা আমায় চুমু খেলো।
-তোমার।
আমি ওর কপালে চুম্বন করলাম।
-লেগেছে।
-একটু।
-বললেনা কেনো।
-তুমি কি করতে।
-করতাম না।
-আমি যে চেয়েছিলাম।
আমি আমার ঠোঁট দিয়ে টিনার ঠোঁট স্পর্শ করলাম।
ভেতরটা ভিঁজে ভিঁজে উঠেছে। টিনার পুশির ঠোঁট দুটো টাইট হয়ে আমার নুনুকে কামড়ে ধরে আছে।
-করবো।
টিনা মাথা দোলালো।
-লাগলে বলবে।
-আচ্ছা।
আমার কোমর দুলে উঠলো। টিনার চোখ বন্ধ হলো। আমি দুহাতের ওপর ভর দিয়ে করতে শুরু করলাম, টিনা প্রথমে দুটো পা দুপাশে সরিয়ে দিলো, বেশ কিছুক্ষণ পর পা দুটো ওপরে তুললো, আবার দুপাশে সরিয়ে দিলো, আমি করে যাচ্ছি, টিনা মাথাটাকে পেছন দিকে হেলিয়ে দিয়ে ঠোঁট চাটছে, মাঝে মাঝে ঠোঁট কামড়ে ধরছে, আমি থামি নি, করে যচ্ছি, বুঝতে পারছি বেশিক্ষণ নয়। যা হয় হোক, টিনার যদি না বেরোয় না বেরোবে আমার শরীর আর টানছে না। আমি গতি বারালাম, টিনা ফিস ফিস করে মা গো বলে উঠলো, আমাকে জাপ্টে ধরে বুকে টেনে নিলো, আমার কোমর থেমে থেমে কেঁপে উঠলো। টিনা আমার পিঠে হাত দিয়ে খামচে খামচে ধরছে, আমার ঠোঁট কামরাচ্ছে, আমার নুনু কেঁপে কেঁপে, ওর পুশি ভাঁজিয়ে দিচ্ছে।

বেশ কিছুক্ষণ শুয়ে থেকে ঠোঁটে ঠোঁটে খেলা করলাম। টিনা কোনো কথা বলছে না। আমি টিনার দুচোখে আমার দুহাতের বুড়ো আঙুল রাখলাম, সামন্য জল ওর চোখের কোলে।
-টিনা, কষ্ট পেলে।
-না অনিদা আমার জীবনে যা চেয়েছিলাম তুমি তা পরিপূর্ণ করলে। এটা আমার আনন্দ অশ্রু।
-আমি কি ভুল করলাম। তোমার এই অর্ঘ্য তুমি কারুর জন্য আলাদা করে রেখেছিলে।
-না অনিদা তুমি আমার জীবন দেবতা। তোমাকে অঞ্জলি দেবো বলে এতোদিন সন্তর্পনে গুছিয়ে রেখে ছিলাম।
আমার নুনু ছোটো হয়ে এসেছে। শরীরে একটা অস্বস্তি হচ্ছে।
-বাথরুমে যাবে না।
-আর একটু শোও না।
-তোমার কষ্ট হচ্ছে।
-একটুও না।
আমি টিনার বুকে শুয়ে থাকলাম।
বেশ কিছুক্ষণ পর উঠলাম। টিনা বললো তুমি শোও আমি আগে বাথরুমে যাবো।
-কেনো দুজনে একসঙ্গে যাই।
-না।

টিনার বাড়ি থেকে যখন বেরোলাম, তখন সাতটা বাজে, টিনা নীচ পযর্ন্ত এলো, আমি ট্যাক্সি ধরলাম, ফোনটা অন করতেই, অনেকগুলো ম্যাসেজ ঢুকলো। মিসকল অনেকগুলো। ম্যাসেজগুলো পরলাম, কয়েকটা ম্যাসেজ বাদ দিলে সবই ম্যাসেজ সেন্টার থেকে পাঠানো। মিত্রার ম্যাসেজটা খুললাম। খুব ছোটো লেখা, “আমি কি তোর কেপ্ট যখন ডাকবি চলে যেতে হবে’’। একবার দুবার তিনবার পরলাম। বুঝলাম কিছু একটা হয়েছে। মিত্রা এ ধরনের কোনো ম্যাসেজ আমায় করতে পারে, এটা ধারণা ছিল না। অনেকক্ষণ ভাবলাম কেনো মিত্রা এটা করলো। কোনো উত্তর পেলাম না। হয়তো প্রচন্ড রাগ, কিংবা অভিমান। এ দুটো হওয়া স্বাভাবিক। সমস্ত ঘটনা ও এখনো পুরোপুরি জানে না। এটা আমার একটা স্বভাব। আমি কাউকে কোনো কথা না বলে কাজ করি, আমার টেনশন কারুর ওপর চাপিয়ে দিতে চাই না।

টিনার বাড়ি থেকে যে মন নিয়ে বেরিয়ে এসেছিলাম, সেই মনে কিছুটা হলেও কালি লাগলো। মল্লিকদাকে ফোনে ধরলাম।
-কি বাপ কোথায় হাওয়া খাচ্ছ।
-বাইপাসে আছি, বাড়ির দিকে যাচ্ছি।
-বলো কি অভিপ্রায়।
-একটা সঠিক খবর দিতে পারবে।
-বলো।
-মিত্রা কোথায় জানো।
-ফোন করো পেয়ে যাবে।
-এর জন্য তোমায় ফোন করার দরকার আছে।
-ঠিক। এতটা তলিয়ে দেখিনি। দাঁড়াও দাদাকে জিজ্ঞাসা করি।
-আমি ফোন করে জানতে চাইছি, এটা বলার দরকার নেই, সেটা কি বলে দিতে হবে।
-একেবারেই না।
-কিছুক্ষণ ফোন ধরে রইলাম।
-শোন, তুই বেরিয়ে যাবার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই বেরিয়ে গেছে, দাদাকে বলে গেছে, আজ রাতে আমাদের বাড়িতে যাবে না। কোথায় গেছে দাদা জিজ্ঞাসা করে নি।
-কার গাড়ি নিয়ে গেছে। ইসমাইল না রবীন।
-ইসমাইল তো অফিসে রয়েছে, রবীনকে নিয়ে গেছে।
-আচ্ছা।
মিত্রাকে ফোনে ধরার চেষ্টা করলাম, দেখলাম স্যুইচ অফ।
বড়মাকে ফোন করলাম।
-বলুন ছোটো সাহেব। বুঝলাম ছোটোমা ধরেছে।
-এই সম্বোধনে কবে থেকে ভূষিত হলাম।
-কেনো মিত্রা বললো।
-কখন।
-তা তিনটে সাড়ে তিনটে হবে।
-কি বললো।
-সে ওর কাছ থেকে জেনে নাও। তুই কখন আসছিস।
-ও কি আজ রাতে আসার কথা কিছু বলেছে।
-আজ ওর অনেক কাজ পরে গেছে আসতে পারবে না।
-বুঝেছি।
-কি।
-তুমি বুঝতে পারবে না। বড়মাকে একবার দাও।
-ধর।
-কি রে অনি।
-শোনো চেঁচামিচি করবে না। আমার অনেক জ্বালা। বুঝেছো।
-আবার কি হলো।
-সে অনেক কথা। কাল সকালে তোমায় গিয়ে বলবো।
-রাতে আসবি না।
-সুযোগ পাচ্ছি কোথায়।
-কি হয়েছে বল।
ব-ললাম তো কাল সকালে গিয়ে বলবো।
-সে কি রে আমি যে গাদা খানেক রান্না করছি।
-করো না, কাল সকালে ঠিক পৌঁছে যাবো।
-ওঃ তোকে নিয়ে মহা মুস্কিল।
-তোমরা নিজেরাই তো আমায় মুস্কিলে ফেললে।
-কেনো।
-আমাকে এ সবের মধ্যে জড়ালে কেনো।
চুপচাপ।
-খাচ্ছিল তাঁতী তাঁত বুনে কাল হলো তার হেলে গরু কিনে।
-হেলে গরু কে।
-তুমি জিজ্ঞাসা করছো।
-তুই উপমা দিলি আমি জিজ্ঞাসা করলেই দোষ।
-মিত্রা।
-তার আবার কি হলো।
-সে অনেক কথা।
-আমি তোদের ব্যাপার স্যাপার বুঝিনা বাপু।
-কাল বুঝবে। ট্রেনটার অনেক বগি, বুঝলে, ডি রেইলড হয়ে গেছে। লাইনে তুলতে একটু সময় লাগবে।
-তোর হেঁয়ালি আমি বুঝি না।
-ঠিক আছে কাল সকালে গিয়ে বোঝাবো।
-ঠিক আছে তাই হবে।
ফোনটা কেটে দিলাম। রবীনের ফোন নম্বর আমার কাছে নেই খুঁজে দেখলাম, ইসমাইলের ফোন নম্বরও নেই। মল্লিকদাকে আবার ফোন করলাম।
-দেখতো ধারে কাছে ইসমাইল আছে কিনা, থাকলে আমার ফোন নম্বরে ওকে একবার ফোন করতে বলো।
-আচ্ছা।
কিছুক্ষণের মধ্যে ইসমাইল ফোন করলো, বললাম তুমি রবীনের ফোন নম্বর জানো।
-হ্যাঁ দাদা জানি।
-দাও।
ও রবীনের ফোন নম্বর দিলো। আমি বললাম ঠিক আছে।
রবীনকে ফোনে ধরলাম। প্রথমে ও চিনতে পারে নি তারপর বলতেই বললো হ্যাঁ দাদা কি বলো।
-তুই কোথায়?
-পাক র্স্ট্রীটে।
-ম্যাডাম কোথায়?
-ক্লাবের ভেতরে।
-কখন এসেছিস?
-এই তো ঘন্টা খানেক আগে।
-দুপুরে বেরিয়ে কোথায় গিয়েছিলি?
চুপচাপ।
-কথা বলছিস না কেনো?
-ম্যাডাম বারণ করেছে।
-ঠিক আছে।
-না না বলছি।
-বল।
-প্রথমে গেলাম, নিউ মার্কেট, ওখান থেকে পেয়ারলেস ইন, তারপর এখানে।
-সত্যি কথা বলছিস?
-হ্যাঁ, অনিদা।
-ভেবে বল?
-মাঝে সাহেবের কাছে গেছিলাম।
-কে সাহেব?
-ম্যাডামের হাসবেন্ড।
-ও।
-পেয়ারলেস ইনে কে কে ছিলো?
-ম্যাডাম আর সাহেব ছিলো।
মিথ্যে কথা বলছিস?

মল সাহেব ছিল।

-সাহেব কি কোলকাতায়?
-তাহলে উনি কোথায় থাকবেন। উনি তো কলকাতাতেই থাকেন।
-কোথায় থাকে?
-কেনো আপনি জানেন না!
-আমি তোর মতোই। গ্রামের ছেলে, এতো খবর রেখে কাজ কি বলতো।
-না অনিদা আপনি গ্রামের হলে কি হবে, গিয়ে দেখলাম তো।
-কোথায় থাকে বললি না তো।
-সিঁথির ওখানে।
-তুই চিনিস?
-অনেকদিন আগে একবার গেছিলাম।
-কোথায় বলতো?
-গোপাল লাল ঠাকুর রোডে একটা মন্দিরের পাশে।
-সাহেবের এখানের চেম্বারটা কোথায়?
-রক্সি সিনেমার পাশে।
-ও। আর নার্সিং হোমটা?
-ওটা সাহেবের না।
-তাহলে!
-ওটা ম্যাডামের সঙ্গে, আর একজন আছেন, চিনি না।
-আজ কি সাহেব ম্যাডামের বাড়িতে যাবেন?
-না, না।
-কেন?
-ম্যাডামের সঙ্গে তো সাহেবের ডিভোর্স হয়ে গেছে।
-কবে!
-সে তো অনেক দিন।
-তাহলে যে ম্যাডাম গেছিলেন!
-তা বলতে পারবো না।
-আজ ম্যাডাম অনেকদিন পর ক্লাবে এলেন না?
-হ্যাঁ, প্রায় দেড় মাস।
-কি করে রে ক্লাবে।
-কি আর বলবো অনিদা তুমি তো সব জানো।
-এই দেখো, আমি জানলে তোকে জিজ্ঞাসা করবো।
-তুমি ম্যাডামকে একটু বাঁচাও।
-আমি বাঁচাবার কে। আমি তোর ম্যাডামের কাছে কাজ করি, এই যা।
তু-মি ম্যাডামের সঙ্গে কলেজে পড়েছো।
-সে তো বহুদিন হয়ে গেছে। একটু দাঁড়া।
ট্যাক্সিটাকে রুবির কাছে ছেড়ে দিলাম।
-হ্যাঁ, বল।
-ম্যাডাম আজ বেহুঁস হয়ে ফিরবে।
-কেনো?
-তুমি জানো না এখানে আসে কেন মানুষ।
-খালি মদ খেতে!
-তা নয়তো কি। আজ আমার কপালে দুঃখ আছে।
-কেনো?
-ম্যাডাম বেহুঁস হয়ে ফিরবে।
-তুই কি করবি?
-আমি মাসিকে বলেছি থাকার জন্য।
-কেনো মাসি কি রাতে থাকে না?
-না ওরা সব রাতে চলে যায়।
-ম্যাডাম একা থাকে?
-হ্যাঁ।
-অতো বড় বাড়িতে একা!
-হ্যাঁ। তুমি জানতে না।
না। তুই?
-আমিতো বাইরে বাগানের ওই মালিদের কোয়ার্টারে থাকি।
-রাতে আর কে থাকে?
-দুজন মালি, দারোয়ান আর আমি।
-এইভাবে কতদিন আছিস?
-যেদিন থেকে আমি এলাম সেদিন থেকে।
-তুই কত বছর আছিস?
-ছ’বছর।
-তোর ম্যাডামকে গাড়িতে কে তুলবে?
-এখানে বারের মেয়েরা আছে ওরা তুলে দেবে ধরে ধরে, বাড়িতে মাসি।
-ও। আজকে অফিসে কোনো গন্ডগোল হয়েছে?
-কি মিটিং ছিলো। সে তো তুমি ছিলে।
-দূর ওই মিটিংয়ে থাকে নাকি কেউ। আমি রাগ করে চলে এসেছি।
-সেই জন্যই ম্যাডাম তোমায় খুঁজছিলেন। আমাকেও বললেন তুই দেখেছিস। তুমি কোথায় অনিদা?
-আমি বাইপাসে বাস ধরবো বলে দাঁড়িয়ে আছি।
-তোমায় ম্যাডাম খুব ভালোবাসে।
-এটা আবার তোকে কে বললে।
-আমি জানি। না হলে তোমার কথায় আমাদের গ্রামে যায়।
-ঠিক আছে সাবধানে ম্যাডামকে বাড়ি নিয়ে যাস।
-আচ্ছা।

মাথাটা কোনো কাজ করছে না। সব কেমন যেন গুলিয়ে যাচ্ছে।
মিত্রা আমার খুব ক্লোজ, কিন্তু আমি অনেক কিছু এখনো জানি না। মিত্রা আমার কাছে কি চায়। শুধু শরীর, না আরো কিছু। মায়ের চেনটা ওকে পরাতে গেছিলাম, ও ফিরিয়ে দিয়েছিলো। ওকে সেদিন বুঝতে দিই নি, তবে খটকা একটা আমার মনে লেগেছিলো। সত্যি যদি মিত্রা আমাকে ভালোবাসে, তাহলে সেদিন ওটা ও গ্রহণ করলো না কেনো! ও বলেছিলো মিঃ ব্যানার্জী একটা বাস্টার্ড। সে ওর জীবনটাকে শেষ করে দিয়েছে। তাহলে আজ মিঃ ব্যানার্জীর কাছে ও গেলো কেনো। কিসের তাগিদে। মিত্রা বলেছিলো, মিঃ ব্যানার্জী এখানে থাকেন না। রবীন যা বললো, তাতে মিঃ ব্যানার্জী কলকাতায় থাকেন। নার্সিংহোমের মালিক কে মিত্রা বলেছিলো, মিঃ ব্যানার্জী পঞ্চাশ শতাংশের মালিক। কিন্তু রবিন উল্টো কথা বলছে। একাকিত্ব মিত্রার বিগড়ে যাওয়ার একটা মূল কারণ। এছাড়া আর কোনো কারণ! কলেজ লাইফে মিত্রাদের বাড়ি গেছি। ওদের পয়সা ছিলো, কিন্তু কত পয়সা ছিলো, যাতে মিত্রা এরকম একটা কাগজের পঁচাত্তর শতাংশের মালিক হয়ে যেতে পারে। সব কেমন যেন গুলিয়ে যাচ্ছে।

এখন কি করবো। মিত্রার বাড়ি যাবো, না বাড়ি ফিরে যাবো। নিজেকে নিজে প্রশ্ন করলাম। একটা উত্তরই আমার কাছে ভেসে আসছে। ও আমাকে এতো কোটি টাকার মালিক বানিয়েছে। অনেকে চেয়ে পায় না, আমি অনাহূতের মতো তা পেয়েছি। হয়তো এর মধ্যে দিয়ে ওর কিছু উদ্দেশ্য সিদ্ধি হতে পারে, তবু আমার কাছে এটা অনেক, এই কারণেই ওর পাশে আমার দাঁড়ানো উচিত।

আমি ওকে ভালোবাসি এটা ঠিক। কিন্তু মিত্রা? ভালোবাসার জন্যই যে আমাকে মালিক বানিয়েছে তা নয়। ওরও কিছু উদ্দেশ্য সিদ্ধ হবে। ও জানে অনি খুব হার্ডি ছেলে। ওকে দিয়ে আমার বৈতরণী পার হয়ে যাওয়া যাবে।

আজ যেমন একটা বৈতরণী ও পার হয়ে গেল।

কি অনিবাবু, তোমার এতে কিছু লাভ হয়নি?

হেসেফেললাম। ধ্যুস নিজের সঙ্গে নিজে যুদ্ধ করছি।

আমি একটা ট্যাক্সি ধরলাম, সোজা চলে এলাম মিত্রার বাড়িতে। গেট দিয়ে ঢুকতেই দারোয়ান এগিয়ে এলো। -ও অনিবাবু, মা তো ফেরেন নি।
-কে আছে ভেতরে।
-বুড়িমাসি আছে।
-ও।
গট গট করে ভেতরে চলে এলাম। শুনশান। ভুতুরে বাড়ির মতো মনে হচ্ছে। চারিদিকে লাইট জ্বলে আছে, তবু কেমন অন্ধকার অন্ধকার। পোর্টিকোর নীচে এসে দাঁড়াতেই বুড়িমাসি এগিয়ে এলো।
-তুই কখন এলি।
-এই তো এখুনি। মিত্রা কোথায়।
-কোথায় আবার। যেখানে যাবার সেখানে গেছে। মেয়েটা এই করতে করতেই একদিন শেষ হয়ে যাবে।
মাথা নীচু করলাম।
-তুইতো ওর বন্ধু শোধরাতে পারিস না। বড়লোকের যত সব…….
-কি হয়েছে কি আমাকে খুলে বলো।
-কি বলবো। ছোট থেকে কোলে পিঠে করে মানুষ করেছি, তাই ছেড়ে যেতে পারছি না।
-তুমি আমায় আগে দেখো নি।
-দেখেছি, মনে থাকে কখনো। কতদিন আগের কথা। চা খাবি।
-দাও।
বুড়িমাসি চলে গেলো। আমি নিচের হলঘরে সেন্টার টেবিলের চারধারে রাখা সোফার একটা দখল করে বসলাম। ঘড়ির দিকে তাকালাম, দশটা বাজে।
বুড়িমাসি চা নিয়ে এলো।
-ওরা কখন ফিরবে।
-ঠিক আছে নাকি। একটা, দেড়টা, দুটো কখন ফেরে।
চায়ে চুমুক দিলাম।
-এই মেয়েটা কতো ভালো ছিল, কত হাসি খুসি, এখন দেখ। মায়া পরে গেছে, আর কত্তাবাবুর জন্য রয়েছি, না হলে কবে ছেড়ে চলে যেতাম, ঝাঁটা মারো ওরকম কাজে।
-তুমি রাগ করছো কেনো। ওর হয়তো কোনো কাজ থাকতে পারে।
-ছাই কাজ আছে, মদ গিলতে গেছে, আমাদের বস্তির গুলো ধেনো খায়, ওরা একটু দামি খায়, সব এক।
-তোমায় কে বললো।
-ওই তো মর্কট রবীন। ও ও একটা তেঁয়েটে।
-কেনো গো।
-আর বলিস কেনো, ওপর থেকে মায়ের বোতল চুরি করে এনে খায়।
-তুমি কিছু বলো না।
-অনেক আছে একটু আধটু নিলে ক্ষতি নেই। খাক, কি করবে।
আমি বুড়ী মাসির দিকে তাকিয়ে।
বউটা মরে গেলো। বাচ্চাটা দাদু দিদার কাছে থাকে।
-আবার বিয়ে করলো না কেনো।
-বিয়ে করলে এখানে ঝি গুলোর সঙ্গে ফস্টি নস্টি করবে কি করে।
-মিত্রা জানে না।
-মা আমার সাক্ষাত দেবী। ওই একটু খারাপ রোগে ধরেছে, মদ খাওয়া।
হাসলাম।
তুই তো ওর বন্ধু পারিস না এই রোগটা ছাড়াতে।
-তুমি তো বললে ছোট থেকে কোলেপিঠে করে মানুষ করেছো। তুমিও তো বলতে পারো।
-বলে বলে থুতুতে আঁঠা জম্মেছে, বরটাই তো ওকে সব্বনাশের পথে নিয়ে গেলো।
-সেটা আবার কে।
-ওই যে গো ডাক্তার।
-যাঃ, তুমি বাজে কথা বলছো, ডাক্তার ভালো মানুষ। মিত্রা আমাকে আলাপ করিয়ে দিয়েছে।
-ভালো মানুষ, নষ্ট চরিত্রি।বুড়ীমসির চোখে মুখে শ্লেষ ঝড়ে পড়েছে।
একটা বউ থাকতে আর একটা বিয়ে করে। মা আমার লক্ষ্মী প্রতিমে। তাও ঘর করছিলো, তারপর সব নিয়ে, দিলে তাড়িয়ে।
আমি চুপচাপ। বুড়ীমাসির দিকে তাকিয়ে রয়েছি।
চায়ের কাপ কখন নিঃশেষ হয়ে গেছে বুঝিনি।
-সে অবস্থাতো তুমি দেখো নি, মা ঠাকরনের জন্য সব হয়েছে।
-কেনো।
-মা ঠাকরনের দূর সম্পর্কের আত্মীয়, বড় ডাক্তার, বিদেশে থাকতো, অনেক পয়সা, তাই বিয়ে দিয়েছিলো। কত্তাবাবু কত বারণ করেছিলো, কে জানতো দোজ বরে। ওর একটা মেম বউ আছে, যখন জানা জানি হলো, তখন ডাক্তার গুছিয়ে নিয়েছে। মা তো আমার একবার বিদেশে গেছিলো, সেখানেই তো সব নিজের চোখে দেখে এসেছে।
-ডাক্তারের বয়স ওর থেকে বেশি।
-হবে না লোভ, সম্পত্তি পাবে না। বাবুর একমাত্র মেয়ে অগাধ সম্পত্তি। সেই জন্য বুড়ো বয়েসে এখানে এসে একটা বিয়ে করলে। বউ থাকতেও।
-এখন থাকে কোথায়।
-সিঁথিতে।
-মেমকে নিয়ে।
-না না ওটাকে ছেড়ে দিয়েছে।
-তাহলে তো মিত্রার সঙ্গে থাকতে পারে।
-থাকবে কি করে, সে তো জজসাহেবের কাছে লিখে দিয়ে এসেছে। থাকবে না বলে।
-মিত্রা যে মাথায় সিঁদুর দেয়।
-মা এখনো বিশ্বাস করে ডাক্তার তার স্বামী। প্রথম বিয়ে তো। ভুলতে পারে না। তাছাড় কি জানো তো, গায়ে হলুদ মাখলে আর কুমীরে ধরে না।
আমি চুপ।
-তুমি দেখো তো ওকে একটু ভালো করতে পারো কিনা।
-আমি কি ভগবান।
আমি কি সেই কথা বললুম।

চুপ করে রইলাম।

-তোমার দেশের বাড়িতে গেছিলো। এসে কত গল্প করলো। সেই আগের মাকে যেন ফিরে পাচ্ছিলাম, আমাকে বললো তোমায় একবার নিয়ে যাবো বুড়ীমাসি। তা আমি বললুম বেশ নিয়ে যাস, যাবো খোন। বেশ কয়েক দিন ভালো ছিল। আবার শুরু করলে।
খুব উতসুক হচ্ছিলো বুড়ী মাসিকে নার্সিংহোমের কথাটা জিজ্ঞাসা করতে, কিন্তু বুড়ীমাসি যদি সন্দেহ করে, কিন্তু আমার মনের বাঁধ ভেঙে পরলো, এ সুযোগ আর আসবে না। আমার ভেতর থেকে কে যেন বলে উঠলো অনি এ সুযোগ তুই ছাড়িস না।
বুড়ীমাসি কাঁদছিলো, কাপরের খুঁট দিয়ে চোখের কোন মুছছিলো। আমি সোফা থেকে নীচে বুড়ীমাসির কাছে গিয়ে বসলাম
-তুমি কাঁদছো কেনো।
-জানো, মা আমার সাতদিন ঠিকমতো খেতে পারে না, শুতে পারে না, অফিসে নাকি গন্ডগোল কাকে নিয়ে।
-অফিসে গন্ডগোল, কই জানিনা তো।
-তুমি জানবে কি করে। ওই মিনসের একটা ভাগ্নে ওখানে আছে, সেই গন্ডগোল করেছে। মা আমার বার বার তার কাছে গেছিলো, বলেছে আমার দ্বারা কিছু হবে না।
-তোমাকে অফিসের কথা সব বলে না।
-বলে । যখন মন ভালো থাকে।
-তুমিতো ওর কাছে থাকতে পারো রাতে।
-থাকি তো, আমারওতো সংসার আছে। সেখানে সাতটা পোষ্য।
-ডাক্তারের তো নার্সিংহোম আছে, আরো টাকার কি দরকার।
-রাখো তোমার নার্সিংহোম। ওটা ডাক্তারের ছেলের নামে, সে বিদেশে থাকে, ডাক্তার দেখাশোনা করে, সে বলেছে মাকে বিয়ে করবে।
-ডাক্তারের ছেলে!
-হ্যাঁ গো, প্রথম পক্ষের সেই মেমসাহেবের ছেলে।
-মিত্রা কি বলে।
-আমরা মেয়ে মানুষেরা তা পারি সম্পর্কে ছেলের সঙ্গে বিয়ে করতে। যতই ছাড়াছাড়ি হোক।
-ডাক্তার কি বলে।
-তার তো ভারি মজা, সম্পত্তি পাবে। সম্পত্তি নয়তো বিষ।
-এই বাড়িটা কাদের? এটা তো মিত্রাদের নয়, আমি তো ওই বাড়িতে গেছিলাম।
-হ্যাঁ, আনন্দ চ্যাটার্জী লেনে। ওটা বড়বাবু নিয়েছেন, বাবুকে কাগজের ভাগ দিয়েছেন, আর এটা মা ঠাকরনের বাপের বাড়ির ভাগ। সেই নিয়েই তো মাঠাকরনের এত দেমাক।
-তোমার বাড়িটা যেনো এখানে কোথায়।
-মদনমোহনতলা, হেঁটে গেলে দশ মিনিট।
-তুমি বাড়ি যাও না।
-যাই তো, সকাল সকাল আসি, মার দেখা শোনা করি, তারপর মা বেরিয়ে গেলে চলে যাই আবার বৈকালের দিকে আসি। রাত পযর্ন্ত থেকে চলে যাই।
-আমার সম্বন্ধে মিত্রা তোমায় কিছু বলে নি।
-খারাপ কিছু বললে তোমায় এতো কথা বলি।
বাইরের গেটে হর্ন বেজে উঠলো। বুড়ীমাসি উঠে দাঁড়ালো, এলেন রাজ্য জয় করে।
ঘড়ির দিকে তাকালাম, সাড়ে বারোটা বাজে।
আমি সোফায় বসলাম।

বুড়ী মাসি পোর্টিকোর দিকে এগিয়ে গেলো। গাড়ি এসে দাঁড়ালো। মুখ বাড়িয়ে দেখলাম, পেছনের সিটে মিত্রা হেলে পরে আছে, নিঃসার দেহ। রবীন দরজা খুলে দিলো
-এসো ধরে নিয়ে যেতে হবে তো।
-আজকে তো দেখি একেবারে ঘুমিয়ে পরেছে। বুড়ীমাসি বললো।
-তুমি এসো তো।
-তুই ঠেলা মারিস কেনোরে মুখপোড়া।
বুড়িমাসি, ঘরের দিকে আসছে, আসতে আসতেই বললো ও অনি আয় তো বাবা একটু ধর।
আমি উঠে দাঁড়ালাম, রবীন আমাকে দেখে চমকে গেলো। ও বুঝতে পারে নি আমি এই সময় এখানে থাকতে পারি। আমি বুড়ীমাসিকে বললাম, তুমি ওপরে গিয়ে মিত্রার ঘরের দরজাটা খোলো। আমি নিয়ে যাচ্ছি, কারুর দরকার পরবে না। হয়তো আমার কন্ঠস্বরে এমন কিছু ছিলো বুড়ীমাসি আমার দিকে একবার তাকালো, তারপর শুর শুর করে ওপরে উঠে গেলো।
আমি আসতে রবীন সরে দাঁড়ালো, ওর মুখ থম থমে। মাথা নীচু করে আছে। রবীনকে বললাম, তুই ওপাশের দরজাটা খোল। রবীন খুলে দাঁড়ালো, আমি মিত্রার বগলের তলা দিয়ে হাত ঢুকিয়ে টেনে বারকরে পাঁজাকোলা করে তুলে নিলাম, আমার বুকের কাছে ওর মুখ ভক ভক করে গন্ধ বেরোচ্ছে, ওকে আঁকুড় করে ধরে ওপরে নিয়ে এসে বিছানায় শোয়ালাম, পায়ের জুতো খুললাম, বুকের কাপড় ঠিক ঠাক করে বুড়ীমাসির দিকে তাকালাম
-একটা কাজ করতে পারবে।
-বল।
-রান্নাঘরে তেঁতুল আছে।
-আছে, সেতো অনেক পুরোনো। কি করবি।
-নিয়ে এসো, একটা চামচে নিয়ে আসবে একটু বড় দেখে আর একটা বাটি।
বুড়ীমাসি চলে গেলো। আমি বাথরুমে গেলাম, বালতি, মগ, আর টাওয়েল নিয়ে এলাম, ফ্রিজ থেকে ঠান্ডা জল বার করলাম। মিত্রার হাতে চিমটি কাটলাম, না কোন সাড়া নেই, ওর গালে আস্তে আস্তে থাপ্পর মারলাম, মরার মতো পরে আছে। সম্পূর্ণ বেহুঁশ।
হাতদুটো দু পাশে ছড়ানো। কাপড়টা হাঁটুর ওপর উঠে গেছিলো, আমি টেনে নামালাম,
বুড়ীমাসি ঘরে ঢুকলো।আমার কান্ডকারখানা দেখে অবাক। চোখেমুখে তার ছাপ স্পষ্ট।
  আমি বাটিতে তেঁতুল রেখে ঠান্ডা জল দিয়ে ভাল করে চটকে নিলাম, জলটা বাটিতে রেখে, তেঁতুলটা বুড়ীমাসির হাতে দিয়ে বললাম ধরো, আমাকে চামচটা দাও, বুড়ীমাসি আমার দিকে তাকিয়ে আছে। চামচটা আমার দিকে এগিয়ে দিলো।

আমি বালতিটা এগিয়ে নিলাম, মগটা বালতি থেকে নামিয়ে রাখলাম, মিত্রার মাথার শিয়রে বসে ওর মাথাকে আল গোছে কোলে তুলে নিলাম, গালে চাপ দিতেই মিত্রা হাঁ করলো, আমি বুড়ীমাসির দিকে তাকিয়ে বললাম, বাটিটা এগিয়ে দাও, বুড়ীমাসি আমার দিকে একভাবে তাকিয়ে আছে। বাটিটা এগিয়ে দিলো, আমি চামচে করে জিভটা টেনে ধরে ওকে তেঁতুল জল খাওয়ালাম, মিনিট খানেকের মধ্যে রি-এ্যাকশন শুরু হলো, হর হর করে বমি করতে শুরু করলো, বুড়ীমাসি নাকে কাপড় চাপা দিয়েছে, আমি বালতিটা ওর মুখের কাছে ধরে আছি, কিছুক্ষণ পর বমি বন্ধ হলো, আমার প্যান্টেও ছিটকে পরেছে ওর বমি মাটিতেও ছিটকে পরলো,
আবার একটু তেঁতুল জল গুললাম, খাওয়ালাম। আবার বমি, তারপর বাথরুমে গিয়ে বালতি পরিষ্কার করে, ঠান্ডা গরম জল মিশিয়ে নিয়ে এলাম, বুড়ীমাসিকে বললাম
-ওর কাপড় খুলে একটু গাটা মুছিয়ে দেবে, আমি বাইরে দাঁড়াচ্ছি। বুড়ীমাসি আমার দিকে অবাক চোখে তাকালো
-তুমি দাও, তুমি রুগীর সেবা করছো, এতে পাপ হয় না।
-আমাকে ওর রাতের পোষাকটা এনে দাও।
বুড়ীমাসি ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো। আমি যতটা সম্ভব ঢাকা ঢুকি দিয়ে ওর সারা শরীর স্পঞ্জ করে দিলাম, কাপড় খুলিয়ে ওকে নাইট গাউন পরিয়ে দিলাম, ঠিকভাবে শুইয়ে দিয়ে গায়ে একটা পাতলা চাদর টেনে দিলাম, ঘরটা ভালো করে মুছে, বাথরুমে গিয়ে হাত মুখ ধুয়ে ঘরে এলাম, বুড়ীমাসি মিত্রার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।
বুড়ীমাসি আমার দিকে স্থির দৃষ্টি নিয়ে তাকাল।
-আমি যাই মাসি।
-এত রাতে কোথায় যাবি।
-কাজ আছে।
-না তোকে যেতে হবে না।
-না মাসি। যেতে হবে, তুমি এক কাজ করো, ঘন্টা খানেক বাদে ও উঠে পরবে, কিছু খেতে চাইলে গরম দুধ দিও কয়েকটা বিস্কুট, আর কিছু দিও না।
-চলে যাবি।
-হ্যাঁ।

চলবে —————————



from বিদ্যুৎ রায় চটি গল্প কালেকশন লিমিটেড https://ift.tt/mbqdZcB
via BanglaChoti

Comments