“কাজলদীঘি”
BY- জ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়
সপ্ত বিংশ কিস্তি
—————————
হ্যাঁ। বলেছে দারুন লিখেছে অনি। তোকে ফোন করেছিল, নো রেসপন্স হয়ে যাচ্ছে।
অফিসের হাল হকিকত?
আজ আবার কাগজ ছাপতে বলেছিল। সার্কুলেসন ম্যানেজারকে না করে দিয়েছি। ভাল করিনি বল?
কালকেও বেশি ছাপবে না। যেমন আজ ছাপা হয়েছে ঠিক তেমনি।
যাই বল অনি কাগজের মাইলেজটা আজ অনেক বেড়ে গেল। আমরা আজ এক্সক্লুসিভ। কেউ করতে পারেনি।
ওই দুটোর খবর কি?
পোস্টমর্টেম রিপোর্ট এসেছে। মার্ডার কেস চালু করেছে।
দুটো গ্যারেজ?
খবর নিইনি।
ওরা কাগজের এভিডেন্স চাইবে। বলবে লিখিত দিতে, তবে পাবে। এবং সেটাও যেন কোর্টের অর্ডার থাকে।
ওসব আমি জানি না তুই এসে করবি।
তোমার মল্লিকদার কালকের প্রেজেন্টেসনটা পেয়েছি।
কেমন দিলাম বল?
ওটার জেরক্স কপি আমার কাছে ছিল। কালকে অরিজিন্যাল পেলাম।
তোর কাছে ছিল!
ভাবলে কি করে তোমার আর মল্লিকদার জিনিস আমার কাছে থাকবে না?
ওরে মল্লিক দেখ অনি কি বলে, ওর কাছে নাকি ওই কপি দুটোর জেরক্স আছে।
ও বহুত ধুরন্ধর তুমি জান না। বলছে যখন, তখন নিশ্চই আছে। মল্লিকদার গলা।
তুমি দেখবে?
না।
দে-তো দেখি একবার, ফোনে কথা বলাচ্ছি। বড়োমা পেছন থেকে তেড়ে এলো।
বড়োমা কখন এসে পাশে দাঁড়িয়েছে বুঝতে পারিনি। দেখলাম ছোটোমা, নিরঞ্জনদা, ইসলামভাই, ভজু সবাই আছে। বড়োমা আমার হাত থেকে ফোনটা কেরে নিল। এতক্ষণ ভয়েজ অন ছিল, আমি কি কথা বলছি সবাই শুনেছে। আমার গলা যে সপ্তমে ছিল সেটাও বুঝতে পেরেছে। আভাসে ইঙ্গিতে কিছুটা বুঝতেও হয়তো পেরেছে। অনাদি আমার দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে। বাসু গম্ভীর। অনাদি এই অনিকে কিছুক্ষণ আগে দেখেছে এখন মেলাতে পারছে না।
বলি বয়স হয়েছে, কয়দিন বাদে ঘাটে যাবে, আমিও তোমার সঙ্গে যাব, ছেলেটা সবে এসেছে, আর ওমনি ফোন।
আমি করলাম নাকি! অনিই তো করলো।
অনিকে কে বলেছে? সকাল থেকে পঞ্চাশ বার ফোন করেছ।
সে কি করে জানব। হয়তো নিরঞ্জন বলেছে। আমি নিরঞ্জনকে সব বলেছি, তারপর থেকে ফোনটা একটু কমলো।
তোমরা দুই পালোয়ান ওখানে বসে আছো। সামলাতে পাচ্ছ না। আবার সুগ্রীবকে দোসর করেছ। অনি একা পারে কি করে শুনি?
ও যেমন নরমে গরমে দেয়, আমি দিতে পারি না। দেখ না তোমায় কতো দিন এসে রিপোর্ট করেছি অনিকে বোঝা খুব মুস্কিল। এখুনি হাসছে, এখুনি ও আস্তে করে ছুরি চালিয়ে দিল।
ও তো তোমাদের মতো পেছন থেকে ছুরি চালায় না। যা করে সামনা সামনি। দেখাচ্ছি নিরঞ্জনকে।
বাবা আমার ঘাট হয়েছে। আজ সকাল থেকে কি হলো, ওর সঙ্গে একটু শেয়ার করবো না।
কেন আমার সঙ্গে করো নি। তাতে আশ মিটল না?
আচ্ছা আচ্ছা তোমার ছেলেকে বিরক্ত করবো না। ছোটোকে দাও, মল্লিক কি কথা বলবে।
ছোটোমাকে ফোনটা দিয়ে বড়োমা নিরঞ্জনদার দিকে তাকাল।
তুমি বিশ্বাস করো দিদি, আমি বলেছিলাম দাদা তোর সঙ্গে একবার কথা বলতে চায়। আমি অবশ্য ম্যানেজ করে দিয়েছি।
কেন বারান্দায় ওঠার সঙ্গে সঙ্গে এটা বলতে হবে?
আচ্ছা আচ্ছা উইথড্র।
ছোটোমা, মল্লিকদাকে ফোনে বলছে। দিদির হাতে নিরঞ্জনদা ঝাড় খাচ্ছে।
চলতো অনি। একবারে ফোন খোলা রাখবি না বন্ধ করে রাখবি। বেশ করেছিস ফোন নিয়ে যাসনি। এখন আমি বুঝতে পারছি, কেন তোর ফোন মাঝে মাঝে বন্ধ থাকে। কোথায় গেছিলি?
বড়োমার গলায় স্নেহ ঝরে পড়ছে। ছোটোমা একটু দূরে গিয়ে কথা বলছে।
আমি চুপ করে থাকলাম। এত সুন্দর মেজাজটা বিগড়ে গেছে।
মিত্রা আমার পকেট থেকে বকুল বিচির বাঁশিটা বার করে নিয়ে টি টি করে বাজিয়ে উঠলো।
বড়োমা ওর দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। সকলে হাসছে। ভজু এগিয়ে এসেছে।
আমায় একটা দাও দিদিমনি।
মিত্রা আমার পকেট থেকে একটা বাঁশি বার করে ভজুর হাতে দিল।
ভজু বাজাতে আরম্ভ করলো।
বড়োমা আমার দিকে তাকাল। মাথা ঠাণ্ডা হয়েছে।
এটা তো একটা ইনস্টলমেন্ট দেখছো। আরও আছে। মিত্রা কলকল করছে, আমার দিকে তাকাল।
আর একটা যদি বলি না, তোমার মাথা খারাপ হয়ে যাবে বড়োমা।
বড়োমা মিত্রার দিকে তাকাল।
আমি হেসে ফেললাম।
তোমার ছেলে, বুঝলে, একটা যন্ত্র। মিত্রা বললো।
বড়োমা মিত্রার দিকে তাকিয়ে বললো।
আর আমার মাথা খারাপ করার দরকার নেই।
আমার দিকে তাকিয়ে বললো।
সকাল থেকে উঠে এই বাঁশি তৈরি করতে বেরিয়েছিলি?
পেছনে তখন মিত্রা আর ভজুর বাঁশি টিঁ টিঁ করে বাজছে।
তোমার জন্য পদ্ম নিয়ে এসেছি। আমি বললাম।
কোথায় রে!
এই তো মিত্রার কাছে আছে।
মিত্রার দিকে তাকালাম।
কিরে দে বড়োমাকে।
ঠিক করে বল। না হলে এখুনি চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে বলবো তোর কীর্তি।
আমি হাসছি।
নীপা মুচকি মুচকি হাসছে।
আমরা সবাই বারান্দায় এলাম। বড়োমা আমাকে জাপ্টে ধরে আছে।
মুখ ধুয়েছিস?
হ্যাঁ।
ও নীপা একটু চা কর।
নীপা দে ছুট। আমি এসে বাইরের বারান্দায় বেঞ্চিতে বসলাম। বড়োমা, ছোটোমা, মিত্রারা ভেতরে চলে গেল।
ইসলামভাই পাশে এসে বসলো একপাশে অনাদি, বাসু। চিকনাকে দেখতে পাচ্ছি না। তখন একবার আমার বাড়ির বাঁশ ঝাড় থেকে উঁকি মেরেই চলে গেল।
নিরঞ্জনদা চেয়ারে বসে আছে।
নিরঞ্জনদাকে বললাম, তোমায় কে ফোন করেছিল?
সেক্রেটারি।
কেন!
তোকে আজই নিয়ে গিয়ে হাজির করতে হবে।
আমি বলেছি আপনি যেমন সেক্রেটারি ও তেমনি একটা কাগজের মালিক। প্লাস লেখাটা ও নিজে লিখেছে। আপনার থেকে ওকে ভালো করে চিনি। আপনার কথা বললে ও সোজা বলে দেবে প্রয়োজন আপনার, আপনি এসে দেখা করুন।
তুমি বলেছো, না আমার সামনে বানিয়ে বানিয়ে বলছো।
তুই বিশ্বাস কর অনি এরা সামনে ছিল, আমি বলেছি কিনা জিজ্ঞাসা কর।
ভতরে খুব জোড় হাসাহাসি চলছে।
ইসলামভাই বললো অনি তুই বোস। আমি ভেতরের মজলিসে গিয়ে বসি। ম্যাডাম মনে হয় গল্প বলা স্টার্ট করেছে।
ইসলামভাই উঠে গেল।
নিরঞ্জনদার দিকে তাকিয়ে বললাম, তুমি এর মধ্যে একবারে ইন্টারফেয়ার করবে না। তুমি জান না কতো কটি টাকার স্ক্যাম এটা।
কি বলছিস তুই!
কাগজ আসে নি?
এবার আসবে।
লেখাটা পরো। তাহলে বুঝতে পারবে। সরকারি সম্পত্তি নিজের নামে লিখিয়ে নিয়ে মাল্টিস্টোরেড বিল্ডিং বানাচ্ছিল।
এ্যাঁ।
এরা সবকটা ইনভলভ এর মধ্যে। এবার তোমাদের টনক নরবে দেখবে।
ভেতরে খুব জোরে হাসির রোল উঠেছে।
অনাদি বললো দাঁড়া দেখে আসি। অনাদি ভেতরে চলে গেল।
এতো সব ব্যাপার আমি জানি না। দাঁড়া কাগজটা এলে ভালো করে পড়ি আগে। তারপর পার্টিতে প্রশ্নটা তুলবো।
কতটাকার স্ক্যাম হয়েছে জান?
কতো!
আমার কাছে যা কাগজ আছে তাতে তিনশো কোটি টাকা। এর বাইরেও আছে। তার মধ্যে মিত্রার এক্স জড়িয়ে আছে।
নিরঞ্জনদা আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। বলিস কি!
অনি ফালতু কথা বলে না। বাসু ওই ভদ্রলোককে নিয়ে এসেছিলি?
হ্যাঁ।
নিরঞ্জনদার দিকে তাকিয়ে বললাম, কাজ হয়ে গেছে?
দু-লাখে রাজি করিয়েছি।
আমি নিরঞ্জনদাকে একটা পেন্নাম করলাম।
আর তোকে পেন্নাম করতে হবে না।
তুমি আমার মিশনের একজন, তোমাকে পেন্নাম করবো না তো কাকে করবো।
টাকা ধরিয়েছো?
কোথায় পাব?
কেন বড়োমাকে বলতে পারতে।
হেসে ফেললো।
তোর বড়োমার কাছে আছে?
আলবাত আছে, আমার মিত্রার সব কিছু বড়োমার কাছে।
দিয়েছিল, আমি বলেছি রেস্ট্রির সময়।
কবে দিন ঠিক করেছো?
তুই না এলে হবে কি করে।
দুর আগে তুমি তোমাদের নামে রেস্ট্রি করে নাও তারপর দেখা যাবে। শুভস্র শীঘ্রম।
দাদা, মল্লিককে চাই।
তুমি বুধবার ডেট করো আমি দাদাকে নিয়ে চলে আসবো।
তাড়াহুড়ো করিস না।
আমি তোমাদের মতো ধরে খেলি না।
ঠিক আছে ব্যবস্থা করছি।
আমার ছশো একর?
খবর পাঠিয়েছি ওরা দেখে এসে খবর দেবে।
ছোটোমা দরজা দিয়ে উঁকি মারল। অনি শোন।
হ্যাঁ গো ছোটো ওদের খেজুর রস দিলে না?
হ্যাঁ দাদা ভেতরে নিয়ে গিয়ে দিচ্ছি।
খেয়ে দেখ অনি নদীর ধারের গাছের রস কি মিষ্টি। তাও বেটা পুরো আনতে পারেনি কে বেটা চুরি করে খেয়ে নিয়েছে। হাঁউ হাঁউ করছিল এসে, ভাগিয়ে দিয়েছি।
আমি দরজার ভেতরে আসতেই ছোটোমা আমার কান ধরতে গেল, আমি কান সরিয়ে নিয়ে ছোটোমাকে পেছন থেকে জাপ্টে ধরলাম।
ওরে ছাড় ছাড় লাগছে।
লাগলে হবে না, আগে বলো কি হয়েছে?
দিদি ডাকছে।
নিশ্চই মিত্রা রিপোর্ট পেশ করেছে।
ছোটোমাকে জড়িয়ে ধরেই ভেতরে এলাম।
তুমি কান ধরো নি? ধরো ধরো, কান ধরো। মিত্রা চেঁচাল।
আমি ছোটোমাকে ছেড়ে বড়োমার কাছে সেঁটে গেলাম।
সব বলেছিস?
হ্যাঁ।
তোর পটির কথা?
না।
ওটা আমি বলি।
সবাই হো হো করে হেসে উঠলো।
কিরে মিত্রা এতক্ষণ তুই ওর নামে বদনাম করছিলি, এখন…
তুমি বিশ্বাস করো বড়োমা, আমি এখনও ওই জায়গাটায় আসিনি।
তুই কোন জায়গায় এসেছিস? আমি বললাম।
পদ্মপুকুরে ফুলতোলা পর্যন্ত।
তার মানে তোর পোর্সানটা পুরো গাইপ! একবারে কাঁচিমেরে উড়িয়ে দিয়েছিস!
শয়তান।
আমার থাইতে একটা চিমটি কাটল।
আমি উঃ করে উঠলাম।
বড়োমা আমার পিঠে হাত রাখলো।
নীপা চা দিয়ে গেল।
নীপা দাঁত চিবিয়ে চিবিয়ে মিত্রাকে বললো আরো জোরে দাও না। এখনও ছোট্টটি আছেন।
আমি মাথা নীচু করে চায়ে চুমুক দিলাম। সবাই হাসছে।
ওই রাতে তুই গাছে উঠলি কি করে! বড়োমা বললো।
ওকে তুমি জানো না বড়োমা, ও কি জিনিষ, সেদিন কাকা কয়েকটা বলেছে। আজ একটা শুনলে। সব বললে তোমার মাথা খারাপ হয়ে যাবে। অনাদি বললো।
বড়োমা আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
জানিস তোর জন্য আমি নিরঞ্জনদার কাছে সকালে বকা খেলাম।
কেন!
শশধর কাকা নিরঞ্জনদার কাছে এসে রিপোর্ট করলো তার রস চুরি হয়ে গেছে।
তুই চোর ধর। আমি বললাম।
চোর তো ঘরের মধ্যে।
প্রমাণ করতে পারবি।
আমি আছি রাজসাক্ষী। মিত্রা বললো।
নেমক হারাম।
সবাই জোরে হাসছে।
জানো ও যখনই পেঁপে পাতাটা ভাঙলো আমার কেমন যেন একটা সন্দেহ হলো, এই কানা রাতে ও পেঁপে পাতা ছিঁড়ল কেন।
তারপর ওই পটি করা রাস্তা, ভূততলা।
তুই ম্যাডামকে নিয়ে ভূততলার মধ্যে দিয়ে গেছিস! অনাদি বললো।
হ্যাঁ।
জানো বড়োমা আমরা দিনের বেলা ওই পথে যাই না, রাস্তাটা খারাপ বলে ঘুর পথ হলেও অন্য রাস্তায় যাই। আর ও ম্যাডামকে নিয়ে ওই রাস্তায়! তুই পারিস অনি। অনাদি বললো।
মিত্রার দিকে তাকিয়ে বললাম, কিরে তোকে ভূত দেখাইনি।
দেখাতে চেয়েছিলি দেখতে পাইনি।
কাকীমা পান্তার জাম বার করো, মিত্রা কিছু খাবে না, সকাল থেকে দুবার হয়ে গেছে।
নাগো আমার একবারও হয়নি, আমাকেও দাও।
সবাই হাসছে, ছোটোমা এসে পাশে বসলো, তোর কি এখনও চুরি করার সখ আছে।
সে যে কি আনন্দ, তোমায় বোঝাতে পারবো না। ওকে তার একটু স্বাদ দিয়েছি।
মিত্রার দিকে তাকিয়ে বললাম, কিরে বল ছোটোমাকে।
বলেছি, তোর মতো নাকি। আমার পেটটা খল খল করছিল না বলা পর্যন্ত।
ওই জন্য তোর সহ্য হয়নি।
জানো বড়োমা আমায় বলেছে, কুত্তার পেটে ঘি সয় না।
হ্যাঁরে অনি বলেছিস। বড়োমা আমার দিকে গম্ভীর হয়ে তাকাল। চোখে হাসি।
বলেছি।
কেন!
কেন বলেছি, কোন পজিসনে বলেছি সেটা জিজ্ঞাসা করো, আর সেই সময় এই কথাটা কতোটা প্রযোজ্য সেটাও জিজ্ঞাসা করো।
মিত্রার দিকে তাকিয়ে।
কিরে বল।
তুমি খালি ওকে সাপোর্ট করো, আমাকে একটুও করো না।
সবাই হাসছে, ছোটোমা বললো ও যা বললো তুই মিথ্যে প্রমাণ কর।
সে হয় নাকি, অতোটা রস গেলাল ওই মাঝ রাতে, প্রায় এক লিটার।
ইসলামভাই হাঁসতে হাঁসতে উল্টে পড়ে যায়, সুরোমাসি কাকীমা মুখে কাপর চাপা দিয়েছে, নীপা হাসতে হাসতে পেট চেপে ধরেছে।
নিরঞ্জনদা আসরে এসে যোগ দিল।
বড়োমা বললো নিরঞ্জন বোস, শুনে যা এদের কীর্তি।
নিরঞ্জনদা নিঃশব্দে বসে পরলো। নীপা একটা আসন এগিয়ে দিল।
তারপর কি হলো বল। বড়োমা বললো।
তারপর আর কি, যা হবার হলো। তাও হতো না, আমাকে বললো একটু নেচে নে দেখবি নিচে নেমে যাবে, অসুবিধে হবে না।
তুই নাচলি!
হ্যাঁ আমি বাঁধের ওপর একটু নেচে নিলাম। ব্যাস মিনিট তিনেকের মধ্যে আর থাকতে পারলাম না, সোজা নদীর বুকে নেমে গেলাম।
অনি তখন কোথায়?
বাঁধের ওপর বসে ঢিল ছুঁড়ছিল।
চারদিক অন্ধকার, মাথার ওপর শীতল চাঁদের আলো, নদীর ঝিরঝিরে বাতাস, কুল কুল শব্দ, এতো সুন্দর আবহাওয়া তোর বাড়ির ফার্নিশড বাথরুমে আছে, তুই বল। আমি বললাম।
সবাই হেসে গড়া গড়ি খায়।
বড়োমা আমার কানটা ধরলো, তোর কি আর বয়স হবে না, তুই আধ-দামড়া মেয়টাকে বাঁধের ওপর নাচালি।
দাও দাও আরও জোড়ে নাড়িয়ে দাও, মিত্রা উঠে এসে আমার পিঠে গুম গুম করে দিল।
আমি হাসতে হাসতে বললাম, নাচালাম কোথায়?
ওর অসুবিধে হচ্ছিল আমি বললাম নেচে নে। তা ও যদি ধেই তা ধেই করে নাচে, আমার কি।
হাসতে হাসতে আমার কান থেকে বড়োমার হাত খসে পরলো, নিরঞ্জনদা হাসছে, সবাই হাসছে, ছোটোমা কাপর দিয়ে চোখ মুছছে।
ও নিরঞ্জন।
বলো।
তোর চোর হচ্ছে এই দুটো।
এ্যাঁ! বলো কি!
হ্যাঁরে। তারই গল্প হচ্ছে। পেঁপে ডাঁটা দিয়ে।
নিরঞ্জনদার হাসি আর বন্ধ হয় না।
ইসলামভাই হাসতে হাসতে কেশে ফেললো, ভজু ইসলামভাই-এর মাথা চাপরে দিচ্ছে।
কাকীমা পান্তা। মিত্রা চেঁচিয়ে উঠলো, আমার খিদে পেয়েছে।
ছোটোমা বললো, হ্যাঁরে একলিটার রস খেয়ে কিছু হয়নি।
সব বেরিয়ে গেছে।
ছোটোমা হাসতে হাসতে বললো, তুই থাম মিত্রা।
কিরে, তোর পেটে ডন বুটকি মারছে না। মিত্রা আমার দিকে তাকিয়ে বললো।
মারছে।
মিত্রাদি বড়োমা চিংড়িমাছ দিয়ে ফ্রায়েড রাইস করেছে। নীপা বললো।
দে, দাঁড়িয়ে আছিস কেন। দাঁড়া।
আমার দিকে তাকাল।
কিরে, তুই কি খাবি?
দেখি।
দেখি মানে! এখন খাবি না?
বড়োমা খেয়েছে কি না জিজ্ঞাসা করেছিস।
বড়োমা পূজো করেনি, এত বেলা করে পদ্মফুল নিয়ে এলি, বড়োমা পূজো করুক তারপর খাবে। ও বড়োমা, বলো না দিতে।
নীপা দে তো মা ওকে।
ওদের খাওয়া হয়ে গেছে?
কারুর হয়নি। তোরা আসিসনি বলে কেউ খায়নি।
তোর জন্য বুঝলি, তোর জন্য, কখন থেকে বলছি চল চল বেলা হলো।
আমি মিত্রার মুখের দিকে তাকিয়ে।
বাঁশি বাজা।
কেউ আর গম্ভীর নেই।
বড়োমা ও যদি পান্তা খায়, আমি ফ্রাইডরাইস পান্তা দুটো খাব।
বড়োমা হাসছে, নিরঞ্জন দেখতে পাচ্ছিস?
পাচ্ছি।
আমি ইসলামভাই-এর কাছে বসলাম, কাল ঘুম ভালো হয়েছে।
না হবার জো আছে, যা আয়োজন ছিল।
অনিদা আমি বাথরুমে যাইনি ওই বনে গেছিলাম। ভজুরাম চেঁচিয়ে উঠলো।
সকলেই হো হো করে হাসছে।
আসন পাতা হয়েছে। সবার। অনাদি, বাসুরাও আছে। আমরা যে যার মতো বসে পরলাম, শুধু বড়োমা বসলো না ছোটোমাকে মাঝখানে রেখে আমরা দু-জনে দু-পাশে। বড়োমা পরিবেশন করলো।
মাঝে চিংড়িমাছ নিয়ে মিত্রা আমার সঙ্গে ঝগড়া করলো, ওকে চিংড়িমাছ দেয়নি বড়োমা, আমাকে বেশি ভালোবাসে, তাই আমাকে দেওয়া হয়েছে। বড়োমা হাসতে হাসতে ওকে চিংড়িমাছ বেছে বেছে দিয়ে গেল। হাসাহাসি চলছেই।
নিরঞ্জনদা মাঝে বললো, মিত্রা আমরা কিন্তু পান্তা পেলাম না, তোর জন্য স্পেশাল হলো। মিত্রা নিরঞ্জনদার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো। খাওয়া শেষ হতে আমি বললাম, আজ কি এবাড়িতে রান্না বন্ধ।
বড়োমা বললো, হ্যাঁ তোর বাড়ির বাঁশ বাগানে হচ্ছে।
এ্যাইল। মিত্রা একহাত জিভ বার করলো।
তুই আবার কালী ঠাকুর হলি কেন?
বড়োমা তুমি আগে বলো নি কেন?
কি বলবো!
আজকের মেনু ও বাড়িতে, তাহলে পান্তাটা খেতাম না।
ছোটোমাকে টপকে দিল আমার থাইতে একটা চিমটি।
শয়তান খাওয়ার শেষে মনে করিয়ে দেওয়া।
সবাই মিত্রার কীর্তি কলাপ দেখে হাসছে।
আমি কি করলাম!
আমি কি করলাম, ও বাড়িতে আজ বিরিয়ানী আছে, তুই জানতিস না, এক পেট খেয়ে ওটা টেস্ট করতে পারবো?
একটু বাঁশ বাগানে নেচে নিবি।
এটা কি রস খেলাম, নেচে নিলে নেমে যাবে।
বড়োমা হাসতে হাসতে মাটিতে থেবড়ে বসে পরলো।
হাসতে হাসতে সবাই পেটে হাত দিয়ে বসে, আমি উঠে দে ছুট পুকুর ঘাটে।
হাসির রোল তখনও চলছে মিত্রাকে নিয়ে।
আমি পুকুরের পার ধরে, বাঁশবাগানের ভেতর দিয়ে, খিড়কি দরজা দিয়ে আমার বাড়িতে ঢুকে সোজা ওপরে চলে এলাম। কেউ আমাকে দেখতে পেল না। দরজাটা আস্তে করে ভেজিয়ে দিয়ে, ল্যাপটপটা বার করলাম।
মোবাইলটা ভাইব্রেট মুডে রেখে ল্যাপটপটা খুলে বসলাম।
কাজের চাপে বেশ কয়েকদিন মেল চেক করা হয়নি।
মানিপার্টস থেকে চিপটা বার করে নিলাম। জানিনা এখানে নেট কানেকসন পাব কিনা। তবু চিপটা লাগাতেই দেখলাম কানেকসন পেয়েছে। বেশ আনন্দ লাগল।
একবার সন্দীপকে ফোন করে লাস্ট আপডেট নিলাম। ওখানে সব ঠিক আছে। আমাদের কাগজের আজ দারুন মার্কেট। ওকে খুব উচ্ছ্বসিত দেখাল। আমাকে দশবার গুরু গুরু বলে প্রণাম করলো। আমি ওকে বললাম নেক্সট লেখাগুলো ঠিক ঠাক কনটিনিউ করবি, কোনও সমস্যা যেন না হয়। ও কথা দিল। ফলোআপ নিউজগুলো ঠিকঠাক করবি। ও বললো, তোকে ভাবতে হবে না। আমি প্রয়োজন হলে তোকে ফোন করবো।
নিচে আমাকে খোঁজা খুঁজি শুরু হয়ে গেছে। অনাদি, চিকনা, নীপা, বাসু, মিত্রা সবাই খুঁজছে। শেষে অনাদি বলে দিয়েছে, কোথায় গেছে এখন খুঁজতে পারবো না, যখন আসে আসবে। এদিকে অনেক কাজ।
মিত্রা বললো, অনাদি আমি একা একা টেস্ট করবো, ও থাকলে বেশ মজা হতো।
সেতো বুঝলাম। ফোন করো না।
করছি তো। ধরছে না।
তাহলে আশেপাশে কোথাও ঘাপটি মেরে আছে।
নারকেল গাছগুলো একবার দেখো। নীপা বললো।
তুই থাম। এখন সে বয়েস নেই।
ছাড়ো তুমি অনাদিদা, খেঁজুর গাছে উঠে চুরি করে রস খেতে পারে, আর নারকেল গাছে উঠে ডাব খেতে পারবে না?
ঠিক বলেছিস, দাঁড়া চিকনাকে খবর দিই ও ঠিক খুঁজে বার করবে।
অনাদি থাক। ওকে ওর মতো থাকতে দাও। ফিরে আসুক মজা দেখাচ্ছি।
তখন বড়োমা আছে, ম্যাডাম তুমি কিছুই করতে পারবে না। অনাদি বললো।
মিত্রা খিলখিল করে হাসছে। চল নীপা আমরা স্নান করে নিই।
চলো।
আমি একে একে সব মেল চেক করলাম। শেষে একটা সেক্স সাইট খুলে বসলাম। বেশ নেশা লেগে গেছে এই ক’দিনে। ফাঁক পেলেই সেক্স সাইট সার্ফিং করি। মাঝে মাঝে ডাউনলোড করি। নিস্তব্ধে এক মনে কাজ করে যাচ্ছি। কেউ আমাকে বিরক্ত করার নেই।
হঠাৎ দরজাটা ক্যাঁচ করে আওয়াজ হলো। একটু খানি ফাঁক হলো, তাকিয়ে দেখলাম মিত্রা ভিঁজে কাপরে ভেতরে ঢুকছে। আমাকে দেখে চমকে গেছে।
শয়তান, তুই এখানে….!
আমি ওকে ঠোঁটের ওপর আঙুল রেখে চুপ করতে বললাম।
দাঁড়া তোর মজা দেখাচ্ছি। চিবিয়ে চিবিয়ে বলে দরজাটা ভেতর থেকে বন্ধ করলো।
আমি উইনডোটা মিনিমাইজ করে দিয়েছি। বুঝলাম পুকুরে স্নানসেরে পেছনের দরজা দিয়ে ওপরে উঠে এসেছে।
বসে বসে এখানে ল্যাপটপ চালানো হচ্ছে, আমাকে বাদ দিয়ে।
আমার কাছে এগিয়ে এলো ভিঁজে কাপরে।
একবারে ধরবি না আমার জামা কাপর ভিঁজে যাবে।
কখন থেকে খুঁজে মরছি, বাবু এখানে বসে বসে….।
আমি হাসছি। চটকে দেব কিন্তু।
দে-না। এখন এখানে কেউ আসবে না। সবাই এখন ও বাড়িতে।
তুই এ বাড়িতে এলি কেন?
ও আমার হাত চেপে ধরে আমাকে টেনে তোলার চেষ্টা করছে।
আগে কাপর খোল।
খোলাচ্ছি তোকে দাঁড়া। কি দেখছিস বল।
তোকে বলা যাবে না।
আমাকে বলা যাবে না, তার মানে তুমি সেক্স সাইট খুলে বসে আছ।
আমি হাসছি।
দাঁড়া আগে কাপরটা ছেড়ে নিই, তারপর দেখাচ্ছি।
মিত্রা আলমাড়ি খুলে শাড়ি সায়া ব্লাউজ ব্রা বার করলো। আমি উইনডোটা ম্যাক্সিমাইজ করে বন্ধ করে দিলাম।
দেখে ফেলেছি, তুই বন্ধ করলি, মনে রাখিস ওটাই তোকে খুলে দেখাতে হবে।
ওঃ শকুনের চোখ।
কি, তুই আমাকে শকুন বললি।
আমি ওর দিকে তাকালাম। হাসলাম। ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছে আমার দিকে, আমি ওকে দু-হাতে আটকালাম।
হাসতে হাসতে খাটের কাছে এগিয়ে গেলো। কাপড়টা খুলে ফেললো শরীর থেকে, তারপর ব্লাউজ খুললো, আমি এগিয়ে গেলাম।
একবারে কাছে আসবিনা চেঁচাব।
চেঁচানা, চেঁচা।
মিত্রা ফিক ফিক করে হাসছে।
-এখন ধরিস না গা টা মুছি।
-দেখ তোকে দেখে কেমন নড়া চড়া করছে।
মিত্রা আমার মতির দিকে তাকালো, ফিক করে হেসে ফেললো।
-কালকের থেকে এরকম হচ্ছে, আগে এরকম হতো না।
মিত্রা শায়াটা খুলে ফেললো।
মিত্রার নিরাভরণ শরীর আমার চোখের সামনে। আমি ওর দিকে তাকিয়ে আছি। আজকে ওর মুন্তিটা দেখতে বেশ ভালো লাগছে। মনে হচ্ছে নতুন বাথরুমে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সেভ করেছে। কোমরে একটা ঘুমসি দেখলাম কালো শুতোয় বাঁধা। তার সঙ্গে একটা মাদুলি। কাল রাতে ওটা ওর কোমরে দেখিনি। কোমর বন্ধনিটা দেখতে বেশ ভালো লাগছে, একটা আলগা শ্রী ফিরে এসেছে কোমরটায়। আমার ভ্রু-দুটো ছুঁচোলো হয়ে গেল।
এটা দেখে ভ্রু কোঁচকাচ্ছিস?
আমি মাথা দেলালাম।
তুই ও বাড়ি থেকে চলে আসার পর, বড়োমা ঘরের ভেতরে নিয়ে গিয়ে কোমরে বেঁধে দিল।
এটা আবার কোথাকার!
যেখানে গেছিলাম, সেই ভদ্রলোক দিয়েছে।
তোর সেই জ্যোতিষদাদা?
হ্যাঁ।
আমি এগিয়ে গেলাম।
প্লীজ হাত দিস না এখন।
আমি ওর পায়ের কাছে বসলাম ও মুন্তিতে হাত ঢেকেছে।
আমি কোমরের মাদুলিটা দেখলাম, সোনার মাদুলি, মুখটা গালা দিয়ে বন্ধ। কালো কার দিয়ে বাঁধা। আমি ওর হাতটা সরিয়ে দিলাম।
না। মিত্রা চেঁচিয়ে উঠলো।
আমি দাঁত মুখ খিঁচিয়ে উঠলাম, এখুনি একটা বিপদ ঘটাবি।
শয়তান। তোকে কখন থেকে বারন করছি।
মিত্রার হাত সরে গেলো, আমি এ সুযোগ ছাড়লাম না, ওর মুন্তিতে মুখ দিয়ে পাছুটা জাপ্টে ধরলাম। মিত্রা ছটফট করে আমার মাথার চুলের মুটি ধরলো। আমি দমবার পাত্র নয় ঠিক জায়গায় জিভের স্পর্শ দিয়ে ফেলেছি। মিত্রা কিছুক্ষণ ছটফট করে, আমার মাথার চুলগুলো ছেড়ে দিলো। আমি ওর মুন্তির গর্তে আঙুল দিয়ে দিয়েছি। মিত্রার গায়ে বাতাস লাগলো, থির থির করে কাঁপছে।
-বুবুন ছাড় না। তুই একা একা মজা করবি নাকি।
আমি মুখ তুলে ফিক করে হেসে ফেললাম।
শয়তান। তুই ভীষণ জালাস। এমন করলি এখন ছাড়তে ইচ্ছে করছে না।
-কর। কে বারণ করেছে।
-ওঠ।
আমি উঠে দাঁড়ালাম। মিত্রা আমাকে জাপ্টে ধরে ঠোঁটে ঠোঁট রাখলো।
কেউ যদি হঠাৎ চলে আসে।
আসে আসুক। আমি ল্যাপটপে বসবো, তুই জামা কাপড় পরবি। আমি আস্তে করে দরজাটা খুলে বলবো, প্লিজ একটু দাঁড়া।
মিত্রা খিলখিল করে হেসে উঠলো।
-তোরটা পরে আছিস কেনো, খোল।
-ঠিক সময়ে খুলবো।
-না এখুনি।
আমি পাঞ্জাবীটা খুললাম, মিত্রার শরীরের সঙ্গে আমার শরীর মিশে গেলো। আমার মতি বেশ দাঁড়িয়ে গেছে।
-কিরে খোঁচা মারছিস কেনো।
হাসলাম।
-খোলনা। কেন শুধু শুধু পরে আছিস।
-আচ্ছা খুলছি।
আমি পাজামার দড়িটা খুলে ফেললাম।
নিচে চিকনা আর সঞ্জুর তুমুল হচ্ছে শুনতে পাচ্ছি।
আজকে কাদের কাদের নেমন্তন্ন।
সবার।
তোর বন্ধু-বান্ধব, নীপার বন্ধু-বান্ধব, ও বাড়িতে মাছ হচ্ছে, বড়োমা, ছোটোমা, সুরোমাসি, কাকীমা, নীপা রান্না করছে। প্রায় একশো জনের আয়োজন।
বাবাঃ।
নিরঞ্জনদা ফোনে ফোনে কাদের ডাকলো।
বড়োমা কি বলছেরে?
কি আবার বলবে।
মিত্রা আমার মতি নিয়ে নিজের মতিতে ঘষছে।
-তোরটা কি শক্ত হয়ে গেছে। এখন করতে গেলে লাগবে।
-তোর গাটা কি ঠান্ডা।
-তুই তো গরম হতে দিলি না।
আমি মিত্রার ঠোঁটে কামড় দিলাম।
-মুন্তিতে একটু মুখ দে।
-তোর কোন মুন্তিতে সেন্স বেশি।
-তুই বল।
-আমি কি করে জানবো।
-বাঃ এতোবার করলি এটা বুঝতে পারলি না।
-তোদের বোঝা মুস্কিল।
একটি থাপ্পর।
-কোনটায় বলনা বাঁদিকে না ডান দিকে।
-অন্য জায়গায় মাথা খোলে এটাতে মাথাটা খোলে না ?
-এটার জন্য তুই আছিস।
-আমি একটু মুখ দিই।
-না স্নান করে এসেছিস একবারে না।
-না।
-পাছুতে রাম চিমটি মারবো।
-তোর পাছুটাও খোলা আছে মনে রাখিস।
-চল বিছানায় চল একটু রেডিমেড করে নিই। কেউ চলে এলে বিপদ।
-তাহলে একটু ঘসে ঘসে বার করে দিই।
-দে না কামরে ছিঁড়ে দেবো।
-ইস তোরটা একেবারে ভিজে চপ চপ করছে।
-তোরটা যেনো শুকনো খট খট করছে।
আমি এক ঝটকায় ওকে একটু তুলে নিয়ে বিছানায় চিত করে শুইয়ে দিলাম। আমি ওর ওপরে আমার মতি ওর মতির ওপর ঘসা খাচ্ছে।
-আজকে জঙ্গল পরিষ্কার করেছিস না।
-কি করে বুঝলি।
-কাল রাতের থেকে আজ বেশ চক চক করছে।
মিত্রা আমার নাকটা ধড়ে মুচরে দিল।
তোর নাকটা সত্যি টিয়াপাখির ঠোঁটের মতো।
তোর নাকটা চিনে ম্যানের মতো, প্লাস্টিক সার্জারি করতে হবে।
আমি কোমর দোলাচ্ছি।
-পারবি না থাইতে ঘষছিস।
-ফাঁক কর।
-না। আগে একটু মুখ দিতে দে।
-সত্যি তুই দিবি।
-হুঁ।
-না।
-তাহলে পাবি না।
-আমি উঠে পাজামা পরে নেবো।
-পরে দেখনা ছিঁড়ে ফর্দা ফাঁই করে দেবো।
আমি ওর মুন্তিতে মুখ দিলাম। চকাত চকাত করে চুষতে আরম্ভ করলাম।
মিত্রা আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি ওর মুখের দিকে তাকিয়ে মিটি মিটি হাসছি আর মুন্তি চুষছি। নিপিলটা শক্ত হয়ে আসছে। বুঝতে পারছি।
-এদিকটা একটু মুখ দে।
-হেসে ফেললাম। বুঝেছি।
-কি।
-তোর বামদিকে সেন্স বেশি।
-ধ্যাত।
আমি বামদিকের মুন্তিতে মুখ দিয়ে ডানদিকের নিপিলে নখের আঘাত করলাম। মিত্রার চোখের ভাষা বদলে যাচ্ছে।
-বুবুন।
-উঁ।
-একটু দেনা মুখ দিই।
-সত্যি তুই দিবি।
-হ্যাঁ।
আমি ওর শরীর থেকে উঠে দাঁড়ালাম। মিত্রা তড়াক করে উঠে আমার পায়ের কাছে হাঁটু মুড়ে বসে পরলো।
আমার মতিতে হাত দিয়ে জামাটা আস্তে করে টেনে খুললো। পাজামাটা টেনে নিয়ে একটু মতির মুখটা মুছে নিয়ে চুমু খেলো। আমি ওর দিকে তাকিয়ে আছি। ও হাসলো। শুধু মুন্ডিটা মুখের মধ্যে পুরে কিছুক্ষণ চুষলো। আবেশে আমার চোখ ঢুলু ঢুলু।
-আর না এবার ছার।
-আর একটু।
-তোর মুখের মধ্যে বেরিয়ে গেলে জানিনা।
-এরকম করিস না।
-না পারলে কি করবো। তুই এমন ভাবে চুষছিস, ধরে রাখা দায়।
-ঠিক আছে ঠিক আছে। আর একবার।
মিত্রা আবার মুখের মধ্যে আমার মতিকে ঢুকিয়ে নিলো। সত্যি আজকে ও ভীষণ গভীরভাবে চুষছে। আগেও ও আমার মতিতে মুখ দিয়েছে কিন্তু এভাবে নয়। আমার প্রায় বেরিয়ে যাওয়ার অবস্থা। আমি এক ঝটকায় ওর মুখ থেকে মতিটা বার করে নিয়ে, ওকে টেনে তুলে বিছানায় শুইয়ে দিলাম।
মিত্রা মিটি মিটি হাসছে।
কিরে বহুত গরম হয়ে গেছিস মনে হচ্ছে।
কেন তুই ঠাণ্ডা আছিস।
-আমিতো গরম খেয়েই থাকি।
-দেবো ফাটিয়ে।
-পারবি না। মিত্রা হাসছে।
দেখবি।
ওরকম করিস না, কাল রাতের কথাটা মনে রাখিস, তোর জীবন কালকে আমাকে দিয়েছিস আমাকে ফিরিয়ে দিতে দে।
আমি হাসলাম। ঠিক আছে।
দুজনে ধীর পায়ে জড়াজড়ি করে খাটে শুয়ে পরলাম। মিত্রা আমার বুকের ওপর উঠে এসেছে। আমার দুটো হাত সমানে মিত্রারা সারাটা শরীরে খুনসুটি করে চলেছে।
এরকম করিস না।আস্তে কর।
আমি মিত্রার দিকে তাকিয়ে হাসছি।
-না করলে কি আছে। এটা একটা নেশা।
-রাগ করলি।
-নারে বিশ্বাস কর।
-আয়।
মিত্রা পা দুটো ফাঁক করলো। আমি ওর শরীরের ওপর নিজের শরীরটাকে ছুঁড়ে ফেললাম, মিত্রা আমার পেটের মধ্যে দিয়ে হাত ঢুকিয়ে আমার মতিকে চেপে ধরলো। আস্তে করে ওর মতিতে ঘষে গর্তে রাখলো, দে চাপ দে।
আমি ওর ঠোঁটের কাছে ঠোঁট নিয়ে গিয়ে চুমু খেলাম।
-ঢোকাই।
মিত্রা ঘার দোলালো।
আমি একটু ঠেলতেই বেশ কিছুটা ঢুকে গেলো।
-কিরে! একেবারে তৈরি করে রেখেছিস মনে হচ্ছে। একটুও টের পেলাম না।
মিত্রা চোখ মেরে হাসলো।
আমি আবার একটু জোরে চাপ দিলাম, পুরোটা ঢুকে গেলো।
আমি মিত্রার দিকে তাকিয়ে হাসছি।
-আমি শয়তান। তাই না? তুই কি ?
-তুই বল।
-আমি কেনো বলবো।
-ঝগড়া করিস না।
আবেশে মিত্রার চোখের পাতা বন্ধ হয়ে আসছে।
কিরে কষ্ট হচ্ছে।
-একটু ওপরে উঠে আয়।
কেন।
তোকে আর একটু ভাল করে জড়িয়ে ধরি।
ভালো লাগছে।
খুব সুন্দর একটা ফিলিংস হচ্ছে, তোকে কি বলবো।
আমারও।
মিত্রা শুয়ে শুয়ে হাসছে।
আমি মিত্রার বুকে নেমে এলাম। ওর মুন্তিটা আমার বুকের ভারে চেপ্টে গেলো, আমি ওর নাকে নাক ঘষলাম, ঠোঁটে ঠোঁট রেখে চুষলাম।
-ভালো লাগছে?
-ভেতরটায় এতো সুন্দর ফিলিংস হচ্ছে তোকে কি বলবো।
-আমারও।
-নাড়া চাড়া করিস না।
-তুই মতির ঠোঁট দিয়ে আমার মতিকে চিবোচ্ছিস।
মিত্রা হাসলো।
-তুই বুঝতে পারছিস।
-অবশ্যই।
-এইটা দারুণ লাগে, মনে হয় পুরোটা যায় নি আর একটু ভেতরে গেলে দারুণ লাগবে। তাই করি।
আমি ওর মুখের দিকে তাকিয়ে আছি। মিত্রার চোখের চাহুনিতে পরিতৃপ্তির ছাপ।
-বুবুন।
-উঁ।
-তোকে একটা কথা বলবো।
-বল।
-রাগ করবি না।
-কেনো।
-থাক পরে বলবো।
-না। বলনা।
-নিখিলেশ দা কয়েকদিন ভীষণ জ্বালাচ্ছে।
-কে নিখিলেশ দা?
-আমরা কলেজ লাইফে যার কাছ থেকে নোট নিতে যেতাম মনে আছে তোর।
-হ্যাঁ, খুব মনে আছে। স্যারের ছাত্র, আমার সঙ্গে নিখিলেশ দার প্রায় দেখা হয় স্যারের বাড়িতে।
-তাই!
-হ্যাঁ।
-তুই বলিস নি তো।
-নিখিলেশ দা আমার কাছে ততটা জরুরী কখনো মনে হয় নি। তাই।
-নিখিলেশ দা একটা ইন্টারনেট লাইব্রেরী করেছে।
-ইন্টারনেট লাইব্রেরী!
-হ্যাঁ।
-ইউ আর এল-টা কী।
-ডব্লিউ ডব্লিউ ডব্লিউ ডট বেঙ্গলী লাইব্রেরী ডট ও আর জি।
-দাঁড়া করে নিই, আমারটা কেমন নরম হয়ে যাচ্ছে।
মিত্রা হাসলো।
-কিরে তোরটা বেড়িয়ে গেছে নাকি!
মিত্রা হাসছে।
-সত্যি।
মিত্রা মাথা দোলাচ্ছে।
-তাই তখন তুই আমার মতিকে কট কট করে চিবোচ্ছিলি।
মিত্রা চোখ দুলিয়ে হ্যাঁ বললো।
-খালি আমার খচখচানি থাকে। যা আর করবো না।
-প্লীজ ওরকম করিসনা বুবুন। কি করবো বল, তোরটা ঢোকার সময়েই কেমন যেন হয়ে গেলো।
-তুই আগে থেকেই গরম খেয়ে ছিলি।
মিত্রা মাথা দোলাচ্ছে।
-আমার আর হবে না।
-কেনো।
-একে তো নুয়ে গেছে তার ওপর তোর পুকুরে আমার মতির স্নান সারা হয়ে গেছে।
-কর না ওরকম করিস কেনো।
-ঠিক আছে দেখি ট্রাই করে।
আমি কোমর চালালাম বেশ কয়েকবার। মিত্রা শুয়ে শুয়ে হাসছে।
-মজমা নিচ্ছিস।
-আমার দুবার হবে তোর একবার।
-তোর রস বেশি।
আমি বেশ কয়েকবার দাপাদাপি করবার পর, আমার মতি আবার স্বমহিমায় ফিরে এলো। মিত্রা হাসছে।
-কিরে শক্ত হয়ে গেছে।
-বুঝতে পারছিস।
মিত্রা মাথা দোলালো।
আমি দুহাতের ওপর ভর দিয়ে করে যাচ্ছি।
-বুবুন আওয়াজ হচ্ছে।
-তুই শোন। আমি করে যাই।
মিত্রা ফিক করে হেসে উঠলো।
-বুবুনরে আমি মনে হয় বেশিক্ষণ সহ্য করতে পারবো না।
-দাঁড়া।
-দাঁড়াবো কিরে আমার তো একটুতেই হয়ে যাচ্ছে আজ।
-হোক।
আমি করে যাচ্ছি। একবার নিচের দিকে তাকালাম। একবার সম্পূর্ণটা বেরোচ্ছে আবার ঢুকে যাচ্ছে।
-দেখিসনা ওরকম করে। তোরটা হামানদিস্তের মতো। ভেতরটা যেনো গুড়িয়ে দিচ্ছে।
বুঝতে পাচ্ছি মিত্রার মতির ঠোঁট দুটো আমার মতিকে আবার কামড়ে কামড়ে ধরতে শুরু করেছে, তার মানে মিত্রার এবার হয়ে যাবে, মিত্রার চোখ বন্ধ। দুটো হাত আমার হাতদুটোকে শক্ত করে ধরেছে, ওর মুন্তির নিপিল দুটো বেশ শক্ত হয়ে গেছে, আমি বেশ জোরেই কোমর দোলাতে শুরু করলাম। তারপর ভেতরে ঢুকিয়ে আরো জোরে দুতিনবার চাপ দিতেই আমার মতি মিত্রার মতির মধ্যে কেঁপে কেঁপে উঠলো।
মিত্রা পা দুটো একটু ওপরের দিকে তুলে আমার পাছুতে নিয়ে এসে জোরে জাপ্টে ধরলো। ওর চোখ বন্ধ, আমি ওর ঠোঁটে ঠোঁট রাখলাম, ওর ঠোঁট দুটো কি গরম আমার জিভ যেনো পুরে ছাই হয়ে যাবে। মিত্রা আমার গলা জড়িয়ে ধরে আমার শরীরীটাকে বুকের সঙ্গে চেপে ধরে আছে।
-কিরে বেরিয়েছে।
-তুই যেমন তোর মতিটাকে কাঁপাচ্ছিলি আর একটু কাঁপা।
-কেনো।
-ভীষণ ভাল লাগছে।
আমি আমার মতিটাকে একটু একটু করে কাঁপাতে চেষ্টা করলাম, যতটা কাঁপে আর কি। মিত্রা চোখ খুলে ফিক করে হাসলো।
-তোর দম আছে।
-কেনো।
-যে ভাবে করছিলি। মনে হচ্ছিল আমার নাভি পর্যন্ত চলে যাচ্ছে।
-ওঠ।
-এই তোর একটা বদঅভ্যাস। হয়ে গেলেই খালি ওঠ।
-কেনো।
-দাঁড়ানা। তোরটা একটু ছোটো হতে দে। এই সময়টা ভীষণ ভালো লাগে।
-তোর মুন্তিটা একটু খাই।
-খা। ওঠবার নাম করবি না।
-বড়মা এসে যদি অনি অনি বলে চিতকার করে।
-করুক। বড়মারা করেনি কোনো দিন।
-আচ্ছা বাবা আচ্ছা।
আমি মিত্রার মুন্তিতে মুখ দিলাম, মুন্তির নিপিল দুটো এখনো শক্ত। মিত্রা মাঝে মাঝে চোখ বন্ধ করছে আবার খুলছে। আমি ধীরে ধীরে ওর শরীর থেকে উঠে দাঁড়ালাম।
-মুছে দে।
আমি হাসলাম। পাজামাটা দিয়ে ওর মতি মুছিয়ে দিলাম, মতির ঠোঁট দুটো লাল হয়ে আছে। আমি একবার চুমু খেলাম। মিত্রা হেসে ফেললো।
ওকে হাত ধরে তুলে ধরলাম। পাজামাটা পরে নিলাম।
-কিরে এটা পরলি।
-স্নান করতে যাবোতো ধুয়ে ফেলবো।
মিত্রা উঠে ভিঁজে কাপড় দিয়ে গা হাত পা ভাল করে মুছে কাপড় পরলো, আমি ল্যাপটপে বসলাম।
-ওটা খোল।
-কোনটা।
-সেক্স সাইটটা।
-না এখননা রাতে। তুই কি বলছিলি তখন।
-কি বলতো।
-আরে নিখিলেশদার লাইব্রেরীটা।
লেখ http://www.********.org আমি লিখে এন্টার মারতেই খুলে গেলো।
-বাঃ বেশ করেছে রে।
-দেখি দেখি।
মিত্রা আমার ঘারের কাছে মুখ নিয়ে এলো।
আমি এ্যাবাউট আসটা ভালো করে পরলাম। বেশ ক্রিয়েটিভ কাজ। ক্যাটাগরিতে ক্লিক করতেই বইগুলোর ক্যাটাগরিগুলো দেখতে পেলাম। প্রথমেই আমি সেক্সের বইগুলো দেখে ফেললাম। দারুন দারুন সব বই আছে। আমি একটা ক্লিক করে ফ্রি ডাউনলোড করলাম।
এখন বড়োমা এসে যদি অনি অনি বলে চিৎকার করে?
করুক।
মিত্রা, ও মিত্রা কোথায় গেলো বলতো মেয়েটা।
বড়োমার গলা।
দুজনে হুটোপুটি করে খাটে উঠে বসলাম।
আমি মিত্রার দিকে তাকালাম, কিরে সারা দে।
খেপেছিস তুই, কখন কাপর পরতে এসেছি বল।
-করতে গেলি কেনো।
-শয়তান আমার একার শখ না।
আমি যাচ্ছি।
না তোকে যেতে হবে না।
মিত্রা কাপরটা কোনও প্রকারে জড়িয়ে বাইরের বারান্দায় বেরিয়ে গেল।
অনি কোথায়রে?
মিত্রা চুপ করে আছে।
কোথায় গেলো বলতো ছেলেটা?
বড়োমার আর গলা পেলাম না। বুঝলাম মিত্রা বড়োমাকে ইশারায় কিছু বলছে।
আমি আমার কাজে মন দিলাম।
কিছুক্ষণ পর বড়োমা ঘরে এলো। মিত্রার চোখ চকচক করছে।
দেখেছো তোমার ছেলের কাণ্ড। কিরকম নিস্তব্ধে কাজ করে যাচ্ছে। কেউ টের পাবে না।
ও তো তোর জন্যই করছে।
জানি গো জানি। মিত্রা বড়োমাকে আঁকুড় করে ধরলো। গালে গাল ঘোষে বললো, জানো বড়োমা, বুবুনকে ছাড়া আমি বাঁচবো না।
বড়োমা মিত্রার দিকে তাকাল।
তোকেও তোর কাজগুলো বুঝে নিতে হবে ওর থেকে।
সত্যি বলছি বিশ্বাস করো, ভালো লাগে না। কাজের প্রতি আমার ভাললাগাটা ওরা বিষিয়ে দিয়েছে।
কারা করেছে, অনিকে বলেছিস।
আমার বলার আগেই বুবুন সব জেনে গেছে।
ও জানেনি ওকে জানতে হচ্ছে, তুই ওকে সাহায্য কর।
ওকে এসব বলতে ভালোলাগে না।
ভাললাগে না বললে হবে, তুই না বললে ও তোকে সাহায্য করবে কি করে?
কেনো! জ্যোতিষদাদা বলেছে ও সব পারবে।
সে তো জ্যোতিষি বলেছে। তুই ওকে সাহায্য কর।
মিত্রা বড়োমাকে ছেড়ে একটু চা আনবি। আর ছোটোমাকে একটু ডেকে আনবি।
দেখছো বড়োমা দেখছো, যেই আমি তোমাকে একটু জড়িয়ে ধরেছি, ওমনি গায়ে জ্বালা ধরে গেল, মিত্রা এটা করতো, ওটা করতো।
বড়োমা মিত্রার দিকে তাকিয়ে ওর গালে হাত বুলিয়ে দিল।
ওর দিকে তাকালাম।
দেখলে, ওমনি তোমার ছেলের রাগ হয়ে গেল। ঠিক আছে বাবা যাচ্ছি।
এখুনি আসবি ছোটোমাকে নিয়ে। আমার একটু দরকার আছে। তুই আবার থেকে যাবি না।
কাপরটা পরে নিই, এদিকে একবারে তাকাবি না।
আচ্ছা।
কাপর পরে মিত্রা চলে গেল। আমি বড়োমার দিকে তাকিয়ে বললাম। বসো।
বড়োমা সোফায় বসলো।
দাদা ফোন করেছিল?
তোকেও তো করেছিল।
জানি। তবু তোমায় জিজ্ঞাসা করছি, কেন বুঝতে পারছো না।
না। আমার মাথাটা তোর মতো পরিষ্কার নয়।
হাসলাম।
হাসিস না। তোর হাসিটা সব সময় একটা অর্থ বয়ে বেড়ায়। তার চেয়ে পরিষ্কার করে বল কি জানতে চাইছিস।
আমার কাছে দাদার এক্সপ্রেসন আর তোমার কাছে দাদার এক্সপ্রেসন দুটো সম্পূর্ণ আলাদা। এটা বোঝার মতো বুদ্ধি লাগে নাকি।
তোর লাগে। আমার লাগে না।
আমি তোমার কাছ থেকে দাদা, নিরঞ্জনদা, ইসলামভাই-এর এক্সপ্রেসন এককথায় বলতে পারো মনের কথা জানতে চাইছি। ওরা তোমাকে কে কি বললো?
তোর দাদা খুব ইমপ্রেসড। তোর কাজের প্রতি তোর দাদার পূর্ণ সমর্থন আছে।
কালকের ব্যাপারগুলো দাদাকে বলেছো?
বলেছি।
কি বললো?
তোর দাদা প্রথমে একটু আপত্তি করেছিল। তারপর বললো ও যখন করছে, ভেবেচিন্তেই করছে। ওকে বাধা দিও না।
ইসলামভাই?
তুই এখন যা বলবি ও সেই ভাবে কাজ করবে।
নিরঞ্জনদা?
ও তোর চালচলন দেখে অবাক হয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘদিন পার্টি করছে, বললো এরকম ছেলে ও দেখেনি।
বাড়িয়ে বলছো?
একটুও না।
আমাকে একটু বেশি ভালোবাস তাই আমার দোষগুলো বলতে চাইছো না?
তোর দোষ দেখলে নিশ্চই প্রতিবাদ করবো।
করবে তো? না চুপ কর থাকবে।
তাহলে তোর ক্ষতি। সে ক্ষতি মন থেকে চাইব না।
ছোটোমা, নীপা, মিত্রা ঘরে ঢুকলো।
তুমি এখন চা খাবে, স্নান করবে কখন? নীপা কট কট করে উঠলো।
করছি।
মিত্রা চায়ের কাপ এগিয়ে দিল।
কিরে বড়োমাকে দিলি না।
বড়োমা তোর মতন নাকি শুধু চা খাবে।
হাসলাম।
হাসবি না। সব সময় একটা না একটা প্ল্যান ভেঁজে চলেছিস। ছোটোমা বললো।
ঠিক আছে বসো। নীপা একবার ইসলামভাই আর নিরঞ্জনদাকে ডেকে দাও।
নীপা বুঝলো কিছু একটা আলোচনা করবো। ও দাঁড়ালো না চলে গেল।
ছোটোমা, বড়োমার পাশে সোফায় বসলো।
কি দেখছ অমন করে?
তোকে দেখছি।
কেন?
তুই যে কখন নিজেকে হঠাৎ হঠাৎ বদলে ফেলিস নিজেরাই বুঝতে পারি না।
মিত্রার দিকে তাকালাম।
তোকে একটা কথা জিজ্ঞাসা করবো। সত্যি করে বলবি।
ও আমার চোখে চোখ রাখলো। বুঝতে পারলো। নিশ্চই গুরুত্বপূর্ণ কিছু।
বল। মাথা নিচু করে নিল।
মিঃ ব্যানার্জীকে তুই ভালোবাসিস।
ও আমার দিকে তাকাল। চোখে চোখ রাখলো। চোখদুটো মুহূর্তের মধ্যে বদলে গেল। এক একটা চোখ যেন গনগনে আগুনের কয়লার টুকরো।
তুই কি বলতে চাস। গলার স্বরটা কর্কশ।
আমি একটা স্টেপ নিতে যাচ্ছি। হয়তো সেটা বেশ কঠিন। তোর অনুমতি নিতে চাই। বড়োমা, ছোটোমার কাছ থেকেও অনুমতি নেব। জায়গাটা খুব সেনসিটিভ।
তুই যা খুশি করতে পারিস, আমার কোনও আপত্তি নেই।
ঠিক আছে তার আগে তোর কাছে আমি কিছু জানতে চাই, তুই বলবি।
বল।
তুই কোনও ব্ল্যাঙ্ক স্টাম্প পেপারে সই করেছিস? বিগত তিন বছরে।
করেছি। আমাকে দিয়ে জোড় করে করানো হয়েছে।
বেশ।
মিঃ ব্যানার্জীর ছেলে এখন কোথায়?
ও আমার দিকে তাকাল।
তুই জানলি কি করে?
উনি তোকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন।
ছোটোমা, বড়োমার চোখ ঠেলে বেরিয়ে আসতে চাইছে।
অতীতকে নিয়ে মিত্রা মাথা ঘামায় না। পাস্ট ইজ পাস্ট, তুই এসব নিয়ে ভাববি না। ওর এই গলার স্বর বড়োমা, ছোটোমার পরিচিত নয়।
একটা জট পেকে আছে, তোকে খুলতে হবে।
কিচ্ছু জট নয়। সবকটাকে লাথি মেরে দূর করে দেব। তুই কি আমাকে বাঁজা মেয়ে পেয়েছিস। মিত্রার গলাটা খ্যার খ্যার করে উঠলো।
ছোটোমা, বড়োমা মিত্রার এই রূপ দেখেনি। ওদের চোখের ভাষা বদলে গেল। এ মিত্রা সেই মিত্রা নয়। যাকে ওরা হাসিখুশি অবস্থায় দেখেছে।
আমি মিত্রার মুখটা তুলে ধরলাম। তুই আমাকে ভালোবাসিস।
ও আমার চোখে চোখ রাখলো। চোখের আগুন এখনো কমে নি। সামান্য জল টলটল করছে। চোখের পাতা পরলো। গাল বেয়ে দু-ফোঁটা জল গড়িয়ে পরলো।
তুই ছোটোমাকে ভালোবাসিস?
চোখের ভাষায় আমাকে বুঝিয়ে দিল।
তুই বড়োমাকে ভালোবাসিস?
ও আমাকে জড়িয়ে ধরলো। ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো।
বড়োমা উঠে আসতে চাইছিল, আমি ইশারায় না বললাম।
শোন না, আমার কথা শোন। রাগ করলে হবে না। খুব বুঝে শুনে কাজ করতে হবে। ওরা তোর অনেক ক্ষতি করেছে। আমি তোর সাহায্য ছাড়া কিছু করতে পারবো না।
তুই বড়োমা, ছোটোমাকে চলে যেতে বল। আমার এই কথা বড়োমা, ছোটোমা জানলে আমাকে নোংরা মেয়ে বলবে।
এতদিনে বড়োমা, ছোটোমাকে এই চিনলি। কই আমার দিকে তাকা।
বড়োমা, ছোটোমাকে আমি সব বলিনি। মিত্রা ভেঙে পরলো।
ঠিক আছে বলিসনি কি হয়েছে। আজ না হয় কাল বড়োমা, ছোটোমা সব জানবে। বড়োমা কাল আমাদের সামনে কনফেস করেছে। করেছে কিনা বল?
ও বুকের মধ্যে মুখ গুঁজে মাথা দোলাচ্ছে।
দেখ তোর মতো ছোটোমার একটা দুঃখ আছে। তুই সেটা বহুবার বলেছিস। আমি তোকে কি বলেছি, বল।
ও আমার বুকের থেকে কিছুতেই মুখ তুলছে না।
তুই যা বলবি আমি তাই করবো।
আমি মিঃ ব্যানার্জীকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিতে চাই। তুই পার্মিশন দে।
পারবি!
মিত্রা আমার বুক থেকে মুখ তুললো। কান্না ভেঁজা চোখ দুটোয় জিঘাংসা।
সেদিন মিত্রার চেয়ে খুশি পৃথিবীতে আর কেউ হবে না।
বড়োমা, ছোটোমা অবাক।
ও আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। আমার মুখাবয়ব থেকে ও কিছু খোঁজার চেষ্টা করছে। আমি ওর কাপালে হাত রাখলাম। চোখের কোলে জল শুকিয়ে গেছে। আমি বুড়ো আঙুল দিয়ে মুছিয়ে দিলাম। ও আমার গলা জড়িয়ে ধরলো। কাঁধে মাথা রাখলো।
সকালের সব গল্প বড়োমাকে বলা হয়ে গেছে।
মিত্রা মাথা দোলাল।
আমার স্কুলের গল্প?
ও আবার চোখ তুললো। একটুখানি বলেছি। বড়োমা বলেছে যাবে।
তুই নিয়ে যেতে পারবি?
হ্যাঁ।
খাবার টেস্ট করা হয়েগেছে?
না।
যা একটু নিয়ে আয়। খাই।
দেখ না, অনাদি দিচ্ছে না।
ঠিক আছে, বল গিয়ে আমি চাইছি।
দাঁড়া যাচ্ছি। মিত্রা উঠে দাঁড়াল।
চোখে মুখে একটু জল দিয়ে নে।
না থাক।
মিত্রা ছুটে চলে গেল। আমার বুকের মধ্যে থেকে একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো।
শিঁড়িতে আওয়াজ হলো।
আরে দিদিমনি আস্তে আস্তে। কোথায় পরে যাবে, ব্যাথ লাগবে। ইসলামভাই-এর গলা।
ছোটোমা, বড়োমার দিকে তাকালাম। ওরা অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
কি বুঝলে?
একথা তুই জানলি কোথা থেকে!
ইসলামভাই ঘরে ঢুকলো।
সরি অনি স্নান করছিলাম। দেরি হয়ে গেল।
ঘরের চারদিকে একবার চোখ বুলিয়ে নিল। নিশ্চই কিছু একটা গম্ভীর আলোচনা হচ্ছে।
বসো। নিরঞ্জনদা কোথায়?
স্নান করছে, এখুনি এসে পরবে।
ইসলামভাই আমার পাশে এসে বসলো।
সকাল থেকে মিত্রাকে বেশ ফুরফুরে লাগছিল। এখন ওর চোখ দুটো কেমন লাগলো।
হ্যাঁ। ওকে কয়েকটা কথা জিজ্ঞাসা করছিলাম।
নিশ্চই মিঃ ব্যানার্জীর কথা বলেছিস?
ছোটোমা, বড়োমা আমার আর ইসলামভাই-এর দিকে তাকাল।
ওরা বুঝতে পারলো ইসলামভাই কোন স্তরের মানুষ।
তোকে ওটা নিয়ে ভাবতে হবে না। তুই কি ভাবছিস ইসলামভাই এখানে এমনি এমনি বসে আছে। রতনকে বলে দিয়েছি। সব ব্যবস্থা করে রাখবে। তুই যা চাইবি তাই হবে। চব্বিশ ঘণ্টা ওর পেছনে লোক রয়েছে। তোকে বলেছি না এবার ইসলামভাই-এর খেলা দেখ।
মুন্না মেয়েটার এখুনি কান্না দেখলি না। কি রেগে গেল। এই প্রথম ওর রাগ দেখলাম।
জানিস দিদি, মিত্রা এমন একটা পাথর, আঘাতে আঘাতে ও টুকরো টুকরো হয়ে গেছে। আর অনি টুকরো টুকরো হয়নি। তাই ওকে আমরা সবাই শিব বলছি। নারায়ণ বলছি।
বড়োমা ইসলামভাই-এর দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে।
ওকে ওরা ছিবড়ে করে দিয়েছে। আমি তার কিছুটা দেখেছি। অনি দেখেনি, কানে শুনেছে। তাতেই অনির এই অবস্থা, দেখলে কি করতো বুঝতে পারছিস।
ছোটোমা মাথা নীচু করে বসে আছে।
তোমাকে দিদিকে সব কথা বলা যাবে না। বললে তোমাদেরও অবস্থা অনির মতো হবে।
আমি ইসলামভাই-এর দিকে তাকালাম।
তুই কি ভাবছিস বল?
এখনও কিছু ভাবিনি। কাল একবার কলকাতা যাব।
আমার যাওয়ার ব্যবস্থা কর।
এখানকার কাজ শেষ হোক। তোমাকে এখনও দরকার।
তোর ছশো একর ব্যবস্থা হয়ে যাবে।
কথা হয়েছে।
হ্যাঁ, নিরঞ্জনদার কাছে লোক এসেছে। খেয়েদেয়ে দেখতে যাওয়ার কথা।
ঠিক আছে চলো। তুমি কতো নিয়ে এসেছো?
মনে হয় রতন কুড়িটা বান্ডিল ঢুকিয়ে দিয়েছে। লাগলে আরও পাঠিয়ে দেবে। এটা নিয়ে তোকে ভাবতে হবে না।
আমি সে নিয়ে ভাবছি না, হিমাংশুর সাথে বসতে হবে। ডিডগুলো বানাতে হবে। আমি বুধবার ফিরে আসবো।
মিত্রাকে সামলাবে কে! বড়োমা বললো।
কিছু হবে না দেখবে। ও সব সময় অতীতটা ভুলে থাকতে চায়।
বড়োমা আমার দিকে তাকাল।
নিরঞ্জনদা এলো। একবার চোখ বুলিয়ে নিল।
খুব জোড় মিটিং চলছে মনে হচ্ছে।
নিচে গলা পেলাম মিত্রা তারস্বরে চেঁচাচ্ছে। তুই এটা ধর আমি ওটা ধরছি।
আমি বড়োমার দিকে তাকালম। কিছু বুঝছো?
বড়োমা আমার দিকে ফ্যাল ফ্যল করে তাকিয়ে আছে।
মিত্রা ঝড়ের মতো ঘরে ঢুকলো।
এ-মা, আরও দু-জন এসে গেছে। বাইরের দিকে তাকিয়ে, তোকে বললাম।
বাইরে কে? আমি বললাম।
কাঞ্চন। কিছুতেই আসবে না। জোড় করে নিয়ে এলাম।
বড়োমা মিত্রার দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। এই কিছুক্ষণ আগের মিত্রার সঙ্গে এই মিত্রার আকাশ পাতাল পার্থক্য।
বুঝলি বুবুন, ইসলামভাই-এর ইনস্ট্রাকশনে যা বানিয়েছে না, দারুন।
মিত্রা, ইসলামভাই-এর কাছে এগিয়ে গেল।
তোলো তোলো।
বড়োমাকে একটা প্লেট দিল, আর ছোটোমাকে একটা প্লেট দিল।
আমার দিকে ফিরে বললো। তুই স্নান করিসনি। পাবি না। তোরটা নিরঞ্জনদাকে দিলাম।
আমি বড়োমার কাছ থেকে নেব।
না, সরি। আমি বড়োমার কাছ থেকে একটা নেব, ছোটোমার কাছ থেকে একটা নেব।
তাহলে আমি ইসলামভাই-এর কাছ থেকে একটা নিই।
আমি একটা মুরগীর ঠ্যাং ইসলামভাই-এর প্লেট থেকে তুলে নিলাম।
মিত্রার দিকে তাকিয়ে বললাম, যাবি নাকি? পুকুরে সাঁতার কাটব।
এখন! ঠিক আছে, তুই যা আমি যাচ্ছি।
আমি বড়োমার দিকে তাকালাম। বড়োমা হাসছে। আমি ঘরের বাইরে বেরিয়ে এলাম। আসার সময় মিত্রাকে বললাম, টাওয়েলটা নিয়ে আসিস। মিত্রা তখন একটা ঠ্যাং মুখে তুলেছে। আমি ওর দিকে তাকিয়ে হাসলাম।
চলবে —————————
from বিদ্যুৎ রায় চটি গল্প কালেকশন লিমিটেড https://ift.tt/oMSNjrQ
via BanglaChoti
Comments
Post a Comment